হযরত আলী (রা.) জীবনী

হযরত আলী (রা.) এর জীবনী

1

হযরত আলী (রা.) হচ্ছেন ইসলামি খিলাফতের চতুর্থ খলিফা। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পর ইসলামে সবচেয়ে বেশী স্বীকৃত ব্যক্তি হচ্ছেন হযরত আলী (রা.)। যাকে শিয়া সুন্নিসহ অধিকাংশ মুসলমানই ভক্তিভরে ভালোবাসে। যাঁর জীবনে রয়েছে অনেক চড়াই উতরাইসহ অসংখ্য বীরত্বের ইতিহাস। সেই বীরত্বগাঁথা বলতে গেলে, সময় শেষ হয়ে যাবে তবে তাঁর গৌরবের ইতিহাস শেষ হবেনা। তাঁর সেই বীরোচিত জীবনের কিছু চুম্বক অংশ আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

আলী (রা.) এর জন্ম

হযরত আলী (রা.) মক্কার সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশে আনুমানিক ৬০১ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। কুরাইশ বংশের দ্বায়িত্ব ছিল পবিত্র কাবা ঘরের রক্ষণাবেক্ষণ করা। এই বংশের একটি শাখা গোত্র হচ্ছে হাশেমি। হযরত আলী (রা.) এর মাতা ও পিতা উভয়েই ছিলেন হাশেমি বংশের। আলী (রা.) এর দাদাসহ তাদের বংশের কিছু সদস্য হানিফ তথা একেশ্বরবাদী ছিলেন। তাঁর পিতার হচ্ছে  আবু তালিব ইবনে আবদুল মুত্তালিব এবং মাতা হচ্ছেন ফাতিমা বিনতে আসাদ।

হযরত আলী (রা.) জন্মের ইতিহাস খুবই অলৌকিক! রজবের ১৩ তারিখ শুক্রবার। আলী (রা.) এর মাতা ফাতেমা বিনতে আসাদ তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করলে, তিনি  কাবা প্রান্তে প্রবেশ করলেন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, “হে আমাদের রক্ষক, আমার যন্ত্রণা কমিয়ে দিন।”

তাঁর আর্তির সাথে সাথেই হঠাৎ কাবার প্রাচীর খুলে যায় এবং তিনি এক বিভোর জগৎতে প্রবেশ করেন। তিনি অনুভব করলেন তাঁকে কোনো এক অদৃশ্য শক্তি  কাবার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়ে দিলেন। এবং সাথে সাথেই  কাবার প্রাচীর বন্ধ হয়ে গেল।

এই অলৌকিক প্রহরের  কিছু সময়ের মধ্যেই হযরত আলী (রা.) পবিত্র কাবার অভ্যন্তরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোট্ট নবজাতক হযরত আলী তাঁর মায়ের সাথে তিন দিন কাবার অভ্যন্তরে অবস্থান করেছিলেন। তিন দিন পর তিনি দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসলে তিনি  দেখতে পেলেন, মুহাম্মদ (সা.) তাঁর জন্য  বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। হযরত আলীঃ যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখন মুহাম্মদ (সা.) তাঁর নাম দিয়েছিলেন “আলী”, যার অর্থ “উন্নতমান।”

আলী (রা.) এর স্ত্রীদের নাম

হযরত আলী (রা.) সর্বপ্রথম রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কন্যা হযরত ফাতেমা (রা.) কে বিবাহ করেন। তাঁর জীবদ্দশায় তিনি কোনো বিবাহ করেননি। তাঁর মৃত্যুর পরবর্তীতে আলী (রা.) বাকি বিবাহ গুলো করেছিলেন ঐতিহাসিকদের বিভিন্ন বর্ণনায় হযরত আলী (রা.) এর ৭ জন স্ত্রীর নাম পাওয়া যায়। তারা হলেন,

  • ফাতিমা বিনতে মুহাম্মদ
  • উমামা বিনতে জয়নব
  • উম্মুল বনিন
  • লায়লা বিনতে মাসঊদ
  • আসমা বিনতে উমাইস
  • খাওলা বিনতে জাফর
  • আস-সাহবা বিনতে রাবিয়া

হযরত আলী (রা.) এর বিবাহ

আমরা সকলেই জানি হযরত আলী (রা.) সাথেই ফাতেমা (রা.) বিবাহ হয়েছিল। কিন্তু আলী (রা.) এর সাথে বিবাহের আগেও ফাতেমা (রা.) এর জন্য অনেক পাত্রই রাসুলুল্লাহ (সা.) কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন। যেসব পাত্রের মধ্যে হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর (রা.) ও ছিলেন।

