গল্প এত কষ্ট কেনো ভালোবাসায় আফছানা খানম অথৈ

0

এত কষ্ট কেনো ভালোবাসায়

আফছানা খানম অথৈ

শান্ত আর সুমি দু’জনের মাঝে পরিচয় হয় কোন এক শুভক্ষণে।শান্ত মাস্টার্স আর সুমি অনার্স ফাইনাল ইয়ার।শান্ত’র ফ্যামিলি স্ট্যাটাস খুব হাই লেভেল,কিন্তু সুমি’র ফ্যামিলি স্ট্যাটাস খুব নিচু লেভেল।তবুও একে অপরের মাঝে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।মনের অজান্তে শান্ত সুমিকে ভালোবেসে ফেলে।অনুরুপ সুমির ক্ষেত্রেও তাই। কিন্তু সাহস করে বলতে পারছে না।কারণ সে নিচু লেভেলের বলে।একদিন শান্ত বলল,
সুমি আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।আমি তোমাকে অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি।
কী বললে?
আমি তোমাকে ভালোবাসি I love you.
সুমিও ভালোবাসে তবুও পরখ করার জন্য বলল,
আমি কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি না।
কেনো, আমি কি তোমার অযোগ্য?
না ঠিক তাই না।
তাহলে আমাকে ভালোবাসতে সমস্যা কোথায়?
সমস্যা হলো,এত ধনী গরীব ব্যবধানের ভালোবাসা মূল্যহীন। এই ভালোবাসা কখনো স্থায়ী হয় না।
তা অবশ্য ঠিক বলেছ।কিন্তু সবার ক্ষেত্রে তা সঠিক নয়।আমি সত্যি তোমাকে ভালোবাসি।দেহ থেকে প্রাণ যেমন আলাদা করা যায়না।তেমনি মৃত্যু ছাড়া দুনিয়ার কোন শক্তি তোমাকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না।
শান্ত তুমি আমাকে এত ভালোবাস?
হুম বাসি।একবার ভালোবেসে দেখনা।এবার বলো তুমি আমাকে ভালোবাস?
সবকথা বলতে হয় না।বুঝে নিতে হয়।
তবুও তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই।বলো।
মিষ্টি হেসে উত্তর দিলো সুমি,
I love you শান্ত।
এবার শান্ত বলল,
I love you too.
দু’জনের ভালোবাসা পাকা করে স্বস্ব বাসায় ফিরে গেল।
এরপর থেকে দু’জন পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে দেখা সাক্ষাত করে।একে অপরের প্রেমে একেবারে মাতোয়ারা। কেউ কাউকে না দেখে থাকতে পারে না।এর ফাঁকে কেটে গেল কিছু সময়।শান্ত পড়া শেষ করে একটা চাকরী নিলো। ফ্যামিলিগত ভাবে তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করা হলো।মেয়ে দেখা শুরু….।
শান্ত কি করবে না করবে ভেবে পাচ্ছে না।অনেক ভেবেচিন্তে একদিন তার মাকে বলল,
মা তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল?
বল কী বলবি?
মা আমি…।
আমি কী থামলি কেনো বল…।
না মানে ইয়ে তোমরা অন্য কোথাও মেয়ে দেখো না।
কেনোরে তোর পছন্দ আছে নাকি?
জ্বি হ্যাঁ মা আছে।
নাম ঠিকানা বল। আমরা কথা পাকা করে আসি।
মা ওরা খুব গরীব।কিন্তু মেয়েটি খুব ভালো।মাস্টার্স ফাস্ট ক্লাস। শুধু তাই নয় সে খুব রুপসীও বটে।
অসম্ভব এমন মেয়ে কখনো এ ফ্যামিলির বউ হতে পারে না।তাছাড়া তোর বাবা কিছুতে রাজী হবেন না।
প্লিজ মা আমি সুমিকে খুব ভালোবাসি।সুমিকে ছাড়া আমি বাঁঁচব না।প্লিজ মা রাজী হয়ে যাও।বাবাকে বোঝাও।
তা না হয় বললাম।কিন্তু তোর বাবা যদি রাজী না হয়।
