গল্প ভুয়া প্রেম আফছানা খানম অথৈ

0

ভুয়া প্রেম

আফছানা খানম অথৈ

ঘড়িতে তখন রাত বারোটা। সুমনা সবেমাত্র ঘুমিয়েছে। তখনি মোবাইল ফোনে রিং বেজে উঠল। একবার, দুবার, তিনবার বাজনার পর তার ঘুম ভেঙ্গ গেল। সে আড়মোড় খেয়ে জেগে উঠল। অতপর মোবাইল হাতে নিয়ে রিসিভ করে বলে উঠল।
হ্যালো আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন?
অপর প্রান্ত চুপচাপ কথা বলছে না। সুমনা কিন্তু থেমে নেই হ্যালো হ্যালো বলে চলেছে। ক’মিনিট পার হলো। তারপর লাইন কেটে গেল। পরক্ষণে তা আবার বেজে উঠল। এবার ও সুমনা হ্যালো বলে জানতে চাইল,
কে আপনি?
অপর প্রান্ত থেকে জবাব দিলো আমি তোমার বন্ধু।
বন্ধু বলাতে সুমনা ভাবনায় পড়লো। তারপর জানতে চাইল।
বন্ধু সেটা বুঝলাম, কিন্তু আপনার পরিচয়?
আজ থাক, অন্ দিন বলব, ওকে।
আপাতত সে ফোন রাখল। এদিকে সুমনা ভীষণ ভাবনায় পড়লো। কে এই বন্ধু, কি তার নাম ঠিকানা, কোথায় থাকে? বিভিন্ন রকমের প্রশ্ন তার মাথায় উৎপেতে বসলো।
পরদিন রাতে ঠিক একই অবস্থা। রাত বারোটা বাজতে তার মোবাইল ফোনে রিং বেজে উঠল। অমনি সে জানতে চাইল,
হ্যালো কে আপনি?
বলেছি না আমি তোমার বন্ধু, আমার নাম শাকিল, অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি।
I love you sumana, I love you.
হঠাৎ অপরিচিত লোকের কণ্ঠে love কথাটা শুনে সুমনা লজ্জাবতী লতার মতো জড়োসড়ো হয়ে গেল। কোন সাড়াশব্দ নেই। তখনি শাকিল বলে উঠল,
সুমনা কথা বলছ না কেন? আমাকে তোমার পছন্দ হয়নি?
কারো সম্পর্কে ভালো করে না জেনে, না শুনে ইয়েস বলাটা কি ঠিক!
এই ভেবে সুমনা বলে উঠল,
কাউকে না দেখে হ্যাঁ বলাটা কি…।
তার কথার হ্রেষ ধরে শাকিল বলে উঠল,
ঠিক আছে আমি বুঝতে পেরেছি, না দেখে কিছু বলা যাবেনা এইতো?
হুম তাই।
শুন আগামীকাল বিকেল তিনটায় বুটানিকাল গার্ডেনে চলে এসো। এখন রাখি। গুড নাইট। ভালো থেকো।
দু’জনার ভিতরে তোলপাড় শুরু হলো।
কখন সকাল হবে, কখন বিকেল তিনটা বাজবে, কখন দু’জন দু’জনকে দেখবে। দু’জনার চোখে রাতে ঘুম নেই।
যাক কোনমতে রাত পোহালো। ঘড়ির কাটা টিকটিক করে এগুতে লাগল। বরাবর বিকেল তিনটা এক সেকেন্ড ও এদিক ও দিক হলো না। ভালোবাসার কি আকর্ষণ বুঝতে পারছেন তো।সময়মতো দু’জন বুটানিকাল গার্ডেনে উপস্থিত। ফোনে যোগাযোগ ছিল তাই একে অপরকে চিনতে ভুল করলো না।
