গল্প- এখনো তোমাকে ভালোবাসি- আফছানা খানম অথৈ

0

আকাশ ও শিলা দু’জনের রিলেশনের বিয়ে।আকাশ পরিবারের সেঝো ছেলে মাস্টার্স পড়ে। বড় দু’ভাই এখনো বিয়ে করেনি। তাই বিয়েটা আপাতত গোপন রাখা হয়েছে।শিলা পরিবারের ছোট মেয়ে।এখনো লেখা পড়া শেষ হয়নি অনার্সে পড়ে।পরিবারের কাউকে না জানিয়ে বিয়ে..। তাছাড়া একটা বেকার ছেলেকে বিয়ে কেউ মেনে নেয়নি।দুই পরিবার অসন্তোষ্ট।দু’জনে হোস্টেলে থেকে লেখা পড়া করতো।বিয়ে করার পর হোস্টেল ছেড়ে দিয়ে ভাড়া বাসায় উঠল।কিন্তু দু’জনে ছাত্র সংসারের খরচ কিভাবে চালাবে। শিলার বাবা কয়েক মাস আগে মারা যান।শিলার লেখা পড়া, বিয়ে শাদী এসবের জন্য তিন লক্ষ টাকা ব্যাংকে তার নামে একাউন্ট করে রেখে যান।একাউন্ট থেকে কিছু টাকা তুলে শিলা কোনমতে বাসা ভাড়া সংসারের খরচ বহন করছে।

শিলা টিউশনি করছে, আকাশ এখনো কিছু করছে না।কিছুদিন যেতে না যেতে একদিন লাঞ্চের পর, আকাশের খুব জ্বরও পেট ব্যথা শুরু হয়।গ্যাস্টিক মনে করে পল্লী চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু গ্যাস্টিকের ঔষধ খাওয়ায়।কিন্তু ভালো হওয়াতো দূরের কথা, এতে আর ও রিয়েকশন।রোগ আরও বেড়ে যায়।শিলা আর সহ্য করতে পারলো না। বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল।ডাক্তার কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা দিলেন।রিপোর্ট হাতে আসতে ডাক্তার শিলাকে বলল, রোগী আপনার কি হয়? আমার হাজব্যন্ড। শুনুন রিপোর্টে যা দেখলাম।উনি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত। কথাগুলো শুনা মাত্রই শিলার হৃদকম্প শুরু হলো। সে নিরব নিস্তব্ধ, মুখ বন্ধ হয়ে আসছে কথা বলতে পারছে না। আর ডাক্তার তা বুঝতে পেরে বলল, হ্যালো একেবারে নিরব হয়ে গেলেন যে,স্বামীর চিকিৎসা করাবেন না। চিকিৎসার কথা শুনে তার দেহে স্বস্থি ফিরে আসল।অতপর জানতে চাইল, ডাক্তার সাহেব চিকিৎসা হবেতো? “ইনশাআল্লাহ” হবে।তবে ব্যয় বহুল। কত টাকা লাগতে পারে? তা সিউর বলতে পারবো না।তবে রোগ এখনো চিকিৎসার আওতাধীন আছে। আপনি টেনশন করবেন না।টাকাগুলো কিন্তু এক সঙ্গে লাগবে না।ঠিক সময় মতো ঔষধ খাওয়াবেন,তা না হলে রোগ বেড়ে যেতে পারে। আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি। পনেরো দিন পরে আবার আসবেন। ওকে স্যার আসসালামু আলাইকুম।

