এলোভেরা বা, ঘৃতকুমারি

ঘৃতকুমারি বা, এলোভেরার উপকারিতা ও অপকারিতা

0

এলোভেরার উপকারিতা যেমন আছে, তেমন অপকারিতাও কিছু আছে। ওজন কমাতে, ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে, কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ইত্যাদি নানারকম উপকারি দিক রয়েছে এই ঐষধি গাছটির। এই লেখাটিতে এর দুটি দিকই তুলের ধরার চেষ্টা করবো। এছাড়া ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কেও ধারণা দিতে চেষ্টা করবো।

এলোভেরা জেল

সুন্দর ত্বকের রহস্য হচ্ছে এর সুস্থতা। সুস্থ ত্বক সব সময় সুন্দর দেখায়। এলোভেরা জেল ত্বকের যত্নে অনেকেই ব্যবহার করে থাকেন। কারণ, এই জেল ত্বকের জালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। ল্যাভেন্ডার ওয়েল, প্রিমোরোজ ওয়েল এবং এলোভেরা জেল একসাথে মিশিয়ে ঘুমানোর আগে মুখে মেখে নিলে ত্বক এর পুষ্টিগুণ গ্রহণ করতে পারে।

এলোভেরার উপকারিতা

ঘৃতকুমারি বা, এলোভেরাতে আছে- ভিটামিন-এ,সি,ই, বি-১, বি-২, বি-৩ (নিয়াসিন) ও ভিটামিন বি-৬, ফলিক অ্যাসিড, কোলিন ইত্যাদি উপকারি উপাদান। তাই, ত্বক ও চুলের যত্নে এটি ব্যবহার করা যেতে পারে-

১. ত্বকের জন্য

ত্বকের যত্নে এলোভেরা দুইভাবে ব্যবহার করা যায়। পানির সাথে এর জেল মিশিয়ে পান করলে ত্বক সুস্থ থাকে। এছাড়া এই জেল ময়েশ্চারাইজার বা, ক্রিমের সাথে মিশিয়ে ত্বকে ঘষতে পারেন। এতে আপনার ত্বক হবে বলিরেখামুক্ত এবং টানটান। ভিটামিন সি, ভিটামিন ই এবং বিটাক্যারোটিন ত্বককে সুস্থ করে তুলতে ভূমিকা পালন করে।

২. চুলের জন্য

খুসকি দূর করতে ঘৃতকুমারির জুড়ি মেলা ভার। একটি হেয়ার প্যাক নিজেই বাসায় তৈরি করে চুলে মাখতে পারেন। এতে আশা করা যায় আপনার চুলের খুসকি দূর হবে। তিন টেবিল চামচ এলোভেরার সাথে একটি ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে এই হেয়ার প্যাক তৈরি করে ফেলুন। এরপর নিয়মিত কিছুদিন চুলে ব্যবহার করলে চুল হবে আগের চেয়ে উজ্জল। পাশাপাশি সাধারণ খুসকি দূর হবে। এরপরেও কাজ না হলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

কাচা এলোভেরার উপকারিতা

কাচা এলোভেরা আপনাকে অনেক রকম সমস্যার সমাধান দিতে পারে। যেমনঃ

  • এর রস পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
  • এলোভেরাতে আছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা ওজন কমাতে সাহায্য করে
  • শরীরের কোলেস্টেরল হার্টের জন্য ক্ষতিকর। এলোভেরা কোলেস্টেরল কমায়

 

এলোভেরা ব্যবহারের নিয়ম

নিচে দুটি পদ্ধতি সংক্ষেপে বর্ণনা করার চেষ্টা করছি যা আপনার কাজে লাগবে-

ফর্সা হওয়ার উপায়- ফেসপ্যাক বানিয়ে মুখে মাখুন

মাত্র ৪ মিনিটে তৈরি করা একটি ফেসপ্যাক আপনাকে আরো ফর্সা করে তুলতে পারে। অন্যভাবে বললে, ফর্সা নয়, বরং আপনার ত্বকের উজ্জলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। গায়ের রঙ কালো বা, সাদা যাই হোক আপনার ত্বক আরো আকর্ষণীয় এবং উজ্জ্বল হবে এই ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে।