কিন্তু এই পাত্রসহ অন্যান্য সকল পাত্রকেই রাসুলুল্লাহ (সা.) ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আল্লাহর অহির অপেক্ষায়। যখন এই বিশিষ্ট সাহাবীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে, তখনই তাঁরা বুঝতে পারলেন, আলী (রা.) ছাড়া আর কেউই ফাতেমা (রা.) কে বিবাহ করতে পারে না। কেননা তাঁদের মধ্যে আলীই (রা.) ছিলেন সর্বোত্তম ব্যক্তি যে ফাতেমা (রা.) এর জন্য যোগ্য।

হযরত আলী (রা.) ও ফাতেমা (রা.) এর বিবাহ নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিকগণ চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন। আমরা কয়েকজন ঐতিহাসিকের বক্তব্য এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

ইমাম আহমদ (রহ.) সুফিয়ানের (রহ.) এর বরাত দিয়ে হযরত  আলী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) এর মেয়েকে বিয়ে করার জন্যে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়ার মনস্থির করলাম। কিন্তু মনে মনে চিন্তা করলাম, আমার তো কোন অর্থ-সম্পদ নেই! এই ভেবে কিছুদিন দমে গেলাম। পরবর্তীতে পুনরায় সংকল্প করলাম।

এবং সাহস করে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর নিকট সরাসরি প্রস্তাব দিলাম। রাসুলুল্লাহ (সা.)  আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কাছে কোনো অর্থ-সম্পদ আছে কি? আমি বললাম, না নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি তোমাকে ঐ দিন যে খিতমী বর্মটি দিয়েছিলাম তা কোথায়? আমি বললাম, সেটা তো আমার কাছেই আছে। তিনি বললেন, সেটা আমার নিকট নিয়ে এসো। এরপর আমি সেই বর্মটি রাসুলুল্লাহ (সা.)  এর নিকট পৌঁছে দিলাম। ইমাম আহমদ তাঁর ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে ঘটনাটি এভাবেই বর্ণনা করেছেন। তবে এই সনদের মধ্যে একজন অজ্ঞাত পরিচয় বর্ণনাকারী রয়েছেন।

ইমাম বায়হাকী তাঁর ‘দালাইল গ্রন্থে আবু আবদুল্লাহ হাফিয (রহ.) মাধ্যমে আলী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, হযরত আলী (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে ফাতিমা (রা.) এর বিবাহের প্রস্তাব আসে। তখন আমার এক দাসী আমাকে জানাল, আপনি কি জানেন রাসুলুল্লাহর (সা.) কাছে ফাতিমার বিবাহের জন্য প্রস্তাব এসেছে?

আমি বললাম, তা তো জানি না। দাসী বলল, তার বিয়ের জন্য প্রস্তাব আসছে। আপনি কেন রাসুলুল্লাহ (সা.) এর নিকট প্রস্তাব নিয়ে যাচ্ছেন না? আপনি গেলে তো তিনি আপনার সাথেই ফাতিমাকে বিবাহ দিতে পারেন। আমি বললাম, আমার কাছে তো কিছুই নেই, যা দিয়ে আমি বিবাহ করতে পারি। দাসী বললো, আপনি গেলেই রাসুলুল্লাহ (সা.) আপনার সাথে তাঁকে বিবাহ দিবেন। হযরত আলী (রা.) বলেন, দাসীর বারংবার অনুরোধে শেষপর্যন্ত আমি রাসুলুল্লাহ (সা) এর নিকট গেলাম।

কিন্তু যখনই তাঁর সম্মুখে গিয়ে বসলাম, তখনই আমি নির্বাক হয়ে গেলাম। আল্লাহর কসম! তাঁর প্রভাব ও ভয়ে আমি কোনো কথাই বলতে পারলাম না। রাসুলুল্লাহ (সা.) তখন আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কেন এসেছ? তোমার কোনো প্রয়োজন আছে কি? আমি মৌন হয়ে বসে থাকলাম। এরপর তিনি বললেন, সম্ভবত তুমি ফাতিমার বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এসেছ! আমি বললাম, জী হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার কাছে কোনো কিছু আছে কি?  যা মহরানা হিসেবে দিয়ে তাকে হালাল করে নেবে?

আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ, আল্লাহর কসম! আমার কাছে তো সে রকম কিছুই নেই। রাসুলুল্লাহ (সা) বললেন, যুদ্ধান্ত্র হিসেবে তোমাকে আমি যে বর্মটি দিয়েছিলাম, তা কী করেছ? কসম আল্লাহর! সেই খিতামী বর্মটির দাম হবে চার দিরহাম মাত্র! আমি বললাম, সে বর্মটি আমার নিকট আছে। এরপর রাসুলুল্লাহ (সা.) ফাতিমাকে আমার সাথে বিবাহ দিলেন। এবং বললেন, বর্মটি তার নিকট পাঠিয়ে দাও। এতে সে তোমার জন্যে হালাল হয়ে যাবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর মেয়ে ফাতিমা (রা.) বিবাহের এটাই ছিল দেনমহর।

ইমাম আবু দাউদ কাহীর ইবনে উবায়দ হিমসে সূত্রে জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণনা করেন যে, হযরত আলীর (রা.) সাথে ফাতিমা (রা.) এর বিবাহ হয়ে যাওয়ার পর হযরত আলী (রা.) তাকে বাসর ঘরে নিয়ে আসার মনস্থ করেন। কিন্তু ফাতিমা (রা.) কে কিছু না দেয়া (মহর) পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.) তা করতে নিষেধ করেন। তখন আলী (রা.) বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমার কাছে তো তেমন কিছুই নেই যা দিতে পারি। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার বর্মটি দিয়ে দাও। এরপর আলী (রা.) তাঁর বর্মটি ফাতিমাকে প্ৰদান করার পর বাসর ঘরে যান।

অপর ঐতিহাসিক আবু দাউদ ইসহাক ইবনে ইসমাঈল সূত্রে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, হযরত ফাতিমার (রা.) সাথে আলী (রা.) এর বিবাহ হয়ে গেলে রাসুলুল্লাহ (সা.)বললেন, ফাতিমাকে (মহর হিসেবে) কিছু দাও! আলী (রা.) বললেন, আমার কাছে তো দেয়ার মত কিছুই নেই। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, তোমার খিতমি বর্মটি কোথায়? এ হাদিসটি ইমাম নাসাঈ হারূন, ইবনে ইসহাক সূত্ৰে আইয়ুব সাখতিয়ানী থেকে অনুরূপভাবে বর্ণনা করেছেন।

বায়হাকী আতা ইবনে সাইব সূত্রে আলী থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ফাতিমা (রা.) কে বিবাহ শেষে বিদায়কালে উপহার  হিসেবে একটি পশমী চাদর, একটি পানির মশক ও ইজখির ঘাসপূর্ণ একটি চামড়ার বালিশ প্ৰদান করেন। ইমাম বায়হাকী আবু আবদুল্লাহ ইবনে মানদা লিখিত কিতাবুল “মাআরিফা” বরাত দিয়ে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত আলী (রা.) ফাতিমাকে বিবাহ করেন হিজরী প্রথম সালের পর এবং ঘরে তুলে আনেন তার পরবর্তী বছর।

হযরত আলী (রা.) এর মৃত্যু

রাসুলুল্লাহ (সা.) পরবর্তী ইসলামি সাম্রাজ্য,  প্রথম দুই খলিফা আবু বকর ও উমর (রা.) ঠিকমতো পরিচালনা করতে পারলেও, তৃতীয় খলিফা উসমান (রা.) এর শাসনামলের শেষ সময়ে তুমুল বিভাজন সৃষ্টি হয়। যে বিভাজনের খড়কতলে উসমান (রা.) কে হত্যা করে শহীদ করা হয়। যে ইস্যু নিয়ে হযরত উসমান (রা.) কে হত্যা করা হয়, সেই ইস্যু কিছুতেই মীমাংসা হচ্ছিল না। যেকারণে মুসলিম সাম্রাজ্য বিভিন্ন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।

তৎকালীন সময়ে উসমান (রা.) এর মৃত্যুর পর অধিকাংশ মুসলিম উম্মাহ চাইছিল হযরত আলী (রা.) তাদের খলিফা হোক। তবে বিশিষ্ট কয়েকজন সাহাবা চাইছিলেন খলিফা নির্বাচনে একটি প্যানেল হোক। কিন্তু আলী (রা.) দেখতে পেলেন পরিস্থিতি খুবই জটিল পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। মুসলিম বিদ্রোহীরাসহ ইসলামের অন্যান্য শত্রুরাও ওৎ পেতে ছিলো সুযোগের। যেকারণে হযরত আলী সকলের চাপে খিলাফতের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন।