শিলা তার স্বামীকে ঠিক সময় মতো ঔধষ পথ্য ও সেবাযত্ন সব করছে। আকাশের হাত একেবারে খালী। পাছে পরিবারের সাথে রিলেশন ও বিচ্ছিন্ন এক প্রকার অসহায় অবস্থা তার।শিলা যদি তাকে ছেড়ে যাই।এই ভয় তার ভিতরে কাজ করে সব সময় ।তাই মাঝে মধ্যে করুণ কণ্ঠে বলে, শিলা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তো কি হয়েছে, হঠাৎ এ কথা। না… মানে ইয়ে, আমি অসুস্থ মানুষ, তার উপরে বেকার। বোঝাটা ভারী হয়ে যাচ্ছে না? তাতো অবশ্যই।তাই বলে স্বামীকে তো আর ফেলা দেয়া যায় না। পুরুষের পক্ষে তা সম্ভব হলেও মেয়েদের পক্ষে তা অসম্ভব। শিলা তুমি আমাকে অন্য আট দশটা পুরুষের সঙ্গে তুলো না করো না।অনেক সাধনার পর তোমাকে পেয়েছি। তুমি যদি সেইদিন আমার ভালোবাসার ডাকে সাড়া না দিতে তাহলে সত্যি আমি চলন্ত ট্রেনের নিচে মাথা ঠুকে মরতাম। তাইতো তোমাকে আমি এতো ভালোবাসি।পরিবারের সাথে পর্যন্ত রিলেশন বন্ধ।এরপরও সন্দেহ। না ঠিক তাই বলিনি। তো আর কোন কথা নয় ঔষধ গুলো খেয়ে নাও।তা না হলে রোগ….। তা না হলে কি, থামলে কেনো বলো। রোগ বেড়ে যাবে শুনলে আকাশ টেনশন করবে। তাই আসল সত্যকে লুকিয়ে, সহজ ভাষায় বলে, বললাম না সিরিয়াস কিছু না।সময় মতো ঔষধ সেবন করলে তুমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যাবে। সত্যি বলছো তো? ওকে সত্যি। এবার ভালোই ভালোই ঔষধ খেয়ে শুয়ে পড়।তোমাকে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত রেষ্টে থাকতে হবে। ওকে জান তুমি শুয়ে পড়। এমনিতে শরীরের উপর দিয়ে অনেক দখল যাচ্ছে। ভালোবাসার মানুষের জন্য এ আর এমন কি।এমন না হলে কি, আদর্শ নারী। আকাশ তার মুখের দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে মনে মনে বলে, শিলা আমাকে অসম্ভব রকম ভালোবাসে। আমি কি পারবো তার ভালোবাসার মুল্য দিতে? সুস্থ স্বাবলম্বী হয়ে তার মুখে হাসি ফোটাতে। নাকি জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পরপারে চলে যাব। মরার কথা মনে পড়তেই তার চোখ জোড়া জলে ভরে উঠল,হৃদয়ের সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে বলে, না না আমি মরতে চাইনা, বাঁচতে চাই। শিলাকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করতে চাই।শিলা আমার জান, শিলা আমার প্রাণ। দেহ থেকে প্রাণ যেমন আলাদা করা যায় না।তেমনি শিলাকে ছাড়াও আমি এক মুহূর্ত থাকতে পারবো না।খোদা আমাকে সম্পূর্ণ সুস্থ সবল করে দাও। আমি যেন আমার ভালোবাসার শিলাকে নিয়ে সুখের স্বর্গ রচনা করতে পারি। এদিকে শিলা টিউশনি শেষ করে এসে দেখে আকাশ এখনো শুয়ে আছে। তখনি শিলা জানতে চাইল। আকাশ ঔষধ পথ্য খেয়েছ? তোমাকে ছাড়া আমি কখনো খাই। হয়েছে হয়েছে আর ঢং করতে হবে না। আমি খাবার রেডি করছি।তুমি হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে আস।আবার ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। আবার ডাক্তারের কাছে কেনো? বারে এরি মধ্যে সব ভুলে গেলে। পনেরো দিন পর ডাক্তার যেতে বলেছে না। শিলা আকাশকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেল।ডাক্তার দেখলেন রোগের তেমন পরিবর্তন হয়নি।তিনি কিছু ঔষধ রদবদল করে দিলেন।আবার পনের দিন পর যেতে বললেন। শিলা সাধ্যমত চেষ্টা করছে আকাশকে সুস্থ করার জন্য। এদিকে আকাশের অসুস্থার খবরটা শিলার পরিবার জেনে গেছে।শিলার পরিবার থেকে চাপ দেয়া হচ্ছে আকাশকে ত্যাগ করার জন্য।কারণ কোন অবিভাবক চাইবেন না সন্তানের অমঙ্গল।তাই সময় থাকতে শিলাকে হুশিয়ারী সংকেত দিলেন।কিন্তু শিলা কিছুতেই রাজি হলো না।কারণ সে আকাশকে অসম্ভব রকম ভালোবাসে।

