আল্লাহ তা’আলার নিরানব্বই নামের অর্থ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা —৩

0

গত পর্বে আমরা আল্লাহ তা’আলার ৯৯ নামের (৩১ থেকে ৬০টি) কুরআনের রেফারেন্স এবং সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাসহ উল্লেখ করেছি। আজকের পর্বে ৬১ থেকে ১০০ পর্যন্ত নামসমূহ কুরআনের রেফারেন্সসহ উল্লেখ করা হলো। গত পর্বের মতো এ পর্বেও অনেকগুলো নামের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ, নামগুলো অতি সুস্পষ্ট বা কুরআনের আয়াত থেকেই এর ব্যাখ্যা অনুমিত।

৬১ থেকে ৭০

৬১. الْمُحْيِي [আল-মুহয়ী] = জীবনদানকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنَّكَ تَرَى الْأَرْضَ خَاشِعَةً فَإِذَا أَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَاءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ ۚ إِنَّ الَّذِي أَحْيَاهَا لَمُحْيِي الْمَوْتَىٰ ۚ إِنَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তাঁর এক নিদর্শন এই যে, তুমি ভূমিকে দেখবে অনুর্বর পড়ে আছে। অতঃপর আমি যখন তার উপর বৃষ্টি বর্ষণ করি, তখন সে শস্যশ্যামল ও স্ফীত হয়। নিশ্চয় যিনি একে জীবিত করেন, তিনি জীবিত করবেন মৃতদেরকেও। নিশ্চয় তিনি সবকিছু করতে সক্ষম। (সূরাঃ হা-মীম সাজদাহ, আয়াতঃ ৩৯)

 

فَانْظُرْ إِلَىٰ آثَارِ رَحْمَتِ اللَّهِ كَيْفَ يُحْيِي الْأَرْضَ بَعْدَ مَوْتِهَا ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ لَمُحْيِي الْمَوْتَىٰ ۖ وَهُوَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, আল্লাহর রহমতের ফল দেখে নাও, কিভাবে তিনি মৃত্তিকার মৃত্যুর পর তাকে জীবিত করেন। নিশ্চয় তিনি মৃতদেরকে জীবিত করবেন এবং তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। (সূরাঃ আর-রূম, আয়াতঃ ৫০)

 

 

৬২. الْمُمِيتُ [আল-মুমীত] = মৃত্যু দানকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

قُلِ اللَّهُ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يَجْمَعُكُمْ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَا رَيْبَ فِيهِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আপনি বলুন, আল্লাহই তোমাদেরকে জীবন দান করেন, অতঃপর মৃত্যু দেন, অতঃপর তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন একত্রিত করবেন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ বোঝে না। (সূরাঃ আল জাসিয়া, আয়াতঃ ২৬)

 

اللَّهُ الَّذِي خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ۖ هَلْ مِنْ شُرَكَائِكُمْ مَنْ يَفْعَلُ مِنْ ذَٰلِكُمْ مِنْ شَيْءٍ ۚ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَىٰ عَمَّا يُشْرِكُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এসব কাজের মধ্যে কোন একটিও করতে পারবে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মহান। (সূরাঃ আর-রূম, আয়াতঃ ৪০)

 

وَهُوَ الَّذِي أَحْيَاكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ۗ إِنَّ الْإِنْسَانَ لَكَفُورٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে মৃত্যুদান করবেন ও পুনরায় জীবিত করবেন। নিশ্চয় মানুষ বড় অকৃতজ্ঞ। (সূরাঃ হাজ্জ্ব, আয়াতঃ ৬৬)

 

كَيْفَ تَكْفُرُونَ بِاللَّهِ وَكُنْتُمْ أَمْوَاتًا فَأَحْيَاكُمْ ۖ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ ثُمَّ إِلَيْهِ تُرْجَعُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ কেমন করে তোমরা আল্লাহর ব্যাপারে কুফরী অবলম্বন করছ? অথচ তোমরা ছিলে নিষ্প্রাণ। অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে প্রাণ দান করেছেন, আবার মৃত্যু দান করবেন। পুনরায় তোমাদেরকে জীবনদান করবেন। অতঃপর তারই প্রতি প্রত্যাবর্তন করবে। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৮)

 

৬৩. الْحَيُّ [আল-হাইয়্যু] = চিরঞ্জীব, যার কোন শেষ নাই

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَعَنَتِ الْوُجُوهُ لِلْحَيِّ الْقَيُّومِ ۖ وَقَدْ خَابَ مَنْ حَمَلَ ظُلْمًا

 

বাংলা অনুবাদঃ সেই চিরঞ্জীব চিরস্থায়ীর সামনে সব মুখমন্ডল অবনমিত হবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে জুলুমের বোঝা বহন করবে। (সূরাঃ ত্বোয়া-হা, আয়াতঃ ১১১)

 

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ২)

 

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৫৫)

 

৬৪. الْقَيُّومُ [আল-ক্বাইয়ূম] = অভিভাবক, জীবিকানির্বাহ প্রদানকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَعَنَتِ الْوُجُوهُ لِلْحَيِّ الْقَيُّومِ ۖ وَقَدْ خَابَ مَنْ حَمَلَ ظُلْمًا

 

বাংলা অনুবাদঃ সেই চিরঞ্জীব চিরস্থায়ীর সামনে সব মুখমন্ডল অবনমিত হবে এবং সে ব্যর্থ হবে যে জুলুমের বোঝা বহন করবে। (সূরাঃ ত্বোয়া-হা, আয়াতঃ ১১১)

 

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই, তিনি চিরঞ্জীব, সবকিছুর ধারক। (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ২)

 

اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۖ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۖ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর সিংহাসন সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২৫৫)

 

৬৫. الْوَاجِدُ [আল-ওয়াজিদ] = পর্যবেক্ষক, আবিষ্কর্তা, চিরস্থায়ী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

কুরআনে এ নামের সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে হাদীস দ্বারা এ নামটি প্রমাণিত। যেমন-

 

