ক্রিকেট খেলা

ক্রিকেট খেলার ইতিহাস, ভিডিও, কুইজ, খবর

0

সম্ভবত ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। এই খেলাকে কেন্দ্র করে অনেক রকম তর্ক, বিতর্ক এমনকি মারামারি, হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। এই লেখাটিতে ক্রিকেট খেলার ইতিহাস, বাংলাদেশের অর্জন, কুইজ, ভিডিও এবং আরো নানা বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করবো । আশা করছি ভালোই লাগবে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা সম্ভবত ক্রিকেট। ভারতীয় কেউ যদি এই লেখাটি পড়ে থাকেন আশা করা যায় তিনিও হতাশ হবেন না, কারণ এমন কিছু বিষয় তুলে এনেছি যেখানে ভারতেরও সংশ্লিষ্টতা আছে( কাউকে আক্রমণ করি নাই)। যেমনঃ আইসিএল, আইপিএল ইত্যাদি। 

সূচিপত্র

ক্রিকেট শব্দের উৎপত্তি

এটা নিয়ে আসলে অনেকগুলো ধারণা আছে। আমরা জানি Anglo Norman বা, ফ্রান্সের প্রভাব একসময় ইংল্যান্ডের উপর ছিল। ভাষাগত প্রভাবও ছিল। তখনকার সময়ে ফ্রেন্স শব্দ “criquet” থেকে ক্রিকেট শব্দের উৎপত্তি হতে পারে। এর অর্থ লাঠি বা, গোল পোস্ট। ডাচ একটি শব্দ আছে  “kricke”, এর অর্থও এরকম কাঠি বা, লাঠি। এভাবেই হয়তো খেলাটির নাম হয়েছে- ক্রিকেট খেলা।

ক্রিকেট খেলার ইতিহাস

ইংল্যান্ডের উপনিবেশ ছিল এরকম কিছু দেশে ক্রিকেট একটি জনপ্রিয় খেলা। ক্রিকেট খেলার ইতিহাস বলতে গেলে Anglo Norman দের সময়ে ফিরে যেতে হবে, উৎপত্তি নিয়ে আগেই কিছু বলেছি। সেই ১৩০০ সালে ইংল্যান্ডের রাজা এডওয়ার্ড creag খেলতেন, এই শব্দটিকে অনেকে Old English এর ক্রিকেট হিসেবে তুলে ধরতে চান। তবে বিশেষজ্ঞরা এই মত মানেন না, তাদের মতে ১৫৯৭ সালে ব্যবহার হওয়া craic ই এখনকার cricket.

১৭৮৭ সালে MCC ক্রিকেটের আইন কানুনের কপিরাইট নিয়ে নেয় এবং এখনো ব্যাখ্যা করে। কাউন্টি ক্লাব সাসেক্সই প্রথম আধুনিক ক্রিকেট ক্লাব। প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মাঝে ১৮৪৪ সালে। খেলাটি হয়েছিল নিউইয়র্কের একটি মাঠে।

এরপর অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মাঝে কিছু দ্বিপাক্ষিক ম্যাচ হয়। ওভালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের মধ্য দিয়ে এসেজ সিরিজের সূচনা হয় যা এখনো চলছে। এটি ১৮৮২ সালের কথা। এরপর ১৮৮৯ সালে সাউথ আফ্রিকা টেস্ট ক্রিকেট খেলতে শুরু করে

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ইতিহাস

পৃথিবীর সব দলের মাঝে বাংলাদেশ দলের অবস্থান ৭ থেকে ১০- নিঃসন্দেহে বড় অর্জন

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

Leemon2010, CC BY-SA 3.0, via Wikimedia Commons

শুরু করছি জুয়েল রানা এবং মোস্তাক আহমেদকে দিয়ে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এই দুজন ক্রিকেটার শহীদ হয়েছিলেন। বাংলাদেশের জন্মের আগে পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলতেন রকিবুল ইসলাম।

বীরবিক্রম জুয়েল

ক্লাক প্লাটুন ছিল ঢাকাকেন্দ্রীক তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের একটি গেরিলা দল। এই দলের সদস্য ছিলেন আব্দুল হালিম চৌধুরি জুয়েল। ক্রিকেট সংগঠক মুশতাক আহমেদ ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চালানো গণহত্যার শিকার হন। তার মৃত্যু জুয়েলকে অনুপ্রাণিত করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে।

