ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) - লেখক ডট মি

আহমদ বিন হাম্বল রহ. সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা

2

আহমদ বিন হাম্বল রহ. সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা [১-২ একসাথে]

📗 প্রারম্ভিকতা

প্রথমেই বলে রাখি, আমি কখনোই কোনো ইমামের বিরুদ্ধে বেয়াদবির পক্ষে নই; কিন্তু কিছু ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের লোক ইমাম আহমদ বিন হাম্বলের বিভিন্ন ফালতু উক্তি সরবরাহ করে আমাদের মহান ইমাম- ইমামুল-আ’যম আবূ হানীফাহ রাহিমাহুল্লাহকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করায় লিপ্ত। কাজেই আমার জন্য ফরয হয়ে দাঁড়িয়েছে আহমদ বিন হাম্বল সম্পর্কে কিছু কথা বলা।

📗 আহমদ বিন হাম্বল মূলত ফকীহই ছিলেন না

তাঁকে সে যুগের ফকীহ ও ইতিহাসবিদগণ ফকীহ হিসেবে গণ্যই করতেন না। তাঁর ব্যাপারে এটা প্রসিদ্ধ যে- তিনি কেবল মুহাদ্দিস ছিলেন; ফক্বীহ নন। তাই তো ফিকহী ইখতিলাফের কিতাবাদি রচনার ক্ষেত্রে ফকীহগণ অন্যান্য ইমামদের মতামত উল্লেখ করলেও তাঁর মতামত উল্লেখ করতেন না। যেমন: ইমাম ইবনে জারীর আত-ত্বাবারী, ইমাম তাহাবী, ইমাম দাবূসী, ইমাম গাযালী, ইমাম নাসাফী রহ.- তাঁরা ইমামগণের ইখতেলাফ বিষয়ে নিজেদের রচিত গ্রন্থসমূহে তাঁর কোনো মতামত উল্লেখ করেননি। কারণ, তাঁর ফিকহী মতগুলো সে যুগে তেমন একটা গ্ৰহণযোগ্যতা পায়নি; তাছাড়া তার মতামতগুলোও ছিলো অপ্রতুল।

ইতিহাসের একাধিক গ্রন্থেই বর্ণিত আছে-

لم يعتبر ابن جرير الطبري في الخلافيات مذهب ابن حنبل، وكان يقول: إنما هو رجل حديث لا رجل فقه، وامتحن لذلك، وقد أهمل مذهبه كثير ممن صنفوا في الخلافيات، كالطحاوي، والدَّبّوسي، والنسفي في منظومته، والعلاء السمرقندي، والفراهي الحنفي في منظومته ذات العقدين، وكذلك أبو محمد عبد الله بن إبراهيم الأصيلي المالكي في كتابه «الدلائل»، والغزالي في «الوجيز»، وأبو البركات النسفي في «الوافي»، ولم يذكره ابن قتيبة في «المعارف»، وذكره المقدسي في «أحسن التقاسيم» في أصحاب الحديث فقط، مع ذكره داودَ الظاهريَّ في الفقهاء، كما لم يذكره ابن عبد البر في كتابه «الإنتقاء»

 

ইবনে জারীর তাবারী তাঁর ‘ইখতিলাফুল ফুক্বাহা’ বা ‘ফকীহগণের মতভেদ’ গ্ৰন্থে আহমদ বিন হাম্বল এর মাযহাবকে গণ্য করেননি। তিনি বলতেন- আহমদ বিন হাম্বল হাদিসের লোক (মুহাদ্দিস); ফিকহের লোক (ফকীহ) নন। চাইলে এ বিষয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে। আর যে সকল ইমামগণ ইখতিলাফী মাসআলা নিয়ে কিতাব রচনা করেছেন, তাদের অনেকের চোখেই তাঁর মাযহাব উপেক্ষিত হয়েছে। (অর্থাৎ তাঁরা আহমদ বিন হাম্বলের মাযহাবের প্রতি দৃষ্টিপাত করেননি/উপেক্ষা করেছেন)।

যেমন: ইমাম তাহাবী তাঁর ‘ইখতিলাফুল উলামা’ গ্ৰন্থে, ইমাম দাবূসী, ইমাম নাসাফী, ইমাম ‘আলা আস-সামারকান্দী, ইমাম ফারাহী রহ. নিজেদের গ্ৰন্থসমূহে; একইভাবে ইমাম আবু মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ বিন ইব্রাহিম আল আসীলী আল-মালেকী তাঁর ‘আদ-দালাইল’ গ্রন্থে, ইমাম গাযালী ‘আল-ওয়াজীয’ গ্ৰন্থে আবুল বারাকাত আন নাসাফী ‘আল ওয়াফী’ গ্ৰন্থে তাঁর কোনো ফিকহী মতামত উল্লেখ করেননি।