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ ‏:‏ ‏ “‏ إِنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى يَقُولُ يَا عِبَادِي كُلُّكُمْ مُذْنِبٌ إِلاَّ مَنْ عَافَيْتُ فَسَلُونِي الْمَغْفِرَةَ فَأَغْفِرَ لَكُمْ وَمَنْ عَلِمَ مِنْكُمْ أَنِّي ذُو قُدْرَةٍ عَلَى الْمَغْفِرَةِ فَاسْتَغْفَرَنِي بِقُدْرَتِي غَفَرْتُ لَهُ، وَكُلُّكُمْ ضَالٌّ إِلاَّ مَنْ هَدَيْتُ فَسَلُونِي الْهُدَى أَهْدِكُمْ، وَكُلُّكُمْ فَقِيرٌ إِلاَّ مَنْ أَغْنَيْتُ فَسَلُونِي أَرْزُقْكُمْ، وَلَوْ أَنَّ حَيَّكُمْ وَمَيِّتَكُمْ وَأَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ اجْتَمَعُوا فَكَانُوا عَلَى قَلْبِ أَتْقَى عَبْدٍ مِنْ عِبَادِي – لَمْ يَزِدْ فِي مُلْكِي جَنَاحُ بَعُوضَةٍ، وَلَوِ اجْتَمَعُوا فَكَانُوا عَلَى قَلْبِ أَشْقَى عَبْدٍ مِنْ عِبَادِي لَمْ يَنْقُصْ مِنْ مُلْكِي جَنَاحُ بَعُوضَةٍ وَلَوْ أَنَّ حَيَّكُمْ وَمَيِّتَكُمْ، وَأَوَّلَكُمْ وَآخِرَكُمْ وَرَطْبَكُمْ وَيَابِسَكُمُ اجْتَمَعُوا، فَسَأَلَ كُلُّ سَائِلٍ مِنْهُمْ مَا بَلَغَتْ أُمْنِيَّتُهُ – مَا نَقَصَ مِنْ مُلْكِي إِلاَّ كَمَا لَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ مَرَّ بِشَفَةِ الْبَحْرِ فَغَمَسَ فِيهَا إِبْرَةً ثُمَّ نَزَعَهَا، ذَلِكَ بِأَنِّي جَوَادٌ مَاجِدٌ عَطَائِي كَلاَمٌ إِذَا أَرَدْتُّ شَيْئًا فَإِنَّمَا أَقُولُ لَهُ ‏:‏ كُنْ فَيَكُونُ

 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রাচুর্যময় মহান আল্লাহ বলেন, হে আমার বান্দাগণ! আমি যাদের ক্ষমা করেছি তারা ব্যতীত তোমাদের সকলেই গুনাহগার। অতএব তোমরা আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের ক্ষমা করবো। তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি জানে যে, আমি ক্ষমা করার ক্ষমতা রাখি, অতঃপর সে আমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করলে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। আমি যাদের হেদায়াত করেছি তারা ব্যতীত তোমরা সকলেই পথভ্রষ্ট। অতএব তোমরা আমার নিকট সৎপথ প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের সৎপথ প্রদর্শন করবো। আমি যাদের ধনবান করেছি তারা ব্যতীত তোমরা সকলেই দরিদ্র। তোমরা আমার নিকট প্রার্থনা করো, আমি তোমাদের রিযিক দান করবো। তোমাদের জীবিত, মৃত, আগের ও পরের, সিক্ত ও শুষ্ক (সচ্ছল-অসচ্ছল) নির্বিশেষে সকলেই যদি আমার বান্দাদের মধ্যে সর্বাধিক তাক্বওয়ার অধিকারী ব্যক্তির হৃদয়ের মত হয়ে যায়, তাহলে একটি মশার পাখার সম-পরিমাণও আমার রাজত্বের শ্রীবৃদ্ধি ঘটবে না।

 

পক্ষান্তরে তারা সকলে যদি একত্রে আমার বান্দাদের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক পাপী বান্দার মত হয়ে যায়, তবুও তাতে একটি মশার পাখার সম-পরিমাণও আমার রাজত্বের সৌন্দর্যহানি ঘটবে না। তোমাদের জীবিত, মৃত, আগের ও পরের, সিক্ত ও শুষ্ক সকলে যদি একত্র হয়ে প্রত্যেকে তার পূর্ণ চাহিদামত আমার নিকট প্রার্থনা করে এবং আমি তাদের চাহিদামত সবকিছু দান করি, তবুও আমার রাজত্বের কিছুই কমবে না, তবে এতটুকু পরিমাণ যে, তোমাদের কেউ সমুদ্রের মধ্য দিয়ে অতিক্রমকালে তাতে একটি সুঁই ডুবিয়ে তা তুলে নিলে তাতে সমুদ্রের পানি যতটুকু হ্রাস পাবে। কারণ আমি হলাম দাতা, দয়ালু ও মহান। আমি যা চাই তাই করি। আমার দান হলো আমার কথা এবং আমার আযাব হলো আমার নির্দেশ। আমার ব্যাপার এই যে, আমি যখন কিছু ইচ্ছা করি তখন বলি, ’’হয়ে যাও’’, অমনি তা হয়ে যায়। [মুসলিম ২৫৭৭, তিরমিযি ২৪৯৫, আহমাদ ২০৮৬০, ২০৯১১, আত-তালীকুর রাগীব ২/২৬৮, ২৭০]

 

৬৬. الْمَاجِدُ [আল-মাজিদ] = মহান

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

কুরআনে এ নামের সরাসরি উল্লেখ নেই, তবে হাদীস দ্বারা এ নামটি প্রমাণিত। যেমন-

 

 

ذَلِكَ بِأَنِّي جَوَادٌ مَاجِدٌ عَطَائِي كَلاَمٌ إِذَا أَرَدْتُّ شَيْئًا فَإِنَّمَا أَقُولُ لَهُ ‏:‏ كُنْ فَيَكُونُ

 

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- (আল্লাহ তা’আলা বলেন-) …কারণ, আমি হলাম দাতা, দয়ালু ও মহান। আমি যা চাই তাই করি। আমার দান হলো আমার কথা এবং আমার আযাব হলো আমার নির্দেশ। আমার ব্যাপার এই যে, আমি যখন কিছু ইচ্ছা করি তখন বলি, ’’হয়ে যাও’’, অমনি তা হয়ে যায়। [মুসলিম ২৫৭৭, তিরমিযি ২৪৯৫, আহমাদ ২০৮৬০, ২০৯১১, আত-তালীকুর রাগীব ২/২৬৮, ২৭০]

 

 

৬৭. الْوَاحِدُ [আল-ওয়াহিদ] = এক, অনন্য, অদ্বিতীয়

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

يَوْمَ هُمْ بَارِزُونَ ۖ لَا يَخْفَىٰ عَلَى اللَّهِ مِنْهُمْ شَيْءٌ ۚ لِمَنِ الْمُلْكُ الْيَوْمَ ۖ لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ

 

বাংলা অনুবাদঃ যেদিন তারা বের হয়ে পড়বে, আল্লাহর কাছে তাদের কিছুই গোপন থাকবে না। আজ রাজত্ব কার? এক প্রবল পরাক্রান্ত আল্লাহর। (সূরাঃ আল-মু’মিন, আয়াতঃ ১৬)

 

لَوْ أَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَتَّخِذَ وَلَدًا لَاصْطَفَىٰ مِمَّا يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ ۚ سُبْحَانَهُ ۖ هُوَ اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ যদি সন্তান গ্রহণ করার ইচ্ছা করতেন, তবে তাঁর সৃষ্টির মধ্য থেকে যা কিছু ইচ্ছা মনোনীত করতেন, তিনি পবিত্র। তিনি আল্লাহ, এক পরাক্রমশালী। (সূরাঃ আল-যুমার, আয়াতঃ ৪)