ফার্মগেট, এলিফেন্ট রোড, যাত্রাবাড়ি এলাকায় বিভিন্ন অপারেশন চালান। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বুলেটের আঘাতে হাতের তিনটি আঙ্গুল ক্ষত বিক্ষত হয়। তার মনে আশঙ্কা ছিল, এই হাত দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে খেলতে পারবো তো। ৩১ আগস্টের পর জুয়েলকে আর পাওয়া যায় নি।

বীরবিক্রম জুয়েল রানার বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে খেলার স্বপ্ন আর কখনোই পূরণ হয় নি। কিন্তু তার মতো মানুষদের জন্যই ১১ জন বাঙালি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে মাঠে নামে। আমরা তাদেরকে ঘিরে নানারকম স্বপ্ন দেখি, আশাভঙ্গ হলে গালি দেই, আশাপূরণ হলে তালি দেই

স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় রকিবুক ব্যাটে জয় বাংলা লিখে খেলতে নেমেছিলেন। তিনি পরে স্বাধীন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে কলকাতায় গিয়ে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সাথে তিনি স্বাধীন বাংলা ক্রিকেট দল গঠনের চেষ্টা করেছিলেন। তবে, শেষ পর্যন্ত তা আর সফল হয় নি।

সাফল্য- ব্যর্থতার ধারাবাহিক ইতিহাস

১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসির সহযোগী সদস্যের মর্জাদা পায়।

১৯৭৯ সালে, প্রথম আইসিসি ট্রফিতে অংশ নেয়। অধিনায়ক ছিলেন রকিবুল হাসান

১৯৮৬ সালে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর অধিনায়কত্বে প্রথম এশিয়া কাপে অংশ নেয়

১৯৯৭ সালে, আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

১৯৯৮ সালে প্রধানত মুহাম্মদ রফিকের নৈপূণ্যে বাংলাদেশ ওয়ানডে ম্যাচে জয়ের দেখা পায় কেনিয়ার বিপক্ষে। এর আগে সবগুলো ম্যাচ হেরেছিল

১৯৯৯ সালে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে হারায়। অবাক হতে পারেন, খালেদ মাহমুদ সুজন এই ম্যাচের ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ ছিলেন। সেখানে ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস এর মতো বোলাররাও খেলেছিলেন। ফল হিসেবে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পায়।

২০০০ সালে প্রথম টেস্টে ভারতের বিপক্ষে অধিনায়ক ছিলেন নাঈমুর রহমান দুর্জয়। আর, প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি হাকিয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

পড়ুন- বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ওয়ানডে স্ট্যাটাস লাভ

২০০৩ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ একটি ম্যাচও জিততে পারেনি, তখন ভয়াবহ অবস্থা ছিল বাংলাদেশ দলের। চামিন্দা ভাস হ্যাট্রিক করেছিলেন

২০০৫ সালে, সোফিয়া গার্ডেনে মোহাম্মদ আশরাফুলের নজরকাড়া সেঞ্চুরিরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ

২০০৭ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ শক্তিশালী ভারতকে গ্রুপ পর্বে এবং সাউথ আফ্রিকাকে সুপার এইটে হারায়। এটাকে উত্থানপর্ব বলা যেতে পারে। তখন দলের হয়ে তামিম, সাকিব, মুশফিক(নতুন তিনজন) এর সাথে মাশরাফিও খেলতেন জাতীয় দলে। আরো ছিলেন অধিনায়ক হাবিবুল বাশার আর, মেধাবি মোহাম্মদ আশরাফুল, মোহাম্মদ রফিকের মতো পারফর্মার। ক্রিকেট খেলা এরপর বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।

ক্রিকেট খেলার ভিডিও

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি বড় দলকে সিরিজ হারিয়েছে যা আগে কল্পনাও করা যেত না। বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন প্রজন্ম আমাদেরকে আশার আলো দেখিয়েই যাচ্ছে। অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ জেতাটাও তার স্বাক্ষর বহন করে।

