ছোটগল্প:খোকনদার বরই গাছ
মো.রিমেল
রহমতপুর গ্রামের সরকারী স্কুলের মাঠের পাশ দিয়ে সোজা একটি রাস্তা গেছে।রাস্তার পূর্ব দিকে খোকনদার বাড়ি।বাড়ির পূর্বদিকে কিছু বরই গাছ আছে।আবার রাস্তার ধারে একটা বড় বরই গাছ আছে।সকাল বেলা,একটু পরে টুপ টুপ আওয়াজ শোনা গেল।বুঝতে বাকি রইল না খোকনদার বরইগাছ থেকে বরই পাড়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে পাড়ার বাচ্চাকাচ্চারা খেলতে গেল ক্রিকেট।সরকারী স্কুলের মাঠ থাকলে ও তারা খোকনদার বাড়ির পাশের একটা বাগান আছে। সেখানে খেলে।আজকে যাওয়ার সময় একজন ব্যাট টা জোড়ে ছুড়ে মারল বরই গাছে।বৃষ্টির মতো ঝড়ে পড়ল বরই।খোকনদার মা একটা লাঠি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে চেচিয়ে বলে,”কেডা রে আমার গাছের বড়ুই পারস?”এসে দেখে কেউ নেই।ততক্ষণে সবাই পালিয়ে গেছে। এলাকা সহ আশে পাশের গ্রামের যে ই আসুক না কেন রাস্তার পাশের এই বড়ুই গাছের বরই দেখে কেউ লোভ সামলাতে পারবে না।কথায় আছে রাস্তার ধারের গাছে ফল ধরে বেশি। সেদিন রাস্তা দিয়ে একটা ট্রাক যাচ্ছিল।বলাবলি হচ্ছে,”আজকে তাড়াতাড়ি মাটি নিয়ে যেতে হবে।মালিক না হয় বকবে।একটু ও দেরি করা যাবে না।এমন সময় বড়ুই গাছের তলায় এসে ট্রাক দাড়িয়ে গেল।বরই পাড়া শুরু হলো।নিরব মিশন।খোকনদার মা এবার কোনো ভাবে টের পেল না। প্রায় সময় খোকনদার মায়ের আওয়াজ শোনা যায় ৫-৬ বাড়ি পরে,,,,বরই গাছই যেন তার যন্ত্রনার মূল কারণ।সংসার সামলাবে নাকি বরইগাছ পাহাড়া দিবে। রাতুলের স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে বরই গাছের তলায় এসে দেখল একটা রাস্তায় একটা বরই পেয়ে হাতে নিল।হাতে নিলে ত হবে না স্বাদ ও ত নিতে হবে।দেরি না করেই দিল মুখে কিযে মিস্টি!,মাথার উপরে তাকাতেই দেখে বরই এর খাজানা।মন আর মানে না।নিজের স্কুলের জুতা খুলে ছুড়ে মারল বড়ুই গাছে।যা ঘটার তাই হলো।বরই হাতে পেলে ও তার মুখে ভয়ের ছাপ।সেই ভয় খোকদার মায়ের জন্য নয়।তার জুতা আটকে গেছে বরই গাছে। বাড়িতে গেলে মাকে কি জবাব দিবে,,পাশেই ছিল রাতুল বন্ধু বিষ্ণুর বাড়ি।কোনো কথা না বলে সোজা বিষ্ণুর বাড়ি।বিষ্ণু ঘটনা শুনে বলল আজ আমাদের বাড়িতে থাক।সকালে আমরা যাবো জুতা আনতে। সকাল বেলা,মিশন জুতা ফিরে পাওয়া।দুইজনে লাঠি,ইট পাটকেল যা পারল সব নিয়ে বড়ুই গাছের তলায় গেল।বিষ্ণু,শোন আমি জুতা নামাবো।আর তুই দেখবি খোকনদার মা আসছে কিনা।জলদি কর বিষ্ণু।