 

قُلْ إِنَّمَا أَنَا مُنْذِرٌ ۖ وَمَا مِنْ إِلَٰهٍ إِلَّا اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ

 

বাংলা অনুবাদঃ বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। (সূরাঃ ছোয়াদ, আয়াতঃ ৬৫)

 

يَوْمَ تُبَدَّلُ الْأَرْضُ غَيْرَ الْأَرْضِ وَالسَّمَاوَاتُ ۖ وَبَرَزُوا لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ

 

বাংলা অনুবাদঃ যেদিন পরিবর্তিত করা হবে এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে এবং পরিবর্তিত করা হবে আকাশ সমূহকে এবং লোকেরা পরাক্রমশালী এবং আল্লাহর সামনে পেশ হবে। (সূরাঃ ইব্রাহীম, আয়াতঃ ৪৮)

 

يَا صَاحِبَيِ السِّجْنِ أَأَرْبَابٌ مُتَفَرِّقُونَ خَيْرٌ أَمِ اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ

 

বাংলা অনুবাদঃ হে কারাগারের সঙ্গীরা! পৃথক পৃথক অনেক উপাস্য ভাল, না পরাক্রমশালী এক আল্লাহ? (সূরাঃ ইউসূফ, আয়াতঃ ৩৯)

 

৬৮. الصَّمَدُ [আস-সামাদ] = চিরন্তন, অবিনশ্বর, নির্বিকল্প, সুনিপুণ, স্বয়ং সম্পূর্ণ

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

اللَّهُ الصَّمَدُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। (সূরাঃ আল ইখলাস, আয়াতঃ ২)

 

 

৬৯. الْقَادِرُ [আল-ক্বাদির] = সর্বশক্তিমান

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَأَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَاءِ مَاءً بِقَدَرٍ فَأَسْكَنَّاهُ فِي الْأَرْضِ ۖ وَإِنَّا عَلَىٰ ذَهَابٍ بِهِ لَقَادِرُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আমি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে থাকি পরিমাণ মত অতঃপর আমি জমিনে সংরক্ষণ করি এবং আমি তা অপসারণও করতে সক্ষম। (সূরাঃ আল মু’মিনূন, আয়াতঃ ১৮)

 

وَقَالُوا لَوْلَا نُزِّلَ عَلَيْهِ آيَةٌ مِنْ رَبِّهِ ۚ قُلْ إِنَّ اللَّهَ قَادِرٌ عَلَىٰ أَنْ يُنَزِّلَ آيَةً وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ তারা বলেঃ তার প্রতি তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে কোন নিদর্শন অবতীর্ণ হয়নি কেন? বলে দিনঃ আল্লাহ নিদর্শন অবতরণ করতে পূর্ন সক্ষম; কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানে না। (সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ৩৭)

 

فَقَدَرْنَا فَنِعْمَ الْقَادِرُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর আমি পরিমিত আকারে সৃষ্টি করেছি, আমি কত সক্ষম স্রষ্টা? (সূরাঃ আল মুরসালাত, আয়াতঃ ২৩)

 

قُلْ هُوَ الْقَادِرُ عَلَىٰ أَنْ يَبْعَثَ عَلَيْكُمْ عَذَابًا مِنْ فَوْقِكُمْ أَوْ مِنْ تَحْتِ أَرْجُلِكُمْ أَوْ يَلْبِسَكُمْ شِيَعًا وَيُذِيقَ بَعْضَكُمْ بَأْسَ بَعْضٍ ۗ انْظُرْ كَيْفَ نُصَرِّفُ الْآيَاتِ لَعَلَّهُمْ يَفْقَهُونَ

বাংলা অনুবাদঃ আপনি বলুনঃ তিনিই শক্তিমান যে, তোমাদের উপর কোন শাস্তি উপর দিক থেকে অথবা তোমাদের পদতল থেকে প্রেরণ করবেন অথবা তোমাদেরকে দলে-উপদলে বিভক্ত করে সবাইকে মুখোমুখী করে দিবেন এবং এককে অন্যের উপর আক্রমণের স্বাদ আস্বাদন করাবেন। দেখ, আমি কেমন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নিদর্শনাবলী বর্ণনা করি যাতে তারা বুঝে নেয়। (সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ৬৫)

 

৭০. الْمُقْتَدِرُ [আল-মুক্বতাদির] = প্রভাবশালী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

فِي مَقْعَدِ صِدْقٍ عِنْدَ مَلِيكٍ مُقْتَدِرٍ

 

বাংলা অনুবাদঃ যোগ্য আসনে, সর্বাধিপতি সম্রাটের সান্নিধ্যে। (সূরাঃ আল ক্বামার, আয়াতঃ ৫৫)

 

كَذَّبُوا بِآيَاتِنَا كُلِّهَا فَأَخَذْنَاهُمْ أَخْذَ عَزِيزٍ مُقْتَدِرٍ

 

বাংলা অনুবাদঃ তারা আমার সকল নিদর্শনের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল। অতঃপর আমি পরাভূতকারী, পরাক্রমশালীর ন্যায় তাদেরকে পাকড়াও করলাম। (সূরাঃ আল ক্বামার, আয়াতঃ ৪২)

 

أَوْ نُرِيَنَّكَ الَّذِي وَعَدْنَاهُمْ فَإِنَّا عَلَيْهِمْ مُقْتَدِرُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ অথবা যদি আমি তাদেরকে যে আযাবের ওয়াদা দিয়েছি, তা আপনাকে দেখিয়ে দেই, তবু তাদের উপর আমার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে। (সূরাঃ যুখরুফ, আয়াতঃ ৪২)

 

وَاضْرِبْ لَهُمْ مَثَلَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا كَمَاءٍ أَنْزَلْنَاهُ مِنَ السَّمَاءِ فَاخْتَلَطَ بِهِ نَبَاتُ الْأَرْضِ فَأَصْبَحَ هَشِيمًا تَذْرُوهُ الرِّيَاحُ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ مُقْتَدِرًا

 

বাংলা অনুবাদঃ তাদের কাছে পার্থিব জীবনের উপমা বর্ণনা করুন। তা পানির ন্যায়, যা আমি আকাশ থেকে নাযিল করি। অতঃপর এর সংমিশ্রণে শ্যামল সবুজ ভূমিজ লতা-পাতা নির্গত হয়; অতঃপর তা এমন শুস্ক চুর্ণ-বিচুর্ণ হয় যে, বাতাসে উড়ে যায়। আল্লাহ এ সবকিছুর উপর শক্তিমান। (সূরাঃ কাহফ, আয়াতঃ ৪৫)

৭১ থেকে ৮০

৭১. الْمُقَدِّمُ [আল-মুক্বদ্দিম] = অগ্রগামী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

