তোমার চোখ- ৩, ঘটি ও অন্যান্য

play icon Listen to this article
0

তোমার চোখ- ৩

যখন আমি তোমার চোখের দিকে তাকাতে পারিনা তখন আমি কি করি?

তখন আমি তোমার ঠোঁটের দিকে তাকিয়ে থাকি।

সে ঠোঁট আমাকে সুন্দর করে ডাকেঃ বলে, কাছে আয় কাছে, আয়।

আমি কাছে না গিয়ে থাকতে পারিনা ।

সে শুধু আমাকে আদর করে,  আমি সে আদর ফিরাতে পারিনা।

একদিনতো বলেই ফেলেছিলাম,

তুমি না থাকলে আমার ভাল হত আমি অন্য কিছু করতাম।

যদি এ ঠোঁট না থাকত তাহলে আমি করতাম?

আমি চোখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম?

চোখের দিকে তাকানোতো সম্ভব নয়।

তাহলে অন্যকিছুর দিকে তাকিয়ে থাকতাম?

সেটা কি, তুমি কি আমাকে বলতে পার?

ঘটি

আমার যখন কিছু ছিলনা তখন আমার কি ছিল?

তখন আমার একটি ঘটি ছিল।

আমি এ ঘটিটি নিয়মিত নাড়াচাড়া করতাম।

সেটিতে তেল রাখতাম, নুন রাখতাম, লাকড়ি রাখতাম।

আমার সে ঘটিটি এখন নাই এখন আমি কি করি?

আমি সেটিতে কিছুই রাখিনা।

তাহলে? আমার একটি বড় ঘটি দরকার।

সেটি কোথায় আছে কেউ বলতে পার?

যদি বলতে পার আজই আমি সেখানে যাব,

গিয়ে সেটি নিয়ে আসব।নিয়ে এসে সেটিতে তেল, নুন, লাকড়িতো রাখবই,

সেটিতে ভক্তাও রাখব।

কারন, ভক্তা আমি নিয়মিত খাই।

সেটি যদি কখনও ভেঙে যায় আমি কি করব?

বলব, আমাকে নতুন একটি ঘটি এনে দাও যেটি আজকেরটির চেয়েও বড়।যদি না এনে দেয়? বলব, তুমি ঘটি হয়ে যাও।

বাবা- ৬

একটি অজানা গল্প বলছিঃ

আমার বাবার নামে একজনের নাম ছিল। সে আমাকে বাবা বলে ডাকত।একদিন কাছে ডেকে বলে, বাবা তুই আমার পাশে বস্।সেদিন আমি তার পাশেই বসে ছিলাম।সেদিন তাকে আমার আমার বাবার মতই লেগেছিল। সেই থেকে আমি তাকে বাবা বলেই ডাকি। এখন সে দেখা হলেই আমাকে বলেঃ কোথায় যাস্, কি খাস্ তোর মা কেমন আছে, তোর মা কি এখন আর তোদের নানা’ বাড়িতে বেড়াতে যায়, এসব।এখন আমার একদিন তাকে না দেখলে ভাল লাগেনা, একদিন না দেখলে মনে হয় কতদিন দেখিনি।একদিন সে রিক্সা দিয়ে কচুকাটার হাটে যাচ্ছিল।আমি বললাম, কোথায় যাও? বলল, কচুকাটার হাটে। বললাম, তাড়াতাড়ি ফিরো।সে, খুব তাড়াতাড়িই ফিরেছিল।সে বিকেলটি আমার সবসময় খুব মনে পড়ে। সে বিকেলটির কথা মনে পড়লে মন চায় আবার সে বিকেলে ফিরে যাই।

এখন কথা হল এমন একটি বাবা কয়জনের আছে?  যার নাই সে নিশ্চয়ই দুর্ভাগা? হ্যাঁ।তাহলে?  এমন দুর্ভাগ্য যেন কারো ভাগ্য না হয়।

মোনালিসা – ৬

আমি কাল রাতে একটি স্বপ্ন দেখেছি কেউ একজন আমার কাছে আসবে, আমাকে একটি ফুল দিবে, আমার পাশে কিছুক্ষণ বসবে, আমাকে গল্প শোনাবে, তারপর এক তুড়ি মেরে চলে যাবে।

কিন্তু সে আসেনি। আমার এখন কথা হচ্ছে এমন একটি স্বপ্ন আমি দেখলাম কেন? ও বুঝেছি আমি মনে হয় কারো প্রেমে পড়েছি।সে জনার নাম কি জানতে বড় ইচ্ছে করে। সে জনার নাম যদি  হয় মোনালিসা তাহলে অনেক ভাল হয়। কারন, মোনালিসা অনেক প্রেম করেছিল।