অধিকাংশ ইসলামি সাম্রাজ্য তাঁর কাছে বাইয়াত নিয়ে তাকে মেনে নিলেও, হযরত মুয়াবিয়া তাঁর প্রতি আনুগত্য স্বীকারে অস্বীকৃতি জানান। তার কারণ, তিনি দাবি করেছিলেন, হযরত উসমান (রা.) এর হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো বাইয়াত নয়।

হযরত আলীর (রা.) বিরোধীরা ও মুয়াবিয়ার সমর্থকরা উসমানের হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে অনড় থাকে। ফলে ৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দে একটি গৃহযুদ্ধ হয়। যার নাম উষ্ট্রের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে মুহাম্মাদ (সা.) এর স্ত্রী  হযরত মা আয়শা (রা.) এবং অন্যান্য সাহাবাদের বিরুদ্ধে আলী (রা.) অস্ত্র ধরতে বাধ্য হন। এবং যুদ্ধে তাদের পরাজিত করেন। এর পরবর্তীতে মুনাফিক ইহুদী ইবনে সাবার কৌশলে ৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দে হযরত আলী (রা.) ও মুয়াবিয়া (রা.) আরেকটি যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। যার নাম সিফফিনের যুদ্ধে।

সিফফিনের যুদ্ধে (৬৫৭) হযরত আলী (রা.)  মুয়াবিয়া (রা.) এর সাথে আমর ইবনে আস (রা.) এর মাধ্যমে আপোষ করতে রাজী হলে তার দলের কিছু সৈন্য তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। পরবর্তীতে তারা খারেজি (যারা আলী (রা.) কে ত্যাগ করেছিল) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তারা হযরত আলীর (রা.) কিছু সমর্থককে হত্যা করে, তবে ৬৫৮ খ্রিষ্টাব্দের জুলাইয়ে সংগঠিত নাহরাওয়ান যুদ্ধে আলীর সৈন্যরা তাদের পরাজিত করে শেষ করে দেয়।

এমতাবস্থায় এই খারেজিরা আলী মুয়াবিয়া এবং আমর ইবনে আস (রা.) কে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। তার কারণ তাদের ধারণা  মুসলমানদের দুর্দশার জন্য এই তিনজনই দায়ী। সুতরাং তাদের মৃত্যু হলে সব ঠিক হয়ে যাবে। একইসাথে নাহরাওয়ান যুদ্ধে তাদের সঙ্গীদের মৃত্যুর প্রতিশোধও নেওয়া হবে।

তারই পরিকল্পনা মোতাবেক  আবদুর রহমান ইবনে মুলযান নামে একজন খারেজিকে নিয়োগ করা হয় আলী (রা.) কে হত্যা করার জন্য। সময়টি ছিলো ৬৬১ সালের ২৬ জানুয়ারী। যখন হযরত আলী (রা.) সালাতরত অবস্থায় সূরা আল আনবিয়া পড়া শেষ করলেন, কিংবা  যখন তিনি ঐদিন ফজরের সময় মসজিদে প্রবেশ করছিলেন। ঠিক তখন ইবনে মুলজিম বিষ মিশ্রিত তলোয়ার দিয়ে হযরত আলী (রা.) এর মাথায় আঘাত করেছিল। তখন হিজরির ৪০ সালের ২১ কিংবা ১৯ রমজান ছিলো। এই আঘাতের দুইদিন পর আলী (রা.) শাহাদাত বরণ করেন।

