কসম

0

বিশ্বাস উঠে যাচ্ছে আমাদের সমাজ থেকে। মানুষ একে অপরকে বিশ্বাস করে না। একে অপরের কথাকে সহসায় মেনে নিতে চায় না। এ কারণে কথা বলার সময় অধিক হারে কসমের প্রচলন হয়ে গেছে। এমনকি আমাদের সমাজে কসম করেও মিথ্যা কথা বলার রীতিও কম নেই। তাইতো মানুষ অনেক কিছু দিয়ে অপরকে কসম করাতে বাধ্য করে, নয়তো কথাটি বিশ্বাসের পর্যায়ে পৌঁছে না। সমাজের অবিচ্ছেদ্য এক অংশে পরিণত হয়েছে কসম। তবে কসমের প্রবণতা আজকের যুগে নয় বরং পূর্ববর্তী যুগেও ছিল। স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নিজেও কুরআনে কসম করে কিছু কথার প্রতি জোর প্রদান করেছেন। [১]

 

কসম করা নাজায়েজ নয় তবে এই কসম এর ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব কর্তব্য। সাবধান ভাবে কসম করতে না পারলে নিজের ঈমান হারাতে হবে। আমাদের সমাজে অনেক কিছু নিয়ে কসমের প্রচলন চালু আছে। যেমন মৃত্যুর মাটি, পিতা-মাতা, কোরআন ইত্যাদি। মূমিন হিসেবে আমাদের এই সমস্ত কসম থেকে দূরে থাকা কর্তব্য। ইমানদার বান্দাগণ শুধুমাত্র আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কোন নামে কসম করতে পারবে না। আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য নামে কসম করলে শিরকের গুনাহ হবে এই মর্মে হাদিস পাওয়া যায়।

ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

مَنْ حَلَفَ بِغَيْرِ اللَّهِ فَقَدْ أَشْرَكَ

 

“যে ব্যক্তি আল্লাহ ব্যতীত অন্যের নামে কসম করল, সে শিরক করল”। [২]

 

শিরকের গুনাহ সবচাইতে বড় গুনাহ। এবং শিরক এক ধরনের জুলুম। আল্লাহ তায়ালা সব গুনাহ মাফ করলেও শিরকের গুনাহ মাফ করেন না। আর এই বর্ণনা করেছেন তিনি নিজেই। সুতরাং আমাদের কসম করার ক্ষেত্রে আল্লাহ ছাড়া অন্য সকল কিছুর নামে কসম করা বন্ধ করতে হবে। কসম করলে শুধুমাত্র বিশ্বজাহানের মালিকের নামে কসম করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সহীহ বুঝ দান করুন এবং তার উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমীন।

 

টীকা ও তথ্যসূত্রঃ

১. আল-কুরআনের বিভিন্ন জায়গায় আল্লাহ তা’লা কসম করেছেন। যেমন সূরা আসরে সময়ের কসম, সূরা সামসে একাধিক বিষয়ের কসম, সূরা বুরুজ ইত্যাদি।

২. আবু দাউদ; তিরমিযী, মিশকাত, হাদীস নং ৩৪১৯।

 

লেখক: ফারুক আব্দুল্লাহ

      তারিখ: ২৬-০৪-২০২৩


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

ফারুক আব্দুল্লাহ

Author: ফারুক আব্দুল্লাহ

শৈশব গ্রামে কাটলেও কৈশোরকাল থেকেই শহুরে জীবনে অভ্যস্ত। গাঁয়ের মক্তবেই মূলত পড়ালেখার হাতেখড়ি। দেশসেরা মাদরাসায় পড়ার সৌভাগ্যও হয়েছে। ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত একজন তরুণ। ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক কয়েকটি সংস্থায় কাজ করার পাশাপাশি লেখালেখিতে মনোযোগ দিয়েছি। আরব পূর্বযুগ থেকেই সাহিত্যে চির উন্নত। দেশে ইসলামী সাহিত্যের অবহেলিত করুণ অবস্থা দেখে বুক কষ্ট হয়। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে লিখছি ইসলামী আদর্শ পৌছেঁ দিবো প্রতিটি সেক্টরে। আমাদের সকল আয়োজন যেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয়। আমিন।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

হযরত আলী (রা:) এর জীবনী

হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি সাহস, জ্ঞান, ন্যায়বিচার এবং তাকওয়ার জন্য সুপরিচিত।

খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজের নসিহত : একটি চিরন্তন আদর্শ ও বর্তমান উম্মাহর বাস্তবতা

ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজ একটি যুদ্ধের প্রাক্কালে তার সেনাপতি মানসুর বিন গালিবের উদ্দেশ্যে একটি উপদেশপূর্ণ

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

Leave a Reply