বাবা কিন্তু পাশের ঘর থেকে সব শুনে ফেলেছে।তারপর মা-ছেলের সামনে এসে বলল,
কী ভালোবাসাবাসির কথা বলছ?
ভয়ে সুফিয়া শিকদারের হৃদকম্প শুরু হয়ে গেল।তবু নরম স্বরে বলল,
না মানে ইয়ে শান্ত একটা মেয়েকে খুব ভালোবাসে।মেয়েটি খুব ভালো…।
ভালো না ছাই। আমি পাশের ঘর থেকে সব শুনেছি।শান্ত তুমি এ বংশের একমাত্র উত্তরাধিকারী।তোমার মুখে এমন নোংরা মেয়ের কথা মানায় না।ভুলে যাও এসব ভালোবাসাবাসি।তাছাড়া এসব ফুটপাতের দু’টাকার মেয়েদের আবার ভালোবাসা কিসের?এদেরকে নিয়ে ফুর্তি করা যায়,সময় কাটানো যায়,কিন্তু সংসার করা যায় না।ভুলেও যাও এসব ফালতু মেয়ের কথা।
বাবা ওহ্ ফালতু নয়।সত্যি খুব ভালো মেয়ে।আমি ওকে খুব ভালোবাসি।
বাবা একগাল ঘৃণার হাসি হেসে কড়া ধমক দিয়ে বলল,
স্টপ শান্ত এসব ফালতু ভালোবাসার কথা আমার সামনে উচ্চারণ করবে না।কারণ আমি এসব ভালোবাসাবাসি পছন্দ করি না।ভুলে যাও তুমি ঐ দু’টাকার মেয়েকে।তোমার বিয়ে অন্য মেয়ের সঙ্গে হবে।আমি সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তোমার বিয়ে ঠিক করছি।
শান্ত আর বাড়াবাড়ি না করে নিজের কর্মস্থলে ফিরে গেল।অফিস শেষ করে সুমিকে নিয়ে সরাসরি কাজী অফিসে চলে গেল।তারপর বিয়ে করে একটা ভাড়া বাসায় উঠল।
এদিকে বাবা আরমান শিকদার বিয়ের খবর শুনে ছেলের উপর খুব চটলেন।তারপর রাগের বশে ছেলেকে ত্যাজ্য করে দিলেন।
এর ফাঁকে কিছু সময় পার হলো।একদিন রাতদুপুরে সুমি মাথা ঘুরে পড়ে গেল।শান্ত দ্রুত গতিতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল।ইমারজেন্সি চিকিৎসা শুরু…।
ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলল,
সিরিয়াস কিছু না।শারীরিক দূর্বলতা।স্যালাইন পুস করেছি।সব ঠিক হয়ে যাবে।
মোটামুটিভাবে সুমি সুস্থ হয়ে উঠল।শান্ত তাকে নিয়ে বাসায় ফিরে আসল।মাঝে সপ্তাহ খানেক ভালো ছিল।এরপর সে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লো।তাকে আবার হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো।রোগী দেখার পর ডাক্তারের সন্দেহ হলো।তিনি ফের ব্লাড সহ অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিলেন।রিপোর্ট নিয়ে শান্ত ডাক্তারের কাছে গেল।রিপোর্ট দেখার পর ডাক্তারের চেহারায় মলিন চাপ পড়ে গেল।তিনি চুপসে গেলেন।তার চুপ থাকাটা শান্ত’র মনে সন্দেহের সৃষ্টি করলো।সে ডাক্তারের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,
ডাক্তার সাহেব কিছু বলছেন না যে।সুমির কী হয়েছে?
শান্ত সাহেব শুনুন,আমরা ডাক্তার, আমাদেরকে সত্য বলতে হয়।তাই সত্য প্রকাশ করতে বাধ্য হলাম।আপনার স্ত্রী ব্লাড ক্যান্সার।চিকিৎসা ব্যয়বহুল।
শান্ত কেঁদে উঠে বলল,
কী বললেন ডাক্তার!
হ্যাঁ ইহাই সত্য।
তার মানে সুমি বাঁচবে না।
তা একমাত্র আল্লাহ জানেন।আল্লাহকে ডাকুন।
চোখের পানির ও বাঁধ মানল না।অঝর ধারার ঝরতে লাগল।