পাশাপাসি দু’জন বসে পড়লো। একে অপরকে ভালো করে দেখে নিলো। আলাপ আলোচনা, জানা শুনার পর্ব শেষ। দু’জনার মাঝে ভালোবাসা সৃষ্টি হলো।কিছুকিছু পুরুষ মানুষের স্বভাবটাই এ রকম। মেয়ে মানুষ দেখলে আর স্থির থাকতে পারেনা। সুমনাকে খুব করে ভালোবাসতে…।
চমকে উঠে সুমনা সতর্ক সংকেত,
এই প্রথম দেখাতে এই সব কি? বিয়ে না হতে এত গভীরে যাওয়া ঠিক না। কঠিন পাপ, এটা কোরানের নির্দেশ। সাবধান আর কখনো এমন কাজ করবেন না।
চলো ফেরা যাক।
এদিকে সুমনার কাজিন রিদয় অনেক আগে থেকে তাকে ভালোবাসে। কিন্তু মুখ ফোটে বলতে পারছে না। এভাবে আর কতদিন, যদি সে অন্য কাউকে ভালোবাসে।
এই ভেবে সে আজ ছুটে আসল ভালোবাসার কথা বলতে। কিন্তু এসে একি দেখল! টেবিলের উপর ডায়েরী কলম, ভিতরে ভাঁজ করা একটা চিঠি। কার কাছে লেখা রিদয় খুলে সবেমাত্র হাতে নিলো। তখনি সুমনা ছুটে এসে কড়া ধমকের স্বরে বলে,
রিদয় ভাইয়া তুমি, তাও আবার আমার ঘরে অনুমতি ছাড়া। এত বড় সাহস?
কোনকিছুর তোয়াক্কা না করে সে তার হাত থেকে চিঠিটা কেড়ে নিলো। রিদয় এখন ও দাঁড়িয়ে, তবে কিছু একটা বলতে উদ্যত হলো। তখনি সুমনা গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠল,
রিদয় ভাইয়া তুমি যাবে, না আমি মা’কে ডাকব?
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রিদয় উত্তর দিলো, আমি যাচ্ছি, আন্টিকে আর ডাকতে হবেনা। তবে যাবার আগে একটা সত্য কথা বলে যায়, আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।
সুমনা ভ্যাংচি কেটে বলে,
সখ কত আমাকে ভালোবাসে, ভালোবাসা বাজারের পণ্য নাকি? যে চাইলে পাওয়া যায়।
তখনি মোবাইলে রিং বেজে উঠল। সুমনা হ্যালো বলতে শাকিল বলে উঠল,
সুমনা তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। আরলি চলে এসো লক্ষিটি।
সুমনা কি আর স্থির থাকতে পারে।ডার্লিং ফোন করেছে। তাড়াহুড়া করে সাজু-গুজু করে বেরিয়ে পড়লো। উল্কার গতিতে ছুটে গেল শাকিলের কাছে। দু’জন পাশাপাশি রেষ্টুরেন্টে বসে পড়লো।চা খেতে খেতে শাকিল বলে,
সুমনা তুমি খুব সুন্দর, পূর্ণিমার চাঁদ, আমার জানের জান।তোমাকে ছেড়ে থাকতে মন চাইছে না। চলো আজ দু’জনে একটা সুন্দর জাগায়…।