আকবর, জয়েরা জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়। এছাড়া বাংলাদেশ ইংল্যান্ডের মতো দলকে বিশ্বকাপে পর পর ২ বার হারিয়েছিলো, নিউজিল্যান্ডকে একাধিকবার হোয়াইট ওয়াশ করেছে। এখন আমরা আশা করতে পারি যে বাংলাদেশ দল বিশ্বের যেকোন দলকে যেকোন সময় হারানোর সামর্থ্য রাখে।

আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, বাংলাদেশ একসময় খেলতো ওয়ানডেতে ৫০ ওভার ব্যাটিং করার লক্ষ্য নিয়ে। আর, এখন ব্যাটিং করে ৩০০ রান বা, তার চেয়ে বেশী করা যায় কি না সেটার লক্ষ্যে। ৫০ ওভার শেষ করার আগে অলআউট হয়ে যাবে এমনটা কখনোই ভাবে না। ক্রিকেট খেলা নিয়ে আমাদের আবেগেরও শেষ নেই।

আমার প্রিয় মানুষদের একজন চমক হাসান। তাঁর, মজার মজার গণিতের ভিডিও আমি দেখেছি। ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলিনা থেকে তিনি পিএইচডিও করেছেন। দুটি গান তিনি গেয়েছিলেন, চলুন সেই দুটি গান শুনে আসি-

ভারত ও প্রোটিয়াবধের কাব্য

 

পাকবধের কাব্য

আপাতত এই দুইটা ভিডিও থাক, পরে যদি আপনাদের আগ্রহ থাকে, আরো ভিডিও এমবেড করে দেয়া যাবে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক জয়ের মুহুর্ত আছে যা আমাদেরকে সীমাহীন আনন্দ দিয়েছিল। সেই মুহুর্তগুলোর ভিডিও এক জায়গায় পরবর্তীতে দিতে চেষ্টা করবো।

দেখতে পারেন- প্রথম বিশ্বকাপ ক্রিকেট

বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারদের লিস্ট

আমি চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশ ক্রিকেটে স্মরণ করার মতো অবদান রেখেছেন এমন সব ক্রিকেটারদের তালিকা তৈরি করতে। এখনে ২০ জন ক্রিকেটারের নাম আছে। এর বাইরে অনেক বড় লিস্ট করা যাবে। তাদের কেউ কেউ হয়তো এই তালিকায় না থেকেও এদের কারো কারো চেয়ে বেশী অবদান রেখেছেন।