ব্রণ দূর করার উপায়

এলোভেরা দিয়ে ব্রণ দূর করা যায়। এর বিভিন্ন রকম পদ্ধতি রয়েছে-

পদ্ধতি ১ঃ ১/২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ১ চিমটি পরিমাণ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১৫ মিনিট। এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পদ্ধতি ২ঃ ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ১/৪ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ব্রণ আক্রান্ত ত্বকে লাগান। ৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

খাওয়ার নিয়ম

খুব বেশী পরিমাণে এলোভেরা না খাওয়াই ভালো। এর চেয়ে বরং ছোট একটি অংশ কেটে ধুয়ে এর ভেতরের জেলির মতো পদার্থ বের করে পানিতে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া চিনি ও লেবুর সাথে মিশিয়ে শরবত তৈরি করেও খেতে পারেন। এই শরবত হজম শক্তি বাড়ায়, শরীরকে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে,  ত্বককে আরো সুন্দর করে তোলে।

এলোভেরা মুখে ব্যবহারের নিয়ম

মুখে ব্যাবহারের আগে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। এরপর এলোভেরার ভেতরের অংশ থেকে রস বা, জেলির মতো অংশ সংগ্রহ করে তা একটি তুলাজাতীয় কিছুর মাধ্যমে মুখে মাখুন। এরপর এই রস শুকিয়ে গেলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।

এলোভেরার অপকারিতা বা, ক্ষতিকর দিক

প্রত্যেকটি জিনিসের কিছু ক্ষতিকর দিক আছে, এলোভেরারও কিছু অপকারিতা আছে। তাই এটি খাওয়া বা, ব্যবহারের আগে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া দরকার। এরকম কিছু ক্ষতিকর দিক হচ্ছে-

  • এলোভেরা থেকে বের হওয়া হলদে রসালো পদার্থ হচ্ছে ‘অ্যালো লেটেক্স’ যা অত্যন্ত ক্ষতিকর
  • অতিরিক্ত পরিমাণে ত্বকে ব্যবহার করলে বা, খেলে তা বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে

 

তাই, আমাদের উচিত হবে, সবুজ এলোভেরা পরিমিত পরিমাণে খাওয়া বা, ব্যবহার করা। হলদে ভাব আসলে সেই পাতা ফেলে দেয়া উচিত। কারণ, এতে ক্ষতিকর উপাদান থাকায় পেটে ব্যাথা, ডায়রিয়াসহ অনেক রকম রোগ হতে পারে।

 

আরো পড়ুন-  

 

তথ্যসূত্রঃ


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

admin

Author: admin

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

বেলের উপকারিতা

বেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

বেল একটি খুবই সাধারণ ফল। শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও তেল সমানভাবে জনপ্রিয়। বেল সাধারণত আমরা শরবত বানিয়ে খেয়ে থাকি। গ্রীষ্মকালে
শর্করা জাতীয় খাবার কি কি

শর্করা জাতীয় খাবার কি কি?

আজকে আমরা জানবো খাদ্যের প্রধান ছয়টি উপাদানের মধ্যে অন্যতম শর্করা জাতীয় খাবার সম্পর্কে। শর্করা, যাকে ইংরেজিতে কার্বোহাইড্রেট বলা হয়, মানবদেহের
প্রোটিন জাতীয় খাবার

খাদ্য তালিকায় রাখুন প্রোটিন জাতীয় খাবার

আমরা জানি, পুষ্টি বিজ্ঞানীরা খাদ্যের উপাদানগুলোকে মোট ছয়টি প্রধান ভাগে ভাগ করেছেন। যার মধ্যে একটি হচ্ছে প্রোটিন, যাকে বাংলায় বলি
ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কেন খাবেন?

জেনে নিন ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কেন খাওয়া উচিত

ক্যালসিয়াম একটি অতি প্রয়োজনীয় খনিজ পুষ্টি উপাদান, যা বিভিন্ন খাদ্য, যেমন দুগ্ধজাতীয় খাদ্যে পাওয়া যায়। মানবদেহের হাঁড় এবং দাঁতের প্রায়

Leave a Reply