কুরআনে হুবুহু এ নামটির উল্লেখ নেই, কিন্তু সহীহ বুখারীর হাদীসে এর উল্লেখ রয়েছে

اللَّهم اغْفر لي ما قَدمت وما أَخرت

 

৭২. الْمُؤَخِّرُ [আল-মুআখখির] = বিলম্বকারী, অবকাশ দানকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

أَنت الْمقَدم وأَنت الْمؤخر

 

وَأَنْفِقُوا مِنْ مَا رَزَقْنَاكُمْ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَىٰ أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُنْ مِنَ الصَّالِحِينَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। (সূরাঃ মুনাফিকুন, আয়াতঃ ১০)

 

৭৩. الْأَوَّلُ [আল-আউয়াল] = সর্বপ্রথম, যার কোন শুরু নেই

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ৩)

 

৭৪. الْآخِرُ [আল-আখির] = সর্বশেষ, যার কোন শেষ নাই

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ৩)

 

৭৫. الظَّاهِرُ [আজ-জাহির] = সুস্পষ্ট, সুপ্রতীয়মান, বাহ্য (যা কিছু দেখা যায়)

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ৩)

 

৭৬. الْبَاطِنُ [আল-বাত্বিন] = লুক্কায়িত, অস্পষ্ট, অন্তরস্থ (যা কিছু দেখা যায় না)

 

هُوَ الْأَوَّلُ وَالْآخِرُ وَالظَّاهِرُ وَالْبَاطِنُ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনিই প্রথম, তিনিই সর্বশেষ, তিনিই প্রকাশমান ও অপ্রকাশমান এবং তিনি সব বিষয়ে সম্যক পরিজ্ঞাত। (সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ৩)

 

৭৭. الْوَالِيَ [আল-ওয়ালী] = সুরক্ষাকারী বন্ধু, অনুগ্রহকারী, বন্ধুত্বপূর্ণ প্রভু

 

لَهُ مُعَقِّبَاتٌ مِنْ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ يَحْفَظُونَهُ مِنْ أَمْرِ اللَّهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ لَا يُغَيِّرُ مَا بِقَوْمٍ حَتَّىٰ يُغَيِّرُوا مَا بِأَنْفُسِهِمْ ۗ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِقَوْمٍ سُوءًا فَلَا مَرَدَّ لَهُ ۚ وَمَا لَهُمْ مِنْ دُونِهِ مِنْ وَالٍ

 

বাংলা অনুবাদঃ তাঁর পক্ষ থেকে অনুসরণকারী রয়েছে তাদের অগ্রে এবং পশ্চাতে, আল্লাহর নির্দেশে তারা ওদের হেফাযত করে। আল্লাহ কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন করেন না, যে পর্যন্ত না তারা তাদের নিজেদের অবস্থা পরিবর্তন করে। আল্লাহ যখন কোন জাতির উপর বিপদ চান, তখন তা রদ হওয়ার নয় এবং তিনি ব্যতীত তাদের কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরাঃ রা’দ, আয়াতঃ ১১)

 

৭৮. الْمُتَعَالِ [আল-মুতা’আল] = সর্বোচ্চ মর্যাদাবান, সুউচ্চ

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

عَالِمُ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ الْكَبِيرُ الْمُتَعَالِ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনি সকল গোপন ও প্রকাশ্য বিষয় অবগত, মহোত্তম, সর্বোচ্চ মর্যাদাবান। (সূরাঃ রা’দ, আয়াতঃ ৯)

 

 

৭৯. الْبَرُّ [আল-বার্র] = কল্যাণকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

إِنَّا كُنَّا مِنْ قَبْلُ نَدْعُوهُ ۖ إِنَّهُ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আমরা পূর্বেও আল্লাহকে ডাকতাম। তিনি সৌজন্যশীল, পরম দয়ালু। (সূরাঃ আত্ব তূর, আয়াতঃ ২৮)

 

৮০. التَّوَّابُ [আত-তাওয়াব] = বিনম্র, সর্বদা আবর্তিতমান

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

أَلَمْ يَعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ هُوَ يَقْبَلُ التَّوْبَةَ عَنْ عِبَادِهِ وَيَأْخُذُ الصَّدَقَاتِ وَأَنَّ اللَّهَ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ তারা কি একথা জানতে পারেনি যে, আল্লাহ নিজেই স্বীয় বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং যাকাত গ্রহণ করেন? বস্তুতঃ আল্লাহই তওবা কবুলকারী, করুণাময়। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ১০৪)

 

إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا وَأَصْلَحُوا وَبَيَّنُوا فَأُولَٰئِكَ أَتُوبُ عَلَيْهِمْ ۚ وَأَنَا التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ তবে যারা তওবা করে এবং বর্ণিত তথ্যাদির সংশোধন করে মানুষের কাছে তা বর্ণনা করে দেয়, সে সমস্ত লোকের তওবা আমি কবুল করি এবং আমি তওবা কবুলকারী পরম দয়ালু। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১৬০)

 

رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِنَا أُمَّةً مُسْلِمَةً لَكَ وَأَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَا ۖ إِنَّكَ أَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ কর এবং আমাদের বংশধর থেকেও একটি অনুগত দল সৃষ্টি কর, আমাদের হজ্বের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা কর। নিশ্চয় তুমি তওবা কবুলকারী। দয়ালু। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১২৮)

 

وَإِذْ قَالَ مُوسَىٰ لِقَوْمِهِ يَا قَوْمِ إِنَّكُمْ ظَلَمْتُمْ أَنْفُسَكُمْ بِاتِّخَاذِكُمُ الْعِجْلَ فَتُوبُوا إِلَىٰ بَارِئِكُمْ فَاقْتُلُوا أَنْفُسَكُمْ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَكُمْ عِنْدَ بَارِئِكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ ۚ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ আর যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা তোমাদেরই ক্ষতিসাধন করেছ এই গোবৎস নির্মাণ করে। কাজেই এখন তওবা কর স্বীয় স্রষ্টার প্রতি এবং নিজ নিজ প্রাণ বিসর্জন দাও। এটাই তোমাদের জন্য কল্যাণকর তোমাদের স্রষ্টার নিকট। তারপর তোমাদের প্রতি লক্ষ্য করা হল। নিঃসন্দেহে তিনিই ক্ষমাকারী, অত্যন্ত মেহেরবান। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ৫৪)

 

فَتَلَقَّىٰ آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ ۚ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ

 

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ৩৭)

৮১ থেকে ৯০

৮১. الْمُنْتَقِمُ [আল-মুন্তাক্বিম] = প্রতিফল প্রদানকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرَىٰ إِنَّا مُنْتَقِمُونَ

বাংলা অনুবাদঃ যেদিন আমি প্রবলভাবে ধৃত করব, সেদিন পুরোপুরি প্রতিশোধ গ্রহণ করবই। (সূরাঃ আদ দোখান, আয়াতঃ ১৬)