এদিকে আকাশের বাবা-মা ছেলের অসুস্থতার কথা শোনে ছুটে আসে শিলার কাছে।আকাশের মা শিলাকে জড়িয়ে ধরে মায়া কান্নায় কেঁদে বলে, মা তুমি কখনো আমার ছেলেকে পর করে দিওনা।সে তোমাকে তার প্রাণের চেয়ে ও বেশি ভালোবাসে।তোমার ভালোবাসা ও সেবাযত্ন পেলে আকাশ সুস্থ সবল হয়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ। শিলা শ্বাশু মার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে, মা আপনি দোয়া করবেন যেন আমি কামিয়াব হতে পারি। মা দোয়া করি আল্লাহ যেন তোদেরকে সুখি করেন ।মা অসুস্থ ভেবে আমার ছেলেটাকে পর করে দিসনা। একজন আদর্শ নারী কখনো স্বামী অসুস্থ হলে ও তাকে ফেলে রেখে যেতে পারে না।যত কঠিন রোগ হোক তবুও না। শিলাকে কিছু সৎ উপদেশ দিয়ে আকাশের মা-বাবা বিদায় নিলো।শিলা স্বামীর সেবাযত্ন ও ঔষধ পথ্য নিয়ে ব্যস্ত।এমন সময় আসে শিলার মায়ের ফোন, শিলা হ্যালো বলে সালাম দিয়ে জানতে চাইল, মা কেমন আছ? মা কড়া ধমক দিয়ে বলে, কেমন আর থাকবো, তুই কি আমাদেরকে ভালো থাকতে দিয়েছিস? মা আমি আবার কি করলাম? কি করলি মানে, একটা অসুস্থ রোগা বেকার ছেলেকে নিয়ে সংসার পেতেছিস।এখনো সময় আছে, তোর জীবন শেষ হয়ে যাইনি।ওকে ছেড়ে চলে আস।কেনো নিজের টাকাগুলো তার পিছনে উড়াচ্ছিস?একদিন তোকে এর প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।এ আমি বলে রাখলাম।এখনো সময় আছে যা করার বুঝে শুনে কর। আকাশকে ত্যাগ করার কথা বললে শিলার রাগ উঠে যায়।তাই মাকে রেগে বলে, মা তুমি থামবে? ভালো কথা বললে রাগ উঠে না? আগাম বলে রাখলাম। একদিন তোকে ফসকাতে হবে।তখন হায় হায় করলে ও তোর ডাকে কেউ সাড়া দেবে না। মা হয়েছে হয়েছে আর উপদেশ দিতে হবে না।আমি ফোন রাখলাম। সন্তান যখন প্রেমে পড়ে অবিভাবকের ভালো উপদেশ ও তাদের কাছে তেতো লাগে।শিলার বেলায় ও তাই হলো।দু’মায়ের দু’উপদেশ তার মাথায় গুল পাকিয়ে দিয়েছে।কার উপদেশ রাখবে আর কার উপদেশ বর্জন করবে ভেবে পাচ্ছে না। শিলা কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনঢ়।সে তার ভালোবাসার মানুষকে বাঁচানোর জন্য সংগ্রাম করে চলেছে।পনেরো দিন শেষ হলো রোগের কোন পরিবর্তন হলো না।এরপর আরেক ডাক্তার সে ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পনেরো দিনের ঔষধ দিলো।এতে ও রোগের কোন পরিবর্তন হলো না।এভাবে সে চতুর্থ ডাক্তার বাদ দিয়ে পঞ্চম ডাক্তারের ধর্না ধরলো। উনি গ্যাস্ট্রো লিভার ও জন্ডিস বিশেষজ্ঞ।যাক তার চিকিৎসায় সে আল্লাহর রহমতে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলো। সংগ্রামী শিলা শেষ পর্যন্ত জয়ী হলো।তার অসম্ভব রকম ভালোবাসা, ও সেবাযত্নে আকাশ সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠল। শিলার বাবার রেখে যাওয়া সব টাকা শেষ।

এত সংগ্রামের পর ও শিলা লেখা পড়া ছাড়েনি।অনার্স কমপ্লিট করেছে।জমানো টাকা শেষ,এবার সংসার চালাবে কি করে। শিলা বিভিন্ন জাগায় চাকরীর জন্য ইনটারভিউ ও ধর্না ধরে চলেছে। যাক অনেক সংগ্রামের পর আল্লাহপাক মুখ তুলে চেয়েছেন।বায়িং হাইজে ভালো একটা পদে তার চাকরী হয়। মোটামুটি দুই পরিবারের হ্রেষা হ্রেষি ঘেষা ঘেষি সম্পর্ক আপাতত শেষ।গুড় রিলেশন ঘড়ে উঠল দুই পরিবারের মাঝে।শিলার উপার্জনের টাকায় মাস্টার্স কমপ্লিট করলো আকাশ। এবার সে চাকরীর জন্য ইনটারভিউ দেয়া শুরু করলো। কয়েকটা এক্সাম দেয়ার পর তারও প্রাইভেট কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে চাকরী হয়ে গেল।দু’জনেরি আয় ভালো।মাস শেষ পকেট ভর্তি টাকা। দু’জনের চোখে মুখে হাসির রেখা, খুব সুখী তারা।শিলা ও আকাশের ভালোবাসা খুব করে ফুটে উঠল।আকাশের রুগ্ন চেহারার ভাব কেটে গেল।আগের শার্ট ফ্যান্ট এখন আর তার গায়ে লাগে না।নতুন টাকা নতুন শার্ট ফ্যান্ট একেবারে রাজার হালে জীবন যাপন।সুখ শান্তি যেন উপছে পড়ছে। এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস। একদিন তার মুঠোফোনে একটা মেয়ের ফোন আসে।সে হ্যালো বলে দু’চারটা কথা বলে ফোন রেখে দেয়। মেয়েটিকে তার ফালতু মনে হলো।সে সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটির কথা শিলার কাছে প্রকাশ করলো।শুধু তাই নয় বন্ধু মহলের কয়েক জনকে মেয়েটির নাম্বার দিয়ে সিরিয়াস ভাবে অপমান করলো। এভাবে কেটে গেল সপ্তাহ খানেক।মেয়েটি প্রতিদিন ফোন করে।এবার আকাশ আর থেমে থাকতে পারলো না।মেয়েটির ডাকে সাড়া দিলো। খুব করে মজে গেল তার প্রেমে। রাত দিন চব্বিশ ঘন্টা ফোনালাপন নিয়ে ব্যস্ত।এখন আর শিলার প্রতি তার মন নেই।আগের মতো ভালোবাসা বাসি আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে না।শিলা এখন তার চক্ষের শুল।পান থেকে চুন খসলে চলে তার উপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন।

