পৃথিবীতে বহু বই পাঠকের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।এই বইগুলো লিখেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লেখক বিভিন্ন ভাষায়।এইসব বই গুলো বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদের ফলে সারা বিশ্বের মানুষ সেই বইগুলো পড়তে পারছে।এবার জেনে নেওয়া যাক, ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদিত ৭ টি বই সম্পর্কে –
৭ টি ইংরেজী থেকে বাংলা অনুবাদ বই
১.থ্রি এ এম সিরিজ
লেখক নিক পিরোগের থ্রি এ এম সিরিজের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি বই।যেমন-থ্রি এ এম,থ্রি টেন এ এম,থ্রি টোয়েন্টি ওয়ান এ এম ও থ্রি থার্টি ফোর এ এম,থ্রি ফোর্টি সিক্স এ এম।বাংলা ভাষায় এই সিরিজটির অনুবাদ করেছেন সালমান হক।এই সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্র হেনরি বিনস।তার অদ্ভুত ধরনের একটি
ডিসঅর্ডার আছে।হেনরি বিনসের প্রতিদিন রাত তিনটায় ঘুম ভাঙে, আবার ঠিক এক ঘন্টা পরেই ঘুমিয়ে যায়।প্রতিদিন এই এক ঘন্টা সময় সে খুব হিসাব করে ব্যয় করে।তবে,এই ঘন্টার মধ্যেই হেনরি বিনস বেশ কিছু ঘটনা ও বিপদের সম্মুখীন হয়।হেনরি বিনস সেগুলোও সমাধানও করে সেই এক ঘন্টা সময়ের মধ্যেই।এই ঘটনা নিয়েই এই সিরিজের একেকটি বই লিখা হয়েছে।এই বইটির অনুবাদ সহজ ও সাবলীল।
২.মাস্টার অব দ্য গেম
সিডনি শেলডনের “মাস্টার অব দ্য গেম” বইটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন লেখক অনীশ দাস অপু।অনুবাদটি ছিলো সহজ ও সাবলীল।তবে অল্প কিছু অপ্রচলিত শব্দের ব্যবহার হয়েছে অনুবাদের সময়ে।এই উপন্যাসে চার প্রজন্মকে ঘিরে তৈরি এই বইটি।এই বইয়ের প্রতিটা গল্পই রহস্যজনক। এখানে মাস্টার অব দ্য গেমই হচ্ছে কেট ব্ল্যাকওয়েল যিনি আসল খেলাটি খেলেছে।ঘৃণা, ক্ষোভ, লোভ,ক্ষমতা, প্রতিশোধ সবকিছুর সংমিশ্রণে এক অসাধারণ প্লট তৈরি করেছেন লেখক।
৩.দ্য থিংস ইউ ক্যান সি অনলি হোয়েন ইউ
“দ্য থিংস ইউ ক্যান সি অনলি হোয়েন ইউ” স্লো ডাউন বইটির
লেখক হেমিন সুনিম।এই বইটিকে বাংলায় অনুবাদ করেছেন শিহাব উদ্দিন।এটি একটি আত্নউন্নয়নমূলক বই। কীভাবে ভালো থাকা যায়,সুখী হওয়া যায় তা সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে। কখনো আঘাত পেলে কীভাবে ঘুরে দাঁড়ানো যায় সে সম্পর্কে লেখক উপদেশ দিয়েছেন।জীবনে যেকোনো কঠিন সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায় তার পথ বলে দিয়েছেন।এছাড়া জীবনে সফলতা অর্জন কীভাবে করা যাবে সে সম্পর্কেও বলেছেন।
৪.স্ট্র্যাটেজিক মাইন্ডসেট
লেখক থিবো মেরিসের “স্ট্র্যাটেজিক মাইন্ডসেট” বইটি অনুবাদ করেছেন যৌথভাবে রায়হান ফেরদৌস রুদ্র ও ইকরাম মাহমুদ। এই বলা হয়েছে,কখনো কখনো এমন হয় যে কোনো কাজ শুরুর পূর্বেই আমরা সে কাজটি কীভাবে করবো,তার ফলাফল কী হবে সেগুলো অন্য মানুষকে জানিয়ে দেই। কোনো কাজে সঠিকভাবে মনোনিবেশ করতে পারি না, ফলে সে কাজে কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করা সম্ভব হয় না।প্রকৃতপক্ষে, না বুঝে,না জেনে শুধু বেশি বেশি পরিশ্রম করলেই হয় না।সফলতা অর্জনের জন্য প্রয়োজন যথাযথ কর্মকৌশল। সফলতা অর্জনের জন্য প্রথমেই কৌশলগতভাবে চিন্তা করতে হবে।যেকোনো কাজের ক্ষেত্রে সঠিক কর্মকৌশল ও চিন্তাভাবনাই পারে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিতে।
৫.রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড
“রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড” বইটির লেখক রবার্ট টি কিয়োসাকি।এটি আত্নউন্নয়নমূলক একটি বই।এই বইটি লেখক নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার সাথে মিলিয়ে লিখেছেন।রবার্ট কিয়োসাকি তাঁর বাবাকে “পুওর ড্যাড” এবং তাঁর বন্ধু মাইকের বাবাকে “রিচ ড্যাড” হিসেবে বর্ণনা করে ধনী – গরীবের পার্থক্যকে খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন।