ক’মিনিট পর চোখের পানি মুছে শান্ত সুমির কাছে গেল।তাকে দেখে সুমি বলল,
ওগো ডাক্তার কী বলেছে।সিরিয়াস কিছু নয়তো?
অনেক কষ্টে দু:খকে চেপে রেখে হেসে উঠে শান্ত বলল,
না তেমন কিছু না।তুমি সুস্থ হয়ে যাবে।
সত্যি বলছতো?
হ্যাঁ সত্যি। আমি মিথ্যে বলতে যাব কেনো।তুমি ভালো হয়ে যাবে।
শান্ত’র মুখের দিকে তাকিয়ে সুমি বলল,
শান্ত তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেনো?মনে হয় তুমি কিছু লুকাচ্ছ?উহু আমার এমন লাগছে কেনো।মাথাটা ঝিমঝিম কেমন জানি করছে।
বলতে না বলতে সুমি আবার অজ্ঞান হয়ে গেল।ডাক্তার ছুটে আসল।জরুরী ভিত্তিতে স্যালাইন পুস করলো।
এদিকে সুমির অসুখের খবরটা শান্ত’র বাবা আরমান শিকদারের কানে পৌছে গেল।তিনি কি আর থেমে থাকেন।ছুটে আসলেন ছেলের কাছে।বাবাকে দেখে ছেলে বলল,
বাবা তুমি!
হ্যাঁ আমি।ছেলের বিপদের কথা শুনে বাবা কি আর থেমে থাকতে পারে।তাই চলে এলাম।
শান্ত কেঁদে কেঁদে বলে,
বাবা সুমির চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা লাগবে।
তাতে কী হয়েছে,যত টাকা লাগে আমি দেব।
সত্যি তুমি টাকা দেবে বাবা?
হ্যাঁ দেব।তবে একটা শর্ত।
বলো বাবা কী শর্ত?
সুমিকে চিরদিনের জন্য ভুলে যেতে হবে।আমার পছন্দে বিয়ে করতে হবে।
জ্বি না বাবা।তা আমি কখনো করতে পারবো না।সুমি আমার স্ত্রী।আমি ওকে ভালোবাসি।
আরে এ ভালোবাসা ক’দিন। ক্যান্সার কখনো ভালো হতে শুনেছ।এমনিতে তো সে মরে যাবে।তখন কী করবে?
বাবা মৃত্যুর পর ও আমি ওকে ভালোবেসে যাব।ওর জাগায় আমি কোন নারীকে বসাতে পারবো না।
সত্যি?
জ্বি বাবা সত্যি।
বিষয়টা ভালোভাবে ভেবে দেখ।যদি আমার কথা শোন গাড়ি বাড়ি টাকা পয়সা সব পাবে।আর যদি ওর কথা শোন তাহলে সবকিছু থেকে বঞ্চিত হবে।এবার ভেবে দেখ কী করবে?
বাবা তুমি তোমার সম্পদ নিয়ে থাক।আমি আমার ভালোবাসার মানুষ নিয়ে থাকি।
ক’দিন পর যখন সে মরে যাবে তখন কী করবে?
ভালোবাসাকে অম্লান রাখার জন্য নি:সঙ্গ জীবন কাটাব।
সত্যি পারবেতো?
জ্বি হ্যাঁ বাবা পারবো।কারণ সত্যিকার ভালোবাসা মানুষের জীবনে একবার আসে, বারবার না।অসুস্থ হলেও সে আমার স্ত্রী।আমার উচিৎ এখন তার পাশে থাকা,তার সেবা করা।আর তুমি বলছ এখন ওকে ছেড়ে যেতে।বাবা তুমি পারলে মানুষ হয়ে অমানুষের মতো কথা বলতে?
হ্যাঁ পারলাম।কারণ আমি আমার সন্তানের মঙ্গল চাই,অমঙ্গল না।
বাবা আমাকে নিয়ে ভেবো না।আমি ঠিক ভালো থাকব।সুমির ঔষধ খাওয়ার সময় হয়েছে।অমাকে এক্ষণি যেতে হবে।
শান্ত আর কোন কথা না বলে সুমির কাছে ছুটে আসল।তাকে ঔষধ খাইয়ে পাশে বসলো।সুমি তার হাত চেপে ধরে বলল,
শান্ত তুমি না বললেও আমি জানি আমার কী হয়েছে?আমার ব্লাড ক্যান্সার ।
তখনি শান্ত তার মুখ চেপে ধরে বলল,
না তোমার কিচ্ছু হয়নি।তুমি ভালো হয়ে যাবে।আমি আছিতো তোমার পাশে?তোমার কিচ্ছু হবে না।আমি তোমাকে ভালোবাসি।অনেক ভালোবাসি।
শান্ত’র মুখে এমন আবেগমাখা কথা শুনে সুমির চোখ থেকে টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়লো।শান্ত তার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,