 

فَإِمَّا نَذْهَبَنَّ بِكَ فَإِنَّا مِنْهُمْ مُنْتَقِمُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ অতঃপর আমি যদি আপনাকে নিয়ে যাই, তবু আমি তাদের কাছে থেকে প্রতিশোধ নেব। (সূরাঃ যুখরুফ, আয়াতঃ ৪১)

 

 

وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذُكِّرَ بِآيَاتِ رَبِّهِ ثُمَّ أَعْرَضَ عَنْهَا ۚ إِنَّا مِنَ الْمُجْرِمِينَ مُنْتَقِمُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ যে ব্যক্তিকে তার পালনকর্তার আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশ দান করা হয়, অতঃপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার চেয়ে যালেম আর কে? আমি অপরাধীদেরকে শাস্তি দেব। (সূরাঃ সেজদাহ, আয়াতঃ ২২)

 

৮২. الْعَفُوُّ [আল-’আফুউ] = শাস্তি মউকুফকারী, গুনাহ ক্ষমাকারী

 

فَأُولَٰئِكَ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَعْفُوَ عَنْهُمْ ۚ وَكَانَ اللَّهُ عَفُوًّا غَفُورًا

 

বাংলা অনুবাদঃ অতএব, আশা করা যায়, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ মার্জনাকারী, ক্ষমাশীল। (সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৯৯)

 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَىٰ حَتَّىٰ تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ وَلَا جُنُبًا إِلَّا عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّىٰ تَغْتَسِلُوا ۚ وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَىٰ أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا

 

বাংলা অনুবাদঃ হে ঈমাণদারগণ! তোমরা যখন নেশাগ্রস্ত থাক, তখন নামাযের ধারে-কাছেও যেওনা, যতক্ষণ না বুঝতে সক্ষম হও যা কিছু তোমরা বলছ, আর (নামাযের কাছে যেও না) ফরয গোসলের আবস্থায়ও যতক্ষণ না গোসল করে নাও। কিন্তু মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র আর যদি তোমরা অসুস্থ হয়ে থাক কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের মধ্য থেকে কেউ যদি প্রস্রাব-পায়খানা থেকে এসে থাকে কিংবা নারী গমন করে থাকে, কিন্তু পরে যদি পানিপ্রাপ্তি সম্ভব না হয়, তবে পাক-পবিত্র মাটির দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও-তাতে মুখমন্ডল ও হাতকে ঘষে নাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ক্ষমাশীল। (সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ৪৩)

 

৮৩. الرَّءُوفُ [আর-রাঊফ] = সদয়, সমবেদনা প্রকাশকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَالَّذِينَ جَاءُوا مِنْ بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ

বাংলা অনুবাদঃ আর এই সম্পদ তাদের জন্যে, যারা তাদের পরে আগমন করেছে। তারা বলেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদেরকে এবং ঈমানে আগ্রহী আমাদের ভ্রাতাগণকে ক্ষমা কর এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোন বিদ্বেষ রেখো না। হে আমাদের পালনকর্তা, আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়। (সূরাঃ আল হাশর, আয়াতঃ ১০)

 

لَقَدْ تَابَ اللَّهُ عَلَى النَّبِيِّ وَالْمُهَاجِرِينَ وَالْأَنْصَارِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ فِي سَاعَةِ الْعُسْرَةِ مِنْ بَعْدِ مَا كَادَ يَزِيغُ قُلُوبُ فَرِيقٍ مِنْهُمْ ثُمَّ تَابَ عَلَيْهِمْ ۚ إِنَّهُ بِهِمْ رَءُوفٌ رَحِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ দয়াশীল নবীর প্রতি এবং মুহাজির ও আনসারদের প্রতি, যারা কঠিন মহূর্তে নবীর সঙ্গে ছিল, যখন তাদের এক দলের অন্তর ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। অতঃপর তিনি দয়াপরবশ হন তাদের প্রতি। নিঃসন্দেহে তিনি তাদের প্রতি দয়াশীল ও করুনাময়। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ১১৭)

 

يَوْمَ تَجِدُ كُلُّ نَفْسٍ مَا عَمِلَتْ مِنْ خَيْرٍ مُحْضَرًا وَمَا عَمِلَتْ مِنْ سُوءٍ تَوَدُّ لَوْ أَنَّ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ أَمَدًا بَعِيدًا ۗ وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ ۗ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ

 

বাংলা অনুবাদঃ সেদিন প্রত্যেকেই যা কিছু সে ভাল কাজ করেছে; চোখের সামনে দেখতে পাবে এবং যা কিছু মন্দ কাজ করেছে তাও, ওরা তখন কামনা করবে, যদি তার এবং এসব কর্মের মধ্যে ব্যবধান দুরের হতো! আল্লাহ তাঁর নিজের সম্পর্কে তোমাদের সাবধান করছেন। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু। (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ৩০)

 

وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ ۗ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ

 

বাংলা অনুবাদঃ আর মানুষের মাঝে এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিকল্পে নিজেদের জানের বাজি রাখে। আল্লাহ হলেন তাঁর বান্দাদের প্রতি অত্যন্ত মেহেরবান। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ২০৭)

 

وَكَذَٰلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا ۗ وَمَا جَعَلْنَا الْقِبْلَةَ الَّتِي كُنْتَ عَلَيْهَا إِلَّا لِنَعْلَمَ مَنْ يَتَّبِعُ الرَّسُولَ مِمَّنْ يَنْقَلِبُ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ ۚ وَإِنْ كَانَتْ لَكَبِيرَةً إِلَّا عَلَى الَّذِينَ هَدَى اللَّهُ ۗ وَمَا كَانَ اللَّهُ لِيُضِيعَ إِيمَانَكُمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ এমনিভাবে আমি তোমাদেরকে মধ্যপন্থী সম্প্রদায় করেছি যাতে করে তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলীর জন্যে এবং যাতে রসূল সাক্ষ্যদাতা হন তোমাদের জন্য। আপনি যে কেবলার উপর ছিলেন, তাকে আমি এজন্যই কেবলা করেছিলাম, যাতে একথা প্রতীয়মান হয় যে, কে রসূলের অনুসারী থাকে আর কে পিঠটান দেয়। নিশ্চিতই এটা কঠোরতর বিষয়, কিন্তু তাদের জন্যে নয়, যাদেরকে আল্লাহ পথপ্রদর্শন করেছেন। আল্লাহ এমন নন যে, তোমাদের ঈমান নষ্ট করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ, মানুষের প্রতি অত্যন্ত স্নেহশীল, করুনাময়। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১৪৩)

 

৮৪. مَالِكُ الْمُلْكِ [মালিকুল মুলক] = সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

