0
যে ভালোবাসার গল্প গুলো এই লেখায় পাবেন এগুলো বিভিন্ন দেশের পৌরাণিক গল্প, এই গল্পগুলো মনঃযোগ দিয়ে পড়লে আপনি কিছুক্ষণের জন্য হলেও দিবাস্বপ্নের জগতে চলে যাবেন যেখানে আপনি চরিত্রগুলোকে দেখতে পাবেন। যাইহোক, এগুলো শুধুই কথার কথা, তবে পড়লে মন্দ লাগবে না।
অরিফিউস এবং ইউরিডাইসের সত্যিকারের ভালোবাসা
এই গল্পটি একটি বিরহের গল্প এবং বলা চলে গ্রিক মিথলজিতে সবচেয়ে রোমান্টিক গল্পগুলোর মধ্যে একটি। অরিফিউস একদিন জলদেবী ইউরিডাইসের প্রেমে পড়ে। তাদের অকৃত্রিম প্রেম বিয়ের পরিণতিতে গড়াচ্ছিল। বিয়ের দিন ইউরিডাইস সাপের ছোবলে মারা যায়।
অরিফিউসের যোগ্যতা ছিল তাকে পাতালপুরী থেকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার। দেবতা হ্যাডাসকে গান শুনিয়ে মুগ্ধ করতে পারলেই সেটা সম্ভব। অরিফিউস হ্যাডাসকে গান শুনিয়ে মুগ্ধ করে রাজী করিয়ে ফেলে। হ্যাডাস তাকে একটি শর্তসাপেক্ষে ইউরিডাইসকে পৃথিবীতে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়- সেটি হচ্ছে ফিরিয়ে নেয়ার সময় অরিফিউস কখনো পেছনে ফিরে তাকাতে পারবে না।
শর্তে রাজী হয়ে অরিফিউস ইউরিডাইসকে নিয়ে পাতালপুরী ছাড়িয়ে প্রায় পৃথিবীর কাছাকাছি চলে এসেছে। তখন সে তার প্রেমিকার দিকে এক নজর না তাকিয়ে আর থাকতে পারলো না। আর, সেখানেই সে তার প্রেম হারালো। ইউরিডাইস আজীবনের জন্য আবারো চলে গেলো পাতালপুরীতে।
অরিফিউস এরপর প্রতিজ্ঞা করলো সে জীবনে আর কখনো প্রেম করবে না
সায়েক্স এবং এলসিয়নের ভালোবাসার গল্প
সায়েক্স এবং এলসিয়ন ছিল গ্রিসের ট্রাসিসের রাজা ও রাণী। তারা একে অপরকে এতটাই ভালোবাসতো যে স্বর্গের দেবতারা আর, মর্ত্যের মানুষেরা সবাই তাদের ভালোবাসাকে সম্মান করতো। একসময় তারা একে অপরকে হেরা এবং জিউস নামে ডাকতে শুরু করে। জিউস এবং হেরা ছিল স্বর্গের রাজা আর রাণী। মর্ত্যলোকের মানুষদের এই ডাক তাদের পছন্দ হল না, তাই জিউস এবং হেরা তাদেরকে শাস্তি দিতে মনস্থ করলো।
একদিন সায়েক্স সমুদ্রে গিয়েছে, তখন জিউস তার দিকে বজ্রপাত নিক্ষেপ করে আর তাতে সায়েক্স মারা যায়। এলসিয়ন সমুদ্রতীরে সায়েক্সের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। দিনরাত অপেক্ষা করে তার স্বামীকে না পেয়ে হেরার কাছে প্রার্থনা করতে থাকে। হেরা তার স্বামীর মরদেহ সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে তীরে ফেলে দেয়। এলসিয়ন সহ্য করতে না পেরে সমুদ্রে ডুবে আত্মহত্যা করে।
পরে এলসিয়ন আর সায়েক্সকে জিউস মাছরাঙ্গা বানিয়ে আবার পাঠিয়ে দেয়। সমুদ্র শান্ত হলে এখনো মাছরাঙ্গা সমূদ্রের পানিতে ডিম পাড়তে আসে।
তরিন এবং কিলিসিয়েল
তরিন ছিল অন্ধকার জগতের দেবতা, সে মৃত্যু এবং রোগের কারণ। সে ধ্বংস ছাড়া কাউকে স্পর্শ করতে পারে না। একসময় প্রেমে পড়ে যায় রেড কুইন কিলিসিয়েলের। যদিও কিলিসিয়েল তরিনকে শাস্তি দিতে চেয়েছিল, শেষ পর্যন্ত সে তরিনের প্রেমে পড়ে যায়।এই গল্প নিয়ে তৈরি ভিডিওটি দেখুতে পারেন।
জাল এবং রুদাবেহ
পারস্যের একটি পাহাড়ের উপরে বেড়ে ওঠেন জাল। তার কাছে একটি পালক ছিল যা তাকে রক্ষাকবচ হিসেবে রক্ষা করবে এবং তার বাবার সাথে দেখা করিয়ে দেবে। একসময় সে তার বাবাকে খুজতে বেরিয়ে পড়ে। তখন সে রুদাবেহর প্রেমে পড়ে যায় যার চুলের বেণী পায়ের পাতা পর্যন্ত বড়। যখন সে তার পিতাকে খুজে পায় তখন সে জানতে পারে তার পরিবার রুদাবেহর পরিবারের শত্রু। তাদের ভালোবাসা কেউ মেনে নেবে না, তাই একদিন রাতে সে রুদাবেহর চুল বেয়ে তার ঘরে চলে যায়। একসময় উভয়ের পরিবার তাদের ভালোবাসা মেনে নেয়।
ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- একদিন সে তার স্ত্রী ও সন্তানকে বাচাতে পিতাকে আগুনে ফেলে দিতে বাধ্য হয়
চি’ নি এবং রাখাল বালক
চি’ নি ছিল প্রথাগত চাইনিজ মেয়ে যে রেশমী কাপড় দিয়ে সুন্দর গাউন বুনতে পারতো এবং বিখ্যাতও ছিল। তার বাবা তাকে একজন রাখাল বালকের সাথে বিয়ে দেয়। সে এতটাই প্রেমে বিভোর ছিল যে কাপড় বোনা ভুলে যায়। চি’ নি র বাবা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে রাখাল বালককে আকাশের একটি তারা করে দেয়, আর তার মেয়েকে আরেকটি তারা করে দেয়।
দুজন যাতে এক বছরের মাঝে দুজনকে দেখতে না পারে সেজন্য তাদের মাঝে রাখে একটি নদী, যেটিকে বলা হয় মিল্কিওয়ে। আঁকাসে আজো তাদের দেখা যায়।
এই ছিল পাঁচটি ভালোবাসার গল্প। আপনার কোন গল্প থাকলে এখানে লিখতে পারেন।
আরো পড়ুন-

0