ওকে জান চলো।
সুমনা কোনকিছু বুঝে উঠার আগে শাকিল তাকে একটা হোস্টেলে নিয়ে গেল।পরিপাটি বিছানা এটাস্ট বাতরুম। এসব দেখে সুমনা চমকে উঠে বলে,
শাকিল তুমি আমাকে এ কোথায় নিয়ে এলে?
মিষ্টি হেসে শাকিল বলে, জান তুমি দেখে ও বুঝতে পারলে না?
হুম শাকিল কিছু একটা বুঝলাম। তবে এখানে কেন?
কানের কাছে ফিসফিস করে শাকিল বলে,
ডার্লিং আজ তোমাকে নিয়ে…।
প্রথমে সুমনা অমত করলে ও পরে ঠিক শাকিলের কথায় ফিরে আসল। মেয়েদেরকে ফটানোর যতগুলো প্রক্রিয়া আছে তার সবগুলো পুরুষের মাথায় সবসময় কাজ করে। তাই মেয়েদেরকে প্রেমের ফাঁদে ফেলা পুরুষদের জন্য ইজি হয়ে যায়। সে যত ভালো মেয়ে হোক। বিশেষ করে ফালতু ছেলেরা খুব ইনিয়ে বিনিয়ে প্রেমের ডায়ালগ বলে, আর মেয়েরা ভালো মন্দ যাছাই বাছাই না করে তাদের হাতে হাত রেখে শফত করে। যেমনটি করেছিল সুমনা।আর এই সুযোগে শাকিল সুমনাকে নিয়ে মজার ভুবনে…।
এমনি হাসি আনন্দের মাঝে চলতে লাগল তাদের দিনগুলো।
এদিকে কাজিন রিদয় একান্ত আপন করে সুমনাকে পাওয়ার জন্য ব্যকুল হয়ে উঠল। তারপর সুমনার মায়ের কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলো।মা-বাবা দু’জনে রাজি, কিন্তু সুমনা বেঁকে বসলো।মানে সে এখন বিয়ে করবে না। কি আর করা মা-বাবা বাধ্য হয়ে মেয়ের প্রস্তাব মেনে নিলো। বর্তমান আধুনিক যুগের মা-বাবার একটা দোষের কারণে ছেলে-মেয়ের জীবন শেষ। যেমন ছেলে মেয়েকে অতি আদরে মানুষ। শাসন নেই বললে চলে। তার উপরে নিজের স্বাধীন মতে চলাফেরা, পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারটা ও তাদের উপর নির্ভর করে। পাঁচ বছরের একটা শিশু বাচ্চা সেও নিজের পছন্দ মতো কেনাকাটা করে। আর এখান থেকে শুরু হয় পছন্দ অপছন্দের পর্ব। ঠিক জীবনসঙ্গী পর্যন্ত। আর এই সুযোগে ছেলে-মেয়েরা ভালো মন্দ না বুঝে নোংরা জগতে হারিয়ে যায়। আজ সুমনার বেলায় ও তাই হলো।
প্রায় মাস তিনেক পার হলো সুমনার মাসিক ঋতু স্রাব বন্ধ।সে খুব ভাবনায় পড়লো। তারপর ডাক্তারের কাছে গেলে, ডাক্তার পরীক্ষা করে জানালো সে অন্তসত্বা।
সামনে আসছে ঈদুল ফিতর। সবাই ঈদের কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত। কিন্তু সুমনার মুখে কোন হাসি নেই, কেমন জানি চিন্তিত মনমরা।দৃশ্যটি মায়ের চোখে পড়তেই তিনি প্রশ্ন তুললেন,
সুমনা সবাই হাসি খুশি, ঈদের কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত, আর তোকে চিন্তিত, মনমরা লাগছে,শরীর খারাপ নাকি?
এক কথায় জবাব দিলো সুমনা,
কিছু না মা। আমি ভালো আছি।
মা’কে কোন রকম বোঝালেন। কিন্তু তারপর এই সমস্যার সমাধান কিভাবে করবেন তা নিয়ে খুব টেনশন আছে ।শাকিলকে জানানো খুব প্রয়োজন। তাই ছুটির পর দু’জন নির্জন স্থানে গিয়ে বসে পড়লো। সুমনার চোখে মুখে চিন্তার রেখা, খুব একটা ভালো দেখা যাচ্ছেনা।তখনি শাকিল বলল,
জান তোমাকে খুব চিন্তিত মনে হচ্ছে? কি হয়েছে তোমার?
এই সুযোগে সুমনা বলল,
শাকিল তুমি কি সত্যি আমাকে ভালোবাসো?
কি বল জান,এতদিন পর এ কথা, তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারি?আমার চোখে তুমি শ্রেষ্ঠ রমনী। তুমি আমার হৃদয়ের রানী, জান তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি এ তোমার গা ছুঁয়ে বলছি, এবার বিশ্বাস হলো তো?
