গল্প নষ্ট পুরুষ আফছানা খানম অথৈ

0

নষ্ট পুরুষ

আফছানা খানম অথৈ

তুসি বি বি এ প্রথম বর্ষের ছাত্রী।কোন এক ক্ষণে ক্যান্টিনে দেখা হয় তপনের সঙ্গে।তপন মাস্টার্স ফাইনাল ইয়ার,মাত্র কদিন পর এক্সাম।দুজনের মাঝে আলাপ পরিচয় হয়।তারপর ভালো বন্ধুত্ব,বন্ধুত্বের সুত্রধরে ভালোবাসা।একে অপরকে খুব ফেয়ার মহব্বত করে।রাত জেগে ফোনালাপন,চ্যাটিং ডেটিং,শুধু তাই নয় ভিডিও কলে একে অপরকে খুব ভালোবাসাবাসি,বলতে গেলে মন প্রাণ উতালা।তারপর দুজন সময় মতো বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টে গোপন অভিসারে মিলিত হওয়া।তপনের মন প্রাণ একেবারে উতালা তুসির জন্য।একদিন ছুটির পর তুসি বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল,এমন সময় তার এক ফ্রেন্ড বলল,
তুসি তোর সাথে আমার কিছু কথা ছিল?
বল ফারাবি কি বলবি?
তুসি এখানে না,একটু নিরিবিলি গেলে ভালো হতো।
তপনের গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে ফারাবি কথা বলবে এটা কি সহ্য করা যায়।তপন বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে,উচু লেভেলের মানুষ,টাকা পয়সার কমতি নেই।বন্ধু মহলের অনেকের চা নাস্তার বিল প্রায় দিন সে শোধ করে
এজন্য তার কথার উপর কেউ কথা বলে না।আজও অনুরুপ কেউ কিছু বলেনি।ফারাবি তুসিকে ডেকেছে কথাটা শুনামাত্রই তপন ফারাবির জামার কলার ধরে বলল,
এই ফারাবি শুন তুসির সাথে আমি ছাড়া কেউ কথা বলতে পারবে না।ওর সাথে তোর কিসের কথা।আর কোনদিন ওকে ডেকেছিস তো,তোর একদিন কি আমার একদিন?
বন্ধুরা দুজনকে দুদিকে সরিয়ে দিয়ে বলল,
ফারাবি তুই আবার তুসিকে ডাকতে গেলি কেনো।যাতো দোস্ত তোর গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে যেদিকে ইচ্ছা।
তপন আর দেরী করলো না।তুসিকে নিয়ে প্রতিদিনের মতো হোটেল কামরায় অবস্থান করলো।হোটেল ম্যানেজার থেকে শুরু করে সবাই তপনের খুব খাতির যত্ন করে।কারণ বড় লোকের একমাত্র ছেলে তার উপরে টাকার এমাউন্ট ও বাড়িয়ে দেয়া হয়।আমাদের সমাজে কিছু মানুষরুপী কীট আছে যারা টাকা পেলে চোখের সামনে শত অন্যায় দেখলে ও প্রতিবাদ করে না।বরং প্রশ্চয় দেয়, অন্যায় করার সুযোগ করে দেয়।আজকে তপনকেও তাই করে দেয়া হয়েছে।আজকাল আমরা প্রায় দেখি আবাসিক হোটেল গুলোতে বিভিন্ন আকাম-কুমাক ও নারী দেহের ব্যবসা চলছে প্রতিনিয়ত।রাতে যারা তাদের নিয়ে ফুর্তি করে দিনে আবার তারা বিভিন্ন বিশ্রী ভাষায় গালমন্দ করে।