এডসেন্স থেকে পাওয়া টাকা

গুগল এডসেন্স একাউন্ট ব্যান হওয়ার প্রধান কারণ

0

আপনি যদি ব্লগার হয়ে থাকেন, আর আপনার একটি ব্লগ থাকে থাকে তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য। বাংলায়, ইংরেজীতে বা, যেকোন ভাষায় লিখুন না কেন, এই লেখাটি পড়লে আপনার কাজে লাগবে। অনেক সময় বাংলাদেশী ব্লগারদের এডসেন্স লিমিটেড হয়ে যায়, কারো একাউন্ট নিষিদ্ধ হয়, এর কারণগুলো আসলে কি? ভেবে দেখেছেন।

গুগল ব্লগ যদি আপনি পড়ে থাকেন, তাহলে এই লেখাটি আপনার না পড়লেও চলবে। নিয়মিত তাদের ওয়েবসাইটে গুগল নিজেই সব প্রকাশকদের এই ব্যাপারে সতর্ক করে থাকে। ব্লগে কি করা যাবে, কি করা যাবে  না, এগুলো নিয়ে বিস্তারিত পাবেন তাদের ব্লগে। এখান থেকে বিধিনিষেধ দেখে নিতে পারেন। এই লেখাটিও পড়ুন, হয়তো নতুন কিছু পাবেন।

গুগল এডস কি

এটি মূলত গুগলের এডভার্টাইজিং প্রগ্রাম, এর মাধ্যমে গুগল এড দেখিয়ে থাকে। সহজভাবে বললে এটি এক ধরণের ব্যবসা। বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন নেয় গুগল এডস এর মাধ্যমে, আর সেটি প্রকাশকদের ওয়েবসাইটে দেখায় এডসেন্স এর মাধ্যমে। মাঝখানে, মধ্যসত্ত্বভোগী হিসেবে থাকে গুগোল।

গুগল কিভাবে আয় করে?

ওয়েব কন্টেন্টের ক্ষেত্রে, ওরা এডভার্টাইজারদের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিলে, একজন ব্লগার বা, পাবলিশার হিসেবে আপনি পাবেন ৬৮ টাকা, বাকিটা মানে, ৩২ টাকা গুগল নিবে।

গুগল কাস্টমাইজ সার্চ ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে, বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে ১০০ টাকা নিলে আপনাকে দিবে ৫১ টাকা আর, ওরা নিবে ৪৯ টাকা। এত টাকা নেয়ার পরেও গুগলে কেন সবাই এড দেখাতে চায় সেটি পরে বলছি।

ইউটিউবের ক্ষেত্রে, Investopedia এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী ১০০ টাকায় গুগল নিয়ে নেবে ৪৫ টাকা, আপনাকে দিবে ৫৫ টাকা।  সম্প্রতি সম্ভবত একটি নোটিশ দিয়েছে যে,  ইউটিউব পার্টনার প্রগ্রামে নেই এমন চ্যানেলগুলোতেও বিজ্ঞাপন দেখিয়ে গুগল আয় করবে।

ওয়েবসাইটের এডসেন্স Requirements খুবই সামান্য, নিজের কনটেন্ট, ১৮+ বয়স আর, পলিসি মেনে লেখা আর্টিকেল বা, অন্য যেকোন ধরণের কনটেন্ট হলেই আপনি এডসেন্স এপ্রুভাল পাবেন।

এডসেন্স একাউন্ট ব্যান হওয়ার কারণ

আপনার ওয়েবসাইট বা, ইউটিউব চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে যারা আয় করবে তারা কেন, সেই বিজ্ঞাপন দেখানো বন্ধ করবে? এটি অনেকটা সোনার ডিম পাড়া হাসকে মেরে ফেলার মতো না। গুগল আসলে কোন এডসেন্স একাউন্ট ব্যান করতে চায় না।

আপনি যদি এমন কিছু করে বসেন, যে কারণে বিজ্ঞাপনদাতারা আর, বিজ্ঞাপন দেখানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে, তাহলে গুগল আপনার একাউন্ট বন্ধ করে দিয়ে আপনার অনাকাঙ্খিত কাজকে বন্ধ করে দেবে। চলুন মূল কারণগুলো দেখে নেই-

১. ইনভ্যালিড ক্লিক

এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার পরেই অনেকে আকাশে উড়তে থাকেন। ভেবে নেন যে কোনভাবে এডে ক্লিক করলেই ডলার আর, ডলার। আপনি যদি নিজের এডে নিজে ক্লিক করেন তাহলে একাউন্ট চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। পাঁচজন বন্ধুকে নিয়োগ দেন যারা প্রতিদিন ভিজিট করবে আর, ক্লিক করবে, তাহলেও সম্ভাবনা থাকবে ধরা খাওয়ার। এমন যায়গায় কোড বসিয়ে দিলেন যেখানে এমনিতেই ক্লিক পড়ে, তাহলেও ধরা খাওয়ার চান্স আছে।

২. যৌন কনটেন্ট

গুগল কোন পীর, ফকির, দরবেশ, সাধু, সজ্জন হয়ে যায় নি। যৌন কনটেন্ট নিয়ে কারো কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আপনি মনিটাইজ করছেন সবাই দেখবে এমন কনটেন্টের জন্য। যদি যৌনতা বিক্রি করে আয় করতে চান, আপনার জন্য আলাদা এড নেটওয়ার্ক আছে, গুগল নয়। আর, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী আপনি সম্ভবত এমন সাইট তৈরি করতেই পারবেন না, অন্য দেশের নাগরিক হলে বিকল্প অপশন খুজে নেবেন।