এই তালিকা শুধুই আমার পছন্দের তালিকা, কোন উচ্চক্রম, নিম্নক্রম নয়। চলুন দেখি-

  • সাকিব আল হাসান– বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা অল রাউন্ডার, বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার
  • মাশরাফি বিন মর্তুজা– এযাবতকালে দেশের সেরা ক্যাপ্টেন, সেরা বোলার(মুস্তাফিজ, তাসকিন ভবিষ্যতে তাঁর জায়গা নিতেও পারে), এক বছর সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশী উইকেট নিয়েছিলেন
  • মুশফিকুর রহিম– দেশের সর্বকালের সেরা উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান
  • তামিম ইকবাল খান– দেশের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান
  • মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ- ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি ইন দ্যা ওয়ার্ল্ড কাপ(লোকে বিরক্ত হোক, আতাহার আলী খানের কথা সত্যি, এবং এটা অনেক কঠিন কাজ), আনসাং হিরো
  • মেহেদি হাসান মিরাজ- ভবিষ্যতের সাকিব, অল রাউন্ডার হিসেবে সারা বিশ্বে সেরা দশে আছেন
  • মোস্তাফিজুর রহমান- ও আফ্রিদিরে আউট করতি পারে, ও তো সব কিছু করতি পারে(মুস্তাফিজের বাপ কইছে, অবিশ্বাস করি কিভাবে)
  • হাবিবুল বাশার সুমন- তাঁর সময়ে সেরা এভারেজের ব্যাটসম্যান, বাংলাদেশের প্রথম উত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছেন
  • মোহাম্মদ রফিক- গ্রেট অল রাউন্ডার, সব সময় ভালো পারফর্ম করতেন
  • শাহরিয়ার নাফিস- এক বছরে বিশ্বের সেরা রান স্কোরার ছিলেন, দেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান
  • আমিনুল ইসলাম বুলবুল- অভিষেকেই সেঞ্চুরি করেছেন, অসাধারণ ব্যাটসম্যান
  • মোহাম্মদ আশরাফুল- তাঁর দিনে তিনি একাই ম্যাচ জয় করে আনতেন, অস্ট্রেলিয়ার সাথে দেখেছি, মেধাবি ক্রিকেটার, অভিষেকে কম বয়সে সেঞ্চুরি করেছেন
  • আব্দুর রাজ্জাক- উইকেট শিকারে এক বছর ২য় ছিলেন সারা বিশ্বে, অসাধারণ স্পিনার
  • ইমরুল কায়েস- তামিমের সাথে জুটিতে সবচেয়ে বেশী রান করেছেন, ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান স্কোরার, ২০১০ এ ৮৬৭ রান করেছেন
  • অলক কাপালি- প্রতিভাবান অল রাউন্ডার ছিলেন, আইসিএল এ সেঞ্চুরি করেছিলেন, তাঁর সময়ে দলের সেরা অল রাউন্ডার ছিলেন
  • আকরাম খান- ১৯৯৯ সালে কেনিয়ার সাথে সর্বোচ্চ ৬৫ রান করেছিলেন, পাকিস্তানের সাথে ৪২- বড় কিছু জয়ে অবদান ছিল
  • তাপস বৈশ্য- ওয়ানডেতে ৫৯ উইকেট নেয়া তাপস তাঁর সময়ে অন্যতম সেরা বোলার ছিলেন
  • খালেদ মাহমুদ সুজন- ওয়ানডেতে ৬৭ উইকেট নেয়া খালেদ মাহমুদ পাকিস্তানের বিশ্বসেরা দলকে হারানোর ম্যাচে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ ছিলেন। আরো কিছু জয়ে অবদান আছে
  • খালেদ মাসুদ পাইলট- শুধু উইকেট কিপিং বিবেচনায় নিলে তাকে বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা বলা যায়, ব্যাটিং এ ও আশা জাগাতেন
  • মুমিনুল হক- এক সময় তাঁর টেস্ট গড় ব্রাডম্যানের গড়ের কাছাকাছি ছিল। এখনো তিনি বাংলাদেশের অন্যতম সেরা টেস্ট ব্যাটসম্যান

আমাকে যদি সেরা একাদশ তৈরি করতে বলা হয়, তাহলে আমার দলে থাকবে- মাশরাফি (ক্যাপ্টেন), শাহরিয়ার নাফিস, হাবিবুল বাশার (অথবা, মেহেদি হাসান মিরাজ), মোহাম্মদ রফিক, মোহাম্মদ আশরাফুল, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ

ক্রিকেট খেলা নিয়ে অনেক রকম বিতর্ক ছিল এবং থাকবে। কিন্তু বিশ্বমঞ্চে সাফল্য এনে দেয়ায় ক্রিকেটারদের অবদান অনস্বীকার্য।

জেনে নিন- ক্রিকেটের পঞ্চপান্ডব কারা?

ক্রিকেট খেলে কোন কোন দল?

ক্রিকেট নিয়ে যত কথা

আমরা জানি যে, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, আফগানিস্তান, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, স্কটল্যান্ড, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কেনিয়া, কানাডা এই দলগুলো ক্রিকেট খেলে। ক্রিকেট খেলা অল্প কয়েকটা দলে সীমাবদ্ধ নয়।

প্রকৃতপক্ষে, আরো অনেক দল ক্রিকেট খেলে, কিন্তু তারা এই পর্যায়ে আসতে পারে না। সেরা ২০ দলে কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর, পাপুয়া নিউগিনিও আছে। এর বাইরে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল অস্ট্রিয়া, চীন এইসব দেশও ক্রিকেট খেলে। সুইজারল্যান্ডেরও দল আছে। মোট সংখ্যা ১০৪।

যারা মনে করেন, ক্রিকেট অল্প কিছু দেশে সীমাবদ্ধ তারা ভুল মনে করে। তবে এটা সত্যি যে, ক্রিকেট এখনো ফুটবলের মতো গ্লোবালাইজড হয় নি। ফুটবলের মতো সারা পৃথিবী জুড়ে ক্রিকেট খেলা নিয়ে উন্মাদনা নেই

ক্রিকেট বলের ওজন কত?