সুমি কাঁদছ কেনো?বলেছিনা তুমি ভালো হয়ে যাবে।কেঁদো না লক্ষিটি?
বলতে না বলতে সুমির মাথা ব্যথা শুরু হলো।সে উহঃ আহঃ শব্দ করে উঠল।শান্ত তার মাথা মলে দিয়ে বলল,
এটা মাইগ্রেন’র ব্যথা এক্ষণি সেরে যাবে।কিচ্ছু হবেনা।
সুমি মনে মনে বলে,
শান্ত আমি জানি এটা কিসের ব্যথা।তোমাকে আর লুকাতে হবেনা।শান্ত তুমি আমাকে এত ভালোবাস? তোমার ভালোবাসা আমার কপালে সইল না।খোদা তুমি আমার ভালোবাসার শান্তকে ভালো রেখো,সুখে রেখো,শান্তিতে রেখো।
এভাবে শান্ত সুমির সেবাযত্ন করে চলেছে।দিন যায় রাত হয়।দু:সহ যন্ত্রণার মাঝে কাটছে শান্তর দিনগুলো।তবুও স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসার কমতি নেই।ডাক্তারের চিকিৎসার পাশাপাশি সে সেবাযত্ন করে চলেছে সর্বদা।তবুও রোগের কোন উন্নতি হচ্ছে না।সুমি দিনদিন কেমন জানি হয়ে যাচ্ছে।চেহারায় ফ্যাকেসে ভাব শরীর স্বাস্থ্যের অবনতি,শান্তর মন মানছে না।ছুটে গেল ডাক্তারের কাছে।ডাক্তার বলল,
আসলে জন্ম মৃত্যু আল্লাহ পাকের ঈশারায় হয়ে থাকে।এতে কারো হাত নেই।ডাক্তার হলো উছিলামাত্র।তাছাড়া ক্যান্সারের পুরোপুরি চিকিৎসা এখনো আবিষ্কার হয়নি।যতটুকু চিকিৎসা আমাদের হাতে আছে আমরা তাই দিচ্ছি।আপনার স্ত্রীর অবস্থা খুবই সিরিয়াস।সে মাত্র আর ক’টা দিন বেঁচে আছে।তাকে বাসায় নিয়ে যান।
কথাটা শুনামাত্রই শান্ত’র কান্না, সে কি কান্না…।
তার কান্না দেখে ডাক্তার বলল,
শান্ত সাহেব কাঁদবেন না।নিয়তির উপর কারো হাত নেই।বরণ বউকে বাসায় নিয়ে ক’দিন সেবাযত্ন করুণ।
তখনি নার্স ছুটে এসে বলল,
স্যার ১০৫ নাম্বার সিটের রোগী কেমন জানি করছে।
ডাক্তার ছুটে আসল।সঙ্গে সঙ্গে শান্ত ও আসল।এসে দেখে সুমির কোন সাড়াশব্দ নেই।ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করলো।শান্ত চিৎকার করে কেঁদে কেঁদে বলল,
সুমি তুমি আমাকে ছেড়ে যেতে পারলে?আমায় এখন দেখবে কে?ভালোবাসবে কে?
“এত কষ্ট কেনো ভালোবাসায়”।
শান্তর চিৎকার আকাশ পাতাল কেঁপে উঠল।ডাক্তার নার্স তাকে কোন রকমে থামাল।তারপর সুমির দাফনের ব্যবস্থা করলো।
ঃসমাপ্তঃ


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

গল্প সিয়ামের স্বপ্ন আফছানা খানম অথৈ

গল্প সিয়ামের স্বপ্ন আফছানা খানম অথৈ দশ বছরের সিয়াম কমলাপুর রেল ষ্টেশন এ থাকে।তার ঘরে খুব অশান্তি। এক মুহুর্তের জন্য

গল্পঃ অনুপমার চোখে ২

গল্পঃ অনুপমার চোখে লেখকঃ বকুল রায়  #Part_02 অনুপমাকে ভালোবেসে ফেলেছি, এটা নিজেকে স্বীকার করলেও তাকে বলার সাহস তখনও হয়নি। কারণ

গল্পঃ অনুপমার চোখে ১

গল্পঃ অনুপমার চোখে লেখকঃ বকুল রায় Part 01 ঢাকার ব্যস্ত সড়কগুলো আমার কাছে সবসময় যেন এক রঙিন ক্যানভাস। ছোটবেলা থেকে

গল্প সুদ আফছানা খানম অথৈ

গল্প সুদ আফছানা খানম অথৈ এক ব্যবসায়ী বিপদে পড়ে এক ইহুদীর কাছ থেকে সুদের উপর কিছু টাকা কর্জ নিলেন।কথা ছিল

Leave a Reply