আবার প্রায় দেখি বিভিন্ন হোটেল থেকে দেহ ব্যবসায়ী বিভিন্ন নারীদের সাক্ষাৎকার ও ভিডিও সাংবাদিক ভাইয়েরা ইন্টারনেটে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।আর তা দেখে পুরুষ মানুষগুলো হাসাহাসি করে।এখন প্রশ্ন হলো, হোটেল ম্যানেজার ও মালীক এদের কারো সাক্ষাৎকার ও ভিডিও নেয়া হয় না কেনো?তাদেরকে দোষী করা হচ্ছে না কেনো?মেয়েগুলো তো আপনা আপনি উড়ে এসে হোটেলে জুড়ে বসেনি।তাদেরকে কেউ না কেউ এই ঘৃণ্য পথে আসতে বাধ্য করেছে এবং এনেছে,এরা কারা,এদেরকে কেনো খুঁজে বের করা হচ্ছে না।এদের কেনো বিচার হচ্ছে না?হোটেল ম্যানেজার ও মালীক যদি ভালো মানুষ হতেন তাদেরকে কেনো জায়গা দিলেন? তাদেরকে কেনো এ প্রশ্ন করা হচ্ছে না ?আমাদের নারী সমাজ খুবই দূর্বল তাই দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে পারছে না।তাই নারীর সম্ভ্রম হানি হচ্ছে প্রতি পদে পদে।অপবাদ দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন নোংরা বিশ্রী ভাষায়।আজকের তপন তুসির মতো অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা নির্জনে সময় কাটান হোটেলে, হোটেল কর্তৃপক্ষ কি প্রতিবাদ করেন,আদৌ না বরং সুযোগ করে দেন ভালো মতো সময় কাটানোর জন্য।এটা হলো বর্তমান হাই সোসাইটির কৃষ্টিকালচার্ড।
এর ফাঁকে কেটে গেল কিছু সময়।তুসি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মেয়ে তবে একটু রোমান্টিক ও মডেলিং বিলাসিতা প্রিয়।নিজেকে সেজে-গুজে স্মার্ট করে রাখতে পছন্দ করেন সর্বদা, রাখেনও।তাদের ফ্যামিলি স্ট্যাটার্স ও সে রকম মেয়ের স্বাধীনতাকে প্রাধান্য দেন, কোন কাজে কখনো বাঁধা দেন না।মেয়ে কোথায় যায়, কি করে, না করে, এসব কখনো কেয়ার করেন না।আর তাই তুসি সে ভাবে বেড়ে উঠেছে।
এদিকে তপনের ব্যাপারটা তো আরও জঘন্য।একমাত্র ছেলে বলা পড়ালেখায় কোন রকমে মাস্টার্স, টাকার কিন্তু কমতি নেই।তাই গার্লফ্রেন্ড’র ও কমতি নেই।আজ তুসি কাল বীথি,পরশু রোদেলা আরও নাম না জানা অনেককে নিয়ে সে সময় কাটান।সবাইকে জান,প্রাণ,সুইট হার্ট বলে সম্ভোধন করে।এক জনের অজান্তে অন্যজন খুশি কারণ তপন এমনভাবে অভিনয় করে চলেছে মনে হয় না,তার ভিতরে কোন ছল ছাতুরী আছে।তাই সব গার্লফ্রেন্ড তাকে বিশ্বাস করে।অনেকে জানে না তার ডজন খানেক গার্লফ্রেন্ড আছে।আবার অনেকে জেনে ও তাকে বিশ্বাস করে।কারণ জিজ্ঞেস করলে তপন বলে,
রোদেলা বিশ্বাস কর আমি শুধু তোমাকে ভালোবাসি।
তাহলে তুসিকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ কেনো?
আরে পাগলি ওকে নিয়ে তো টাইম পাস করছি।ওকে তো আমি ভালোবাসি না।ভালোবাসিতো তোকে।