৩. হিংস্র কিছু বিষয়

আমরা সবাই মানুষ, হিংস্র পশু নই। পাশবিক কিছু ব্যপার আছে, যেগুলো তাদেরকে মানায়। বন্য হিংস্র প্রাণীরা মানুষ ও অন্য প্রাণীদের ছিড়ে খেয়ে ফেলতে পারে। তাদের বুদ্ধি কম, স্রষ্টা তাদেরকে তৈরি করেছেন ঐ কাজের জন্য। মানুষদেরকে আপনি বীভৎস কোন ছবি বা, ভিডিও দেখাতে পারবেন না। বর্ণনাও করতে পারবেন না। এটি মানুষের মনে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, দুর্বল হৃদয়ের মানুষদের বড় কোন ক্ষতিও হতে পারে।

৪. অস্ত্র, বন্দুক, বিস্ফোরক

কোন ধরণের অস্ত্র, বন্ধুক এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। মানুষকে আঘাতের জন্য ব্যবহার করা হয় এমন কোন বন্দুক, বিস্ফোরক এগুলো প্রচার করলেই আপনার একাউন্ট ব্যান হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। এগুলোর ব্যবহার, কার্যকারিতে এসব নিয়েও কিছু লিখতে পারবেন না।

৫. জুয়া, ড্রাগ, ভুয়া অষুধ

অনেক সময় বাজারে প্রচুর ভুয়া অষুধ পাওয়া যায় যার কোন অনুমোদন নেই। এগুলো প্রচার ও বিক্রি আইনত অপরাধ। আর, গুগল কখনোই অপরাধী প্রকাশকের সাইটে বিজ্ঞাপন দেখাবে না। এরকম অন্য কোন ড্রাগ, ক্ষতিকর কোন উপাদান, জুয়া খেলার সাথে সম্পর্কিত কিছু এগুলোও রাখা যাবে না।

৬. মাণহীন, বাজে কনটেন্ট

এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বেশীরভাগ নতুন ব্লগারদের দেখা যায় ১৫০-২০০ শব্দে আর্টিকেল লিখছে যা, পাঠকদের জন্য কোন মূল্য বহন করে না। আবার কেউ কেই লেখার মাঝে ভিডিও বা, ছবি দিয়ে শুধু সেই ভিডিও বা, ছবিনির্ভর কনটেন্ট তৈরি করছে। এরকম হলে সাইটে ভিজিটও হবে না, এডসেন্সও হবে না, অন্য কোন এড দেখিয়েও কোন লাভ নেই।

অসদুপায় অবলম্বন করে কেউ সফল হয়  নাই

এখন পর্যন্ত একজনকেও দেখা যায় নাই, যে গুগলকে বোকা বানাতে গিয়ে দিনশেষে নিজেই বোকা হয় নাই। কোন ট্রাফিক এক্সচেঞ্জ সাইট বা, এই ধরনের কোন কিছু দিয়ে ভুয়া ক্লিকের চেষ্টা করবেন না, আইপি চেঞ্জ করেও চেষ্টা করবেন না।  আজেবাজে লোকজনের কথা না শুনে সরাসরি Google Adsense এর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও দেখুন-

শতভাগ সৎ থাকুন, গুগল আপনাকে এর রিটার্ন দেবে। আপনি বরং আপনার ব্লগের সফলতার লক্ষ্যে বিখ্যাত ব্লগারদের লেখা, ভিডিও ইত্যাদি দেখতে পারেন। Rank Fishkin, Brian Dean, Neil Patel, Sam from Ahref এদের ভিডিও দেখতে পারেন, আপনার উপকার হবে। নিচের কিছু লেখাও পড়তে পারেন-

 


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

admin

Author: admin

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

বলো সমাজ

মায়ের সেবা করার জন্য আজি হলাম চোর, সাহায্য চাই মায়ের সেবায় রাখলো বন্ধ দোর! গরিব মানুষ টাকার অভাব বুঝলো নাকো
গুগল এডসেন্স টিপস

গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায় [ ২০২৩ আপডেট]

গুগল এডসেন্স পাওয়ার উপায় হচ্ছে এডসেন্স এর নিয়মগুলো মেনে চলা এবং ব্লগ/ ওয়েবসাইটের জন্য অর্গানিক ভিজিটর নিয়ে আসা। গুগল আপনার
এডসেন্স থেকে পাওয়া টাকা

গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয়ঃ মিথ এবং বাস্তবতা

নতুন যারা ব্লগিং বা, ইউটিউবিং করে গুগল এডসেন্স থেকে টাকা আয় করার কথা ভাবছেন তাদের জন্য এই লেখাটি লিখছি। অনেক
আর্টিকেল লেখার নিয়ম গুলো

ব্লগের আর্টিকেল লেখার নিয়ম- অবশ্যপাঠ্য

আর্টিকেল লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে যদি আপনি যদি প্রফেশনাল আর্টিকেল রাইটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চান। অথবা, যদি আপনি ফ্রিল্যান্সিং

Leave a Reply