অনেকক্ষণ পরে তারা জুতা ফিরে পেতে সক্ষম হলো। বিষ্ণু দেখসত,আমি যেকোনো কাজ করলে এমনেতেই হয়ে যায়।রাতুল,হুম এবার একটু চাপা কম মার।খোকদার মা বাড়িতে নেই।তাই সফল হয়েছি আমরা। পরের দিন বিকেলে ছেলেমেয়েরা রাস্তার পশ্চিমে দারোগার বাড়ির সামনে মেড্ডার রেল গাড়ি বানিয়ে খেলছিল।দেখলো কিছু পাকা বরই পাখি ফেলেছে রাস্তায়।তারা গেল আনতে।রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাওয়ায় পিসে গেল বরইগুলি।মন খারাপ করে দাড়িয়ে সবাই।এমন সময় সুমন ভাই যাচ্ছিল।কিরে বড়ুই খাইবি?দিল এক লাড়া।টপ টপ করে বরই পড়তে শুরু করল।ছেলেমেয়েরা আনন্দে লাফালাফি শুরু করলো।একটু পরে, “কোন গোলামের পুত রে,বড়ুই পারস,,” খাড়া আইতাসি” খোকনদার মা এসে দেখে ছেলেমেয়েরা বড়ুই টুকাচ্ছে।কিরে তরা এ কাম করেছিস,খাড়া আজকে তরার বাড়িতে বিচার দেমু।এতো সাহস।ছেলেমেয়রা,আমরা না গো সুমন করেছে।আমার সাথে মিছা কথা?সুমন ভাই অনেক আগেই বড়ুই নিয়ে চলে গিয়েছিল।এদিকে বাচ্চদের বাড়িতে বিচার গেল। পরের বছরের ঘটনা।বরই এর মৌসুম চলে এসেছে আবার।আগের মতো আর খোকনদার মায়ের আওয়াজ শোনা যায় না।বড়ুই পরার টুপ টুপ শব্দ ও আর আসে না।বাড়িতে আর খোকদার মা বিচার দিতে আসে না।খোকনদার বাবা গেল। গাছটার ও একই দশা হলো।”>http://ছোটগল্প:খোকনদার বরই গাছ মো.রিমেল রহমতপুর গ্রামের সরকারী স্কুলের মাঠের পাশ দিয়ে সোজা একটি রাস্তা গেছে।রাস্তার পূর্ব দিকে খোকনদার বাড়ি।বাড়ির পূর্বদিকে কিছু বরই গাছ আছে।আবার রাস্তার ধারে একটা বড় বরই গাছ আছে।সকাল বেলা,একটু পরে টুপ টুপ আওয়াজ শোনা গেল।বুঝতে বাকি রইল না খোকনদার বরইগাছ থেকে বরই পাড়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে পাড়ার বাচ্চাকাচ্চারা খেলতে গেল ক্রিকেট।সরকারী স্কুলের মাঠ থাকলে ও তারা খোকনদার বাড়ির পাশের একটা বাগান আছে। সেখানে খেলে।আজকে যাওয়ার সময় একজন ব্যাট টা জোড়ে ছুড়ে মারল বরই গাছে।বৃষ্টির মতো ঝড়ে পড়ল বরই।খোকনদার মা একটা লাঠি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে চেচিয়ে বলে,”কেডা রে আমার গাছের বড়ুই পারস?”এসে দেখে কেউ নেই।ততক্ষণে সবাই পালিয়ে গেছে। এলাকা সহ আশে পাশের গ্রামের যে ই আসুক না কেন রাস্তার পাশের এই বড়ুই গাছের বরই দেখে কেউ লোভ সামলাতে পারবে না।কথায় আছে রাস্তার ধারের গাছে ফল ধরে বেশি। সেদিন রাস্তা দিয়ে একটা ট্রাক যাচ্ছিল।বলাবলি হচ্ছে,”আজকে তাড়াতাড়ি মাটি নিয়ে যেতে হবে।মালিক না হয় বকবে।একটু ও দেরি করা যাবে না।