গল্প ডিভোর্স আফছানা খানম অথৈ

0

ডিভোর্স

আফছানা খানম অথৈ

মালিহা ফ্যামিলির বড় মেয়ে গভ:মেন্ট কলেজ টিচার।বাবা চাকরী থেকে অবসর নিয়েছেন এখন সংসারের হাল তাকে ধরতে হলো।ছোট বোন মারিয়ার পড়া লেখা শেষ এখন একটা চাকরী হলে ভালো হত।
কিন্তু তার চাকরীর খেয়াল নেই।মারিয়া একটু চঞ্চল ও রোমান্টিক স্বভাবের তার উপরে সুন্দরী ও বটে। ছেলে বন্ধুদের নিয়ে কারণ ছাড়া বিভিন্ন জাগায় ঘুরাঘুরি করে।বড় বোন একটু শাসন করতে গেলে বলে,
কি যে বলিস আপু এগুলো এখন যুগের ফ্যাশন।তাছাড়া আমি কি ঘরে বন্ধী হয়ে থাকব?
মালিহা ভদ্রভাবে বলে,
লক্ষি বোন আমার,একটু বুঝতে চেষ্টা কর,তুই এখন বড় হয়েছিস লেখা পড়া শেষ,ছেলেদের সাথে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট না করে চাকরীর জন্য ট্রাই কর।তাছাড়া দু’চারটা টিউশনি করলে তো পারিস।
প্লিজ আপু চাকরী টিউশনি আমার দ্বারা হবে না।
তাহলে কি করবি?
সরাসরি বোনের মুখের উপর বলে দিলো,
আপু আমি বিয় করব, সংসারী হব।
ঠিক আছে তাই হবে।তবে আমার একটা শর্ত?
বল আপু কি শর্ত?
আজ থেকে বাজে ছেলেদের সাথে ঘুরাঘুরি বন্ধ।
কেন আপু?
এত বড় হয়েছিস এখনো বুঝিস না?
জ্বি না আপু বুঝিয়ে বল।
বলছি শুন, অনেক ভদ্র ফ্যামিলি আছে তারা এসব যুগের ফ্যাশন আর মডেলিং পছন্দ করে না।তাছাড়া এটা ইসলামে জায়েজ না।
প্লিজ আপু আমি ঘরে বসে থাকতে পারব না।
লক্ষি বোন আমার বিয়ে পর্যন্ত মান তার পর দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
আচ্ছা চেষ্টা করে দেখব।
যাক মালিহা কোনমতে বোনকে ম্যানেজ করলো।তারপর বাবা-মার কাছে মারিয়ার বিয়ের কথা প্রকাশ করলো।বাবা-মা দুজনে চমকে উঠে বলল,
মালিহা এসব কি বলছিস বড় বোনের বিয়ে না হতে ছোট বোনের বিয়ে প্রশ্নই উঠেনা।
প্লিজ বাবা রাগ করো না।বড় ছোট কোন বিষয় না,যার বিয়ের প্রয়োজন তাকে আগে বিয়ে দেয়া দরকার।
এবার মা রেগে উঠে বলল,
বলিস কিরে মালিহা ওর বিয়ে হয়ে গেলে লোকে তোকে বুড়ি বলবে না।
জ্বি না মা বলবে না।এখন যুগ পাল্টেছে। এখন আর আগের মতো লোকে মেয়েদের বয়স নিয়ে আজে বাজে কথা বলে না।তোমরা আর না করো না।আমি আজই ঘটককে তার বায়োডাটা দিয়ে আসব।
যাক ঘটককে বায়োডাটা দেয়া হলো।ঘটক ঠিক একটা ব্যবসায়ী পাত্রের সন্ধান দিলেন তাদের। পাত্রের খোঁজ খবর নিয়ে তারা ঘটককে সামনে এগুনের কথা বললেন।ঘটক পাত্রের মা-বাবার সঙ্গে কথা ফাইনাল করলেন। তারপর একদিন মেয়ে দেখতে আসলেন।মেয়ে পছন্দ হয়েছে এবার আকদ’র পালা।
সামাজিক ভাবে দুপক্ষের আত্মীয়-স্বজন ও কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তি নিয়ে বৈঠকে বসলেন। বৈঠকে প্রয়োজনীয় আলোচনা শুরু হলো।
পাত্রে বাবার দাবী পাঁচ ভরি অলঙ্কার,ঘর সাজানোর ফার্নিচার ও পাঁচশত লোক খাওয়াতে হবে।মেয়ের বাবার দাবী দশ লক্ষ টাকা দেন মোহর ও তিন থেকে চারশত লোক খাওয়াতে হবে।কিছু সময় এ নিয়ে কথা কাটা-কাটি হয়।সবাই মিলে দুপক্ষের দেনা-পাওনা ডিসকাস করলেন ।তারপর সবাই মিট হয়ে আকদ’র দিন ধার্য করলো।
