“রূপকথার গল্পে আমি”-১১

0

(১১)

আমার পড়ালেখা এখন থেকে কুলাউড়াতেই হবে। এই অধিকারটুকু অনেক চেষ্টার ফলে আদায় করে নিয়েছেন খালামনি। মা রাজী হননি প্রথমে তার পরে ভাবলেন “বোনের কোন মেয়ে নেই এমনিতে তার অনেক কষ্ট আর সারা জীবনের জন্য তো মেয়েকে দিয়ে দেবো না। মাত্র ক’বছর ওখানে থেকে পড়াশোনা করবে”। এসব ভেবে মা রাজী না হয়ে পারলেন না।

তো টিক হয়ে গেল, কুলাউড়াতেই খালার বাসার পাশে একটা কলেজ আছে ওইখানেই ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হবে। একদিন খালু এসে নিয়ে গেলেন এবং কলেজে ভর্তি করিয়ে দিলেন। কলেজে যাচ্ছি। নিয়মিত ক্লাস করছি।

একদিন নোটিশ দেয়া হল পূজার জন্য দশদিন কলেজ বন্ধ থাকবে। এই সুযোগে বাড়ীতে চলে আসি। এই প্রথম বাড়ী ছেড়ে এতদিন অন্য কোথাও থাকছি। প্রথম প্রথম খুব খারাপ লাগছিল।

বাড়িতে এসে কয়েক দিন হাসি-খুশিতে কাটাই। জবার সাথে এই ক’দিনের কুলাউড়ার কলেজের গল্প হলো। অনেকদিন পর বাড়িতে এসেছি আবার চলে যাব, আর কবে আসবো না আসবো তার ঠিক নেই, তাই বান্ধবি সবাই কে বাসায় আড্ডায় আমন্ত্রন করেছি।

তারা বেশ কয়েকজন এসেছে সাথে নিহাও আসছে। বেশ জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিলাম এক সময় কথার ফাঁকে নিহা বলল-শুনেছিস অধরা অনিক ভাইয়া অস্ট্রেলিয়া চলে গেছেন।

হঠাৎ একথা শুনে চমকে উঠি, পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম- যাবেনই তো! এ রকম সুযোগ কেউ হাত ছাড়া করে?

নিহা বললো- হ্যাঁ তুই টিক বলেছিস, ভিসা পেয়ে আর বেশ দেরি করেন নি।

এরপর আমার মন খারাপ হয়ে যায় আড্ডা তেমন আর জমে উঠেনি। কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে সবাই বিদায় নিয়ে চলে যায়।

উদাসীন হয়ে সারা বিকেল ধরে বসে ভাবছি- যাবার আগে একবার যদি অনিক আমার সাথে দেখা করতেন ভালো হত। সেই সেদিন সকালে দেখা হয়েছিল, অনেক কথা হয়েছিল। তারপর…… কতদিন, কত মাস, কত বছর যে কেটে যাবে দেখা হবে না, কথা হবেনা ভাবতে খুব কষ্ট লাগছে।

নিরুৎসাহ, অবহেলায় কদিন কাটিয়ে কূলাউড়ায় চলে যাই। কলেজে যাওয়া-আসা পড়ালেখা করা অবসর অবহেলায় বিকেল কাটানো। এইতো প্রতিদিনের বাঁধা কাজে জীবন একরকম চলে যাচ্ছে। কোন কোন অবকাশে চঞ্চল হাওয়া এসে মনের ভিতরটা যে একটু এলোমেলো করে যেত না তা বলতে পারিনা। আর সেই চঞ্চল হাওয়ায় আমার সেই চির চেনা হাওয়ার বিচরণ! চির পরিচিত সেই সকাল বেলার হাওয়া…!


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Sumana Begum

Author: Sumana Begum

আমি সুমানা বেগম। সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার একটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করি। আমার বাবার নাম হাজী মো. আতাউর রহমান এবং মায়ের নাম তায়্যিবা খানম। তারা কেউ বেঁচে নেই। আমি তাদের সব ছোট মেয়ে। বিয়ানী বাজার সরকারি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন করেছি এবং সিলেট এম. সি. কলেজ থেকে মাষ্টার্স। আমার স্বপ্ন ছিল চাকরি করব। কিন্তু চাকরির ক্ষেত্রে তেমন উন্নতি করতে পারিনি। তবে আমার আশা পূরণ হয়েছে আমি কিছু দিন শিক্ষকতা পেশায় কাজ করতে পেরেছি। আমি বিবাহিত এবং আমার একটি আট বছরের মেয়ে আছে নাম মাহনূর জান্নাত।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

গল্প সিয়ামের স্বপ্ন আফছানা খানম অথৈ

গল্প সিয়ামের স্বপ্ন আফছানা খানম অথৈ দশ বছরের সিয়াম কমলাপুর রেল ষ্টেশন এ থাকে।তার ঘরে খুব অশান্তি। এক মুহুর্তের জন্য

গল্পঃ অনুপমার চোখে ২

গল্পঃ অনুপমার চোখে লেখকঃ বকুল রায়  #Part_02 অনুপমাকে ভালোবেসে ফেলেছি, এটা নিজেকে স্বীকার করলেও তাকে বলার সাহস তখনও হয়নি। কারণ

গল্পঃ অনুপমার চোখে ১

গল্পঃ অনুপমার চোখে লেখকঃ বকুল রায় Part 01 ঢাকার ব্যস্ত সড়কগুলো আমার কাছে সবসময় যেন এক রঙিন ক্যানভাস। ছোটবেলা থেকে

গল্প সুদ আফছানা খানম অথৈ

গল্প সুদ আফছানা খানম অথৈ এক ব্যবসায়ী বিপদে পড়ে এক ইহুদীর কাছ থেকে সুদের উপর কিছু টাকা কর্জ নিলেন।কথা ছিল

One Reply to ““রূপকথার গল্পে আমি”-১১”

Leave a Reply