এবং ইবনে কুতায়বাহ রহ. ইমামগণের জীবনী গ্রন্থ ‘আল-মা’আরিফ’-এ তাঁকে উল্লেখই করেননি। আর ইমাম মাকদেসী তার ‘আহসানুত তাকাসীম’ গ্রন্থে তাঁকে কেবল মুহাদ্দিস হিসেবেই উল্লেখ করেছেন অথচ দাউদ জাহেরীকেও ফকীহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। একইভাবে ইমাম ইবনে আব্দুল বার্র রহ. তিন ইমামের ফযীলত ও জীবনী বিষয়ক গ্ৰন্থ ‘আল-ইনতিকা’তেও আহমদ বিন হাম্বল এর কোনো আলোচনাই করেননি। [আল-ফিকরুস সামি: ২/২৭]

আল-মাদারেক গ্ৰন্থে বর্ণিত আছে-

دون الإمامة في الفقه وجودة النظر في مأخذه عكس أستاذه الشافعي

আহমদ বিন হাম্বল ফিকহের ক্ষেত্রে ইমামতের নিচে (ইমাম নন)। উসূলের ক্ষেত্রে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি স্বীয় শিক্ষক শাফে’ঈর বিপরীত। [আল-ফিকরুস সামি: ২/২৭]

রাসুলের চোখে দুনিয়া- ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের লেখা বই- লেখক ডট মি
বিজ্ঞাপনঃ রাসূলের চোখে দুনিয়া by ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল (রহঃ)

📗 তিনি নিজেই নিজেকে ফক্বীহ মনে করতেন না।

তিনি ফক্বীহ ছিলেন না- এর পক্ষে নিচের ঘটনাটি সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ। কারণ, তাঁর কাছে কোনো ফিকহী মাসআলা আসলে তিনি ফকীহদেরকে জিজ্ঞেস করতে বলতেন; এর থেকেই বোঝা যায়- তিনি ফকীহ ছিলেন না।

أحْمَد بْن مُحَمَّد بْن خالد البراثي، قالَ: كنت عند أحْمَد بْن حَنْبَل، فسأله رَجُل عَن مسألة فِي الحلال والحرام، فَقالَ له أحْمَد: سل عافاك اللَّه غيرنا، قالَ: إنما نريد جوابك يا أبا عَبْد اللَّهِ، فَقالَ: سل عافاك اللَّه غيرنا، سل الفقهاء سل أبا ثور

ইমাম আহমাদ বিন মুহাম্মদ বিন খালেদ রহ. বলেন, একদিন আমি আহমদ বিন হাম্বল এর নিকট ছিলাম। এমতাবস্থায় তাঁকে এক ব্যক্তি হালাল-হারাম সংক্রান্ত একটি মাসআলা জিজ্ঞেস করলো, আহমদ বিন হাম্বল তাকে বললেন, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুক, তুমি এই মাসআলা আমি ব্যতীত অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করো। লোকটি বলল, হে আবু আব্দুল্লাহ, আমি আপনার থেকেই জবাব পেতে ইচ্ছুক। তখন আহমাদ বিন হাম্বল (আবারো) বললেন, আল্লাহ তোমাকে ক্ষমা করুক, তুমি এই মাসআলা আমি ব্যতীত অন্য কাউকে জিজ্ঞেস করো, ফকীহদেরকে জিজ্ঞেস করো বা ইমাম ও ফকীহ আবু সাওরকে জিজ্ঞেস করো। [তারীখে বাগদাদ: ৬/৬৬। তাহযীবুল কামাল: ২/৮৩। বাহরুদ-দাম: ২৩]

এ ঘটনা থেকে বোঝা যায়- তিনি ফকীহ ছিলেন না। কারণ, তিনি যদি ফকীহ হবেন; তাহলে ফকীহদেরকে জিজ্ঞেস করতে কেনো বলেছেন?

📗 ইবনে তায়মিয়্যাহ রহ. আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. এর বক্তব্য উদ্ধৃত করেন—

وَيَأْمُرُ الْعَامِّيَّ أَنْ يَسْتَفْتِيَ إسْحَاقَ وَأَبَا عُبَيْدٍ وَأَبَا ثَوْرٍ وَأَبَا مُصْعَبٍ.

