অবৈধ সুখের শাস্তি -১

0

অবৈধ সুখের শাস্তি

লুবাবহাসানসাফওয়ান

রেহান এর দাফন কার্য শেষে সবাই যখন আপন আপন বাড়ির পথ ধরলো। তার বড় ভাই সোহান সবার পেছন থেকে আবার কবরের কাছে ফিরে আসলো। আত্মীয়-স্বজনরা ভাবলো, হতে পারে ছোট ভাইকে এভাবে একাকী ছেড়ে যেতে মন চাইছে না সোহানের। কাল পর্যন্ত উভয়ের মধ্যে কতই না হাসি-মজা আর খুনসুটি চলতো, দুই ভাই যেনো দুই প্রাণের বন্ধু। যদিও তাদের বন্ধুত্বটা বেশ পুরনো নয়; মাত্র দুই মাসের।

 

কিন্তু না, ঘটনা ঘটেছে এর সম্পূর্ণ উল্টো। সোহান ছোট ভাইয়ের কবরের উপর দাঁড়িয়ে সদ্য দেওয়া মাটিতে প্রবল ঘৃণা নিয়ে জোরে জোরে কয়েকটা পদাঘাত করলো। অতঃপর অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো। যেনো সোহানের মাথা খারাপ হয়ে গেছে কিংবা ভাইয়ের করুণ মৃত্যুতে সে আজ অত্যন্ত খুশি!

 

[দুই মাস আগে…]

 

রেহান আর নীলিমার মধ্যে মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠাপাঠি চলছে বেশ কিছুদিন যাবত। প্রথমে নীলিমাই মেসেজ পাঠিয়েছিলো।

 

-কেমন আছেন

-ভালো আছি, আপনি?

-হুম, মেসেজের রিপ্লাই দেওয়ার পর ভালোই আছি।

-তাই নাকি, আপনার নামটা কি জানতে পারি?

-আইডিতে যা দেওয়া আছে তাই আমার নাম, নীলিমা। কিন্তু আপনার আইডিতে দেওয়া নাম ফেক নাকি?

-হুম।

-আসল নামটা কি জানতে পারি?

-আগে বলুন, কেনো মেসেজ দিয়েছেন?

-মেয়েরা মেসেজ দিলে কেন দেয়, বুঝেন না?

-না বুঝি না, অনেক দরকারেই তো দিতে পারে!

-আমার বিশেষ কোন দরকার নেই। আমি মেসেজ দিয়েছি, কারণ আপনাকে আমার ভালো লাগে! বলতে পারেন এটাই আমার বিশেষ দরকার।

-কেন ভাল লাগে, আপনি কি কখনো আমাকে দেখেছেন কিংবা আমাকে চেনেন?

-সবাইকে দেখতে হয় না, এমনিতেই ভালো লাগে! নাকি লাগতে পারে না?

-অবশ্যই পারে!

-আপনাকেও আমার ভালো লেগেছে, এবার কি নামটা বলা যাবে মশাই?

-তাই নাকি? আমার নাম রেহান চৌধুরী।

 

রেহান চৌধুরী শব্দটি শুনতেই নীলিমার ভেতরটা কেঁপে উঠলো! সেদিনের মতো তাদের কথোপকথন এখানেই শেষ হয়! রেহান আরো কিছু কথা বলতে চাইলেও নীলিমা ‘আম্মু ডাকছে’ বলে মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে ডাটা অফ করে দেয়। নীলিমার হাত দুটো এখনো থরথর করে কাঁপছে। কোন রকমে ফোনটা দ্বিতীয়বার হাতে নিয়ে ডাটা অন করে রেহান এর কাছে মেসেজ পাঠায়- বাহ, আপনার নামটা অনেক অনেক সুন্দর ও আভিজাত্যপূর্ণ। এরপর নীলিমা আবারো ডাটা অফ করে দেয়।

 

এদিকে রেহান ভাবছিলো, নীলিমা কে হতে পারে! চেনা-জানা কেউ নাকি, হয়তো মজা নিচ্ছে। নইলে এভাবে গায়ে পড়ে কেন সম্পর্ক করতে চাচ্ছে। আবার ভাবে, যেহেতু নাম জিজ্ঞেস করেছে সাথে প্রশংসাও করেছে- এর মানে আমাকে আগে থেকে চেনে না। তাছাড়া আমার এই আইডিতে আমার পরিচিত কেউই নেই। আমার কোনো ছবিও নেই। তার উপর আইডির নামও দিয়েছি ফেইক। অতএব এই আইডি থেকে আমাকে কেউ চিনবে এটা অসম্ভব।

 

নীলিমা দ্বিতীয়বার মেসেজটা করেছে যাতে করে রেহানের মধ্যে এই ব্যাপারে সন্দেহ না জাগে যে, রেহান চৌধুরী নাম শুনতেই কেন নীলিমা ডাটা অফ করে দিয়েছে। রেহানের মধ্যে এই সন্দেহটা জাগতেও ছিলো, কিন্তু ফিরতি মেসেজের কারণে অল্পের জন্য সন্দেহ দূরীভূত হয়ে যায়।

 

নীলিমা নিজেকে শক্ত করে। রেহান চৌধুরীর সব পাপের হিসাব জানতেই হবে। সে রেহানের সাথে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। রেহান যখন তার ছবি চাইতো তখন সে তার এক কলিগের ছবি পাঠিয়ে দিতো।

 

চলবে?

 

[সাড়া ফেলে চালিয়ে নেবো। আশা করি দুই-তিন পর্বে শেষ হয়ে যাবে।]
56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

Author: লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান ঠিকানা: নোয়াখাল কর্ম: ছাত্র পড়াশোনা: আল-ইফতা ওয়াল হাদীস [চলমান] প্রতিষ্ঠান: মাদরাসাতু ফায়দ্বিল 'উলূম নোয়াখালী

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

প্রতি দান

রাতে থেকে বৃষ্টি হচ্ছিলো, কিছুক্ষণ,বৃষ্টি থেমেছে সবে। সকাল কখন হয়েছে চম্পা জানে না। চম্পা শুনেছে, ভোরের স্বপ্ন সত্যি হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র

অ্যাথেনার অলৌকিক হার্প

অনেক অনেক বছর আগে, প্রাচীন গ্রিসের এক ছোট্ট গ্রামে বাস করত এক কিশোরী মেয়ে—নাইরা। সে দরিদ্র ছিল, কিন্তু তার গলায়

নীলচোখা জলপরী

শঙ্খনদী গ্রামের সকাল সবসময় সমুদ্রের শব্দ দিয়ে শুরু হয়। মাটির ঘরগুলোর চালের ফাঁক দিয়ে বাতাস ঢোকে, আর বাতাসের সাথে ভেসে

সময়ের দরজা

মেঘে ঢাকা এক বিকেল। পুরান ঢাকার সরু গলির ভেতরে, ধুলো ধরা এক প্রাচীন বইয়ের দোকানে ঢুকল আরসোহা। ইতিহাসের ছাত্রী সে,

One Reply to “অবৈধ সুখের শাস্তি -১”

Leave a Reply