ক্রিকেট বলের ওজন কত বলার আগে আরেকটি তথ্য দেই- ক্রিকেট বল কাঠ দিয়ে তৈরি হয় না। এটি তৈরি হয় চামড়া, কর্ক আর সুতো দিয়ে। ভেতরে থাকে কর্ক, এরপর সুতো প্যাচানো আর তার উপরে চামড়ার আবরণ। ছেলেদের আর মেয়েদের খেলার বলও কিন্তু একরকম না। ওজনে পার্থক্য আছে।

ছেলেরা যে বল দিয়ে খেলে তার ওজন ১৫৫.৯ থেকে ১৬৩ গ্রাম। আর মেয়েরা যে বল দিয়ে খেলে তার ওজন ১৪০ থেকে ১৫১ গ্রাম। ১৩ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের বলের ওজন ১৩৩ থেকে ১৪৪ গ্রাম।

ওয়ানডে এবং টি-টুয়েন্টির আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোতে বল তৈরি করে অস্ট্রেলিয়ার কোম্পানি কোকাবুরা(বেশীরভাগ টেস্ট ম্যাচের বলও ওদের তৈরি)। ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ম্যাচে ডিউক বল ব্যবহার করা হয়। ভারতে যে টেস্ট খেলাগুলো হয় সেগুলোর জন্য এস জি বল ব্যবহার করা হয়

আরো দেখুনক্রিকেট খেলার নিয়ম- কানুন

সরকার বিসিবিকে এত টাকা দেয়, বাফুফেকে দেয় না

সত্যিই কি তাই, চলুন দেখার চেষ্টা করি। আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যেটা বুঝি, বিসিবি প্রচুর টাকা আয় করে স্পন্সর, টিভি স্বত্ব এবং আরো নানাভাবে। সরকার বিসিবিকে যা দেয় তাঁর চেয়ে অনেক বেশী আয় করে বিসিবি যা বাফুফে পারে না। ক্রিকেট খেলা নিয়ে জনগণের উন্মাদনাই বিসিবির আয়ের প্রধান উৎস।

অতীতে বিসিবির এই রমরমা অবস্থা ছিল না। সাবেক ক্রিকেটারেরা অনেক কম সুযোগ সুবিধা পেয়েছেন।  সেই তুলনায় অনেক ভালো খেলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছেন। এর ফলে, তাদের আয় বেড়েছে যেকারণে, এখন ক্রিকেটারেরা অনেক সুযোগ, সুবিধা পাচ্ছেন। সেটিও অন্যান্য দেশের তুলনায় খুব বেশী না।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বিসিবির আয় ৯৪৩.৬৪ কোটি টাকা। বিসিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন কাজী সালাউদ্দীনের মতো ফুটবলবোদ্ধা, রুবেলের মত সিনেমার নায়কেরা। তাদের ইন্ড্রাস্ট্রিতে তারা কতটুকু সৎ থেকেছেন এবং আমাদেরকে কতটুকু দিতে পেরেছেন সেই প্রশ্ন তারা করেন না।

Summarized Financial Report of BCB

টুর্নামেন্টের আয়, ভাড়া দেয়ার আয়, স্পন্সরের কাছ থেকে আয়, আইসিসির কাছ থেকে পাওয়া টাকা এগুলো কম না ভাই। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে বিসিবি ২৯,১৪৮,২৩৮ টাকা অনুদান দিয়েছে। প্রতিবছন নানারকম কর্মকান্ডে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয় যার ফল আমাদের দেশের মানুষেরাই ভোগ করে। বছর শেষে উদ্ধৃত্ব থাকে। ক্রিকেটারদের অবদান স্বীকার করতেই হবে।

ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লীগ

ক্রিকেট খেলা একসময় শুধু পাঁচদিনের টেস্টে সীমাবদ্ধ ছিল। এরপর সম্ভবত ৬০ ওভারের খেলো হতো। পরে ৫০ ওভারের ওয়ানডে ম্যাচ জনপ্রিয়তা পেতে থাকে। একসময় ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়াতে ২৫ ওভার করে চার ইনিংসের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরে সেটি বাস্তবায়ন না হলেও টি টুয়েন্টি ক্রিকেটের প্রচলন হয়েছেন এবং জনপ্রিয়তাও পেয়েছে।