একদিন সকাল বেলা নাস্তা রেডি করে আকাশকে ডাকতে গেলে সে কটাক্ষ করে বলে, আমি খাব না,বাইরে গিয়ে খাব। শিলা বাড়াবাড়ি না করে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হলো।বাসা থেকে এক পা এগিয়ে দিলো,তখনি আকাশ কড়া ভাষায় বলল, শিলা আমার জন্য নাস্তা নিয়ে এসো। অনেক নির্যাতনের পর শিলার মুখ দিয়ে কিছু কথা বের হলো, এইমাত্র বললে না, তুমি বাইরে খাবে। তখন বলেছি তাতে কি হয়েছি, এখন খাব,তাড়াতাড়ি নাস্তা নিয়ে এসো। আমার অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে। তাতে কি হয়েছে। কি হয়েছে মানে, আকাশ আমি ইদানীং লক্ষ করছি, তুমি আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছ।কথায় কথায় দোষ ধর। পান থেকে চুন খসলে গায়ে হাত তোল।তুমি কি ওই মেয়েটির প্রেমে..। মেয়েটির কথা মুখে আনতেই সে তার গায়ে হাত তোলে এবং ধাক্কা মেরে সিঁডির নিচে ফেলে দেয়।শিলা প্রচণ্ড আঘাত পায় শরীর ক্ষত বিক্ষত এবং প্রচুর রক্তক্ষণ,হয়। আকাশ তার দিকে ফিরে ও তাকাইনি। শিলার কিছু হলে জমিদার ফেঁসে যাবে তাই নিজের দায়িত্বে হাসপাতালে নিয়ে গেল।সুস্থ হওয়ার পর শিলা বাসায় ফিরে আসল। আকাশ তার দিকে ফিরে ও তাকায় না।ঘন্টার পর ঘন্টা ও মেয়েটির সঙ্গে পরকীয়া করে। অনেক রাত করে বাসায় ফিরে। কারণ জানতে চাইলে শিলাকে মারধর করে। এমনি নির্যাতনের মধ্য দিয়ে কয়েক মাস কেটে গেল।এত নির্যাতনের পর ও আকাশের প্রতি শিলার ভালোবাসার কমতি নেই।ঠিকমতো দেখাভাল করে।সবকিছু চাওয়ার আগে রেডি করে রাখে। নাস্তা পানি,লাঞ্চ জামা-কাপড়, পরিষ্কার, সবকিছু শিলা করে দেয়। সংসার এবং চাকরী দুটো সে এক সঙ্গে করে, তবুও আকাশের প্রতি কোন অভিযোগ নেই।সে চাই শুধু স্বামীর ভালোবাসা ও অধিকার। কিন্তু আকাশ মানলে তো!সে ঐ মেয়েটির সঙ্গে গুড় রিলেশন গড়ে তোলে।আজ কয়েক মাস ধরে আকাশের সাথে শিলার মনোসংযোগ নেই।একই রুমে বসতি অথচ কারো সাথে কারো রিলেশন মানে ভালোবাসাবাসি নেই।শিলা আর কত সহ্য করবে। আকাশকে সুস্থ করার জন্য তার সর্বস্ব্য শেষ।আজ হৃদয়টা দখল করে বসে আছে অন্য এক নারী।তার পরিবারের লোকজন শুনলে কি ভাববে এই ভয়ে নিজের দুঃখকে নিজের ভিতরে লুকিয়ে রেখছে।এত সব টেনশন ভোগ করতে গিয়ে তার চেহারায় ফ্যাকাসে ভাব, চোখের কোনায় কালি,শরীর শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।

প্রায় সপ্তাহ খানেক হলো আকাশ বাসায় ফিরছে না।শিলা ফোন করে জানতে চাইলে,আকাশ বলে, আমি অফিসের কাজে বাইরে এসেছি। ফিরতে দেরী হবে।তুমি আর ফোন করো না। শিলা উত্তর দেয়, আমি ফোন করবো না মানে। শিলা তুমি এত বাড়াবাড়ি করছ কেন? বাড়াবাড়ি মানে, তুমি কি বলতে চাও? তুমি আর আমার কাছে ফোন করো না। স্বামীর কাছে স্ত্রী ফোন করবে এতে দোষের কি দেখলে? তুমি এত প্যাঁচাল কর কেনো? আমি প্যাঁচাল করি, না তুমি কর? তোমার সাথে ফোনে কথা বলতে আমার রুচিতে বাঁধছে। হঠাৎ অরুচি হওয়ার মানে কী? আমার পরিবার তোমাকে বউ হিসেবে মেনে নেবে না। কারণ কি? কারণ আমার বড় দু’ভাই এখনো বিয়ে করেনি তাই। তো একথা তোমার আগে মনে ছিলো না।এত নিষেধ করলাম এরপর ও তুমি আমার পিছু ছাড়লে না।তাছাড়া সে দিন তোমার মা তো এসব কথা বলেনি।বরং মায়া কান্না কেঁদে ছেলেটাকে ভালো ভাবে দেখাভাল,,করার কথা বলেছেন। তখন বলেছিল, এখন আর বলবে না।কারণ তোমার দ্বারা আমার সংসার হবে না। কেনো, আমি কি পঙ্গু হয়ে গেছি? হওনি,তবে হতে কতক্ষণ তোমার চেহার যা হাল হয়েছে না…। এসবের জন্য তুমি দায়ী।তোমাকে সুস্থ করতে গিয়ে.আজ আমার এ অবস্থা, আমার সর্বস্ব্য শেষ করে তুমি এসব চুতা দেখাচ্ছ না। অতসত বুঝি না পরিবারকে কষ্ট দিয়ে আমি তোমার সাথে সংসার করতে পারবো না। যখন তুমি অসুস্থ ছিলে তখন তোমার পরিবার কোথায় ছিল।একটি টাকা দিয়ে ওতো সাহায্য করেনি।টাকা শ্রম সবইতো আমার। আমি তোমাকে…। আমাকে ত্যাগ করবে এই তো? ঠিক তাই। বললেই হলো। এমনিভাবে তারা আরও কিছু সময় কথা কাটাকাটি করলো।আকাশ কড়াকড়া কথা বলে ফোন রেখে দেয়।