আহমদ বিন হাম্বল সাধারণ লোকদেরকে ইসহাক, আবু উবাইদ, আবু সাওর ও আবু মুস‘আব প্রমুখ ইমামের তাক্বলীদ (অনুসরণ) করার নির্দেশ দিতেন। [মাজমূউল ফাতাওয়া: ২০/২২৬]

এ রেওয়ায়েত থেকেও বুঝা যায় তিনি ফকীহ ছিলেন না। তাই তো তিনি লোকদেরকে ফিকহী ক্ষেত্রে তাঁর অনুসরণ করতে নিষেধ করতেন। বরং ফিকহী ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষদেরকে তিনি সমকালীন অন্যান্য বড় বড় ফকীহদের অনুসরণ করতে বলতেন। কারণ তিনি জানতেন যে তিনি ফকীহ নন।

📗 ইমাম শাফে’ঈর দৃষ্টিতেও তিনি ফক্বীহ ছিলেন না

ইমাম শাফে’ঈ আহমদ বিন হাম্বলকে বলেন-

أنتم أعلم بالأخبار الصحاح منا فإذا كان خبر صحيح فأعلمني حتى أذهب إليه

সহীহ হাদীসের বিষয়ে আপনারা-মুহাদ্দিসগণ আমাদের-ফকীহগণের চেয়ে অধিক অভিজ্ঞ। যদি কোনো সহীহ হাদীস থাকে তবে আমাকে জানান, যেন আমি তা গ্রহণ করতে পারি। [তারীখে দিমাশক : ৫১/৩৮৫]

এখান থেকেও বোঝা যায়- ইমাম শাফে’ঈ তাকে কেবল মুহাদ্দিস মনে করতেন; ফক্বীহ নন। তাইতো তিনি ‘আমরা’ এবং ‘তোমরা’ বলে পার্থক্য তৈরি করেছেন।

📗 আহমদ বিন হাম্বলের অনুসারীর সংখ্যা সবচেয়ে কম এবং কারণ

ইবনে খালদুন (৮০৮ হিজরী) তাঁর ইতিহাস গ্রন্থে লিখেন

فأمّا أحمد بن حنبل فمقلّده قليل لبعد مذهبه عن الاجتهاد وأصالته في معاضدة الرّواية وللأخبار بعضها ببعض.

আহমদ বিন হাম্বলের মুকাল্লিদ (অনুসারী) অতি অল্প; কারণ, তাঁর মাযহাব ইজতিহাদ থেকে দূরে ছিলো (অর্থাৎ হাদীস নিয়ে তেমন একটা গবেষণা করা হতো না; বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে হাদীসের বাহ্যিক অর্থের উপর আমল করা হতো) এবং রেওয়ায়েত ও খবরসমূহের মধ্যে পরস্পর সামঞ্জস্য বিধান করার ক্ষেত্রেও তাঁর মাযহাব উসূল থেকে দূরে ছিলো। [তারীখে ইবনে খালদূন: ১/৫৬৬]

আমার একজন সম্মানিত উস্তাদ, প্রচণ্ড মেধাবী। তিনি একদিন কথায় কথায় আমাকে বললেন, (সারমর্ম) —আমি অনেক কঠিন কঠিন মাসআলার সমাধান খুঁজে থাকি। এক্ষেত্রে আমাকে অনেক কিতাবাদী ও মাসআলা অধ্যয়ন করতে হয়। আমি কিতাবাদী অধ্যয়ন করে অন্যান্য ইমামের বলা মাসআলার মধ্যে অসামান্য গভীরতা খুঁজে পেলেও আহমদ বিন হাম্বলের বলা মাসআলায় কোনো গভীরতা খুঁজে পাইনি। তাঁর কথাগুলো একদম সাদাসিধে ও গভীরতাশুন্য; ফিকহী মজা পাওয়া যায় না।

তিনি কথাগুলো বিদ্বেষবশত বলেননি, বরং বাস্তবতা থেকেই বলেছেন।

📗 পরস্পর বিরোধী মাসআলা

প্রায় মাসআলার ক্ষেত্রেই আহমদ বিন হাম্বল থেকে একাধিক ও ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়। এই ব্যাপারে দলীল দেওয়া জরুরী মনে করি না; যারা হাম্বলী মাযহাবের কিতাবাদী দেখেন তারা অবশ্যই বিষয়টি জানবেন‌।

আর এক মাসআলার ক্ষেত্রে দুই তিনটি মত থাকার মানে হচ্ছে- তিনি কখন কী বলতেন তার ঠিক ছিলো না! কখনো এটা বলতেন তো কখনো অন্যটা বলতেন; কারণ, মাসআলা বলার ক্ষেত্রে তাঁর বিশেষ কোনো উসূল ছিলো না।