হযরত আলী (রা.) এর জীবনী নিয়ে  বই

  • গল্পে হযরত আলী (রা.), ইকবাল কবীর মোহন
  • হযরত আলী (রা.), মাওলানা নূরুর রহমান
  • হযরত আলী রা., মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মুনশাবি
  • মুসলিম জাহানের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী রা. – চতুর্থ খলিফা হযরত আলী রা., মাওলানা লুৎফুর রহমান
  • হযরত আলী (রা.), আবুল ফজল
  • হযরত আলী (রা.), আমিন আল আসাদ
  • হযরত আলী (রা.), মাওলানা নুরুর রহমান
  • হযরত আলী (রা.), মাকতাবাতুল হিজায
  • হযরত আলী রাদিআল্লাহু আনহু, রূহানী শাইখ হযরত মাওলানা এমামুদ্দীন মোঃ ত্বহা
  • গল্পে গল্পে হযরত আলী (রা.), মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
  • হযরত আলী (রা.) এর জীবনী, রশিদ আহমেদ
  • শেরে খোদা হযরত আলী (রা.), মুহাম্মদ নূর উল্লাহ আযাদ (এম. এম)
  • হযরত আলী (রা.) এর ১০০ ঘটনা, মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
  • হযরত আলী (রা.) জীবন ও খিলাফত, সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ.
  • আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (রা.), মোহাম্মদ মঈনুল হাসান
  • হযরত আলী (রা.) এর ১০০ ঘটনাবলী, মুফতী রুহুল আমীন যশোরী
  • ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.), মাওলানা হাবিবুর রহমান এম.এ.
  • শেরে খোদা হযরত আলী (রা.) জীবনী, মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস শরিয়াতপুরী
  • হযরত আলী (রাদি আল্লাহ্‌ তা’য়ালা আনহু), ড. মুহাম্মদ আরিফুর রহমান
  • গল্পে গল্পে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুর ১০০ ঘটনা, মাওলানা মুহাম্মদ সিদ্দিক মিনশাবি
  • ইতিহাসের সোনালী পাতা থেকে হযরত আলী (রা.), মাওলানা ডক্টর শাহ্‌ মুহাম্মাদ আবদুর রাহীম
  • ছোটদের হযরত উসমান রা. ও হযরত আলী রা., নাফিস খান
  • আমিরুল মুমিনীন হযরত আলী ইবনে আবি তালিবের অনন্য বৈশিষ্ট্যাবলি, ইমাম আহমদ ইবনে শোয়াইব আন-নিসায়ী (রহ.)
  • হযরত আলী (রা.), মাওলানা মাজহার উদ্দিন
  • হযরত আলী (রা.), মোবারক করীম জওহর
  • হযরত আলী (রা.), মাওলানা মাজহার উদ্দিন
  • ছোটদের শেরে খোদা হযরত আলী (রা.), মাওলানা খান মোঃ এম.এ সাইফুল ইসলাম যুক্তিবাদী চাঁদপুরী
  • ইসলামের চতুর্থ খলিফা হযরত আলী (রা.), মাওলানা কাতেব আহমদ ছৈয়দ কাওছার এম এম
  • হজরত আলী (রা.), আবদুল হালিম খান

হযরত আলী (রা.) এর কবর

হযরত আলী (রা.) এর দাফন কীভাবে,  কখন এবং কোথায় হয়েছে, এটা নিয়ে অসংখ্য মিথ চালু আছে। কেননা হযরত আলী (রা.) এর বন্ধু কিংবা শুভাকাঙ্ক্ষী যেমন ছিলো। তেমননি শত্রু সংখ্যাও ছিলো প্রচুর। বিশেষকরে খারেজিদের সাথে নাহরাওয়ান যুদ্ধের পরে তাঁর সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে যায় খারেজিরা। তারা আলী (রা.) কে কাফির ঘোষণা করে (নাঊজুবিল্লাহ)।

যেকারণে তারা যেকোনো মূল্য তাঁর ধ্বংস অনিবার্য করতে উঠেপড়ে লেগেছিলো। এবং তারা সফলও হয় আলী (রা.) কে হত্যা করার মাধ্যমে। তারপরও তাদের লক্ষ্য ছিলো আলী (রা.) কে দুনিয়ায় অপমানিত করা। যেহেতু তাঁর মৃত্যু হয়ে গেছে, সেহেতু তাঁর লাশকে অপমানিত করে হলেও তাদের ইচ্ছা পূরণ করতে বদ্ধপরিকর।

একারণে আলী (রা.) মৃত্যুর পর তাঁর লাশ দাফন নিয়ে যথেষ্ট গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়। এই লাশ দাফন সম্পর্কিত অনেক গুলো কথা শিয়া সুন্নি দুই আকিদাহর অনুসারীদের মাঝে চালু আছে।

একটি প্রসিদ্ধ কাহিনী হচ্ছে হযরত আলী (রা.) নাকি অছিয়ত করেছিলেন যে, উনার মৃত্যুর পর তাঁর লাশ যেন কোন উটের উপর রেখে দেওয়া হয়। যাতে সে উটটি যেখানে ইচ্ছা চলে যেতে পারে। তাই হযরত আলী (রা.) মৃত্যুর পর তার শরীর মোবারক একটি উটের উপর রেখে দেয়া হয় এবং সে উটটিকে ছেড়ে দেয়া হয়। এ বিষয়ে খারেজিদের মত হল সে লাশটি উটের পিট থেকে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।