এরপর থেকে শিলার সাথে আকাশের যোগাযোগ নেই বললে চলে। মাঝে মধ্যে যোগাযোগা করতে চাইলে ও আকাশ রেগে আগুন হয়ে আজে বাজে খারাপ আচরণ করতো।শুধু তাই নয় ঐ মেয়েটিকে বিয়ে করে সংসার শুরু করলো।তবুও আকাশকে ভালোবাসে শিলা। বিয়ে করা সত্বেও শিলা তা মেনে নেয়, এবং আকাশের সঙ্গে সংসার করতে রাজী হয়।শিলা সিদ্ধান্ত নেয় স্ত্রীর অধিকার নিয়ে সে আকাশের ভাষায় উঠবে।এই খবর আকাশের কানে যেতে, সে কাজী অফিসে গিয়ে তালাক নামার কাগজ পত্র করে পাঠিয়ে দেয়। শিলা সবেমাত্র অফিস থেকে ফিরেছে।খুব ক্লান্ত লাগছে।সারাদিনের কর্মক্লান্ত দেহখানি আর চলছে না অবস হয়ে আসছে।পাছে স্বামীর বিরহ যন্ত্রণা বুকের মধ্যে দাউ দাউ করে জ্বলছে।বিড়বিড় করে বলে এত কিছু কার জন্য করলাম,নিজের সর্বস্ব্য শেষ করে যাকে সুস্থ করে তুললাম।সে আজ বলে আমার দ্বারা তার সংসার হবে না।খোদা কিছু কিছু পুরুষ মানুষ কেন এত বেঈমান মুনাফিক?খোদা কেন তুমি এদের বিচার করো না?চোখের জলে বুক ভেসে যায় শিলার।খাওয়া দাওয়ার প্রতি কোন মন নেই।শুধু টেনশন আর টেনশন। এমন সময় দরজায় কড়কড় শব্দ তার কানে ভেসে উঠল। কয়েকবার বাজনার পর সে এগিয়ে এসে দরজা খুলে দেয়।দরজা খুলতে দেখে এক মধ্যবয়সী লোক দাঁড়িয়ে আছে।শিলা জিজ্ঞেস করলো, আপনি কে, কাকে চান? আমি কাজী অফিসের পিয়ন। এখানে কি চান? আপনি কি শিলা? জ্বি কেনো বলুনতো? এই নিন আপনার তালাক নামার কাগজ পত্র। এখানে একটা সাইন করে দিন। কথাগুলো শুনা মাত্রই শিলা অজ্ঞান হয়ে পড়লো।পিয়ন ভয়ে আতঙ্ক,উচ্চস্বরে ডেকে লোকজন জড়ো করে জমিদারের হাতে কাগজ পত্র দিয়ে সে কেটে পড়লো।জমিদারের কোন মেয়ে নেই। তিনি শিলাকে মেয়ের মতো স্নেহ ও ভালোবাসেন।তাই দ্রুত তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন।ডাক্তার ইমারজেন্সি চিকিৎসা শুরু করলেন।শিলার জ্ঞান ফিরে আসল ঠিকই, কিন্তু আগের মতো স্বাভাবিক নেই।কেমন জানি আলাবোলা,কোন কথাবার্তা নেই।খবর পেয়ে শিলার মা ছুটে আসল,অতপর জমিদারের কাছ থেকে পুরো ঘটনা শুনার পর বলে, আমি বলেছি না একদিন তোকে ফসকাতে হবে,এখন সত্যি হলো তো? এবার কি করবি,এখন টেনশন করে আর কোন লাভ নেই।যা করার আইন আদালতের মাধ্যমে করতে হবে। শিলা চুপচাপ কিছুই বলছে না।ফ্যাল ফ্যাল করে মায়ের মুখপানে তাকিয়ে আছে। সপ্তাহ খানেক চিকিৎসার পরও শিলা স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসেনি।তারপর ডাক্তার শিলার মাকে উদ্দেশ্য করে বললেন,, আন্টি সব রোগের চিকিৎসা আছে কিন্তু মনোরোগের কোন চিকিৎসা নেই।আমরা যতটুকু বুঝার বুঝেছি,শিলার ব্যাপারটা খুবই সিরিয়াস হৃদয় গঠিত।শিলা এখনো তার স্বামীর ভালোবাসা ভুলতে পারছে না।আকাশের অস্বাভাবিক তালাক নামার জন্য সে প্রস্তুত ছিলো না।কারণ সে আকাশকে এতটা বিশ্বাস করেছিলো যে, সে এতটা জঘন্য হবে তা সে কখনো কল্পনা করেনি। তাই আজ তার এই ভয়ানক অবস্থা। মানে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে।এখন তার চিকিৎসা হবে তাকে সম্পূর্ন রিলেক্স রাখা।কোনরুপ টেনশন মুলক কথা,খোটা দেয়া,খারাপ ভাষায় কথাবার্তা বলা চলবে না। সুন্দর ও সাবলীল ভাষায় আকাশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে চেষ্টা করবেন।যদি না পারেন, শিলাকে আকাশের ব্যাপারে ছোট করে, হেয় করে, অপমান জনক কথা বলে উত্তেজিত করবেন না।আন্টি যে আচরণ আপনি কিছুক্ষণ আগে করেছিলেন,এই ধরনের কোন আচরণ করা চলবে না।আসলে আমাদের সমাজে অবিভাবকেরা সিরিয়াস কিছু ভুল করে থাকেন।যেমন,সন্তান যখন রিলেশন করে বিয়ে করে, তখন কোন দুর্ঘটনা ঘটলে বলে, আমাদেরকে না জানি এই ছেলে বা এই মেয়ে বিয়ে করার কারণে তোদের কপালে আজ এই দুর্গতি।দূর হয়ে যা আমার সামনে থেকে। তোর মতো সন্তানকে পরিচয় দিতে আমাদের ঘেন্না হয়।আর অবিভাবকের পছন্দের বিয়ে যখন ভাঙ্গে বা কোন দূর্ঘটনা ঘটে তখন বলে,সবই কপাল বুঝলি,সবই কপাল।