ছলনাময়ী ভালোবাসা সুমনার মনে আশার আলো সৃষ্টি করলো। সে খুশি মনে বলে উঠল,
শাকিল তুমি যখন আমাকে এতই ভালোবাস, চল আমরা আজই বিয়ে করি।
কেন,কেন, এত তাড়াহুড়ার কি আছে?
তাড়াহুড়ার কারণ আছে বলে তো বলছি।
বল কি কারণ?
আমি মা হতে চলেছি, এই মুহূর্তে বিয়ে করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
সত্যি।
হ্যাঁ সত্যি।
এবার শাকিল ভাবনায় পড়লো। সরাসরি না করাটা তো ঠিক হবে না। একটু কায়দা করে বলতে হবে। তা না হলে বিপদ। মেয়েদেরকে কিভাবে ঠকাবে এই চিন্তা সব সময় তাদের ভিতর কাজ করে। তাই কৌশল করে বলে,
সুমনা বিয়ে-শাদীর ব্যাপার টাকা পয়সা লাগবে। তাছাড়া প্রস্তুতির ও তো প্রয়োজন আছে। আজ যাও। কাল ঠিক সকাল দশটায় কাজী অফিসে চলে এসো। আমি যথা সময়ে চলে আসব।
সুমনার মনে স্বস্থি ফিরে আসল। পরদিন ঠিক সকাল দশটায় সে কাজী অফিসে উপস্থিত হলো। কিন্তু শাকিল এখন ও আসেনি।সুমনা তার অপেক্ষায় বসে আছে।
অনেক সময় পার হলো। বরাবর দুপুর একটা। মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে যোহরের আজান ধ্বনি বেজে উঠল। এখন ও শাকিলকে দেখা যাচ্ছে না। এবার সুমনা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে কল দিলো। অপর প্রান্ত থেকে আওয়াজ আসল, এখন সংযোগ দেয়া সম্ভব নয়, একটু পরে ডায়াল করুন। সুমনা থেমে নেই বারবার কল দিয়ে চলেছে। প্রতিবার একই উত্তর। এবার সে বাধ্য হয়ে বাসায় ফিরে গেল। মেয়েরা পরিস্থিতির স্বীকার। প্রেমে পড়লে ও দোষ, না পড়লে ও দোষ। প্রেমে পড়লে বলে মেয়েরা খারাপ। ছেলেদের দোষের কথা একটি বারের জন্য তুলে ধরা হয় না। যত দোষ নন্দ ঘোষ। সবদোষ মেয়েদের ঘাড়ে চাপানো আর কি। আর প্রেমে না পড়লে মেয়েদেরকে ইভটিজিং’র স্বীকার হতে হয়, এসিড দগ্ধ,ধর্ষণ, কুপিয়ে হত্যা, অপহরণ আর ও অনেক জঘন্য ঘটনা। এবার আপনারাই বলুন মেয়েরা কোন দিকে যাবে?
সুমনার গা ছুয়ে যে লোকটা শফথ করেছিল সে আজ নেই। মুনাফিকের তিনটা লক্ষণ, যখন যা বলে মিথ্যে বলে, ওয়াদা দিয়ে ভঙ্গ করা, আমানতের খিয়ানত করা। আর এই মুনাফিকের স্থান পরকালে কোথায় হবে জানেন ? জাহান্নামে। আজ শাকিল মুনাফিকের কাতারে চলে গেল। মেয়েরা সময়ের কাছে অসহায়। তারা তাদের নোংরা নির্যাতনের কথা লজ্জায় বলতে পারেনা। আর এই লজ্জা ঢাকার শেষ পরিনতি সুইসাইড। তারপর লোকের ছিঃছিঃ।এমনি পরিণতির স্বীকার হলেন আজ সুমনা।
পরদিন কলেজে গিয়ে শাকিলের খোঁজ করলো, পেলোনা। তারপর বন্ধুর মারফতে খবর পাঠালে সে সবকিছু অস্বীকার করে বলে, সুমনা নামের কোন মেয়ের সাথে তার রিলেশন ছিলো না। এই নামের কোন মেয়েকে সে চিনে না।
কথাগুলো শুনার পর সুমনার মাথায় বজ্রপাত ঘটল। ঘৃণা ক্ষোভে অনুশোচনায় কাতর হয়ে পড়লো। বোবা কান্নায় জর্জরিত। কাউকে কোনকিছু বলতে পারছে না। মা-বাবার সঙ্গে কোন মুখে কথা বলবে।নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো। ভিতরের যন্ত্রণার আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল। মুখ দিয়ে একটা ঘৃণার স্বর ভেসে উঠল,
ছিঃ ছিঃ পুরুষ মানুষ এত খারাপ! মিষ্টি কথায় প্রেমের ফাঁদে পেলে এখন বলছে আমাকে চিনে না।উঁহু!অসহ্য, কি মুনাফিক,এ লজ্জা ঢাকব কিভাবে।খোদা এই মুনাফিকের বিচার কর।আমার কুমারীত্ব নষ্ট করে এখন অস্বীকার করলো। এ জীবন আমি আর রাখব না, এ মুখ আর আমি কাউকে দেখাবো না।