অন্য আরেকটি বর্ণনায় শোনা যায়, যখন  হযরত আলীর শরীর মোবারক উটের উপর রেখে দিয়ে উট ছেড়ে দেওয়া হলে সেই উটটি আফগানিস্থান চলে আসল। এবং সেখানেই তাঁর মাজার স্থাপিত হল। অপর আরেকটি বর্ণনায় এসেছে সে উটিটি কোথায় চলে গেছে তার আর হদিস পাওয়া যায়নি।

খতীবে বাগদাদী আবু নুয়াইম ফযল ইবনে দুকাইন থেকে বর্ণনা করেন, হাসান (রা.) ও হুসাইন (রা.) আলী (রা.) এর লাশ কুফা থেকে স্থানান্তর করে পবিত্র মদীনায় নিয়ে যান এবং বাকী নামক কবরস্থানে ফাতিমা (রা.) এর কবরের পাশে দাফন করে।

আরেকটি কাহিনীতে এসেছে যে, পবিত্র মদীনায় নেওয়ার জন্যে আলী (রা.) এর  লাশ উটের পিঠে উঠানোর পর উটটি পথ হারিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়। তায় গোত্রের মধ্য দিয়ে উটি যাওয়ার সময় তারা উটের পিঠে মালামাল আছে মনে করে উটটি আটক করে।  কিন্তু তারা লক্ষ্য করলো উটের পিঠে রক্ষিত সিন্দুকের মধ্যে একজন অজ্ঞাত মানুষের লাশ৷ তখন তারা লাশসহ সিন্দুকটি মাটির নিচে পুতে রাখে।  ফলে কেউ জানতে পারলো না যে, আলী (রা.) এর কবর কোথায়৷ এ ঘটনাটিও খতীব বাগদাদী বর্ণনা করেছেন।

ইবনে কালবী বলেন, আলী (রা.) কে দাফন করার সময় হাসান, হুসাইন, ইবন হানাফিয়াহ, আবদুল্লাহ ইবন জাফর ও আহলে বাইতের সদস্যবর্গ উপস্থিত ছিলেন।  তাঁরা কুফায় উচ্চ ভূমিতে তাকে দাফন করেন৷ তবে কবরের কোনো চিহ্নই তাঁরা রাখেননি৷ খারিজিসহ অন্যান্য শত্রুর অনিষ্টের আশংকা থেকে রক্ষা করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ৭/৫৮৫-৮৬)

আরেকটি প্রসিদ্ধ মত হলো, ইমাম জাফর সাদিক এর সময়ের শেষ দিকে প্রায় শত বছর পর্যন্ত নবি পরিবার ছাড়া কেউই জানত না আলী (রা.) কে কোথায় দাফন করা হয়েছে। ২১ রমজানের ভোরে হাসান (রা.) জানাযার আকৃতিতে সাজিয়ে একটি খাটিয়া কিছু ব্যক্তির হাতে দেন মদীনায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। যাতে লোকজন মনে করে আলী (রা.) কে  মদিনায় দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

শুধু আলী (রা.) এর সন্তান ও কিছু সংখ্যক অনুসারী যারা তার দাফনে অংশগ্রহণ করেছেন তারা জানতেন তাকে কোথায় দাফন করা হয়েছে। বর্তমানে কুফার নিকটে নাজাফে যে স্থানে আলীর সমাধি রয়েছে সেখানে তারা গোপনে যিয়ারতে আসতেন। ইমাম জাফর সাদিক (রহ.) এর সময় যখন খারেজিরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং আলীর প্রতি অসম্মানের সম্ভাবনা রহিত হয় তখন  সাদিক (রহ.) তার এক সাহাবী সাফওয়ান (রহ.) কে সে স্থান চিহ্নিত করে গাছ লাগিয়ে দিতে বলেন। এরপর থেকে সবাই জানতে পারে ইমাম আলীর কবর সেখানে এবং তার ভক্ত ও অনুসারীরা তার কবর যিয়ারত করতে শুরু করে।

উপরোক্ত এইসব বিশ্বাসের কোন প্রমাণ বা ভিত্তি নেই৷ বরং বলা হয়ে থাকে যে, রাফিযিরা যে করবকে হযরত আলী (রা.) এর কবর মনে করে ভক্তি শ্রদ্ধা করে,  প্রকৃতপক্ষে এটা মুগিরা ইবন শুবা (রা.) এর কবর৷ যা খতিবে বাগদাদি হাফিজ আবু নুয়াইমের সুত্রে, আবু বকর তালিহী, মুহাম্মদ ইবন আবদুল্লাহ হাজরামী হাফিজ এর মধ্যমে তাঁর মাতার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, শিয়া সম্প্রদায় নাজাফে যে কবরটিকে আলী (রা.) এর কবর বলে শ্রদ্ধা করে, তারা যদি জানতো যে, প্রকৃতপক্ষে এটা কার কবর তাহলে এর উপর তারা পাথর নিক্ষেপ করতো। আসলে এটা মুগীরা ইবনে শুবা (রা.) এর কবর।