মেয়ের আকদ আত্মীয় স্বজনকে কি দাওয়াত না দিয়ে পারে।ঐ দিকে ছেলে পক্ষ ও দাওয়াত না দিয়ে পারলো না।যাক আকদ’র অনুষ্ঠানে অনেক আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতি।
যাক ভালো ভাবে আকদ’র অনুষ্ঠান শেষ হলো।সবাই মিলে বিয়ের দিন ধার্য করলো।পনেরো দিন পর বিয়ে। সকাল হলে মালিহার মা বলল,
ছেলেদের বাড়ীতে মিষ্টি পাঠাতে হবে।সঙ্গে আর ও কিছ।
মালিহা বলল,
মা এসবের কি দরকার?
তুই এসব বুঝবি না।আকদ’র পর ছেলের বাড়িতে মিষ্টি পাঠাতে হয়।
মুরব্বীদের মুখের উপর কথা বলা ঠিক না।তাই আর মালিহা কিছু বলল না।যাক দশ কেজি মিষ্টি সঙ্গে কিছু ফলফলাদি মেয়ের কুটুম দ্বারা ছেলের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হলো।
এর ফাঁকে শুরু হলো দুজনের ফোনালাপন, কারো তর সইছে না।একে অপরেকে নিয়ে বিভিন্ন জাগায় ঘুরাঘুরি করে।দুজনের মাঝে ভীষণ ভীষণ ভালোবাসা বাসি।
যাক সময় মতো বিয়ে ও অনুষ্ঠান শেষ হলো।মারিয়া শামিম আজিজের বড় ছেলে সাব্বির আজিজের বউ হয়ে তাদের বাড়িতে গেল।শুরু হলো মারিয়ার সংসার জীবন শুরু হলো।
বিয়ের পূর্বে ভেবেছিল সংসার জীবন খুব সুখের, তাই এক প্রকার খুশি হয়ে বড় বোনকে রেখে বিয়ের পিড়িতে বসেছে।কিন্তু এখন আর শ্বশুর বাড়ি ভালো লাগছে না।সংসার জীবনে পা রাখা মাত্রই মাথা কিলবিল করছে।তবুও শ্বশুর- শ্বাশুড়ি, ননদ-দেবর সবার মন যুগিয়ে চলার চেষ্টা করছে।ভুল ত্রুটি যে হচ্ছে না,তা না,শ্বাশুড়ি রান্না-বান্না দেখিয়ে দিচ্ছে,পাছে না পারা কাজ দেখিয়ে দিচ্ছে।কোনমতে মারিয়ার সংসার জীবন চলছে।কিন্তু তবুও কেন জানি অস্থির অস্থির লাগছে।বাবার বাড়ি যেতে মন প্রাণ উতলা যাক স্বামী শ্বাশুড়ি সবাইকে ম্যানেজ করে বাবার বাড়ি বেড়াতে আসল।কিন্তু সে কি কিছুদিন থাকার পর বলল,
সে আর ঐ বাড়িতে যাবে না।কারণ জিজ্ঞেস করলে চটে উঠে বলল,
আপু শ্বশুর বাড়ির লোকজন খুব খারাপ। আমার শ্বাশুড়ি আমাকে শুধু কাজের ফরমায়েস দেন।আমি কি কাজের মেয়ে যে সারা দিন কাজ করব।
লক্ষি বোন আমার বুঝতে চেষ্টা কর,বিয়ের পর মেয়েদের অনেক দায়িত্ব বাড়ে।স্বামী,শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ননদ-দেবর সবার মন যুগিয়ে চলতে হয়।এটাই নিয়ম।
প্লিজ আপু আমি এসব পারবো না।
প্লিজ বোন আমার তোমাকে পারতে হবে। কারণ এটা শ্বশুর বাড়ি,বাপের বাড়ি না।তাছাড়া আল্লাহর হাবীব বলেছেন সংসারের কাজ নিজের হাতে করা ভালো,এতে পুণ্য হয়।
তাই বলে আমি একা সব কাজ করব?
একা কোথায়,তোর শ্বাশুড়ি তো তোকে হেল্প করছে।
মালিহার মা রেগে উঠে বলে,
ওকে এত কি বুঝাচ্ছিস,তখন কত করে বললাম,চাকরী-বাকরী কর,তারপর বিয়ে….।
না শুনলো না,বড় বোনকে রেখে বিয়ে করলে।
