পৃথিবীর সব মানুষ, সকল সম্প্রদায় নিজের আদর্শকে আলো এবং নিজেকে আলোকিত দাবি করে। সেই আলোর দিকে অন্যকে, অন্য জাতিকে আহবান করে। বস্তুত অধিকাংশ মানুষ ও অধিকাংশ জাতি আলো-আঁধার নির্ণয়ে ভুল করে। বরং অধিকাংশই আলোকে আঁধার এবং আঁধারকে আলো মনে করে বিভ্রান্ত হয় এবং বিভ্রান্ত করে।
একারণেই আমরা দেখি পশ্চিমা সভ্যতার মতো নিকষ কালো আঁধারের যারা একনিষ্ঠ ঠিকাদার, তারাও ‘আলো’র নাম ধারণ করে মুসলিম সমাজে অন্ধকারের সয়লাব বইয়ে দেয়। সম’কা’মিতা, ট্রা’ন্স’জে’ন্ডার, দেহব্যবসা ইত্যাদির মতো অন্ধকারকে মানবাধিকার, সৌন্দর্য ও আলো বলে প্রচার-প্রচলনের প্রাণান্তকর চেষ্টা করে।
.
আলো-আঁধার! -এটি একটি সিরিজের শিরোনাম। আল্লাহ যদি তাওফীক দান করেন, এখানে আমরা সংক্ষেপে আলো-আঁধার নিরূপণ এবং অর্জন ও বর্জন কিভাবে সম্ভব তা আলোচনা করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।
{اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوتُ يُخْرِجُونَهُمْ مِنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ أُولَئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ } [البقرة: 257]
“যারা ঈমান গ্রহণ করেছে, আল্লাহ তাঁদের বন্ধু। তিনি তাদের সমূহ অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনেন। আর যারা কাফের, তাদের বন্ধু হচ্ছে তাগুত। যারা তাদেরকে আলো থেকে সমূহ অন্ধকারের দিকে বের করে নেয়। তারাই জাহান্নামের বাসিন্দা। তারা তাতে অনন্তকাল থাকবে।” –সূরা বাকারা: ২৫৭
হৃদয়টি আলোকিত করুন
ইমাম শাফেয়ি রহ. (মৃত্যু:২০৪হি.) বলেন,
مَن أحَبَّ أن يَفتَحَ اللهُ قَلبَهُ أو يُنَوِّرَهُ؛ فَعَلَيهِ بِتَركِ الكَلامِ فِيمَا لَا يَعنِيهِ، واجتِنَابِ المَعَاصِي، ويَكُونُ لَهُ خَبِيئَةٌ فِيمَا بَينَهُ وبَينَ اللهِ تَعَالَى مِن عَمَلٍ، وفِي رِوَايَةٍ : فَعَلَيهِ بالخَلوَةِ، وقِلَّةِ الأكلِ، وتَركِ مُخَالَطَةِ السُّفَهَاءِ، وبُغضِ أهلِ العِلمِ الَّذِينَ لَيسَ مَعَهُم إنصَافٌ ولا أدَبٌ. – المَجمُوعُ شَرحُ المُهَذَّب لِلنَّوَوِيِّ : ١ / ٣١
“যে ব্যক্তি চায়, আল্লাহ যেন তার অন্তর উন্মুক্ত ও আলোকিত করে দেন, তার উচিত অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা পরিহার করা। গুনাহ থেকে সম্পূর্ণরূপে দূরে থাকা এবং এমন কিছু গোপন নেক আমল করা, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানবে না।
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে, তার উচিত নির্জনতা অবলম্বন করা। কম আহার করা। নির্বোধ এবং এমন আলেমদের সংশ্রব বর্জন করা, যাদের মাঝে ইনসাফ ও আদব-লেহাজ নেই।” – আল মাজমূ’ শরহুল মুহাযযাব : ১/৩১