সংসার ভেঙ্গেছে তাতে কি হয়েছে,বিয়ে আবার দেব। এই প্রিয় সত্য কথাগুলো রিলেশনের বিয়ে ভাঙ্গার ক্ষেত্রে যদি অবিভাবকেরা প্রয়োগ করতেন,তাহলে ছেলে মেয়েরা মানসিক ভাবে এতটা ভেঙ্গে পড়তো না।আন্টি শিলা কি জানতো আকাশ এতটা খারাপ হবে।কারো সাথে সম্পর্ক গড়ার পূর্বে কি বলতে পারবেন, লোকটা ভালো না মন্দ।ঠিক শিলার ব্যাপারটা ও সেই রকম। আকাশের ভবিষ্যৎ বাণী নির্ধারন করার ক্ষমতা কি শিলার ছিলো?আদৌ না।তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তা জানেন।আন্টি আমার সবশেষ কথা শিলাকে একক ভাবে দোষী করা যাবে না।যদি করেন তবে হিতে বিপরীত হবে।অর্থাৎ আপনার মেয়ে মেন্টাল রোগী হয়ে আলাবোলা হয়ে যাবে।সাবধান যেমন করে হোক শিলার জীবন থেকে অতীত স্মৃতি মুছে দিয়ে, নতুন করে জীবন গড়ার মানসিকতা তৈরী করতে হবে। আমি কিছু ঔষধ লিখে দিচ্ছি এগুলো কনটিনিউ চলবে।মাঝে মাঝে যোগাযোগ করবেন। বাবা আমি তোমার যুক্তি সঙ্গত বক্তব্যের কাছে হার মেনেছি।যে মা তোমার মতো ভালো ডাক্তার ছেলেকে পেটে ধরেছে তার প্রতি রইল আমার সালাম ও অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো শিলাকে স্বাভাবিক ও সুস্থ রাখার জন্য। ডাক্তারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তারা বাসায় ফিরে আসল।মা মেয়ের ভালো মতো সেবা যত্ন করে । তবুও শিলা কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে।শরীর স্বাস্থ্য ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে।কয় দিন পরপর মা শিলাকে ডাক্তার দেখিয়ে নিয়ে যায়।তবুও কোন পরিবর্তন নেই।দিন দিন আরো অবনতি হচ্ছে। একদিন ঘুমের ঘোরে শিলা বিড়বিড় করে বলে, আকাশ তোমাকে আমি অনেক অনেক মিস করি,অনেক ভালোবাসি।।আমার সময় শেষ, আমি আর বাঁচবো না।লক্ষীটি এসো না, একবার মরার আগে প্রাণ ভরে দেখি।এরপর থেকে আর কখনো তোমাকে জ্বালাব না।স্বামীর অধিকার চাইব না।প্লিজ এসো না একবার শেষ দেখা দেখি। শিলার মা মেয়ের পাশে শুয়ে আছে।তাই কথাগুলো স্পষ্ট শুনতে পেলেন।তিনি ঠিক বুঝতে পারলেন, শিলা বোধহয় ঘুমের ঘোরে আকাশকে দেখেছে তাই এমন প্রলাপ করছে। তিনি আর দেরী করলেন না ছুটে গেলেন, আকাশের নিয়ারেষ্ট বন্ধু শিমুলের কাছে।তাকে কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বললেন,এবং আকাশকে একবার শিলার সঙ্গে দেখা করতে বললেন।শিমুল দেরী না করে ছুটে গেল আকাশের কাছে।গিয়ে দেখে নতুন বউকে নিয়ে সে খুশির ফোয়ারায় নাচছে। তাদের মজার দৃশ্য দেখে শিমুল থ’খেয়ে পিছু হাটল।তখনি আকাশ ডাক দিলো, শিমুল চলে যাচ্ছিস যে, ভিতরে আয়। শিমুল বলল, আকাশ একটু বাইরে আয় তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে। আকাশ শিমুলের সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে গেল।একটা নিরিবিলি স্থানে বসে পড়লো।তারপর শিলার মায়ের বলা স্বপ্নের কথাগুলো তার কাছে প্রকাশ করলো,তারপর বলল, শিলা ভাবির অবস্থা খুব সিরিয়াস।তোর এক্ষণি যাওয়া দরকার।সে তোকে দেখতে চেয়েছে,মনে হয় শেষ অবস্থা। আকাশ গর্জে উঠে বলে, আমি গিয়ে কি করবো? শিমুল রেগে উঠে বলে, কি করবি মানে, তোর পাপের প্রায়শ্চিত্ত করবি,মাফ চাইবি।শিলা ভাবি তোকে মাফ না করলে,তোর ইহকাল ও পরকাল সুখের হবে না। আমি মাফ চাইতে পারবো না। কারণ সে আমার কেউ না। ছিঃআকাশ ছিঃ তুই এমন কথা বলতে পারলি!কাগজ পত্রে সে এখনো তোর বউ ।কারণ সে তোর তালাক নামা সাইন করেনি।তোর উপর এখনো তার স্বামীর অধিকার আছে।আজ তুই না গেলেও আমি জোর করে তোকে নিয়ে যাব।আকাশকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যেতে শিমুল প্রস্তুত হলো তখনি সে বলল, দাঁড়া আমি সুমিকে জিজ্ঞাসা করে আসি।