এমন সময় বড়ুই গাছের তলায় এসে ট্রাক দাড়িয়ে গেল।বরই পাড়া শুরু হলো।নিরব মিশন।খোকনদার মা এবার কোনো ভাবে টের পেল না। প্রায় সময় খোকনদার মায়ের আওয়াজ শোনা যায় ৫-৬ বাড়ি পরে,,,,বরই গাছই যেন তার যন্ত্রনার মূল কারণ।সংসার সামলাবে নাকি বরইগাছ পাহাড়া দিবে। রাতুলের স্কুল ছুটি শেষে বাড়ি ফেরার পথে বরই গাছের তলায় এসে দেখল একটা রাস্তায় একটা বরই পেয়ে হাতে নিল।হাতে নিলে ত হবে না স্বাদ ও ত নিতে হবে।দেরি না করেই দিল মুখে কিযে মিস্টি!,মাথার উপরে তাকাতেই দেখে বরই এর খাজানা।মন আর মানে না।নিজের স্কুলের জুতা খুলে ছুড়ে মারল বড়ুই গাছে।যা ঘটার তাই হলো।বরই হাতে পেলে ও তার মুখে ভয়ের ছাপ।সেই ভয় খোকদার মায়ের জন্য নয়।তার জুতা আটকে গেছে বরই গাছে। বাড়িতে গেলে মাকে কি জবাব দিবে,,পাশেই ছিল রাতুল বন্ধু বিষ্ণুর বাড়ি।কোনো কথা না বলে সোজা বিষ্ণুর বাড়ি।বিষ্ণু ঘটনা শুনে বলল আজ আমাদের বাড়িতে থাক।সকালে আমরা যাবো জুতা আনতে। সকাল বেলা,মিশন জুতা ফিরে পাওয়া।দুইজনে লাঠি,ইট পাটকেল যা পারল সব নিয়ে বড়ুই গাছের তলায় গেল।বিষ্ণু,শোন আমি জুতা নামাবো।আর তুই দেখবি খোকনদার মা আসছে কিনা।জলদি কর বিষ্ণু।অনেকক্ষণ পরে তারা জুতা ফিরে পেতে সক্ষম হলো। বিষ্ণু দেখসত,আমি যেকোনো কাজ করলে এমনেতেই হয়ে যায়।রাতুল,হুম এবার একটু চাপা কম মার।খোকদার মা বাড়িতে নেই।তাই সফল হয়েছি আমরা। পরের দিন বিকেলে ছেলেমেয়েরা রাস্তার পশ্চিমে দারোগার বাড়ির সামনে মেড্ডার রেল গাড়ি বানিয়ে খেলছিল।দেখলো কিছু পাকা বরই পাখি ফেলেছে রাস্তায়।তারা গেল আনতে।রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাওয়ায় পিসে গেল বরইগুলি।মন খারাপ করে দাড়িয়ে সবাই।এমন সময় সুমন ভাই যাচ্ছিল।কিরে বড়ুই খাইবি?দিল এক লাড়া।টপ টপ করে বরই পড়তে শুরু করল।ছেলেমেয়েরা আনন্দে লাফালাফি শুরু করলো।একটু পরে, “কোন গোলামের পুত রে,বড়ুই পারস,,” খাড়া আইতাসি” খোকনদার মা এসে দেখে ছেলেমেয়েরা বড়ুই টুকাচ্ছে।কিরে তরা এ কাম করেছিস,খাড়া আজকে তরার বাড়িতে বিচার দেমু।এতো সাহস।ছেলেমেয়রা,আমরা না গো সুমন করেছে।আমার সাথে মিছা কথা?সুমন ভাই অনেক আগেই বড়ুই নিয়ে চলে গিয়েছিল।এদিকে বাচ্চদের বাড়িতে বিচার গেল। পরের বছরের ঘটনা।বরই এর মৌসুম চলে এসেছে আবার।আগের মতো আর খোকনদার মায়ের আওয়াজ শোনা যায় না।বড়ুই পরার টুপ টুপ শব্দ ও আর আসে না।বাড়িতে আর খোকদার মা বিচার দিতে আসে না।খোকনদার বাবা গেল। গাছটার ও একই দশা হলো।
খুব ভালো লিখেছেন