সত্যি বলছতো?
হুম জান সত্যি।তুমি আমার একমাত্র ভালোবাসা।
এমনিভাবে সবাইকে সে ম্যানেজ করে,আর মেয়েরা তা বিশ্বাস করে মন উজাড় করে ভালোবায়াসা দেয় এমন কি দেহ পর্যন্ত বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করে না।
এদিকে তুসি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির মেয়ে হলেও সুন্দরী স্মার্ট তার উপরে পড়ালেখাও করছে।প্রেমের প্রোপোজাল বিয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে।একদিন তুসির মা রিদি সুলতানা বলল,
তুসি শুন।
জ্বী মা বলো?
ভার্সিটিতো বন্ধ, আজ কি কোথাও বেরুবি?
কেনো মা?
না তেমন কিছু না। মেয়েরাতো সারাজীবন বাবা-মায়ের কাছে থাকে না।বিয়ে করতে হয়,সংসারী হতে হয়।
তা বুঝলাম মা।তো এখন কি বলতে চাও?
এইতো কথার মতো কথা বললে।তোর বড় মামা ফোন করেছে।তোর জন্য একটা ভালো বিয়ের প্রস্তাব এসেছে।ছেলে উচ্চ শিক্ষিত,ভালো মাইনে,বিদেশী কোম্পানিতে চাকরী করছে।আজ তারা তোকে দেখতে আসবে।তুই আজ কোথাও যেতে পারবি না,বাসায় থাকবি।
মা তোমার কথা শেষ,এবার আমার কথা শুন।
বল কি বলবি?
আমি এখন বিয়ে করবো না।ওদেরকে না করে দাও।
কেনো কেনো?
প্লিজ মা এত প্রশ্ন করো নাতো। আমি এখন বিয়ে করবো না,ব্যস এটাই ফাইনাল ডিসিশন।
তুসি পাগলামি করিস না।আগে ছেলেটাকে দেখ,তারপর পছন্দ না হলে না করে দিস।
মা নাটক মুভির মতো আমি অভিনয় করতে পারবো না।বিয়ে যখন করবো না,তখন ছেলে দেখার মানে কী?
মা দেখল মেয়ের মুভমেন্ট ভালো না।তাই আর কথা না বাড়িয়ে চুপসে গেল।তখনি তপন ফোন করে বলল,
হ্যালো জান, কি করছ?
বসে বসে মুভি দেখছি।
কি মুভি?
সুইট হার্ট।
উফ দারুণ মুভি।
জান তোমাকে আজ দেখতে ইচ্ছে করছে,বেরুবে?
না জান আজ আর বেরুব না।কালতো ভার্সিটি খোলা এমনিতে দেখা হবে…।
ওকে জান ভালো থেকো,রাখি বাই বাই।
তপন আজ রোদেলাকে নিয়ে ঘুরবে।তাই জানতে চাইল তুসি বেরুবে কিনা?যদি তাদেরকে দেখে ফেলে, তাই আগে বাগে জেনে নিলো তার মতামত।যখনি বলল,তুসি যাবে না।তখনি খুশি হয়ে রোদেলাকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়ে গেল।
একদিন তুসির এক বিশ্বত্ব বান্ধবী বলল,
তুসি একটা কথা বলি?
বল কী বলবি?
তপন ছেলেটা আমার কাছে সুবিধার মনে হচ্ছে না।
কেনো কেনো?
প্রায় সময় দেখি মেয়ে মানুষ নিয়ে বিভিন্ন হোটেল রেস্টুরেন্টে,শুধু তাই নয়,হাত ধরাধরি করে হাটে,রোমান্স করে,আর ও কত কী…?
তাছাড়া তার স্বভাব চরিত্র ও ভালো না।তোর বোধ হয় তার সঙ্গে এতোটা মিশা উচিৎ হয়নি।