قُلِ اللَّهُمَّ مَالِكَ الْمُلْكِ تُؤْتِي الْمُلْكَ مَنْ تَشَاءُ وَتَنْزِعُ الْمُلْكَ مِمَّنْ تَشَاءُ وَتُعِزُّ مَنْ تَشَاءُ وَتُذِلُّ مَنْ تَشَاءُ ۖ بِيَدِكَ الْخَيْرُ ۖ إِنَّكَ عَلَىٰ كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

বাংলা অনুবাদঃ বলুন ইয়া আল্লাহ! তুমিই সার্বভৌম শক্তির অধিকারী। তুমি যাকে ইচ্ছা রাজ্য দান কর এবং যার কাছ থেকে ইচ্ছা রাজ্য ছিনিয়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছা সম্মান দান কর আর যাকে ইচ্ছা অপমানে পতিত কর। তোমারই হাতে রয়েছে যাবতীয় কল্যাণ। নিশ্চয়ই তুমি সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ২৬)

 

৮৫. ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ [যুল জালালি ওয়াল ইকরাম] = মর্যাদা ও ঔদার্যের মালিক, মহিমময় ও মহানুভব

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَيَبْقَىٰ وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

 

বাংলা অনুবাদঃ একমাত্র আপনার মহিমময় ও মহানুভব পালনকর্তার সত্তা ছাড়া। (সূরাঃ আর রহমান, আয়াতঃ ২৭)

 

 

৮৬. الْمُقْسِطُ [আল-মুক্বসিত] = ন্যায়পরায়ণ, প্রতিদানকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَإِنْ طَائِفَتَانِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ اقْتَتَلُوا فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا ۖ فَإِنْ بَغَتْ إِحْدَاهُمَا عَلَى الْأُخْرَىٰ فَقَاتِلُوا الَّتِي تَبْغِي حَتَّىٰ تَفِيءَ إِلَىٰ أَمْرِ اللَّهِ ۚ فَإِنْ فَاءَتْ فَأَصْلِحُوا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَأَقْسِطُوا ۖ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ

 

বাংলা অনুবাদঃ যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। অতঃপর যদি তাদের একদল অপর দলের উপর চড়াও হয়, তবে তোমরা আক্রমণকারী দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে; যে পর্যন্ত না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। যদি ফিরে আসে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে ন্যায়ানুগ পন্থায় মীমাংসা করে দিবে এবং ইনছাফ করবে। নিশ্চয় আল্লাহ ইনছাফকারীদেরকে পছন্দ করেন। (সূরাঃ আল হুজরাত, আয়াতঃ ৯)

 

سَمَّاعُونَ لِلْكَذِبِ أَكَّالُونَ لِلسُّحْتِ ۚ فَإِنْ جَاءُوكَ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ أَوْ أَعْرِضْ عَنْهُمْ ۖ وَإِنْ تُعْرِضْ عَنْهُمْ فَلَنْ يَضُرُّوكَ شَيْئًا ۖ وَإِنْ حَكَمْتَ فَاحْكُمْ بَيْنَهُمْ بِالْقِسْطِ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ

 

বাংলা অনুবাদঃ এরা মিথ্যা বলার জন্যে গুপ্তচরবৃত্তি করে, হারাম ভক্ষণ করে। অতএব, তারা যদি আপনার কাছে আসে, তবে হয় তাদের মধ্যে ফয়সালা করে দিন, না হয় তাদের ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকুন। যদি তাদের থেকে নির্লিপ্ত থাকেন, তবে তাদের সাধ্য নেই যে, আপনার বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারে। যদি ফয়সালা করেন, তবেন্যায় ভাবে ফয়সালা করুন। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালবাসেন। (সূরাঃ আল মায়িদাহ, আয়াতঃ ৪২)

 

 

قُلْ أَمَرَ رَبِّي بِالْقِسْطِ ۖ وَأَقِيمُوا وُجُوهَكُمْ عِنْدَ كُلِّ مَسْجِدٍ وَادْعُوهُ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ ۚ كَمَا بَدَأَكُمْ تَعُودُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক সুবিচারের নির্দেশ দিয়েছেন এবং তোমরা প্রত্যেক সেজদার সময় স্বীয় মুখমন্ডল সোজা রাখ এবং তাঁকে খাঁটি আনুগত্যশীল হয়ে ডাক। তোমাদেরকে প্রথমে যেমন সৃষ্টি করেছেন, পুনর্বারও সৃজিত হবে। (সূরাঃ আল আ’রাফ, আয়াতঃ ২৯)

 

 

لَا يَنْهَاكُمُ اللَّهُ عَنِ الَّذِينَ لَمْ يُقَاتِلُوكُمْ فِي الدِّينِ وَلَمْ يُخْرِجُوكُمْ مِنْ دِيَارِكُمْ أَنْ تَبَرُّوهُمْ وَتُقْسِطُوا إِلَيْهِمْ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِينَ

বাংলা অনুবাদঃ ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেনি এবং তোমাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কৃত করেনি, তাদের প্রতি সদাচরণ ও ইনসাফ করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদেরকে ভালবাসেন। (সূরাঃ আল মুমতাহিনা, আয়াতঃ ৮)

 

 

 

৮৭. الْجَامِعُ [আল-জামি’] = সমবেতকারী, একত্রকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللَّهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلَا تَقْعُدُوا مَعَهُمْ حَتَّىٰ يَخُوضُوا فِي حَدِيثٍ غَيْرِهِ ۚ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِينَ وَالْكَافِرِينَ فِي جَهَنَّمَ جَمِيعًا

 

বাংলা অনুবাদঃ আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন। (সূরাঃ আন নিসা, আয়াতঃ ১৪০)

 

رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لَا رَيْبَ فِيهِ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيعَادَ

 

বাংলা অনুবাদঃ হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি মানুষকে একদিন অবশ্যই একত্রিত করবেঃ এতে কোনই সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর ওয়াদার অন্যথা করেন না। (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ৯)

 

 

৮৮. الْغَنِيُّ [আল-গনী] = ঐশ্বর্যবান, স্বতন্ত্র

 

 

৮৯. الْمُغْنِي [আল-মুগনী] = সমৃদ্ধকারী, উদ্ধারকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ নেই, তবে ক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে

 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْمُشْرِكُونَ نَجَسٌ فَلَا يَقْرَبُوا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ بَعْدَ عَامِهِمْ هَٰذَا ۚ وَإِنْ خِفْتُمْ عَيْلَةً فَسَوْفَ يُغْنِيكُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ إِنْ شَاءَ ۚ إِنَّ اللَّهَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা দারিদ্রে?480; আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। (সূরাঃ আত তাওবাহ, আয়াতঃ ২৮)

 

৯০. الْمَانِعُ [আল-মানি’] = প্রতিরোধকারী, প্রতিবন্ধক

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ নেই, তবে ক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে

 

