ব্যাকলিংক

ব্যাকলিং কি এবং কিভাবে তৈরি করা যায়?

0

ফ্রি ব্যাকলিংক কিভাবে তৈরি করা যায়, কাকে বলে ইত্যাদি নিয়ে এই লেখাটিতে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। বেশীরভাগ নতুন ব্লগার ব্যাকলিংক তৈরি করতে গিয়ে স্প্যামিং শুরু করে দেন। ফলে কোন উপকার হয় না, বরং দিন শেষে ক্ষতিই হয়।

সহজ পদ্ধতিতে ব্যাকলিং কিভাবে পাবেন এবং কোন ব্যাকলিং সত্যিই আপনার সাইটের র‍্যাংক বাড়িয়ে দেবে তা জানানোর চেষ্টা করবো। পাশাপাশি এটাও জানাবো যে ব্যাকলিংক ছাড়া ভিজিটর পাওয়া সম্ভব কি না।

ব্যাকলিংক কি?

এক কথা যদি বলি ব্যাকলিংক হচ্ছে এক ধরণের হাইপারলিংক যার মাধ্যমে অন্য ওয়েবসাইটের কোন পেজ থেকে আপনার সাইটের কোন পেজে লিংক দেয়া হয়। এর মাধ্যমে দুটি বিষয় প্রমাণিত হয়-

১. ঐ কনটেন্টের সাথে আপনার কনটেন্টের মিল আছে

২. আপনার ওয়েব পেজের গুরুত্ব আছে

ডু ফলো লিংকঃ প্রায় সব লিংকই ডু ফলো। যেকোন সাধারণ হাইপারলিংককেই ডু ফলো বলতে পারেন। এই ধরণের লিংক তৈরির জন্য যেকোন এংকর টেক্সট ব্যবহার করতে পারেন। আবার এংকর ছাড়াও লিংক হতে পারে। এটাতে কোন সমস্যা নাই, ভ্যারাইটি বেশী থাকলেই বরং ভালো।

নো ফলো লিংকঃ এটা উল্লেখ করে দিতে হয়, সার্চ ইঞ্জিন rel=nofollow নামে একটি এট্রিবিউট ফলো করে। যেমনঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হাজার হাজার লিংক আদান প্রদান হয়। সেগুলো থাকে নো ফলো, এতে লিংক ভিজিট করা যায়, সার্চ ইঞ্জিনে গুরুত্ব বাড়ে না। এরপরেও এইসব লিংক এস ই ও এর ক্ষেত্রে ইফেক্ট ফেলে। কারণ, এগুলোতেও ভিজিটর পাওয়া যায়।

এই ধরণের লিংকের মাধ্যমে লিংক জুস পাস হয়। আমের জুসের মতো কোন জুস না, এটা একটা টার্ম যা ব্যবহার করা হয় এস ই ও এর ক্ষেত্রে। মানে হচ্ছে ঐ ওয়েব পেজ থেকে অথরিটি পাস হয়।

ভুল ধারণা আছেঃ অনেক ব্লগার ভেবে বসে থাকেন যে আমার সাইট থেকে অন্য সাইটে ডু ফলো লিংক দিলে আমার র‍্যাংকিং খারাপ হবে, আর ওদেরটা ভালো হবে। এই ধারণা সত্যি না। অন্য সাইটে লিংক দিলে সাধারণত র‍্যাংকিং এ উন্নতি হয়। কিভাবে-

  •  এটার মাধ্যমে গুগল বুঝতে পারে যে আপনার লেখাটা কি বিষয়ে
  • বাংলাদেশের বাজেট নিয়ে একটা লেখায় যদি অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোন একটি পেজের লিংক দেন, তাহলে বুঝা যাবে আপনার লেখাটা তথ্যবহুল
  • বাউন্স রেট কমে। ডাউনলোড লিংক যেগুলোতে থাকে সেগুলোর বাউন্স রেট সবচেয়ে কম হয়। কারণ, উপকারি মনে হলে ভিজিটর লিংকে ক্লিক করে।

এগুলো প্রযোজ্য হাই অথরিটি লিংকের ক্ষেত্রে। স্প্যামি লিংক আপনার লেখার মাঝে দিলে উপকার পাবেন না। আর, আপনার লেখাটা যে বিষয়ে হুবহু একই বিষয়ের আরেকটি লেখাকে ভুলেও লিংক দিবেন না, এতে ক্ষতি হবে। এছাড়া ওয়ার্ডপ্রেসে কোন সাইটকে লিংক দিলে সেই সাইটেও একটি Pingback তৈরি হয়, মানে একটি লিংক পাওয়া যায় ফ্রিতে।

ব্যাকলিংক কিভাবে তৈরি করা যায়?