এই ব্যাপারে সালাফী ঘরানারই এক ভাই লিখেছেন-

“ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল মুসলিম উম্মাহ্’র জন্য তেমন কোনো অবদান রাখেননি। উনি মূলত ওভাররেটেড (অযথাই অতিরিক্ত প্রশংসা করা হয়েছে- এমন)। তাঁর কোনো উসূলুল ফিক্বহের বই পাওয়া যায় না; একটা বিষয়ে উনার দুই তিনটা করে মত পাওয়া যায়। তাঁর মাযহাবটা আসলে মাযহাবই নয়৷”

📗 খোদ হাম্বলীদের কাছেও তাঁর মাযহাব প্রত্যাখ্যাত

সালাফীরা হাম্বলী মাযহাব অনুসরণের দাবি করে- অথচ খোদ সালাফীরাও হাম্বলী মাযহাবের শত শত মাসআলা প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিশিষ্ট সালাফী শায়খ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল উসায়মীন হাম্বলী মাযহাবের ‘যাদুল মুসতাকনি’ গ্রন্থের ভাষ্য ‘আশ শারহুল মুমতি’ গ্রন্থের শুধু পবিত্রতা অধ্যায়ে ৮৯টি মাসআলায় হাম্বলী মাযহাবের বিপরীত মত প্রকাশ করেছেন। শায়খের জীবদ্দশায় ৮ খণ্ডে প্রকাশিত উক্ত গ্রন্থে তিনি মোট ৯৫০টি মাসআলায় হাম্বলী মাযহাবের বিপরীত মত প্রকাশ করেছেন।

এটি কেবল সংক্ষিপ্ত একটি পরিসংখ্যান। বিস্তারিত খুঁজতে গেলে আরো অনেক মাসআলা বেরিয়ে আসবে।

📗 তিনি ছিলেন কিতাব রচনার ঘোর বিরোধী

قال ابن الجوزي: كان الإمام أحمد رضي الله عنه لا يرى وضع الكتب، وينهى أن يكتب عنه كلامه ومسائله

ইবনুল জাউযী রহ. বলেন, আহমদ বিন হাম্বল কিতাব রচনার পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনি তার বলা কথা ও মাসআলাসমূহ লিখে রাখতে নিষেধ করতেন। [মানাকিবে ইমাম আহমদ: ১/২৬১]

قال الإمام ابن القيم: كان الإمام أحمد رحمه الله شديد الكراهة لتصنيف الكتب، وكان يحب تجريد الحديث، ويكره أن يكتب كلامه ويشتد عليه جداً

ইমাম ইবনুল কাইয়িম রহ. বলেন- আহমদ বিন হাম্বল কিতাব রচনাকে কঠিনভাবে অপছন্দ করতেন। তিনি কেবল হাদীস লিখতে ভালোবাসতেন। এমনকি, তার কথাসমূহ লিখে রাখা হবে- তিনি তাও পছন্দ করতেন না; এ ব্যাপারে তিনি অত্যধিক কঠোর ছিলেন। [আল-ই’লাম: ১/২৩]

قال أبو داود: سمعتُ أحمد يقول: أنا أكره أن يكتب عني رأي

আবূ দাউদ রহ. বলেন- আমি আহমদ বিন হাম্বলকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমার থেকে কোনো কথা লিখে রাখা হোক- তা আমি পছন্দ করি না। [মাসাইলে আহমদ বিন হাম্বল: ১/৩৬৭]

যিনি ইলম লিখে রাখার বিরোধিতা করেন তিনি আবার কেমন ফকীহ! অথচ কিতাব লিখার ধারাটা সাহাবী যুগ থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিলো।

📗 তিনি ইমামগণের অনুসরণকে নিষেধ করতেন

তিনি বলতেন কোনো ইমামের অনুসরণ করা যাবে না; বরং ইমামরা যেখান থেকে গ্রহণ করেছে (জনসাধারণ) সবাইকে সেখান থেকেই গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ কোনো মাসআলার ক্ষেত্রে দলীল হিসেবে অমুক ইমাম বলেছে বা অমুক ইমামের এই মত- এভাবে বলা যাবে না; বরং ঐ ইমাম যে আয়াত বা হাদীস থেকে মাসআলা উদ্ভাবন করেছেন সরাসরি কুরআনের ঐ আয়াত বা হাদীস বলতে হবে। এক কথায় ইমামগণ যেভাবে সরাসরি কুরআন-হাদীস থেকে গ্রহণ মাসআলা গ্রহণ করে থাকেন; তাঁর মতে জনসাধারণকেও একইভাবে সরাসরি কুরআন-হাদীস থেকে গ্রহণ করতে হবে।