আকাশের দ্বিতীয় স্ত্রীর নাম সুমি।তার কাছে সুমি এখন অলরাউন্ডার।সুমির অনুমতি ছাড়া সে এদিক ওদিক নড়ে না।অনুরুপ আজ ও সুমির অনুমতি নিতে চাইলে,শিমুল কড়া ধমক দিয়ে বলে, রাখ তোর সুমি,এখানে আবার সুমিকে টানছিস কেনো? যেই মহীয়সী নারী নিজের সর্বস্ব্য বিলিয়ে দিয়ে তোকে সুস্থ করে তুলল,সে কি পেল,একবুক দুঃখ আর যন্ত্রণা।যা আজ তাকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছে। আন্টির কান্না আমি সহ্য করতে পারলাম না। আকাশ আমার ভাবতে ও ঘেন্না হচ্ছে তুই এত বেঈমান হলি কি করে?আজ তোদের মতো গুটিকতক পুরুষের জন্য নারীদের চোখে সব পুরুষ খারাপ বলে বিবেচিত। আর কোন কথা নয়,চল শিলা ভাবির কাছে। এদিকে শিলার অবস্থা খুব সিরিয়াস। কোন কথাবার্তা নেই, সে চুপচাপ শুয়ে আছে।দু’দিন ধরে খানা দানা বন্ধ।এক ফোটা পানি পর্যন্ত মুখে দেয়নি। আকাশকে দেখা মাত্রই শিলার মা কেঁদে কেঁদে বলে, শিলা মা চোখ মেলে দেখ, আকাশ এসেছে,তুই আকাশকে দেখতে চেয়েছিলি না।চোখ মেলে ভালো করে দেখে নে,মায়ের চোখ থেকে জল পড়ছে অনবরত।আকাশের কথা কানে যেতে যেন শিলা সুস্থ হয়ে উঠল।চোখ মেলে আকাশের দিকে তাকাতে নিজের দুঃখকে আর চাপা দিয়ে রাখতে পারলো না।কথা বলার শক্তি নেই। তবুও বহু কষ্টে কেঁদে কেঁদে বলতে শুরু করলো। আকাশ আমি তোমার কি ক্ষতি করেছিলাম, যে তুমি আমার জীবনটাকে এমনিভাবে ধ্বংস করে দিলে।তুমি আমাকে তিন মাস ধরে ফোনে ডিস্টার্ব দিয়েছিলে।প্রতিদিন ফোন রিসিভ করলে মিষ্টি মিষ্টি ভালোবাসার কথা বলতে। তবুও আমি তোমার ডাকে সাড়া দেয়নি এবং কোথাও দেখা করিনি।লাস্ট অন্য নাম্বার থেকে ফোন করে বলেছিলে, আমি যদি তোমাকে ভালো না বাসি তাহলে চলন্ত ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে সুইসাইড করবে, আমার নামে চিরকুট লিখে যাবে। এরপর থেকে তোমার প্রতি আমি দুর্বল হয়ে পড়ি।তারপর তোমার কথা অনুযায়ী মিরপুর পার্কে প্রথম তোমার সাথে দেখা করি।তোমার শত অনুরোধের পরও আমি তোমাকে ফিরিয়ে দিহ।এরপর তুমি যখন সত্যি ছুটে গেলে চলন্ত গাড়ির নিচে সুইসাইড করতে, তারপর আমার হৃদয়ঙ্গনে তোমার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসার সৃষ্টি হলো।তখন থেকে দু’জনের মাঝে গুড রিলেশন গড়ে উঠল।আজ তুমি আমার ভালোবাসার প্রতিদান এমন নিষ্ঠুর ভাবে দিলে!বাহ! আকাশ বাহ!চমৎকার তোমার ভালোবাসার স্কোপ।তোমার নাম ইতিহাসের পাতায় শ্রেষ্ঠ বেঈমান হিসাবে লিখা হবে। আর আমার ভালোবাসা চির অম্লান হয়ে প্রেমিক প্রেমিকার হৃদয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।আকাশ তুমি সুমিকে বিয়ে করার কারণে আমাকে ত্যাগ করেছো এই তো। এখন সুমি তোমার জীবনের সব, তাই না?