সবাই যেটা করে- প্রফাইল ব্যাকলিংক তৈরি করে, কমেন্ট করে, ডিরেক্টরিতে সাইট সাবমিট করে। এগুলোর গুরুত্ব মোটেও নেই তা না, তবে অনেক কম। কোন সাইট যদি এমন হয় যে তার কোন ভিজিট নেই, ভালো কনটেন্ট নেই। তার সাইটে কোন ব্যাকলিংকও নেই, তার চেয়ে ভালো করতে পারবেন।

তবে, আপনি যদি চান যে সার্চ ইঞ্জিন আপনার লেখাকে গুরুত্ব দিক তাহলে এমন সাইটে লিংক তৈরি করতে হবে যেখান থেকে সত্যি সত্যি ভিজিটর আসবে এবং ঐ বিষয়ে ঐ সাইটে খুব ভালো লেখা আছে।

গেস্ট পোস্টিংঃ এজন্য সেরা পদ্ধতি হচ্ছে গেস্ট পোস্টিং করা।  আরেকজনের ব্লগে যদি ১৫০০+ শব্দে কোন একটি টপিকে এনালাইসিস করে, কিওয়ার্ড রিসার্চ করে সুন্দর একটি আর্টিকেল লিখে দেন, সে তা পাবলিশ করবে। সেই লেখার মাঝে আপনার সাইটের ১/২ টা লিংক থাকলেও কোন আপত্তি করবে না। এতে ঐ লেখাটাও সেখানে ভালো র‍্যাংক পাবে, আপনার ওয়েবসাইটও পাবে।

আচ্ছা, গেস্ট পোস্টিং কি কঠিন মনে হচ্ছে। তাহলে আরো কিছু বিকল্পের কথা বলছি-

পরিসংখ্যান শেয়ারঃ এনালাইসিস করে করে এমন পরিসংখ্যান বের করবেন যা কেউ আগে করেনি, তাহলে অন্যেরা আপনার লেখাকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবে। এজন্য আপনাকে আপনার ব্লগের নিশ নিয়ে নিজে গবেষণা করতে হবে, বিশ্লেষণ করতে হবে।

ইনফোগ্রাফিক তৈরিঃ  সুন্দর infographic তৈরি করে, সেটি সবার সাইটে এমবেড করার সুযোগ দেবেন, এমবেড কোডের মাঝে নিজের সাইটের লিংক বসিয়ে দেবেন। তাহলে যে কেউ চাইলে ইনফোগ্রাফিক তাদের ওয়েবসাইটেও দেখাতে পারবে। এবং সেইসব সাইট থেকে একটি করে লিংক পাবেন। এক্ষেত্রে infographic হতে হবে সবার জন্য উপকারি এবং আকর্ষণীয়।

অফার ইমেইলঃ   ব্লগারদের ইমেইল করে তাদের ব্লগের জন্য কিছু অফার করুন, বিনিময়ে লিংক চান, সবাই দেবে। আপনি ইমেইল করলেই কেউ আপনার ব্লগকে রেফার করবে না। এজন্য দুটি কাজ করতে পারেন। প্রথমত, দেখবেন, আপনার ব্লগের নিশের সাথে মিল আছে এমন কোন কোন সাইটে অন্য সাইটের লেখাকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করেছে। এরপর তাদেরকে ইমেইল করে জানাবেন যে, আপনার ব্লগের লেখা ঐগুলোর চেয়ে ভালো। দ্বিতীয়ত, তাদেরকে কিছু অফার করবেন, যেমন গেস্ট পোস্ট বা, যেকোন কিছু।

সংখ্যাযুক্ত পোস্টঃ  রিসোর্স শেয়ার করুন, তথ্য,সংখ্যা, এগুলো এমনিতেই ব্যাকলিংক পায়। উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে ভারতের স্বাধীনতা দিবস ১৫ আগস্ট, আর ঐ দিনটি বাংলাদেশে পালিত হয় শোক দিবস হিসেবে। এখানে আমি উইকিপিডিয়ার নাম ব্যবহার করেছি সংখ্যা শেয়ার করার জন্য। নাম উল্লেখ করলেও ঐ সাইটের অথরিটি বাড়বে। আর, এরকম তথ্য থাকলে লিংক পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

লিংক বিলিয়ে দিনঃ  অন্য ওয়ার্ডপ্রেস সাইটে লিংক দিয়ে দিন, এমনিতেই Pingback পাবেন। তবে, নিজের ব্লগের ওয়েব পেজ যে কিওয়ার্ডে লেখা সেই একই কিওয়ার্ডের সাইটের জন্য লিংক দিবেন না। অন্য যেকোন লিংক দিলে আপনার সাইটের তাতে র‍্যাংকে উন্নতি ছাড়া অবনতি হবে না। এটা খুব ভালো প্র্যাকটিস, সব বড় বড় ব্লগারেরা করেন।

