দক্ষিণী বিদ্যাসাগর

কান্দুকুরি বীরসালিঙ্গম পানতুলু

0

বীরসালিঙ্গম পানতুলুকে বলা হয় দক্ষিণী বিদ্যাসাগর। কেন তাকে তেলেগু রেনেসাঁর জনক বলা হয় সেটা পরে বলছি। রায়বাহাদুর কান্দুকুরি বীরসালিঙ্গম পানতুলু ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের মাদ্রাজ প্রদেশের একজন বিখ্যাত সমাজ সংস্কারক। তিনি শুধু বিধবা বিবাহ প্রচলন আর, নারীশিক্ষার জন্যই কাজ করেননি, কাজ করেছেন বাল্যবিবাহ রোধ এবং যৌতুকপ্রথা রহিত করার জন্যও।

দক্ষিণী বিদ্যাসাগর

তাকে অন্ধ্রের রামমোহন রায়ও বলা হয়। এছাড়া তাকে ‘গাদ্যা টিক্কানা‘ বলেও সম্বোধন করা হয়। ‘গাদ্যা টিক্কানা’ এর অর্থ হচ্ছে গদ্যের টিক্কানা(টিক্কানা ছিলেন একজন বিখ্যাত তেলেগু কবি), এছাড়া তাকে দক্ষিনী বিদ্যাসাগর নামেও ডাকা হয়। ‘Rajasekhara Charitramu’ বীরসালিঙ্গমের লেখা একটি উপন্যাস। এবং এটিই হচ্ছে তেলেগু ভাষার প্রথম উপন্যাস।

  • ৬ মাস বয়সে তার স্মলপক্স হয়েছিল
  • ৪ বছর বয়সে বাবা মারা যায়
  • তারা চাচা ভেঙ্কটারাত্মম তাকে দেখাশোনার দায়িত্ব নেন
  • তিনি প্রথমে রাস্তার স্কুলে, পরে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়েছেন
  • কর্মজীবনের প্রথম কোরাঙ্গি গ্রামের একজন শিক্ষক ছিলেন
  • তেলেগু, সংস্কৃত এবং হিন্দি ভাষার একজন পন্ডিত ছিলেন পানতুলু

রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশব চন্দ্র সেন – এদের  দ্বারা তিনি প্রভাবিত ছিলেন। ব্রাহ্মসমাজের ধারণা তিনি পছন্দ করতেন এবং নিজেও ব্রাহ্ম ছিলেন। তিনি রাজামাহেন্দ্রভরমে একটি ব্রাহ্মমন্দিন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যে সমাজে নারীশিক্ষাকে ট্যাবু হিসেবে দেখা হত, সেই সমাজে তিনি নারী শিক্ষার প্রচলন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

তেলেগু রেনেসাঁর জনক

সমাজ সংস্কারে বীরসালিঙ্কমের প্রভূত অবদানের জন্য তাকে তেলেগু রেনেসাঁর জনক বলা হয়। মহাদেব গোবিন্দ রানাডে নামের একজন রাজনীতিবিদ, বিচারক এবং সমাজ সংস্কারক তাকে দক্ষিণী বিদ্যাসাগর আখ্যা দিয়েছিলেন

১৮৮৫ সালে ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেসের মিটিং এ তিনি একজন সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ১৯১৯ সালে ৭১ বছর বয়সে এই মহান ব্যক্তি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার সম্মানে ভারত সরকার ২৫ পয়সার স্ট্যাম্পে তার ছবি যুক্ত করে।

বাংলাদেশের একটি শিক্ষামূলক চ্যানেলের ভিডিও দেখতে পারেন, যিনি বীরসালিঙ্গম পানতুলুকে নিয়ে বর্ণনা করেছেন, তিনি একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক-

 

কিছু প্রশ্নের উত্তরঃ

কেন বীরসালিঙ্গমকে আধুনিক অন্ধ্রপ্রদেশের নবী বলা হয়?

মূলত তারা সমাজ সংস্কারে অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে মানুষ তাকে কখনো দক্ষিণী বিদ্যাসাগর, কখনো অন্ধ্রপ্রদেশের নবী নামে ডাকে। তিনি নারীশিক্ষা, বিধবা বিবাহ এবং অনেক সামাজিক অসাম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিলেন।

কে হীতকারিনী সমাজম এর প্রতিষ্ঠাতা?

এটি এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা শুধু ইতিহাসেই স্থান করে নেয় নি, ইতিহাস সৃষ্টিও করেছে। হীতকারিনী সমাজম এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বীরসালিঙ্গম পানতুলু

বীরসালিঙ্গমের সমাজচিন্তা কেমন ছিল?

মাদ্রাজে তিনি বিধবা বিবাহ প্রচলনের পক্ষে একটি এসোসিয়েশন গড়ে তুলেছিলেন। পানতুলুর অবস্থান ছিল নারীশিক্ষার পক্ষে।

তেলেগু ভাষার জনক কে?

নান্নাইয়া ভাট্টা হচ্ছেন তেলেগু ভাষার প্রথম মহাকাব্য মহাভারতের অনুবাদক। খ্রিস্টীয় একাদশ শতাব্দিতে তিনি এটি রচনা করেন। ৫৭৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে তেলেগু ভাষার অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায়। সুতরাং নান্নাইয়াকেই তেলেগু সাহিত্যের জনক বলা যায়।

 

আরো পড়ুন-

 

উপরের ছবিটি ক্রিয়েটিভ কমন্স অ্যাট্রিবিউশন-শেয়ার অ্যালাইক ৪.০ আন্তর্জাতিক লাইসেন্সের আওতায় লাইসেন্সকৃত। Dzyner2k নামের একজন ব্যাক্তি উইকিমিডিয়াতে ছবিটি আপলোড করেছেন।


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

admin

Author: admin

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর প্রকৃত নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়। তবে, তিনি স্বাক্ষর করতেন ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামে। বিদ্যাসাগর উপাধিটি সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে
হযরত আবু বকর রা. এর জীবনী

হযরত আবু বকর (রা.) এর জীবনী

হযরত আবু বকর (রা.) সিদ্দিক, যার সম্পর্কে বলা হয়, "বাদল আম্বিয়া, আশরাফুল নাস"- অর্থাৎ নবি-রাসুলের পরে, মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর জীবনী- লেখক ডট মি

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) জীবনী

  ইসলাম হচ্ছে একমাত্র মহা সত্য ধর্ম। যেখানে প্রতিটি মুসলমানকে ইসলামের নানান নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। রাসুলুল্লাহ সা. পরবর্তীতে যে

লেখক যোগীন্দ্রনাথ সরকারের জীবনি

(more…)

Leave a Reply