“রূপকথার গল্পে আমি”

0

রূপকথার গল্পে আমি

 

২১.০৪.২০০৮
(১)
মা কাপড় ধোয়ার জন্য বালতিতে পানি রেখে এসেছেন। কাপড় নিয়ে ফিরে গিয়ে দেখছেন পানি ঘোলা হয়ে গেছে, যা সম্ভব ধূলাবালু লাগানো হাত ধোয়া হয়েছে। মা ধমকের সুরে বলে উঠলেন এই আমার পানি কে নষ্ট করলো কে-এটা ওই দুষ্টুরই কাজ”। আপু নকশিকাঁথা করছে, বাবাকে ভাত দেয়ার জন্য এই মাত্র গেল, ফিরে এসে দেখছে তার কাঁথার অনেকটা করা শেষ হয়ে গেছে সেটা মনে হচ্ছে যেন কচি হাতে এই প্রথম কে চক পেন্সিল ধরে হিজিবিজি করে অ, ক, খ লিখার চেষ্টা করছে। সেও একটু রাগী সুরে ঠিক এ যেন রাগী নয়, টক-ঝাল- মিষ্টি সুরে বলে উঠলো এই আমার কাঁথা কে সেলাই করলো রে কে সেলাই করলো- এটা ওই দুষ্টুরই কাজ”। ভাইয়া দুপুরের দিকে স্টাম্পগুলো ঘষে মেজে ধোয়ে ঘরে রাখা পুরাতন রঙের কৌটা থেকে রঙ দিয়ে স্টাম্পগুলো একটু পালিশ করে নিয়ে শুকানোর জন্য উঠোনের এক কোনায় ফুলবাগানের বেড়ার সাথে খাড়া করে রাখলো। এখন সে নিজে একটু ফিটফাট হওয়ার কাজে ব্যস্ত। বিকেলের দিকে মাঠে খেলতে যাবে, এসে দেখে তিনটার মধ্যে একটা স্টাম্প নেই। রঙন ফুল গাছের এক জুফা ফুল এসে ঢলে পড়েছিল বেড়ার ও পাশে সেটাও উধাও হয়ে গেছে। গাছটা যেন মনে হচ্ছে অভিযোগ করার জন্য এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেও ঝাঁজালো কণ্ঠে বলে উঠছে” কে কে চুরি করল আমার স্টাম্প কে চুরি করল – এটা ওই দুষ্টুরই কাজ”। ওই দুষ্টুটা আর কেউ নয়, তাদেরই আদরের ছোট মেয়ে আদরের ছোট বোন নাম “অধরা”। আর ওরা হচ্ছে অধরার মা পদ্মাবতী, বোন অনিতা ভাই রাহিম। অনিতার ছোট অধরার বড় আরেক বোন নাম “অচিরা”। অধরা খুবই চঞ্চল প্রকৃতির একটা মেয়ে। সারাদিন একটার পর একটা দুষ্টামি করেই চলছে।

আজ রবিবার, অধরা স্কুলে যাবে, ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হবে। কে দেখে অধরার খুশি! আজ একটু অন্য রকম লাগছে তাকে। প্রতিদিনের মত আজ আর দুষ্টামি করছে না। আগে-বাগে গোসল সেরে খাওয়া দাওয়া করে নতুন জামা কাপড় পরে বারান্দায় বসে অপেক্ষা করছে। কখন ভাইয়া আসবে এসে তাকে নিয়ে যাবে স্কুলে। রাহিম তার বন্ধুদের সাথে একটা জরুরী মিটিং করতে গেছে। রাহিম এর জরুরী মিটিং মানেই বুঝতে হবে কখন, কোথায়, কোন কোন দল খেলবে এই সব আর কি।
দশ পনেরো মিনিট অপেক্ষা করার পর এসে হাজির হলো রাহিম। অমনি অধরা দৌড়ে গিয়ে তার হাত ধরে “চলো ভাইয়া স্কুলে চলো আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে”। রাহিম বুঝতে পারছে এত তাড়াহুড়া কেনো। এখনো স্কুলে যাবার সময়ই আসেনি, আর ভর্তি হতে যে কোন সময় গেলেই চলে। তবুও অধরার কথা ভেবে একটু তাড়াতাড়ি সেও তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ল তাকে নিয়ে। আজ থেকে শুরু হয়ে গেলো অধরার শিক্ষা জীবন। মানে তখন থেকেই শুরু হয়েছিল আমার শিক্ষা জীবন আর আমি হচ্ছি সেই বিশেষ ব্যক্তি “অধরা”।


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Sumana Begum

Author: Sumana Begum

আমি সুমানা বেগম। সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করি। আমার বাবার নাম হাজী মো. আতাউর রহমান এবং মায়ের নাম তায়্যিবা খানম। তারা কেউ বেঁচে নেই। আমি তাদের সব ছোট মেয়ে। বিয়ানী বাজার সরকারি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেছি এবং সিলেট এম. সি. কলেজ থেকে মাষ্টার্স। আমার স্বপ্ন ছিল চাকরি করব। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে তেমন উন্নতি করতে পারিনি। তবে আমার আশা পূরণ হয়েছে আমি কিছু দিন শিক্ষকতা পেশায় কাজ করতে পেরেছি। আমি বিবাহিত এবং আমার একটি আট বছরের মেয়ে আছে নাম মাহনূর জান্নাত।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

প্রতি দান

রাতে থেকে বৃষ্টি হচ্ছিলো, কিছুক্ষণ,বৃষ্টি থেমেছে সবে। সকাল কখন হয়েছে চম্পা জানে না। চম্পা শুনেছে, ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র

অ্যাথেনার অলৌকিক হার্প

অনেক অনেক বছর আগে, প্রাচীন গ্রিসের এক ছোট্ট গ্রামে বাস করত এক কিশোরী মেয়ে—নাইরা। সে দরিদ্র ছিল, কিন্তু তার গলায়

নীলচোখা জলপরী

শঙ্খনদী গ্রামের সকাল সবসময় সমুদ্রের শব্দ দিয়ে শুরু হয়। মাটির ঘরগুলোর চালের ফাঁক দিয়ে বাতাস ঢোকে, আর বাতাসের সাথে ভেসে

সময়ের দরজা

মেঘে ঢাকা এক বিকেল। পুরান ঢাকার সরু গলির ভেতরে, ধুলো ধরা এক প্রাচীন বইয়ের দোকানে ঢুকল আরসোহা। ইতিহাসের ছাত্রী সে,

One Reply to ““রূপকথার গল্পে আমি””

Leave a Reply