ফ্রিতে PDF শেয়ার করুনঃ  এর বাইরে PDF তৈরি করে আপলোড করে দিতে পারেন Slideshare বা, আরো pdf শেয়ারিং সাইটে। সেখান থেকেও ভিজিটর পাবেন। এরকম অনেক সাইট আছে যেগুলোতে pdf শেয়ার করা যায়। একটা বড় pdf তৈরি করে আপনার ব্লগ পোস্টের লিংক তার মাঝে দিয়ে দিবেন। এর অর্থ আপনি সেখান থেকে ব্যাকলিংক পেয়ে গেছেন।

ব্যাকলিংক না থাকলে কি হবে?

মনে করুন আপনি একটি নিশ সাইট তৈরি করলেন। সেখানে ৩০ টি আর্টিকেল লিখলেন যেগুলো র‍্যাংকিং এর প্রথম পাচটি লেখার চেয়ে ভালো। এরপর আর, কিছুই করলেন না, এইভাবে সাইটটিকে রেখে দিলেন। কি হবে(অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, এমন হবেই এরকম কোন কথা নেই)-

  • প্রথমে কোন ভিজিট পাবেন না, তবে গুগলে সাবমিট করলে সবগুলো লেখা ইনডেক্স হবে
  • কিছু কিওয়ার্ডের জন্য সার্চে আসতে শুরু করবে কিছুদিন পর, ভিজিট হবে না
  • এরপর অনেকগুলো কিওয়ার্ডের জন্য সার্চে আসবে
  • আরো কিছুদিন পরে, ভিজিট হতে শুরু করবে ১/২ টি করে
  • এরপর গুগল ৬ মাস ধরে নানারকম পরীক্ষা নীরিক্ষা করবে লেখাগুলোকে নিয়ে
  • ৭/৮ মাস পরে বা, তারও আগে ভিজিটের গ্রাফ শুধু উপরে উঠতে থাকবে

ব্যাপারটা এমন না যে ব্যাকলিংক না থাকলেই ভিজিটর পাওয়া যাবে না। লেখা ভালো হলে এমনিতেও ব্যাকলিংক পেতে পারেন। আর, সব লেখাই ভালো সংখ্যায় ভিজিটর আনতে পারে। পেজে যখন থেকে ভিজিটর পাওয়া যায় তখন বাউন্স রেট আর, ভিউ ডিউরেশন হচ্ছে সবচেয়ে influential factor, অন্য কিছু না।


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

প্রবন্ধ লেখক

Author: প্রবন্ধ লেখক

বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার চেষ্টা করছি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

ঘরোয়া বিউটি টিপস ২০২৩

মেয়েদের সেরা ৫টি ঘরোয়া বিউটি টিপস

সুন্দর, উজ্বল ও ফ্রেশ ত্বক সব মানুষের প্রথম পছন্দ। ত্বক সুন্দর থাকলে কোনরকম প্রসাধনীর ব্যবহার ছাড়াই আপনাকে দেখাবে অনেক আকর্ষণীয়।আজ

বলো সমাজ

মায়ের সেবা করার জন্য আজি হলাম চোর, সাহায্য চাই মায়ের সেবায় রাখলো বন্ধ দোর! গরিব মানুষ টাকার অভাব বুঝলো নাকো

উপদেশ দেওয়ার সঠিক নিয়ম

মানুষকে সৎকর্মশীল হওয়ার উপদেশ দেওয়া আজ একটি পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ সাহিত্যের মাধ্যমে উপদেশ দেয়, কেউ উপদেশ দেয় বক্তৃতার মাধ্যমে।
মোটিভেশনাল উক্তি এসএমএস স্ট্যাটাস

১০০+ মোটিভেশনাল উক্তি, এসএমএস, স্ট্যাটাস ও ছবি ডাউনলোড

আমাদের জীবন কখনোই এক রকম যায় না। একজন মানুষের জীবনের প্রতিটি বাঁকে নানান চড়াই উতরাই রয়েছে। তাই বিভিন্ন ক্রান্তিকাল মুহূর্তে

2 Replies to “ব্যাকলিং কি এবং কিভাবে তৈরি করা যায়?”

  1. ধন্যবাদ এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

    ব্যাকলিংকের স্ট্রেঙ্থ নিয়ে একটি পোস্ট বানালে খুব উপকৃত হতাম।

    1. ভবিষ্যতে চেষ্টা করবো, শুধু ব্যাকলিংক এর স্ট্রেন্থ নিয়ে কিছু লেখার, মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Reply