আর এখন বলছে ঐ বাড়িতে যাবে না।বললে হলো,এত লক্ষ টাকা খরচ করে বিয়ে দিলাম।এখন বলছে যাবে না।এটা কি পুতুল খেলা যে ইচ্ছে হলো গড়লাম,আবার ইচ্ছে হলো ভেঙ্গে দিলাম।সাবধান এমণ কথা আর কখনো মুখে আনবি না।
যাক মায়ের কড়া শাসন মোটামুটি কাজে লেগেছে।মারিয়া আর কোন কথা না বলে শ্বশুর বাড়িতে ফিরে গেল।যাক চলছে কোন মতে তার দিন কাল।
মারিয়ার ননদের বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হলো।নতুন কুটুম বলে কথা,ভালো করে মারিয়ার বাবার বাড়ির সবাইকে নিমন্ত্রণ করা হলো।খালী হাতে তো বিয়ের অনুষ্ঠানে আসা যাবে না।গিফট করতে হবে তাও আবার স্বর্ণ অলঙ্কার।যাক মারিয়ার মা জিয়ারী জামাই’র জন্য স্বর্ণের আংটি বানিয়ে আনলেন।তার কয় মাস পরে মারিয়ার দেবরের বিয়ে হলো তার বউকে ও স্বর্ণের আংটি গিফট করতে হলো।তারপর আসল ঈদুল আজহা মারিয়ার জন্য শ্বশুর বাড়িতে ঈদ উপলক্ষে খাসী কিম্বা গরু পাঠাতে হবে।তানা হলে মান সম্মান থাকবে না।এটাই নাকি নিয়ম।যাক শ্বশুর বাড়িতে মারিয়ার সম্মান যাতে বাড়ে তার জন্য গরু পাঠিয়ে দেয়া হলো।শুধু তাই নয় ঈদ উপলক্ষে মারিয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন ও আত্মীয় স্বজনকেও নাকি কাপড়-ছোপড় দিয়ে সাজিয়ে দিতে হবে।এটা ও নাকি সামাজিক নিয়ম,না দিলে মেয়েকে খোটা দিবে।ছেলে পক্ষ বলে কথা,পাওয়ার বলে একটা কথা আছে না।কি আর করা মেয়ের বাবা বাধ্য হয়ে ছেলের মায়ের দেয়া লিস্ট অনুযায়ী সবার জন্য কাপড় ছোপড় পাঠিয়ে দিলেন।তারপর দম নিতে না নিতে আবার মারিয়ার কোল জুড়ে আসল একটা ছেলে বেবি।আবার শুরু হলো খরচের পালা….।প্রথমে নাতির জামা-কাপড় থেকে শুরু করে যাবতীয় জিনিস পত্র..।
তারপর আকীকার অনুষ্ঠানে গিফট’র জন্য নানার কুটুমের সবাই স্বর্ণের আংটি চেইন আর একটা গরু দিতে হবে।
আত্মীয় স্বজন সবাই আকীকা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করলো।যাক মারিয়ার খরচা-পাতি মোটামুটি ম্যানেজ হলো।এবার মা-বাবা বড় মেয়ে মালিহার বিয়ে নিয়ে ভাবছেন।বাবা ফজলুর রহমান ঘটককে তার বায়োডাটা দিয়ে আসলেন।যাক ঘটক ফজলুর রহমানের কথা অনুযায়ী একজন উচ্চ পদস্থ কর্মচারী পাত্রের সন্ধান দিলেন।ফজলুর রহমান পাত্রের খোঁজ খবর নিয়ে সাঁই দিলেন।এবং পাত্র পক্ষকে আসতে বললেন।পাত্র পক্ষ সময় মতো মালিহাকে দেখতে আসল।তাদেরকে খুব খাতির যত্ন করে খাওয়া হলো।মালিহা পাত্রের মা-বাবাকে সালাম দিলেন।ছেলের মা-বাবা মালিহার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বার্তা শেষ করলেন।মালিহাকে তাদের পছন্দ হলো।বিয়ের কথা বার্তা পাকা করবেন।ঠিক তখনি খবর আসল মারিয়া গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস দিয়েছে।ভাগ্যিস শ্বাশুড়ি দেখেছে তানা হলে নির্ঘাত মৃত্যু।
উনারা মা-বাবাকে জরুরী তলব করেছে।মালিহার দুর্ভাগ্য পাত্র পক্ষের কানে খবরটা যেতে তারা বলল,
ভাইজান মাফ করবেন, এক মেয়ে ফাঁস দিয়েছে, যদি এ ও আবার আমাদের পরিবারের গিয়ে ফাঁস দেয়।আমরা এখানে সমন্ধ করবো না।