রুমকি তপনকে আমার চেয়ে তোরা বেশি চিনিস না।ও একটু রোমান্টিক ও ফ্রিভাবে চলাফেরা করতে পছন্দ করে।তাই বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে একটু ঘুরাঘুরি করে। এ আর কি, অন্যকিছু না।
তাহলে তো ভালো।তবুও বলছি,তার সম্পর্কে ভালো করে জানাশুনা করে সামনে আগাও।তানা হলে পরে কিন্তু ফসকাতে হবে।চলি বাই বাই বাই।
রুমকি চলে গেল।তুসি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার কথাগুলো স্মরণ করতে লাগল।মনে মনে বলে,রুমকি আমাকে এসব কথা বলল কেনো?তবে কি সত্যি তপন অন্য মেয়ের সঙ্গে প্রেম….।
না না আর দেরী করা যাবে না।এক্ষণি পরীক্ষা হয়ে যাক।তুসি আর দেরী করলো না।কল করে বলল,
হ্যালো জান তুমি কোথায়?
কেনো কোন সমস্যা?
না তেমন কিছু না।তুমি একটু আসতে পারবে?
কোথায়?
পার্কে।
জান অপেক্ষা কর আমি আসছি।
বলতে না বলতে তপন বাইক চালিয়ে তুসির কাছে এসে গেল।তুসি আনমনা হয়ে পার্কের বেঞ্চে বসে আছে।তপন কাছাকাছি এসে বলল,
হাই জান কি করছ?
তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।
জান এবার বলো কেন এত জরুরী তলব?
না তেমন কিছু না,তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করলো তো তাই।আমি তো আবার তোমাকে না দেখে থাকতে পারি না।
সত্যি বলছ তো?
আমারটা একশ পার্সেন্ট সত্যি,তবে সন্দেহ হয় তোমাকে নিয়ে।
আমাকে নিয়ে আবার কিসের সন্দেহ। আমিতো তোমাকে হান্ডেড পার্সেন্ট লাভ করি।
এটা মুখের কথা,নাকি মনের কথা?
রেগে উঠে তপন বলল,
তুসি আমাকে নিয়ে মনে হয়,ইয়ার্কি মারা হচ্ছে?
জান রাগ করছ কেনো।আমিতো আসল সত্যিটা জানতে চাচ্ছি।
আসল সত্যি আবার কী?
আসল সত্যি মানে হলো তুমি আমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাস কিনা?
এতদিন পর হঠাৎ এ প্রশ্ন করার মানে কী?
মানে হলো পুরুষ মানুষতো বিশ্বাস করা যায় না।তাছাড়া তোমারতো আবার গার্লফ্রেন্ড’র অভাব নেই।মিষ্ট,বিষ্টি,সুমি প্রীতি আর ও কত কে?
তপন হা হা হো হো করে হেসে উঠে বলে,
ওরে পাগলি ওরাতো আমার গার্লফ্রেন্ড না,ফ্রেন্ড,শুধু ফ্রেন্ড।
তাহলে রোজ ওদের নিয়ে ঘুরো কেন?
কে বলেছেরে পাগলি আমি ওদের নিয়ে ঘুরি।আমিতো শুধু তোকে নিয়ে ঘুরি।শুধু তোকে ভালোবাসি।এই তোর গাঁ ছুঁয়ে বলছি,তুই আমার একমাত্র ভালোবাসা।
মূহূর্তে তুসির সন্দেহ কেটে গেল।দুজন মিট হয়ে গেল।তপনের নিজস্ব বাইক আছে।তাই ডার্লিং নিয়ে ঘুরতে সমস্যা হয় না।দুজনে বাইকে ছড়ে ঘুরতে গেল।
এমনি হাসি আনন্দ ঘুরাঘুরির মাঝে কেটে গেল কয়েক মাস।হঠাৎ একদিন রাত দুপুরে তুসির মাথা ঘুরে বমি হয়।সে কাউকে কিছু না বলে ডাক্তারের কাছে ছুটে যায়।ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলল,