তিনি বলেন-

لا تقلدني ولا تقلد مالكا ولا الشافعي ولا الأوزاعي ولا الثوري، وخذ من حيث أخذوا

তোমরা না আমার অনুসরণ করো, না মালেকের। না শাফে’ঈর অনুসরণ করো, না আওযায়ীর, না সাওরীর। বরং তা গ্রহণ করো তারা যা/যেভাবে গ্রহণ করেছে। [আল-ই’লাম: ২/৩০২]

এটা যে কত বড় শিশুসূলভ কথা; তা লা-মাযহাবরাও ভালো বুঝবে। কারণ তারাও বিভিন্ন ইমামের উদ্ধৃতি দিয়ে থাকে। যেমন: ইবনে তাইমিয়া বলেছেন, ইবনুল কাইয়িম বলেছেন, ইমাম শাওকানী বলেছেন, বিন বায বলেছেন, ইবনে উসাইমীন বলেছেন, সালিহ আল মুনাজ্জিদ বলেছেন ইত্যাদি। এখন আহমদ বিন হাম্বলের উসূল অনুযায়ী এভাবে বলা যাবে না; বরং ঐ সমস্ত ইমামগণ যেখান থেকে গ্রহণ করেছেন সরাসরি সেটাই বলতে হবে; অর্থাৎ আয়াত ও হাদীস।

অথচ লা-মাযহাবদেদের কিতাবাদী বিভিন্ন ইমামেরদের উদ্ধৃতিতে ভরপুর। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, উলামায়ে সালাফের উদ্ধৃতি না দিয়ে বরং ওলামায়ে সালাফ যে আয়াত কিংবা হাদীস গ্রহণ করেছেন; সরাসরি সেখান থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া হয় না কেন?

যাইহোক, এখান থেকেও বোঝা যায় তার ফিকহী অবস্থান কেমন ছিল!

[কেউ যদি তার উক্ত বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক করতে চায়; তবে কেবল এই বিষয় নিয়েই আরেক পর্ব লেখা হবে ইনশাআল্লাহ]

📗 আহমদ বিন হাম্বলের ভ্রান্ত আকীদাহ

আহমদ বিন হাম্বল বিচ্ছিন্ন সনদে বলেন-

قال: «خلق الله عز وجل الملائكة من نور الذراعين والصدر»

আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদেরকে তাঁর দুই বাহু ও বুকের নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন। [কিতাবুস সুন্নাহ —আব্দুল্লাহ বিন আহমদ: ২/৪৭৫]

নাউজুবিল্লাহ! সরাসরি আল্লাহ তা‘আলার সত্তার মধ্যে শির্ক স্থাপন! আলবানী এই রেওয়াতকে ইসরাইলী রেওয়ায়াত বলেছে।

📗 আহমাদ বিন হাম্বল এর মতে সালাত তরক করার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড

قال الإمام أحمد بن حنبل: تارك الصلاة كافر كفراً مخرجاً من الملة، يقتل إذا لم يتب ويصل

আহমদ বিন হাম্বল বলেন- সালাত তরককারী ব্যক্তি মুসলিম মিল্লাত থেকে বহিষ্কার হয়ে যাওয়ার মত কাফির; সে তাওবা করে সালাত আদায় করা শুরু না করলে তাকে হত্যা করা হবে। [হুকমু তারিকিস সালাহ: ১/৪]

কুরআন ও সহীহ হাদীসে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ আছে? কোনো ফকীহ এমন সস্তা কথা বলতে পারেন না। এখান থেকেও বোঝা যায়- তাঁর ফিকহী গভীরতা কতটা নিম্নমানের।

অতএব এমন গায়রে ফক্বীহ ব্যক্তি আমাদের মহান ইমাম আবূ হানীফাহ রহ.-কে নিয়ে বাজে মন্তব্য করলে কিছু যায় আসে না; কারণ, জাওহারী ছাড়া হিরার মূল্য কেউ বোঝে না।

[২য় পর্ব]

📗 আহমদ বিন হাম্বল এর রচনাবলী

তিনি মূলত ‘মুসনাদে আহমাদ’ ছাড়া আর কোনো গ্রন্থ রচনা করেননি। কারণ, আমরা জেনেছি- তিনি গ্রন্থ রচনা পছন্দ করতেন না। তাঁর নামে যতগুলো গ্রন্থ রয়েছে সবগুলো তাঁর ছাত্রদের লিখিত। এগুলোকে ‘মানকূল’ কিতাব বলা হয়।

