তাও শব্দের অর্থ ‘বিশ্বব্রহ্মান্ডের প্রাকৃতিক উপায় বা, নীতি’ । তাও ধর্ম একই সাথে একটি দর্শন এবং ধর্মবিশ্বাস বলে বিবেচিত। চীনের গ্রামীণ মতবাদ একসময় তাং রাজ্যের রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে আবির্ভূত হয়। লাওৎসি তাওকে এই ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা বলে মনে করা হয়। এই ধর্মে ইন ইয়াং মতবাদের প্রভাব রয়েছে। অমরত্ব লাভের চেষ্টা বা, কৃত্তিম উপায়ে স্বর্ণ তৈরির চেষ্টা চীনের তাও ধর্মের বিশ্বাসীদের করতে দেখা গেছে।
২৫০০ বছর আগে চীনে এই ধর্মের উদ্ভব। জীবন এবং জগতের মাঝে যে যোগাযোগ সেটাই তাও
তাও ধর্মের মৌলিক বিশ্বাস কি?
পৃথিবী পরিচালিত হওয়ার নিয়ম বা, আইন-কানুন হচ্ছে তাও। কিছু আচার অনুষ্ঠান পালনের মাধ্যমে মানুষ আজীবন বেঁচে থাকতে পারে। সাধারণ এবং প্রকৃতির সাথে সাম্য রক্ষা করে জীবনযাপন এই ধর্মের বৈশিষ্ট্য।
ঈশ্বরে বিশ্বাস করে কি?
আব্রাহামিক ঈশ্বরের মত সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী কোন সত্ত্বাকে বিশ্বাস করে না। তাও থেকে পৃথিবীর সবকিছুর উদ্ভব এবং তাও এর দিকে সবকিছু ধাবিত হয়।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ
অন্যান্য বিশ্বাসগুলোর মত তাওবাদের নিজস্ব বই বা, বইয়ের কালেকশন রয়েছে। সবচেয়ে বেশী মান্য করা বইয়ের নাম ‘তাও তে চিং’ আর এটি লিখেছেন কে সেটিও সহজে অনুমেয়, লাওঝি তাও।
এত তাও তাও করছি বলে ভাববেন না এটিই ঈশ্বর। এটি আসলে সবকিছুর মাঝে যোগাযোগ। পৃথিবীর সবকিছু তাওয়ের উপর নির্ভর করে।
ইন এবং ইয়ান এর ধারণা
ডানপাশের চিহ্নটি বিশ্বব্যাপী খুবই জনপ্রিয়। আমরা সাধারণত ভালো-মন্দের সহাবস্থান বুঝাতে এই চিহ্ন ব্যবহার হয় বলে জানি এবং ঠিকই জানি। সব ধরণের বিপরীতমুখী নৈতিকতার ব্যাপারে এদের বিশ্বাস এটাই যে, আমরা যাই ভাবি না কেন ভালো এবং মন্দ একক সত্ত্বা হিসেবে অবস্থান করে এটাই সত্যি।
ইন-ইয়াং এর এই চিহ্ন অনেক জনপ্রিয় এবং অনেকে এটাকে ইলুমিনাতির সাথে গুলিয়ে ফেলে যা সঠিক নয় বলে আমার ধারণা।ইন-ইয়াং শুধুমাত্র Taoism এর সাথেই সম্পর্কিত, অন্য কোন কিছুর সাথে নয়
পড়ুন- বৌদ্ধ দর্শন কি?
চীনের লোকজন কি সবাই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী?
কখনোই না, চীনে বিভিন্ন ধর্মের অনুসারী মানুষ রয়েছে যদিও চীন অফিসিয়ালি নাস্তিক দেশ(তথ্যসূত্র চাইলে দেয়া যাবে) সেখানে চৈনিক বৌদ্ধ(অন্যন্য অঞ্চলের চেয়ে এদের বিশ্বাস আলাদা), কনফুসিয়ানিজম, তাওইজম/ ডাওইজম ইত্যাদি ধর্মের বা, দর্শনের মানুষ রয়েছে।
Taoism এর সাথে চীনের প্রচলিত অন্যান্য দর্শনগুলোর সম্পর্ক বেশ জটিল। একই সাথে একজন ব্যক্তি বৌদ্ধ দর্শন এবং তাও দর্শনে বিশ্বাসী হতে পারে(নাও হতে পারে)
ইসাই ধর্ম
এটি মূলত খ্রিস্ট ধর্ম। মুসলিমরা যিশু খ্রিস্ট বা, Jesus Christ বা, ঈয়েশুয়া বা, ঈসাকে একজন নবী হিসেবে মান্য করে। তাই ঈসা নবীর প্রচারিত ধর্মকে ইসাই ধর্ম বা, খ্রিস্ট ধর্ম বলে ডাকে। খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী অনেকেই নিজেদের এই পরিচয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। নিজেদেরকে ঈসায়ী ঈমানদার বলেন।
বাংলার ধর্ম
এরকম কোন আলাদা ধর্ম নেই। তবে, আমরা জানি ধর্ম শব্দের অর্থ ধারণ করা। তাই বাঙালিরা যে সংস্কৃতি ধারণ করেন সেটিই বাংলার ধর্ম। এটি হতে পারে লুঙ্গি পরা, শাড়ী পরা, বাউল গান গাওয়া, শীতের দিনে পিঠা খাওয়া ইত্যাদি। এটি হুমকির মুখে, বিলুপ্তির পথে এমন মন্তব্য প্রায়শই শোনা যায়।
প্রত্যেকটি মানুষের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। আবার, প্রতেক জাতির, প্রত্যেক দেশের মানুষের এমন কিছু বৈশিষ্ট্য আছে যা পৃথিবীর আর, কারো সাথে মেলে না। এগুলো আসলে সেই দেশ বা, জাতির ধর্ম।
মোতাহার হোসেন চৌধুরি বলেছেন,
ধর্ম সাধারণ লোকের কালচার। আর কালচার শিক্ষিত, মার্জিত লোকের ধর্ম