তুসি তুমি প্রেগন্যান্ট।
সত্যি বলছেন ডাক্তার সাহেব?
আমাদের পরীক্ষায় তো তাই উঠেছে।
ঠিক আছে স্যার আমি এখন আসি।
তুসি ডাক্তার খানা থেকে বের হয়ে তপনের কাছে ফোন করলো।তপন রিসিভ করে বলল,
হ্যালো জান কি খবর?
তুমি কোথায়?
এইতো আছি।
তুমি কী একটু আসতে পারবে?
কেনো কোন সমস্যা?
না মানে তেমন কিছু না।জরুরী আলাপ ছিলো।
ঠিক আছে তুমি ওয়েট কর,আমি আসছি।
বলতে না বলতে তপন বাইক চালিয়ে উল্কার গতিতে তুসির কাছে ছুটে আসল।তুসির চোখে মুখে চিন্তার রেখা।মুখ কালো করে খুব গম্ভীরভাবে বসে আছে।তপন তার গাঁ ঘেষে জড়িয়ে ধরে বলল,
জান মন খারাপ কেন,কী হয়েছে?
না মানে বলছিলাম কী…।
কী বলছিলে থামলে কেনো বল?
তপন বলছিলাম কী তুমিতো সত্যি আমাকে ভালোবাস তাই না?
হ্যাঁতো বাসি।
তপন আজ হোক কাল হোক বিয়েতো করতে হবে।তাই বলছি আর দেরী করা ঠিক হবে না।চলো আমরা আজই বিয়ে করবো।
সরি জান আর একটু অপেক্ষা কর।
তপন আর অপেক্ষা করা যাবে না।
কেনো জান,কোন সমস্যা?
তপন আমি প্রেগন্যান্ট, আমাদের এক্ষণি বিয়ে করা দরকার।
মূহূর্তে তপনের আসল রুপ ফুটে উঠল।তার ভাবমূর্তি ভয়ংকর রুপ ধারন করলো।সে ব্যঙ্গ করে বলল,
তোমার মতো নষ্টা মেয়েকে বিয়ে করবো আমি।
তপন আমি নষ্টা মানে,কী বলতে চাইছ তুমি?
কী বলতে চাইছি বুঝ না?
না বুঝি না।
এত সহজ ব্যাপারটা বুঝলে না?
না বুঝলাম না,কি বলতে চাও সরাসরি বলো।
যে মেয়ে বিয়ের আগে পর পুরুষের সঙ্গে রাত কাটায় তাকে আমি বিয়ে করতে পারবো না।
পর পুরুষ মানে তুমিতো আমার লাভার,তোমার সঙ্গেতো রাত কাটিয়েছি।এখানে আবার পর পুরুষ আসল কোত্থেকে।তাছাড়া যা কিছু ঘটেছে সবতো তোমার ইচ্ছাতে ঘটেছে।এতে আমার দোষ কোথায়?
তোমার মতো নষ্টা মেয়ের মুখে এসব কথা মানায় না।যার তার সঙ্গে মিশবে,তারপর দোষ দিবে একজনের।এ বাচ্চা আমার না,অন্য….।
তুসি আর থেমে থাকতে পারলো না।তপনের গালে কষে দিলো এক চড়।তারপর ঘৃণার স্বরে বলতে শুরু করলো।
শুন আমি নষ্টা নয় তুই নষ্ট।আমার সাথে প্রেমের নাটক করে আমার কুমারীত্ব হারিয়ে আমাকে এখন নষ্টা মেয়ে বলছিস?একথা বলতে তোর লজ্জা করলো না?আমি যদি নষ্টা মেয়ে হই তাহলে তুই কী?তুই ওতো নষ্ট পুরুষ।কারণ দোষতো আমি একা করিনি।মেয়েদের সরল মনে দাগা দিয়ে সর্বনাশ করবে আর অপবাদ শুধু মেয়েদের ঘাড়ে চাপানো হবে,তাতো হতে পারে না।সাবধান আজকের পর থেকে আর কোন মেয়েকে নষ্টা বলে অপবাদ দিবি না।কারণ মেয়েদেরকে নষ্টা বানায় তোদের মতো কিছু নষ্ট পুরুষ,কাউকে প্রেমিকা,কাউকে পতিতা,কাউকে রক্ষিতা।এসবের মূল নায়ক হচ্ছে তোদের মতো কিছু নষ্ট পুরুষ।কারণ পাঁচ ছয় বছরের শিশু কন্যা,সে কি নষ্টা?আদৌ না,তাকে কেন ধর্ষণ করা হয়,তা কি কখনো ভেবে দেখেছিস?