মোনালিসাকে নাকি আরও একজন ভালবেসেছিল।সে জনা নাকি বলেছিল, আমি তোমার জন্য মরতে পারি। সে জনা  আজ আজ মারা গেছে, মোনালিসা আজ তার জন্মদিন পালন করছে।

দুঃখ – ১১

যত পার দুঃখ দাও; এত বেশি দুঃখ দিবে যে যেন দুঃখের কোন শেষ না থাকে। সে দুঃখ দিলে আমি কি বলব? তুমি আমাকে আরও বেশি দুঃখ দাও।সে দুঃখ কি তোমার কাছে আছে? জানি নাই।তাইতো তুমি দুঃখী।

তোমার এ দুঃখের শেষ কোথায়?  তোমার এ দুঃখ শেষ হবে দুঃখ নামক সাগরে গড়াগড়ি খেলে। কিন্তু দুঃখ নামক সাগরে তোমার পক্ষে কি গড়াগড়ি খাওয়া সম্ভব?  না সম্ভব নয়।তাইতো তুমি দুখে দুখী।দুখে’ দুখী কি কোনদিন দুঃখ মুক্ত হয়? হয় যদি সে  কোনদিন সুখে’ দুখীকে ছাড়িয়ে যায়।  কিন্তু সুখে’ দুখী বলতে কি কিছু আছে  ?  না। তাইতো তুমি চিরদুখী।

কুকুর -৩

জানি যে কুকুরটি তোমাকে সর্বক্ষণ পাহারা দিয়ে রাখত সে আজ মারা গেছে। তুমি তার শোকে শোকাভিভূত। তুমি কিছুতেই তাকে ভুলতে পারছনা।তুমি শুধু একটা কথা ভাবছ, এমন একটি কুকুর তুমি কোথায় পাবে!তুমি নাকি একদিন মাঠে বেড়াতে গিয়েছ সেদিন নাকি কুকুররটি সারাক্ষণ এদিক ওদিক লাফিয়ে বেড়িয়েছে। আমি বলি, তুমি কুকুরের মায়া ভুলে যাও। এক কুকুর গেলে আরেক কুকুর আসবে। পৃথিবীতে কুকুরের কোন অভাব নেই। যে কুকুর তার প্রভুকে ছেড়ে চলে যায় তাকে ভুলে যাওয়াই শ্রেয়।তুমি শুধু একটি কথা ভাববে তোমার এমন এক কুকুর আছে যে তোমাকে কোনদিন ভুলবেনা।সে তোমার জন্য জীবন দিতে পারে। সে একদিন তোমাকে না দেখলে হাজার দিন অপেক্ষা করে। সে কুকুর কে? সে কুকুর হল আমি?  আমি মানে?  আমি। মানুষ কখনও কুকুর হয়? হ্যাঁ হয়, সে যখন তার প্রভুকে পায়না তখন সে কুকুর হয়ে যায়। আমি তোমাকে পাইনি তাইতো আমি কুকুর। তুমি এ কুকুর এর খাদ্য কি যোগান দেবে?


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

মো আরিফ হোসেন সর্দার

Author: মো আরিফ হোসেন সর্দার

আমার জন্মস্থান চাঁদপুর জেলা। জন্ম তারিখ ০১/০১/১৯৮৪।আমি জাহাঙ্গীরনগরবিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ পাস করেছি। বর্তমানে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত, (এখনও) অকৃতদার, পাবলিক ফিগার ।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

চোরাবালি

দিন মাস বছর জীবন জুড়ে শতাব্দী নাম নেই! কতো বড়াই –করছো মানব ভাবছো তুমি সেই। খুব সহজেই—-হারিয়ে যায় কতো রঙিন

অন্তিম যাত্রা

ধূসর ধরায় মানব মাঝে কেবল দুলকি খেলা, চিরকর্মার অসীম কৃপায় নিত্য কাটে বেলা। স্বপ্নের ঘোরে জগত মাঝে আছো দেখো ভেবে

ভাগ্যের চাঁদ ফিকে

অসাড় জাতি ভাগ্যের জোরে নির্ভর করে চলে, বলছে জাতি লিখন আছে পাবো সময় হলে। এমন জাতি আঁধার ঘুচে আলোর দেখা

Leave a Reply