অতএব তিনি ফিকহ সংক্রান্তও কোনো গ্রন্থ রচনা করেননি; আকীদাহ সংক্রান্তও কোনো গ্রন্থ রচনা করেননি। উসূলুল ফিকহ সংক্রান্তও তাঁর কোনো গ্রন্থ নেই। তাঁর নামে যে গ্রন্থগুলো প্রচলিত রয়েছে সেগুলোও তাঁর অধীনে বা তাঁর ইশারাতে লেখা হয়নি- কারণ তাঁর বলা কথাসমূহ কেউ লিখে রাখুক তিনি তা-ও পছন্দ করতেন না। কাজেই আলেমগণ বলে থাকেন, তাঁর নামে প্রচলিত গ্রন্থগুলো তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর ছাত্রগণ সংকলন করেছেন।

📗 হাদীস শাস্ত্রে আহমদ বিন হাম্বল

আহমদ বিন হাম্বল অনেক বড় মুহাদ্দিস ছিলেন এটা সত্য। বলা হয়ে থাকে- তিনি দশ লক্ষ হাদীসের হাফিয ছিলেন; কিন্তু বর্তমানে তাঁর থেকে বর্ণিত এক লক্ষ হাদীসও পাওয়া যায় না।

📗 মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল

বলা হয়, মুসনাদে আহমাদ তাঁর সংকলিত হাদীস গ্রন্থ। তবে এ গ্রন্থে তিনি ছাড়া তাঁর পুত্র আব্দুল্লাহ বিন আহমদেরও সংযোজন রয়েছে। আব্দুল্লাহ কর্তৃক সংযোজিত হাদীসগুলোকে শাস্ত্রীয় ভাষায় ‘যাওয়ায়েদে আব্দুল্লাহ’ বলা হয়। এই গ্রন্থে প্রায় দশ হাজারের মতো পুনরাবৃত্ত হাদীস রয়েছে। পুনরাবৃত্ত হাদীসগুলো বাদে ‘মুআসসাসাতুর রিসালাহ’ এর পরিসংখ্যানমতে মুসনাদে আহমাদে ২৭ হাজার ৬৪৭-টি হাদীস রয়েছে।

মুসনাদে আহমাদ-এ সহীহ-য’ঈফ সব ধরনের হাদীস সন্নিবেশিত হয়েছে। ইমাম ইবনুল জাওযী রহ. এর তাহকীকমতে এ গ্রন্থের ৩৮-টি হাদীস জাল। আর ৩ হাজার ৫৪৬-টি হাদীস ব্যতীত বাকি হাদীসগুলো সিহাহ-সিত্তাহসহ অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে বিদ্যমান রয়েছে।

📗 আহমদ বিন হাম্বলের হানাফী-বিদ্বেষ

নানা কারণে আহমদ বিন হাম্বলের হানাফীদের প্রতি প্রচুর বিদ্বেষ ছিলো। মূলত ভুল বোঝাবুঝিই এর অন্যতম কারণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিদা’আতীরা নিজেদের ভ্রান্ত মতকে চালানোর জন্য ইমাম আবু হানীফাহ’র নাম ব্যবহার করতো- যাতে করে মানুষ ইমাম আবু হানীফাহ’র নাম দেখে চুপ হয়ে যায়। এতে করে ইমাম আবু হানীফাহ রহ. যা বলেননি তা-ও তাঁর নামে বিদ’আতীরা প্রচার করতো। এইসব ভুল প্রচারের কারণেই মূলত আহমদ বিন হাম্বল তাঁর প্রতি বিরাগভাজন হয়ে পড়েন।

এ ব্যাপারে ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর স্যার খুবই সুন্দর কথা বলেছেন। তিনি লিখেছেন-

“ইমাম আহমদ ইবন হাম্বালের উপর নির্মম অত্যাচারের হোতা মুতাযিলী গুরু, খলীফা মামুন, মু’তাসিম ও ওয়াসিকের প্রধান মন্ত্রণাদাতা বিচারপতি আহমদ ইবন আবী দুওয়াদ ছিলেন প্রসিদ্ধ হানাফী ফকীহ। তার উপস্থিতিতে এবং বারবার তারই ইন্ধনে খলীফা মু‘তাসিম ইমাম আহমদকে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন। তৎকালীন সময়ের মুতাযিলীগণ সকলেই ফিকহী বিষয়ে ইমাম আবূ হানীফাহ’র অনুসরণ করতেন এবং আকীদার ক্ষেত্রেও তিনি তাঁদের পক্ষে ছিলেন বলে প্রমাণের চেষ্টা করতেন। কাজেই ইমাম আহমদের মনে সামগ্রিকভাবে হানাফী ফকীহগণ, হানাফী ফিকহ ও ইমাম আবূ হানীফার প্রতি বিরক্তি ও ক্ষোভ থাকাই স্বাভাবিক।”