মালিহার বাবা নম্র স্বরে বলল,
প্লিজ আপনারা যাবেন না।মালিহা খুব ভালো আপনারা যাবেন না।মালিহা খুব ভালো মেয়ে ওর মতো চঞ্চল না।
কিন্তু কে শুনে কার কথা তারা ঠিকঠিক চলে গেল।মালিহার বাবা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।আর থাকবে না কেন,ছোট হওয়া সত্বেও তাকে আগে বিয়ে দেয়া হলো।আজ আবার তার জন্য বড় বোনের বিয়ে ভেঙ্গে গেল।পরবর্তীতে কি হয় আল্লাহ জানেন।এত সব চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগল।মনে হয় তিনি হার্টফেল করবেন।আর মালিহা তা বুঝতে পেরে বাবাকে জড়িয়ে ধরে ম্লান হেসে বলল,
প্লিজ বাবা কোন চিন্তা করো না।এসব ঘটনা সমাজে প্রায় ঘটে। এসব নিয়ে এত ভাবতে হয় না।
চলো মারিয়ার শ্বশুর বাড়িতে।
মালিহা তুই ওর ব্যাপারে আর একটা কথা বলবি না।আজ ওর জন্য তোর বিয়েটা ভেঙ্গে গেল।
প্লিজ বাবা রাগ করো না।বিয়ে ভাঙ্গল কোথায়, এখনো তো কথাই পাকা হয়নি।আল্লাহ পাক কপালে বিয়ে যদি লিখে রাখেন তাহলে অবশ্যই হবে।
মালিহা মা, মারিয়া যদি তোর মতো হতো, তাহলে আমি এত টেনশন করতাম না।
প্লিজ বাবা আর কোন কথা নয়,চলো মারিয়ার শ্বশুর বাড়িতে।
বাবা আর অমত করলেন না।ছুটে গেলেন মারিয়ার শ্বশুর বাড়িতে।
শ্বশুর বাড়ির লোকজন সবাই রাগে বোম।সবাই গুম মেরে বসে আছে।কারো মুখ দিয়ে কোন বচন বাণী বের হচ্ছে না।মালিহা ও তার বাবা-মা ভিতরে ঢুকে ড্রয়িংরুমে তাদের পাশা-পাশি বসল।তারপর মালিহা মই মাকে সালাম দিয়ে বলল,
মই মা কেমন আছেন?
এই সেরেছে মই মার রাগ মাথায় উঠে গেল।তিনি কড়া ভাষায় বললেন,
মালিহা ভালো থাকার কথা বলছ, তোমার এই দস্যি বোনটা আমাদেরকে ভালো থাকতে দিলে তো?ভাগ্যিস আমি দেখেছিলাম, তা না হলে কি অঘটন না ঘটত,এই দস্যি বউয়ের দ্বারা সংসার হবে না।কথায় কথায় ঝগড়া করে।নিয়ে যাও ওকে।
মারিয়া কি আর থেমে থাকে এমনিতে সে একটু চঞ্চল স্বভাবের। সে পাল্টা জবাব দিলো,
আপু উনি মিথ্যে কথা বলেছে,আমি ঝগড়া করিনি।রুপা সব সময় তোকে নিয়ে আজে বাজে কথা বলে কথায় কথায় খোটা দেয়।আর আমি তা সহ্য করতে না পেরে দুচারটা কথা বলি।আর তখনি সবাই মিলে যাতা বলে।
মারিয়ার শ্বাশুড়ি কি আর থেমে থাকে চোখ রাঙিয়ে বলেন,
দেখলেন তো, আপনার মেয়ের আচার-আচরণ মুখের উপর কেমন কড়া কথা বলল,এমন বউয়ের আমার দরকার নেই, আজ গলায় ফাঁস দিয়েছে, অন্য দিন বিষ খাবে,শেষে আমাকে জেলের ঘানি টানতে হবে।আমি বাপু এত ঝামেলা পোহাতে পারবো না।লোক জানা জানি হওয়ার পূর্বে মেয়েকে নিয়ে তাড়াতাড়ি বাসা থেকে বিদায় হোন।
মেয়ে পক্ষ বলে কথা অন্যায় হলেও সেটাকে মেনে নিতে হবে। হুট করে সিরিয়াসে যাওয়া ঠিক না।মারিয়ার বাবা কড়া কিছু বলতে চাইলে ও মালিহা বাবাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
মই মা মারিয়া মেয়ে মানুষ কি বলতে কি বলেছে,এই নিয়া আর বাড়াবাড়ি না করাই ভালো।