এ সকল বিভিন্ন কাহিনী শুধু মিথ্যাই নয়, বরং তা আলী (রা.), হাসান (রা.), হুসাইন (রা.) ও আলীর পরিবারের সকলের জন্যই চরম অবমাননাকর। মুসলমানের মৃত্যুর পর তার লাশ দাফন করা জীবিতদের উপর ফরয। এ ফরয দায়িত্ব কোনো সাধারণ মুসলমানও অবহেলা করতে পারে না। অথচ এই জাতীয় চরম অবহেলার কথাই বিভিন্ন কাহিনীতে ফুটে উঠেছে।

যেখানে আলী (রা.) পরিবার তাঁর পবিত্র লাশ উটের পিঠে ছেড়ে দিয়েছেন! এইজাতীয়  কান্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা মুর্খ ছাড়া কেউই বিশ্বাস করতে পারে না। যেকোনো সন্তানই চাইবে তাঁর পিতার লাশ ভালো জায়গায় কবরস্থ হোক। যাতে সে ও তার বংশধরেরা  তা যিয়ারত করতে পারে। কিন্তু শিয়ারা যেসব কাহিনী প্রচার করে মুসলিম দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছে, তা তাদের কুরআন সুন্নাহর পরিত্যাগেরই পরিচয় দেয়।

যেকারণে তারা অতিভক্তির অন্ধকারে থেকে মুসলিম জাহানের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে এইসব বাতিল ও শরিয়ত বিরুদ্ধ কথা প্রচার করতে পেরেছে। আর সবাই শিয়াদের বিভিন্ন ব্যাখ্যা বিশ্বাস করে নিয়েছে। যেমন ভাবে কোটি কোটি শিয়া বিশ্বাস করে যে নাজাফের বর্তমান কবরটিই আলীর কবর!

এজন্য তারা নাজাফ শহরকে আখ্যায়িত করে ‘নাজাফ আল-আশরাফ’। মক্কা শরীফ, মদীনা শরীফ আর নাজাফ হচ্ছে আশরাফ। অর্থাৎ পবিত্র মক্কা, পবিত্র মদীনা ও মহা পবিত্র হচ্ছে নাজাফ!! (ইবনে তাইমিয়া, মাজমূ‘উ ফাতাওয়া ২৭/৪৪৬, ইবনে কাসীর, আল-বিদায়া ৭/৩৩০, মোল্লা কারী, আল-আসরার, পৃ. ২৮০)

অথচ প্রথম যুগ থেকেই প্রসিদ্ধ ছিলো যে, হিজরীর ৪০ সালে রমজান মাসের ২৩ তারিখে যখন আলী (রা.) কূফায় গুপ্তঘাতক খারিজীর দ্বারা শাহাদাত বরণের পরে, তাঁর বড় ছেলে হাসান ইবনে আলী (রা.) তাঁর জানাযার সালাত পড়ান। জানাযা শেষে কূফাতেই তাঁর বাড়ীর অভ্যন্তরে তাঁকে দাফন করা হয়। এবং এটাই সত্যিকারের মত যে, তাঁর দাফন তাঁর রাজপ্রাসাদেই হয়েছিল।

প্রশ্নোত্তর

হযরত আলী (রা.) কতজন স্ত্রী ছিল?

ঐতিহাসিকদের মতে হযরত আলী (রা.)  সাতজন কিংবা নয়জন স্ত্রী এবং বেশ কিছু উপপত্নী ছিলো। তাঁর সেই স্ত্রীদের থেকে চৌদ্দোটি ছেলে এবং  ও উনিশটি মেয়ের জন্ম হয়েছিল। তাদের মধ্যে হাসান, হুসাইন এবং মুহাম্মদ ইবনে আল হানাফিয়াহ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছিলেন।

আলী (রা.) এর মাতার নাম কি?