ঐ যে বললাম মেয়েরা সময়ের কাছে অসহায়!অনুরুপ সুমনার ও আজ এই অবস্থা।লজ্জাকে ঢাকতে সুইসাইডের পথ বেচে নিলো। এতটুকুন একটা মেয়ে, আঠার, উনিশ বছরের এক জন যুবতি মেয়ের মাথায়, এমন অসহায় অবস্থায় এ ছাড়া আর কি বুদ্ধি আসতে পারে বলুন? পুরুষের প্রতি তার মনে জঘন্য ঘৃণার জন্ম হলো। তাই আর নিজেকে স্থির রাখতে পারলো না। পুরো এক বোতল কীট নাশক ঔষধ ঢগঢগ করে খেয়ে নিলো।
নিশ্চিন্ত মনে ঘুমিয়ে পড়লো। কোন সাড়াশব্দ নেই। সকাল হতে সবাই জেগে উঠল। অনেক সময় পার হলো। এখনো সুমনার রুমের দরজা বন্ধ।মা দরজার কড়া নেড়ে অনেকবার ডাকাডাকি করলো।ভিতর থেকে কোন সাড়া আসছে না। মায়ের মন বুঝতে আর দেরী হলো না, যে কিছু একটা হয়েছে। উচ্চস্বরে ডাক দিলে সবাই এগিয়ে এসে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকল।
ঢুকতেই একি দেখল! সুমনা শুয়ে আছে। পাশে কীটনাশকের শিশি আর একটা ভাঁজ করা কাগজ। খুলে দেখে তাতে লেখা,
মা বাবা,
আমার সালাম নিবেন।আমি তোমাদের অপরাধী সন্তান। আমার সুইসাইডের কারণ নিয়ে হয়তো তোমরা টানা হেঁচড়া করবে। তাই সত্য কথাটা বলতে বাধ্য হলাম। কোন কিছু বুঝে উঠার আগে এক ছলনাময় পুরুষ মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে তার প্রেমের জালে আমাকে বন্দী করে। এক সময় জানতে পারলাম আমি প্রেগন্যান্ট। ছুটে গেলাম তার কাছে বিয়ে করতে। সে আমাকে ফিরিয়ে দিয়ে, সবকিছু অস্বীকার করলো। তাই সুইসাইডের পথ বেচে নিলাম। জানি তোমরা প্রশ্ন করবে, তোমাদেরকে বলিনি কেন? তার উত্তর দিচ্ছি, তোমাদেরকে বললে অ্যাবরশন করিয়ে আমাকে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিতে এইতো। তাই তোমাদেরকে না জানিয়ে আমার ভুলের মাশুল আমি নিজে দিলাম। কারণ আমার চোখে এখন সব পুরুষ মানুষ খারাপ ও মুনাফিক। দ্বিতীয় কোন পুরুষকে বিশ্বাস করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিলো না বিধায় আমি আত্নহত্যা করলাম।
বেঁচে থাকলে এই পুরুষ নামক কীট পতঙ্গের সঙ্গে তোমরা আবার আমাকে বিয়ে দিতে চাইতে। তাই মরে সব সমস্যার সমাধান করলাম। মা আমাকে ক্ষমা করো। আর আমার আত্নহত্যা নিয়ে বাড়াবাড়ি করোনা। বিদায়।
ইতি
তোমাদেরই অপরাধী কন্যা
সুমনা।
মৃত্যু রহস্য জানার পর সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো। এমনিভাবে “ভুয়া প্রেমের” পাল্লায় পড়ে সুমনার মতো একজন ভালো স্টুডেন্ট আত্নহত্যার পথ বেচে নিলো।


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

তুমি ছিলে গোপনে

লেখিকা :লামিয়া পার্ট:১ ঢাকার ব্যস্ত শহর যেন কখনও থামে না। বিকেল নামছে ধীরে ধীরে, সূর্যটা ঝিমিয়ে পড়েছে, কিন্তু শহরের হর্ন

গল্প: অপেক্ষা লেখক:

গল্প: অপেক্ষা লেখক: মো: আবিদ রানা রিমি প্রতিদিন স্কুল থেকে ফিরেই বারান্দায় বসে। তার চোখ সব সময় খোঁজে একটা চেনা

গল্প সিয়ামের স্বপ্ন আফছানা খানম অথৈ

গল্প সিয়ামের স্বপ্ন আফছানা খানম অথৈ দশ বছরের সিয়াম কমলাপুর রেল ষ্টেশন এ থাকে।তার ঘরে খুব অশান্তি। এক মুহুর্তের জন্য

গল্পঃ অনুপমার চোখে ২

গল্পঃ অনুপমার চোখে লেখকঃ বকুল রায়  #Part_02 অনুপমাকে ভালোবেসে ফেলেছি, এটা নিজেকে স্বীকার করলেও তাকে বলার সাহস তখনও হয়নি। কারণ

Leave a Reply