وَمَا مَنَعَنَا أَنْ نُرْسِلَ بِالْآيَاتِ إِلَّا أَنْ كَذَّبَ بِهَا الْأَوَّلُونَ ۚ وَآتَيْنَا ثَمُودَ النَّاقَةَ مُبْصِرَةً فَظَلَمُوا بِهَا ۚ وَمَا نُرْسِلُ بِالْآيَاتِ إِلَّا تَخْوِيفًا

 

বাংলা অনুবাদঃ পূর্ববর্তীগণ কতৃক নিদর্শন অস্বীকার করার ফলেই আমাকে নিদর্শনাবলী প্রেরণ থেকে বিরত থাকতে হয়েছে। আমি তাদেরকে বোঝাবার জন্যে সামুদকে উষ্ট্রী দিয়েছিলাম। অতঃপর তারা তার প্রতি জুলুম করেছিল। আমি ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশেই নিদর্শন প্রেরণ করি। (সূরাঃ বনী ইসরাঈল, আয়াতঃ ৫৯)

 

 

النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ خَلْفَ الصَّلاَةِ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ اللهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ

 

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাতের পরে لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَه অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, তিনি অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই। হে আল্লাহ্! তুমি যা দাও তা রোধকারী কেউ নেই। আর তুমি যা রোধ কর তা দানকারী কেউ নেই। তুমি ব্যতীত ধনীর ধন কোন ফল দিতে পারবে না। [বুখারী: ৬১৬২]

 

৯১ থেকে ৯৯

৯১. الضَّارُّ [আদ-দ্বার] = ক্ষতির মালিক, অকল্যানের মালিক

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ নেই, তবে ক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে

 

قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۚ وَلَوْ كُنْتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ ۚ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য। (সূরাঃ আল আ’রাফ, আয়াতঃ ১৮৮)

 

قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي ضَرًّا وَلَا نَفْعًا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۗ لِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ ۚ إِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ فَلَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً ۖ وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ তুমি বল, আমি আমার নিজের ক্ষতি কিংবা লাভেরও মালিক নই, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই একেকটি ওয়াদা রয়েছে, যখন তাদের সে ওয়াদা এসে পৌঁছে যাবে, তখন না একদন্ড পেছনে সরতে পারবে, না সামনে ফসকাতে পারবে। (সূরাঃ ইউনুস, আয়াতঃ ৪৯)

 

৯২. النَّافِعُ [আন-নাফি’] = অনুগ্রাহক, উপকর্তা, হিতকারী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ নেই, তবে ক্রিয়ার উল্লেখ রয়েছে

 

قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۚ وَلَوْ كُنْتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ ۚ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য। (সূরাঃ আল আ’রাফ, আয়াতঃ ১৮৮)

 

 

قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي ضَرًّا وَلَا نَفْعًا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ ۗ لِكُلِّ أُمَّةٍ أَجَلٌ ۚ إِذَا جَاءَ أَجَلُهُمْ فَلَا يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً ۖ وَلَا يَسْتَقْدِمُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ তুমি বল, আমি আমার নিজের ক্ষতি কিংবা লাভেরও মালিক নই, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যই একেকটি ওয়াদা রয়েছে, যখন তাদের সে ওয়াদা এসে পৌঁছে যাবে, তখন না একদন্ড পেছনে সরতে পারবে, না সামনে ফসকাতে পারবে। (সূরাঃ ইউনুস, আয়াতঃ ৪৯)

 

 

৯৩. النُّورُ [আন-নূর] = আলোক, রোশনী, রশ্মী

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

اللَّهُ نُورُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ مَثَلُ نُورِهِ كَمِشْكَاةٍ فِيهَا مِصْبَاحٌ ۖ الْمِصْبَاحُ فِي زُجَاجَةٍ ۖ الزُّجَاجَةُ كَأَنَّهَا كَوْكَبٌ دُرِّيٌّ يُوقَدُ مِنْ شَجَرَةٍ مُبَارَكَةٍ زَيْتُونَةٍ لَا شَرْقِيَّةٍ وَلَا غَرْبِيَّةٍ يَكَادُ زَيْتُهَا يُضِيءُ وَلَوْ لَمْ تَمْسَسْهُ نَارٌ ۚ نُورٌ عَلَىٰ نُورٍ ۗ يَهْدِي اللَّهُ لِنُورِهِ مَنْ يَشَاءُ ۚ وَيَضْرِبُ اللَّهُ الْأَمْثَالَ لِلنَّاسِ ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উদাহরণ যেন একটি কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্য। তাতে পুতঃপবিত্র যয়তুন বৃক্ষের তৈল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। জ্যোতির উপর জ্যোতি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান তাঁর জ্যোতির দিকে। আল্লাহ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত। (সূরাঃ আন-নূর, আয়াতঃ ৩৫)

 

৯৪. الْهَادِي [আল-হাদী] = পথপ্রদর্শক

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

وَلِيَعْلَمَ الَّذِينَ أُوتُوا الْعِلْمَ أَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَيُؤْمِنُوا بِهِ فَتُخْبِتَ لَهُ قُلُوبُهُمْ ۗ وَإِنَّ اللَّهَ لَهَادِ الَّذِينَ آمَنُوا إِلَىٰ صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

 

বাংলা অনুবাদঃ এবং এ কারণেও যে, যাদেরকে জ্ঞানদান করা হয়েছে; তারা যেন জানে যে এটা আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সত্য; অতঃপর তারা যেন এতে বিশ্বাস স্তাপন করে এবং তাদের অন্তর যেন এর প্রতি বিজয়ী হয়। আল্লাহই বিশ্বাস স্থাপনকারীকে সরল পথ প্রদর্শন করেন। (সূরাঃ হাজ্জ্ব, আয়াতঃ ৫৪)

 

 

৯৫. الْبَدِيعُ [আল-বাদী’] = আদী স্রষ্টা, অনিধগম্য

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ أَنَّىٰ يَكُونُ لَهُ وَلَدٌ وَلَمْ تَكُنْ لَهُ صَاحِبَةٌ ۖ وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ ۖ وَهُوَ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের আদি স্রষ্টা। কিরূপে আল্লাহর পুত্র হতে পারে, অথচ তাঁর কোন সঙ্গী নেই ? তিনি যাবতীয় কিছু সৃষ্টি করেছেন। তিনি সব বস্তু সম্পর্কে সুবিজ্ঞ। (সূরাঃ আল আনআম, আয়াতঃ ১০১)

 

بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَإِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ

 

বাংলা অনুবাদঃ তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উদ্ভাবক। যখন তিনি কোন কার্য সম্পাদনের সিন্ধান্ত নেন, তখন সেটিকে একথাই বলেন, ‘হয়ে যাও’ তৎক্ষণাৎ তা হয়ে যায়। (সূরাঃ আল বাকারা, আয়াতঃ ১১৭)

 