হযরত আলী (রা.) এর মাতার হচ্ছে  ফাতেমা বিনতে আসাদ। তাঁর হচ্ছেন আসাদ ইবনে হাশিম। তাঁর দাদা হচ্ছেন হাশিম ইবনে আবদ মানাফ এবং পরদাদা হচ্ছেন আবদ মানাফ ইবনে কুসাই। আলী (রা.) এর মাতা হচ্ছেন কুরাইশ গোত্রের হাশিমী শাখার কন্যা। তার দাদা হাশিম ইবনে আবদ মানাফ গিয়ে তার বংশধারা মুহাম্মাদ বংশধারার সাথে মিলিত হয়েছে। মুহাম্মাদ এর দাদা আবদুল মুত্তালিব ছিলেন তার শ্বশুর এবং চাচা।

হযরত আলী (রা.) এর রওজা কোথায়?

আমরা বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত থেকে জানতে পেরেছি আলী (রা.) এর কবর নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ, গুজব ও কথিত কাহিনী প্রচলিত আছে। তবে এটা সত্য হযরত আলী (রা.)এর করব বা রওজা শরীফের সত্যিকারের কোনো চিহ্ন নেই। তবে প্রসিদ্ধ মতে এটা ধারণা করা হয় কুফা শহরেই তাঁকে দাফন করা হয়েছিল। এটা সুন্নি অনুসারীদের প্রসিদ্ধ মতামত। তবে শিয়া অনুসারীরা তাঁর কবর নাজাফে দাবি করেন। যা তাঁর মৃত্যুর অনেক বছর পর আবিষ্কার করে প্রচারিত করে। আর এটাই এখন সবচেয়ে বেশী প্রসিদ্ধ তাঁর রওজা হিসাবে।

আলী (রা.) এর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দী কারা ছিল?

হযরত আলী (রা.) এর অনুসারীর অভাব ছিলো না। অধিকাংশ মুসলমানই (শিয়া সুন্নি) তাঁকে ভালোবাসত এবং শ্রদ্ধা করতো। কিন্তু রাসুল (সা.) পরবর্তীতে খিলাফত নিয়ে নানান ষড়যন্ত্র শুরু হয়। সেই ষড়যন্ত্র স্পষ্ট হয়ে উঠে উসমান (রা.) এর হত্যার পর। তৃতীয় খলিফা উসমানের শাহাদাতের পরই আলী (রা.) বিপক্ষে কয়েকটি শক্তি দাঁড়িয়ে যায়।

বিশেষ করে মুয়াবিয়া (রা.) তাঁর বিরুদ্ধে এককভাবে বিরোধীতা করা শুরু করেন। একইসাথে  মুয়াবিয়াকে সমর্থন করেন মা আয়িশা সিদ্দিকা (রা.), তালহা (রা.) সহ আরো কয়েকজন বিশিষ্ট সাহাবীরা। যারা উসমান (রা.) এর মৃত্যুুর পর প্যানেলের মাধ্যমে খলিফা নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন।

কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে এবং অধিকাংশ মানুষের চাপে হযরত আলী (রা.) খিলাফতের দায়িত্ব নিতে বাধ্য হন। যেকারণে বেশ কয়েকজন সাহাবীও তাঁর বিপক্ষে চলে যান। যারা পরবর্তীতে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দেখা যায়। তবে সবচেয়ে বেশী মাথা ব্যাথ্যার কারণ ছিলো খারেজিরা। যারা খুবই আক্রমনাত্মক পর্যায়ে তাঁর বিরোধিতা করেছিল। এদের কারণেই তাঁর দাফন পর্যন্ত লুকিয়ে করতে হয়েছিল।

তবে সবচেয়ে বেশী যে ব্যক্তি তাঁর ক্ষতি করেছে এবং  যার হিংসার কারণে ইসলামের ইতিহাস পর্যন্ত রক্তে রঞ্জিত হয়েছে, সে হচ্ছে মুয়াবিয়া। যিনি সরাসরি ক্ষমতার ভাগ না চাইলেও, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খিলাফতের লোভ করেছিলেন। যেকারণে উসমান (রা.) এর হত্যার বিচার চেয়ে তাঁর হাতে বাইয়াত হননি। আর এভাবেই তিনি তাঁর প্রকাশ্যে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিনত হন। এবং সুযোগ বুঝে ইসলামি শাসনের ক্ষমতাও নিয়ে নেন।

 

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম

 

আপনি আরো যা পড়তে পারেন-


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

1

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

Author: সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলাম লিখেছেন। প্রবাসের সেই চাকচিক্যের মায়া ত্যাগ করে মানুষের ভালোবাসার টানে দেশে এখন স্থায়ী বসবাস। বর্তমানে বেসরকারি চাকুরিজীবী। তাঁর ভালোলাগে বই পড়তে এবং পরিবারকে সময় দিতে।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

2 Replies to “হযরত আলী (রা.) এর জীবনী”

Leave a Reply