মালিহা তুমি এই ব্যপারে আর কিছু বলো না।এমন বেয়াদব বউ’র দরকার নেই।
প্লিজ মই মা বেয়াদবি মাফ করুন।যদি অনুমতি দেন একটা কথা বলতাম।
ঠিক আছে মালিহা বল?
মই মা গলায় ফাঁস দেয়াটা মারিয়ার অন্যায় সেটা মানছি।কিন্তু মালিহার জাগায় যদি আপনার মেয়ে হতো তাহলে কি করতেন?ছোটরা ভুল করে, আর এই ভুলটাকে যে সুধরানো যাবে না তা নয়।আপনি মুরব্বী মানুষ সব সমাধান আপনার হাতে। মারিয়াকে মেয়ে ভেবে ক্ষমা করে আপন করে নিলে তো সব কিছু মিট হয়ে যেত।
এতক্ষণ পরে মারিয়ার শ্বাশুড়ির টনক নড়ল।অত:পর তিনি বললেন,
মালিহা ঠিক আছে আমি তোমার কথা রাখলাম।প্রথম ভুল হিসেবে ক্ষমা করে দিলাম।দ্বিতীয় বার যদি এমণ ভুল করে রক্ষা নেই।
যাক কোনমতে মারিয়া ও তার শ্বাশুড়িকে মিট করে দিয়ে মালিহা তার বাবা-মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসল।
টেনে টুনে মাস খানেক পার হলো।আবার শুরু হলো তাদের পারিবারিক কেলেংকারী। পরিবারের সবাই এক পক্ষে, মারিয়া এক পক্ষে। ননদ বেড়াতে এসেছে। ভাইয়ের কাছে দুলক্ষ টাকা চেয়ে বসলো।মারিয়া দুচারটা কথা বলল,অমনি শুরু হলো ঝগড়া। মারিয়ার ননদ রুপা তার চৌদ্দ গোষ্টী উদ্ধার করলো।বিশেষ করে তার বড় বোন মালিহার বিয়ে নিয়ে কটাক্ষ করে অনেক কটু আচরণ করলো।মারিয়া সহ্য করতে না পেরে অনেক গুলো ঘুমের ঔষধ এক সঙ্গে খেয়ে বসলো।গভীর রাতে স্বামী ফিরে দেখে মারিয়ার কোন সাড়া শব্দ নেই।পাশে ঔষধের প্যাকেট।সে ঠিক বুঝতে পারলো মারিয়া ঘুমের ঔষধ খেয়েছে।তাই আর দেরী না করে হাসপাতালে নিয়ে গেল।সুস্থ হওয়ার পর পারিবারিক ভাবে দুপক্ষ বৈঠকে বসলো।মারিয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন কিছুতেই তাকে বউ হিসেবে মেনে নিতে রাজী না।আর মারিয়ার ও এক কথা সেই সে ডিভোর্স চাই।সংসার নামক শব্দটা এখন তার কাছে অসহ্য, এত যন্ত্রণা,এত অপমান,এত কষ্ট সে সহ্য করতে পারবেনা।এ থেকে সে মুক্তি চাই।কি আর করা শেষ পর্যন্ত মারিয়ার “ডিভোর্স “হয়ে গেল।লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ লতা দিয়ে পাতা ঘেরা শত শত আত্মীয়-স্বজনকে খাওয়া সব বিফলে গেল।


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কিশোর

  আমরা নবীন,আমরা কিশোর জয় করিবো বিশ্ব ভূবন, মেধার বিকাশ জাগবে এবার গড়বো জ্ঞানের নতুন স্বপন। সত্য ন্যায়ের সঙ্গে থেকে

গদ্য কবিতার বই ‘ কনকচাঁপা দোদুল দোল ‘

গদ্য কবিতার বই 'কনকচাঁপা দোদুল দোল '। মোট কবিতার সংখ্যা ৮০ টি।বইটিতে আমার কবি নাম: মোঃ আরিফ হোসেন সর্দার।  

ওঁরা আপন জন

ঘুমের থেকে ওঠরে জেগে ওহে মুসলিম গণ, দেখরে চেয়ে মরছে যারা ওঁরা আপন জন। মুসলিম হলে কেমন করে থাকো আজি

স্বাধীনতার ঘ্রাণ

স্বাধীনতা এলো বাংলায় দীর্ঘ নয় মাস পর॥ নয়টি মাসে কতো মায়ের শূন্য হইলো ঘর! পাক বাহিনী বুলেট ছোড়ে ঝাঁঝরা করে

Leave a Reply