কোন ভালো বংশের ভালো মেয়ে কখনো কোন নারীর জীবন ধ্বংস করে তার স্বামীকে কেড়ে নিতে পারে না। এদের চরিত্র ফুটপাতের পতিতার চেয়ে ও খারাপ।আরে পতিতালয়ের পতিতার ও একটা ভালো দিক থাকে।মানুষের প্রতি সুন্দর মন ও মায়া থাকে।আর এ সমস্ত নারীদের সুন্দর মন ও মায়া বলতে কিছু নেই।এরা পুরুষের ক্যারিয়ার ও টাকা দেখে বিয়ে করে।যেমন সুমি তোমাকে বিয়ে করেছে। আবার এক সময় ক্যারিয়ার ও টাকা শেষ হয়ে গেলে কেটে পড়ে।এমন ঘটনা সমাজে প্রায় ঘটে থাকে। পত্রিকার পাতা উল্টালে প্রায়ই দু’চারটা চোখে পড়ে।তোমার বেলায় ও এর ব্যতিক্রম হবে না। কিছুদিন যাক তারপর যখন তার আসল পরিচয় ফুটে উঠবে, তখন তোমার মনুষ্যত্ববোধ তোমাকে উপহাস করে বলবে, আকাশ তুমি এ কি করলে,হীরা ফেলা কাঁচ তুলে নিলে।তখন প্রায়শ্চিত্ত করারও সময় পাবে না। তখন কেউ তোমার ডাকে তখন সাড়া দেবে না।এরা প্রকৃত নারী নয়,নারী জাতের কলঙ্ক। নারী হয়ে যে নারীর অধিকার কেড়ে নেয়,সে প্রকৃত নারী নয়।নারী নামক ডাইনি,।এদের মতো গুটি কতক নারীর জন্য পুরুষেরা নারীদেরকে বিভিন্ন নোংরা অপবাদ দিয়ে থাকে।আমি যতটুকু ভালোবাসা তোমাকে দিয়েছি,আমার মনে হয় দুনিয়ার কোন স্ত্রী তার স্বামীকে দিবে না।তাই তোমার অস্বাভাবিক তালাক নামা আমাকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিয়েছে।আমি কিছুতেই তোমাকে ভুলে স্বাভাবিক হতে পারছিলাম না।কারণ আমি “এখনো তোমাকে ভালোবাসি”।আকাশ তোমাকে অনেক কড়া কথা বললাম।আ… মা… কে……. মাফ… করে দিও। শিলা আর কিছুই বলতে পারলো না।চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে গেল।নিমিষেই তার শরীর নিস্তেজ হয়ে গেল।কোন সাড়া শব্দ নেই। মা বুঝতে পারলো মেয়ে আর নেই,মারা গেছে।তিনি ডুকরিয়ে কেঁদে উঠলেন।শিমুলের চোখ দিয়ে ও জল পড়ছে।ঐ পাষণ্ড আকাশের মাফ চাওয়া তো দূরের কথা, চোখ থেকে এক ফোঁটা জলও পড়লো না। আপরাধ করলো আকাশ, মাফ চাইল শিলা,এ হলো একজন আদর্শ নারীর কৃষ্টিকালচার্ড।


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

ছোটগল্প:খোকদার বরই গাছ

ছোটগল্প:খোকনদার বরই গাছ মো.রিমেল রহমতপুর গ্রামের সরকারী স্কুলের মাঠের পাশ দিয়ে সোজা একটি রাস্তা গেছে।রাস্তার পূর্ব দিকে খোকনদার বাড়ি।বাড়ির পূর্বদিকে

সুপুরুষ ও কাপুরুষ

ছেলেবেলায় ভালো পড়াশোনায় ছিলো সুমন। তাই এমনিতেই মহিলা মহলের প্রিয় ছিলো সমুন। কিন্তু আজকাল , সুমন পাড়ায় জিমে ঘাম ঝরাচ্ছে।

আমায় দুঃখ দাও আমায় কষ্ট দাও

তুমি আমার সাথে মিথ্যা ভালোবাসার খেলা খেলছ। জানি আমি, এতে তুমি আনন্দে আছ, তবু আমি তোমায় কিছুই বলি না। কারণ

Leave a Reply