(১৬)
আমি-রাহি মিলে একটার পর একটা দুষ্টামী করে যাচ্ছি। দিনগুলো খুব ই ইনজয় করতেছি। রাহি খুব সাহসী একটা ছেলে। ছুটির দিন শরণ তার রুমে ঘুমিয়ে আছে। দুপুরের দিকে রাহি একটা খামের উপরে শরণের নাম লিখে বেশ কটা তেলাপুকা ধরে খামের মধ্যে ঢুকিয়ে শরণের রুমের জানালা দিয়ে চুপি চুপি টেবিলের উপর রেখে চলে আসে। শরণ ঘুম থেকে উঠে তার নাম লিখা দেখে খাম খুলে, তখনি তেলাপুকা ওর হাতে শার্টে লাফাতে থাকে সাথে সাথে সেও লাফাতে শুরু করে। আমি আর রাহি বাগানে লুকিয়ে এ দৃশ্য দেখে যা আনন্দ পেয়েছিলাম। আরেকদিন একটা কৌটা টেবিলের উপর রেখে পাশে লুকিয়ে থাকি। শরণ এসে কৌটার ঢাকনা খুলতেই একটা মেয়ে পুতুল স্প্রিং করে লাফ দিয়ে ওর নাকের ডগায় স্পর্শ করে। প্রথমে শরণ কেঁপে ওঠে পরে মজার ব্যাপার দেখে হো-হো-হো করে হাসতে শুরু করে। এই রকম আরো অনেক মজার মজার ঘটনা ঘটাতে থাকি আর শরণ এসে আমাকে বলতে থাকে। খুব সাবধানে কথা বলি যাতে ধরা না পড়ি।
- একদিন রাত দ্বিপ্রহরে শরণ জানালা খুলে বসে খুব ঝুঁকে একটা উপন্যাস পড়ছিল। তখন গ্রীষ্ম- কাল। গাছ গাছালির মৃদু বাতাসে মন জুড়িয়ে যায়। এত মনোযোগ দিয়ে বই পড়ছিল, বাইরের কথা সে ভুলেই গেছে। আর তখনি আমি আর রাহি মিলে কালো দুটি ক্যাপে সারা মুখ মাথা ডেকে শুধু চোখ দুটো খোলা রেখে জানালার সামনে ধড়াক করে এসে ভূতের মত লাফালাফি করে চিৎকার দিয়ে দুজন আড়ালে পালিয়ে যাই। শরণ লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে ভ্যাবাচেকা খেয়ে বিছানায় গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এর পরে সে এক সপ্তাহ জ্বরে পড়ে বিছানায় ছিল। তার অসুস্থতা দেখে মায়া হয়। এরপর থেকে দুষ্টামী করা ছেড়ে দিয়েছি।
এরই মধ্যে শুরু হয় গ্রীষ্মকালীন ছুটি। লম্বা ছুটি পেয়ে চলে আসি নিজ বাড়ি মুরাদ গঞ্জ। দুচারদিন কেটে যায় পরিবারের সদস্যদের সাথে গল্পগুজব করে। আমার বাড়িতে আসার বিশেষ একটা উদ্দেশ্য ছিল আর সেটা হচ্ছে বড় ভাইয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। আত্মীয় স্বজনকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে। আমার বান্ধবিদেরকে ও দাওয়াত করি অনেকে আসে ফুর্তি-আমোদ করে। বিয়ে সম্পন্ন হলে কিছুদিন থেকে আবার চলে যাই পড়ালেখার জগতে।

ভালো লিখেছেন কবি