এখানে একটা কথা লক্ষনীয়: কেউ ইমাম আবু হানীফাহ’র অনুসারী দাবি করলে তার সবকিছু হানাফী মাযহাবের উপর কিংবা ইমাম আবু হানীফাহ’র উপর বর্তাবে না। যেমন, কেউ যদি নিজেকে হাম্বলী দাবি করে বিভিন্ন বিদ’আত ও অপকর্মে লিপ্ত হয়- এর দায়ভার কিন্তু হাম্বলী মাযহাব কিংবা আহমদ বিন হাম্বলের উপর বর্তাবে না।

📗 মানবীয় দুর্বলতা

মানুষমাত্রই মানবীয় গুণের অধিকারী। প্রত্যেক মানুষের মনেই হিংসা-বিদ্বেষ ও মানবিক দুর্বলতা থাকে। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ.ও তার উর্ধ্বে নন। তিনি ইমাম আবূ হানীফাহ’র ক্ষেত্রে হিংসা ও ঈর্ষার স্বীকার হয়েছেন। কারণ, তৎকালীন যুগে সর্বত্রই ইমাম আবু হানীফাহ’র জয়জয়কার ছিলো! প্রত্যেক মাসআলা ও ফতোয়ার ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানীফা’র মতামত কী- তা জিজ্ঞেস করা হতো। ইমাম আবূ হানীফাহ ছাড়া যেন কোনো আলেমই ছিলো না- ব্যাপারটা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টা সহজে বোঝানোর জন্য ছোট ছোট তিনটি বর্ণনা উল্লেখ করছি-

তৎকালীন যুগে এমনও বলা হয়েছে যে- “প্রত্যেক ঘরে ঘরে আবু হানীফাহ’র অনুসারী থাকার চেয়ে প্রত্যেক ঘরে ঘরে মদ বিক্রেতা থাকা উত্তম”। কেউ কেউ বলতেন- “যারা ইমাম আবূ হানীফাহ’র অনুসরণ করে না তাদের প্রতি আল্লাহ রহম করুন”। “এক লোক একজন ইমামের কাছে গেলেন। ইমাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় থেকে এলে? আগন্তুক বললো, অমুক শহর থেকে। তখন ইমাম বললেন, তোমাদের শহরে কি ইমাম আবু হানীফার ফিকহ চর্চা করা হয়? আগন্তুক বললো, হ্যাঁ। তখন ইমাম বললেন, তোমার শহর বসবাসের উপযুক্ত নয়”¹। এই তিনটি বর্ণনায় ইমাম আবূ হানীফাহ’র প্রতি যদিও বাহ্যিক নিন্দা রয়েছে কিন্তু এই বর্ণনাগুলোর দ্বারা স্পষ্টই বোঝা যায়- তৎকালীন যুগে কী পরিমাণ মানুষ ইমাম আবু হানীফাহ’র অনুসরণ করতো আর কী পরিমাণ তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিলো।

এমন কোনো শহর কিংবা দেশ ছিলো না যেখানে ইমাম আবু হানীফাহ’র অনুসারী ছিলো না বা তাঁর ফিকহ চর্চা করা হতো না। কাজেই এমন এক চর্চিত ব্যক্তির প্রতি হিংসা কিংবা বিদ্বেষ তৈরি হবে এটাই স্বাভাবিক।

আর কথায় আছে- লেবু বেশি টিপলে তিতো হয়ে যায়। কাজেই যখন কোনো ব্যক্তিকে নিয়ে অতিরক্ত মাতামাতি করা হয়, তখন ঐ ব্যক্তি স্বভাবতই একদলের রোষানলে পড়ে যায়। ফলে এমনিতেই কিছু কিছু মানুষ তাকে অপছন্দ করতে শুরু করে। সে ভালো কথা বললেও খারাপ লাগে; সঠিক বললেও বেঠিক মনে হয়।

অতএব বলতে দ্বিধা নেই যে- আহমদ বিন হাম্বল রহ.ও ইমাম আবূ হানীফাহ’র ক্ষেত্রে ঈর্ষা ও বিদ্বেষাক্রান্ত হয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করুন। রাহিমাহুল্লাহ।

____________________

 

ফুটনোট:

 