আইসিএল

এক সময় ভারতে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের আয়োজন করা হয় আইসিএল নামে। আইসিএলে খেলার ব্যাপারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এবং আইসিসি কেউ অনুমোদন দেয় নি। যেসব ক্রিকেটারেরা আইসিএলে যোগ দিয়েছিলেন তাদের সবাইকেই তাদের দেশ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

বাংলাদেশের একটি দল ছিল ঢাকা ওয়ারিওর্স নামে। হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে ঐ দলে আফতাব আহমেদ, রফিক, শাহরিয়ার নাফিস অলক কাপালির মতো ক্রিকেটারেরা খেলেছিলেন। অলক কাপালি সেঞ্চুরিও করেছিলেন। এই লীগ পরে ব্যর্থ হয়। সবাই ফিরে আসে মূলধারার ক্রিকেটে। বাংলাদেশ দলে কেউ থিতু হতে পারেনি। শুধু হাবিবুল বাশার নির্বাচক হয়ে বহাল তবিয়তে আছেন।

আইপিএল

আইসিএলের বৈধ প্রতিপক্ষ হিসেবে আইপিএল এর যাত্রা শুরু। এবং শুরু থেকেই বেশ তোড়জোড় করে আয়োজন করা হয়। অনেক টাকার ছড়াছড়ি আর, বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের সমন্বয়ে ২০ ওভারের লীগে বলিউড তারকাদেরও সমাগম ঘটে

এক সময় আইসিএল আর টিকে থাকতে পারে না। আইপিএল এ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের খেলার সুযোগ নেই। এরপরেও বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটে লীগ এটাই। ধারণা করা হয়, ভারতীয় ক্রিকেট দলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসে এই লীগ খেলার ফলেই। ক্রিকেট খেলা আরো উপভোগ্য হয়েছে আইপিএলের কল্যাণে।

বিপিএল

আইপিএলের আদলে বাংলাদেশেও আয়োজন করা ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট লীগ। বাংলাদেশীদের আগ্রহের কেন্দবিন্দুতে থাকে এই টুর্নামেন্ট। শুরুর সময়ে যে জৌলুস নিয়ে শুরু হয়েছিল, তা এখন হারিয়েছে। এরপরেও ক্যারিবিয়ান আর, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আধিক্য বিপিএলকে অন্য মাত্রা দেয়। উপভোগ্য হয়ে ওঠে প্রতিটা ম্যাচ।

পিএসএল

যেহেতু পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আইপিএলে দেখা যায় না। পিএসএল তাই খুব ভাল একটি বিকল্প। এখানে বিদেশী খেলোয়াড়দের সমন্বয়ে জমজমাট লীগ হয়। টি টুয়েন্টিতে পাকিস্তান সবসময়ই বড় দল। তাদের দেশের জনগণও ক্রিকেটপ্রেমী। তাই, টুর্নামেন্টটাও হয় উপভোগ্য।

এসএলপিএল

শ্রীলংকাতেও এস এল পি এল নামে একটি ফ্রাঞ্চাইজি লীগ হয়। তবে, সেটি উপমহাদেশের অন্যান্য লীগগুলোর মতো অতটা জনপ্রিয় নয়। শ্রীলংকার ক্রিড়ামোদি দর্শকদের জন্য জমজমাট লীগের আয়োজন হয়।

বিগ ব্যাশ

অস্ট্রেলিয়ার ৮ টি শহরভিত্তিক দলগুলো বিগ ব্যাশে অংশগ্রহণ করে। এর ফরম্যাট আইপিএল এর চেয়ে কিছুটা আলাদা। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের আধিপত্য থাকে এখানে। এটি নিঃ সন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফ্রাঞ্চাইজি লীগ।

সিপিএল

আমরা জানি ক্যারিবিয়ানরা বিশ্বের সেরা টি টুয়েন্টি খেলোয়াড়। তাদের শরীরি গড়নের কারণে সহজেই পিটিয়ে বল মাঠের বাইরে পাঠাতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একটি দেশ নয়, অনেকগুলো দেশের সমন্বয়। তাই, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের সাথে নানারকম অসন্তুষ্টি আছে ক্রিকেতারদের। এই কারণেই ফ্রাঞ্চাইজি লীগেই অনেক সময় তারা আরো বেশী মনোযোগী হয়ে খেলে।