ডাস্টবিনে পড়ে থাকা পাগলি তার পেটে কেন বাচ্চা আসে,সেকি নষ্টা? আদৌ না…।
তাহলে মেয়েদেরকে নষ্টা বলছিস কেন,নষ্ট হচ্ছিসতো তোরা।আরে সবশেষে একটা বাস্তব কথা বলি মেয়েরা যদি তোদের সাথে প্রেমের খেলা না খেলত,তাহলে তোদের মতো নষ্ট পুরুষের সঙ্গীনি হতো পাঁচ বছরের শিশু কন্যা কিংবা ডাস্টবিনে পড়ে থাকা পাগলি।রুমকি ঠিকই বলেছিল, আমি বিশ্বাস করিনি।তুই আসলে একটা নষ্ট পুরুষ।ভালোবাসার নামে মেয়েদেরকে নষ্ট করাই হচ্ছে তোর কাজ।চলি তোর মতো নষ্ট পুরুষের সাথে আর কোন দিন দেখা হবে না।
কড়া হলেও কথাগুলো ছিল বাস্তব সত্য।তাই তপন কিছু বলল না।তার মুখের উপর কথাগুলো বলে তুসি হনহন করে বাসায় ছুটে গেল।তারপর কাগজ কলম নিয়ে ডায়েরীতে একটা চিরকুট লিখল,
বাবা-মা,
শুরুতে আমার সালাম নিও।ভালো থেকো,এই কামনা করি।
মা আমি তোমাদের অজান্তে বিরাট একটা ভুল করেছি।আবেগের বশে একজনকে ভালোবেসে সর্বস্ব বিলিয়ে দিলাম।যখন জানতে পারলাম আমি প্রেগন্যান্ট,তার কাছে ছুটে গেলাম,বিয়ে করার কথা বললাম।সে রাজীতো হলো না,বরং নিজেকে নির্দোষ বলে, আমাকে নষ্টা বলে আখ্যায়িত করলো।আমি সহ্য করতে পারলাম না।ওর মতো একজন “নষ্ট পুরুষ’র” কারণে আজ আমি সুইসাইডের পথ বেচে নিলাম।আমার সুইসাইড নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না।সবাই ভালো থেকো।খোদা হাফেজ।
ইতি
তোমাদের অপরাধী কন্যা।
তুসি।
চিরকুটটা টেবিলের উপর রেখে তুসি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে সুইসাইড করলো।সকাল হলে তার কোন সাড়া না পাওয়াতে সবাই দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকল।তুসির লাশ আর চিরকুট পড়ে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়লো।
ঃসমাপ্তঃ


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

সুপুরুষ ও কাপুরুষ

ছেলেবেলায় ভালো পড়াশোনায় ছিলো সুমন। তাই এমনিতেই মহিলা মহলের প্রিয় ছিলো সমুন। কিন্তু আজকাল , সুমন পাড়ায় জিমে ঘাম ঝরাচ্ছে।

আমায় দুঃখ দাও আমায় কষ্ট দাও

তুমি আমার সাথে মিথ্যা ভালোবাসার খেলা খেলছ। জানি আমি, এতে তুমি আনন্দে আছ, তবু আমি তোমায় কিছুই বলি না। কারণ

উদঘাটন

উদঘাটন      ❝সেদিনের পর থেকে আজও চিন্তিত থাকে সুকান্ত। সে কোনোদিনও সেই স্মৃতি ভুলতে পারবেনা❞ রহস্য আর রহস্যময় মানুষ

Leave a Reply