৯৬. الْبَاقِي [আল-বাকী] = অনন্ত, অসীম, অক্ষয়

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

কুরআনে হুবহু এ নামটির উল্লেখ নেই, তবে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এ নামের ক্রিয়ার উল্লেখ হয়েছে।

 

 

وَيَبْقَىٰ وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

 

বাংলা অনুবাদঃ একমাত্র আপনার মহিমায় ও মহানুভব পালনকর্তার সত্তা ছাড়া। (সূরাঃ আর রহমান, আয়াতঃ ২৭)

 

৯৭. الْوَارِثُ [আল-ওয়ারিস] = সবকিছুর উত্তরাধিকারী

 

وَإِنَّا لَنَحْنُ نُحْيِي وَنُمِيتُ وَنَحْنُ الْوَارِثُونَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আমিই জীবনদান করি, মৃত্যুদান করি এবং আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী। (সূরাঃ হিজর, আয়াতঃ ২৩)

 

وَمَا لَكُمْ أَلَّا تُنْفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۚ لَا يَسْتَوِي مِنْكُمْ مَنْ أَنْفَقَ مِنْ قَبْلِ الْفَتْحِ وَقَاتَلَ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْظَمُ دَرَجَةً مِنَ الَّذِينَ أَنْفَقُوا مِنْ بَعْدُ وَقَاتَلُوا ۚ وَكُلًّا وَعَدَ اللَّهُ الْحُسْنَىٰ ۚ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ তোমাদেরকে আল্লাহর পথে ব্যয় করতে কিসে বাধা দেয়, যখন আল্লাহই নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের উত্তরাধিকারী? তোমাদের মধ্যে যে মক্কা বিজয়ের পূর্বে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে, সে সমান নয়। এরূপ লোকদের মর্যদা বড় তাদের অপেক্ষা, যার পরে ব্যয় করেছে ও জেহাদ করেছে। তবে আল্লাহ উভয়কে কল্যাণের ওয়াদা দিয়েছেন। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। (সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ১০)

 

وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَهُمْ ۖ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَهُمْ ۖ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ۗ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ

 

বাংলা অনুবাদঃ আল্লাহ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে এই কার্পন্য তাদের জন্য মঙ্গলকর হবে বলে তারা যেন ধারণা না করে। বরং এটা তাদের পক্ষে একান্তই ক্ষতিকর প্রতিপন্ন হবে। যাতে তারা কার্পন্য করে সে সমস্ত ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ী বানিয়ে পরানো হবে। আর আল্লাহ হচ্ছেন আসমান ও যমীনের পরম সত্ত্বাধিকারী। আর যা কিছু তোমরা কর; আল্লাহ সে সম্পর্কে জানেন। (সূরাঃ আল ইমরান, আয়াতঃ ১৮০)

 

৯৮. الرَّشِيدُ [আর-রাশীদ] = সঠিক পথের নির্দেশক

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

কুরআনে হুবহু এ নামটির উল্লেখ নেই, তবে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে এ নামের ক্রিয়ার উল্লেখ হয়েছে।

 

 

وَلَقَدْ آتَيْنَا إِبْرَاهِيمَ رُشْدَهُ مِنْ قَبْلُ وَكُنَّا بِهِ عَالِمِينَ

 

বাংলা অনুবাদঃ আর, আমি ইতিপূর্বে ইব্রাহীমকে তার সৎপন্থা দান করেছিলাম এবং আমি তার সম্পর্কে সম্যক পরিজ্ঞাত ও ছিলাম। (সূরাঃ আম্বিয়া, আয়াতঃ ৫১)

 

وَتَرَى الشَّمْسَ إِذَا طَلَعَتْ تَزَاوَرُ عَنْ كَهْفِهِمْ ذَاتَ الْيَمِينِ وَإِذَا غَرَبَتْ تَقْرِضُهُمْ ذَاتَ الشِّمَالِ وَهُمْ فِي فَجْوَةٍ مِنْهُ ۚ ذَٰلِكَ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ ۗ مَنْ يَهْدِ اللَّهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ ۖ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَنْ تَجِدَ لَهُ وَلِيًّا مُرْشِدًا

 

বাংলা অনুবাদঃ তুমি সূর্যকে দেখবে, যখন উদিত হয়, তাদের গুহা থেকে পাশ কেটে ডান দিকে চলে যায় এবং যখন অস্ত যায়, তাদের থেকে পাশ কেটে বামদিকে চলে যায়, অথচ তারা গুহার প্রশস্ত চত্বরে অবস্থিত। এটা আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্যতম। আল্লাহ যাকে সৎপথে চালান, সেই সৎপথ প্রাপ্ত এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, আপনি কখনও তার জন্যে পথপ্রদর্শনকারী ও সাহায্যকারী পাবেন না। (সূরাঃ কাহফ, আয়াতঃ ১৭)

 

 

৯৯. الصَّبُورُ [আস-সাবূর] = ধৈর্যশীল

 

কুরআনে এ নামের উল্লেখ

 

কুরআনে হুবহু এ নামটির উল্লেখ নেই, তবে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে ও সহীহ বুখারীর হাদীসে এ নামের ক্রিয়ার উল্লেখ হয়েছে।

 

النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لَيْسَ أَحَدٌ ـ أَوْ لَيْسَ شَىْءٌ ـ أَصْبَرَ عَلَى أَذًى سَمِعَهُ مِنَ اللَّهِ، إِنَّهُمْ لَيَدْعُونَ لَهُ وَلَدًا، وَإِنَّهُ لَيُعَافِيهِمْ وَيَرْزُقُهُمْ ‏”‏‏.‏

 

আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কষ্টদায়ক কথা শোনার পর আল্লাহ তা‘আলার চেয়ে বেশি ধৈর্যধারণকারী কেউ বা কোন কিছুই নেই। লোকেরা তাঁর জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে, এরপরও তিনি তাদের বিপদ মুক্ত রাখেন এবং রিয্ক দান করেন। [বুখারী: ৫৫৫৬,মুসলিম ৫০/৯, হা: ২৮০৪, আহমাদ: ১৯৫৪৪]

 

وقال المناوي في فيض القدير: والصبور الذي لا يستعجل في مؤاخذة العصاة

 

ফয়যুল কাদীর গ্রন্থ এসেছে, সাবুর তাঁকে বলা হয়, যিনি গুনাহগারদেরকে পাকড়াও করার ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি করেন না।

 

আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে তাঁর সুন্দর সুন্দর নামসমূহ মুখস্থ করার এবং তাঁর গুণে গুণান্বিত হওয়ার তাওফীক দান করুন।

 

আরো পড়ুনঃ


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

Author: লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান। ঠিকানা: নোয়াখালী। কর্ম: ছাত্র। পড়াশোনা: আল-ইফতা ওয়াল হাদীস [চলমান] প্রতিষ্ঠান: মাদরাসাতু ফায়দ্বিল 'উলূম নোয়াখালী।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

Leave a Reply