[¹] এই তিনটি ঘটনা হানাফী বিদ্বেষীরা ইমাম আবু হানীফাহ রহ. এর নিন্দায় প্রচার করে থাকে। তাই আর রেফারেন্স উল্লেখ করলাম না। আর এই তিনটি ঘটনা বিশ্লেষণ করলে নিন্দাকারীদের জাহালাত ছাড়া কিছুই প্রমাণ হবে না। কারণ-

 

১. যতো যাই-হোক, ঘরে ঘরে ইমাম আবূ হানীফাহ’র অনুসারী থাকার চেয়ে ঘরে ঘরে মদ বিক্রেতা থাকা কখনো উত্তম হতে পারে না। এটা কত বড় অন্ধবিদ্বেষ তা একজন সাধারণ জ্ঞানের অধিকারীও বুঝবেন।

 

আর এদিকে আমরা জেনে নিতে পারলাম- তৎকালীন যুগে ঘরে ঘরে ইমাম আবূ হানীফাহ’র অনুসারী ছিলো; তাই তো ঘরে ঘরে মদ বিক্রেতা থাকাকে উত্তম বলা হয়েছে।

 

২. যারা ইমাম আবূ হানীফাহ’র অনুসরণ করে না তাদের জন্য রহমতের দোয়া করা এটাও হাস্যকর। বরং যারা তাঁর অনুসরণ করে তাদের জন্য হেদায়েতের দোয়া করাটাই যুক্তিযুক্ত ছিলো। অতএব এই বর্ণনা থেকে উল্টো নিন্দাকারীদের অসহায়ত্বই ফুটে উঠে। কারণ, তাঁরা মানুষকে ইমাম আবূ হানীফাহ’র অনুসরণ থেকে ফেরাতে পারছে না তাই তাদেরকে অনুসরণ না করলে রহমতের দোয়ার লোভ দেখানো হচ্ছে।

 

এই বর্ণনা থেকেও সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মাণ হয় যে- তখনকার সোনালী মানুষজন দলে দলে ইমাম আবু হানীফাহ’র অনুসরণ করতেন। অল্প কিছু লোক করতো না, ঐ বেচারাদের জন্যই রহমতের দোয়া করা হয়েছে। কারণ করুণা তো অল্প লোকেরাই পায়।

 

৩. ইমাম আবু হানীফাহ’র ফিকহ চর্চা হয় এ কারণে শহর ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়াটাও হাস্যকর। বরং নিন্দাকারীর উচিত ছিলো নিজের জ্ঞান-গরিমা দিয়ে সমস্ত শহরগুলো আবূ হানীফাহ-মুক্ত করে ফেলা; অথচ তিনি তা করতে না পেরে মানুষদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন- তোমরা শহর ছেড়ে চলে যাও, এই শহরে বাস করা উচিত নয়; হাস্যকর।

 

বরং এই ঘটনা থেকেও আমরা জানতে পেরে গেলাম- তখনকার প্রায় প্রত্যেকটি শহরে ইমাম আবূ হানীফাহ’র ফিকহ চর্চা করা হতো।

 

তাছাড়া ঠাণ্ডা মাথায় একটু ভেবে দেখুন, একজন মহান ইমাম, তিনি কী এমন অপরাধ করেছেন- যার কারণে তাঁর ফিকহ চর্চা হয় কেনো এই অপরাধে শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে? অথচ সেই ইমাম আজও পর্যন্ত দল-মত-নির্বিশেষে সকল আলেম-ওলামা ও বিজ্ঞজনের হৃদয়ে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত ও পরম শ্রদ্ধার পাত্র।

 

তিনি যদি এতই পথভ্রষ্ট হতেন তাহলে তো আজ জমহূর আলেম-ওলামার নিকটেই তিনি পথভ্রষ্ট হিসেবেই বিবেচিত হতেন। অথচ বর্তমানে তার প্রতি বিদ্বেষ রাখে এমন কোনো সত্যপন্থী আলেম নেই বললেই চলে। অতএব নিন্দাকারীদের এমন অন্ধ-বিদ্বেষমূলক নিন্দা নিজেদেরকে লজ্জিত করা ছাড়া আর কী কাজে আসলো?

 

লুবাব হাসান সাফওয়ান

 

আরো পড়ুন-


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

2

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

Author: লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান। ঠিকানা: নোয়াখালী। কর্ম: ছাত্র। পড়াশোনা: আল-ইফতা ওয়াল হাদীস [চলমান] প্রতিষ্ঠান: মাদরাসাতু ফায়দ্বিল 'উলূম নোয়াখালী।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

Leave a Reply