বর্তমান পৃথিবীতে ধনীরা দিন দিন ধনী হচ্ছে, আর গরীবরা দিন দিন গরীব হচ্ছে। কেনো এ অবস্থার সৃষ্টি তা নিয়ে বইটিতে সুন্দর ভাবে লিখা হয়েছে।মূলত চিন্তা আর অভ্যাসের কারণে এরকম হয়ে আসছে।ধনী গরীব এই বৈষম্যকে ভুলে কীভাবে গরীব থাকার মনমানসিকতা পরিবর্তন করে৷ আত্নউন্নয়ন করা যায় সে সম্পর্কেই লেখক বইটি লিখেছেন।
৬.দ্য গডফাদার
দ্য গডফাদার বইটির লেখক মারিও পুজো। ‘গডফাদার’ বইটিতে ফুটে উঠেছে গডফাদারদের জীবন দর্শন।ভালোবাসা, আবেগ,কষ্ট,সুখ সবকিছুর মিশেলেই তাদের জীবন। গডফাদার ভিটো কর্লিয়নির মেয়ের বিয়েতে যারা অতিথি হিসেবে এসেছন সবাইকে গডফাদার বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার কথা বলেছেন যা পরবর্তীতে সত্যিই ঘটে। গডফাদার কারো বন্ধু হয়ে হাত বাড়ালে সে যেমন সাহায্য পায়,আবার গডফাদার কারো শত্রু হয়ে রুখে দাঁড়ালে তাঁর জন্য হয়ে ওঠে ভয়ংকর। সে সব কিছু নিয়েই লেখা এই বইটি।গডফাদার দের বুঝার সাধ্য সাধারণ মানুষের নেই।
৭.ক্যাসল হাউসের খুনি
“ক্যাসল হাউসের খুনি” বইটির লেখক আগাথা ক্রিস্টি।
স্টার্কওয়েডার একদিন রাতে যখন গাড়ি চালাচ্ছিলেন তখন তার গাড়ির চাকা একটি গর্তে আটকে যায়। স্টার্কওয়েডার তখন রাস্তার পাশে একটি তিন তলা বাড়িতে যায় স্টার্ক।তখন সে একটি দৃশ্য দেখে আশ্চর্য হয়ে যায়।সে দেখে, হুইলচেয়ারে একজন মৃত লোক রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছে।লোকটিকে আসলে কে খুন করেছে তা খুবই রহস্যজনক।স্টার্ক পড়ে এক কঠিন বিপাকে,সে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সে আসলে কি করবে?
বিশ্বে অনেক লেখক থ্রিলার বই লিখে জনপ্রিয় হয়েছেন।তাদের বই জায়গা করে নিয়েছে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায়। পৃথিবীর বিখ্যাত বইয়ের সংখ্যা অগণিত।
বিশ্বের সেরা ৭ থ্রিলার বইয়ের তালিকা-
১.দ্য সাইলেন্ট পেশেন্ট:লেখক-অ্যালেক্স মাইকেলিডিস,অনুবাদক-সালমান হক।
২.মিস্ট্রেস অব দ্য গেম:লেখক-সিডনি শেলডন,অনুবাদক:অনীশ দাশ অপু।
৩.থ্রি এ এম সিরিজ: লেখক- নিক পিরোগ,অনুবাদক:সালমান হক।
৪.দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স:লেখক-কিয়াগো হিগাশিনো,অনুবাদক: সালমান হক।
৫.ইফ টুমরো কামস:লেখক- সিডনি শেলডন,অনুবাদক- অনীশ দাস অপু।
৬.দ্য ভিঞ্চি কোড:লেখক- ড্যান ব্রাউন, অনুবাদক: মোহাম্মদ নাজিমউদ্দীন।
৭.ব্লাড লাইন:লেখক-সিডনি শেলডন, অনুবাদক-অনীশ দাস অপু।
পাঠকদের প্রশ্নের উত্তরঃ
বাংলাদেশের সেরা বই কোনগুলো?
শওকত ওসমানের – ক্রীতদাসের হাসি।
হুমায়ুন আহমেদের-তিথির নীল তোয়ালে,নন্দিত নরকে,শঙ্খনীল কারাগারে,শূন্য,
আনিসুল হকের- মা।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের- দীপু নাম্বার টু,সেরিনা,গ্লিনা।
বিভূতিভূষণের- পথের পাঁচালী।
আহমেদ ছফা- গাভী বৃত্তান্ত।
এছাড়াও আরো অনেক বই আছে, তাই সেরা বইয়ের তালিকা বেশ দীর্ঘ।
বাংলা ক্লাসিক বই কোনগুলো?
শরৎচন্দ্রের -শ্রীকান্ত।
মোস্তফা কামালের -উপন্যাস ত্রয়ী। বিভূতিভূষণের – আরণ্যক, অপরাজিত, পথের পাঁচালী,ইচ্ছামতি,চাঁদের পাহাড়,
মানিক বন্দোপাধ্যায়ের – পুতুল নাচের ইতিকথা।
অদ্বৈত মল্লবর্মনের- তিতাস একটি নদীর নাম ইত্যাদি।
কি কি ইতিহাস বই পড়া উচিত?
শাহাদুজ্জামানের “ক্রাচের কর্ণেল”,আহমেদ ছফার ” গাভী বৃত্তান্ত”,আবুল মনসুর আহমেদের “আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর”,মাহতাব হোসেনের “সাতচল্লিশের ট্রেন”,লালন হোসেন ও রতন মন্ডলের ” ভাষা আন্দোলনে জয়পুরহাট” ইত্যাদি।
আরো পড়ুন-
- অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত বই
- বইমেলার উদ্ভট যত বই
- ১০ টি সেরা ইসলামিক বই
- বই রিভিউ: হাদিসের নামে জালিয়াতি
- বিভিন্ন বই ও তাদের লেখক

ভালো লাগলো আপনাদের সাইট।