টি টেন ক্রিকেট লীগ

ক্রিকেট খেলা ৩ রকম ফরম্যাটে হয়ে থাকে- ওডিআই, টি টুয়েন্টি এবং টেস্ট। এর বাইরে আরেকটি শর্ট ফরম্যাট তৈরি করা হয়েছে যেটিকে বলা হয় T-10 ক্রিকেট। টি টেন ক্রিকেট শেষ হয় মাত্র ৯০ মিনিটে। প্রতিটি দল ব্যাট করে ১০ ওভার করে। তাই, ক্রিকেট খেলা ফুটবলের মতো স্বল্প সময়েও শেষ করা সম্ভব হচ্ছে।

আইসিসি সম্প্রতি এই লীগকে অনুমোদনও দিয়েছে। মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার এইসব দেশে টি টেন ক্রিকেট লীগের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশের ৬ জন ক্রিকেটার সর্বশেষ লীগে খেলেছেন– মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, তাসকিন আহমেদ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, নাসির হোসেন, শেখ মেহেদী হাসান এবং মুক্তার আলী।

ক্রিকেট খেলা- ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট

ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট

প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট বা, ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট এই শব্দবন্ধটি সাধারণত ব্যবহার করা হয় স্বীকৃত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা বুঝাতে। টেস্ট ক্রিকেটকে আদর্শ মেনে ৩ দিন বা, তাঁর বেশী যেকোন সময়ে আইসিসির নিয়মে এবং অনুমোদন নিয়ে যে খেলাগুলো হয় সেগুলোকে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের মর্জাদা দেয়া হয়। চলুন বিভিন্ন দেশের খেলা সম্পর্কে জেনে নেই-

কাউন্টি ক্রিকেট

১৮ টি দলের অংশগ্রহণে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে এই খেলা অনুষ্ঠিত হয়। যারা জানেন না তাদের জন্য বলে রাখি, ওয়েলস হচ্ছে ইংল্যান্ডের পাশে অবস্থিত একটি দেশ যা গ্রেট ব্রিটেনের অন্তর্ভুক্ত। সর্বশেষ ক্রিকেট বিশ্বকাপও ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে হয়েছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, পয়েন্ট তালিকায় যে দল সবচেয়ে নিচে থাকে তাদেরকে কাঠের চামচ উপহার দেয়া হয়।

অস্ট্রেলিয়াতে যে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট অনুষ্ঠিত হয় তার নাম শেফিল্ড শীল্ড।

রঞ্জি ট্রফি

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে খেলা ভারতীয় ক্রিকেটার কুমার শ্রী রঞ্জিত সিং এর নামে এই ট্রফির নামকরণ করা হয়েছে। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে এটি সবচেয়ে মর্জাদাবান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট লীগ। ১৯৩৪ সাল থেকে এই খেলা হয়ে আসছে। এখন পর্যন্ত ক্রিকেটপ্রেমীদের নজর থাকে এই লীগে।

কায়েদ এ আযম ট্রফি

১৯৫৩-৫৪ সাল থেকে এই খেলা হয়ে আসছে। এর নামকরণ করা হয়েছে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এর নামে। কায়েদে আযম ট্রফির সবচেয়ে সফল দল বলা হয় করাচি ক্রিকেট দলকে। পাকিস্তানের মর্জাদাবান এই লীগ বেশ জনপ্রিয়।

জাতীয় ক্রিকেট লিগ

২০০০ সাল থেকে প্রথম শ্রেণীর মর্জাদাসহ এই ক্রিকেট লীগ যাত্রা শুরু করে। এর আগে ১৯৯৯ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশের বিভাগীয় দলগুলো এই খেলায় অংশ নেয়। সবচেয়ে বেশী সফল দল হচ্ছে- খুলনা বিভাগ এবং রাজশাহী বিভাগ।

এছাড়া জিম্বাবুয়েতে হয় লোগান কাপ আর, নিউজিল্যান্ডে প্লাঙ্কেট শিল্ডের খেলা।

আইসিসি ক্রিকেট র‍্যাংকিং

আইসিসি ক্রিকেট দলগুলোর যে র‍্যাংকিং দেয় সেটিই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। মাঝে মাঝে আপনার কাছে মনে হতে পারে এই র‍্যাংকিং এ ভুল কিছু দেখাচ্ছে। কিন্তু এটি আসলে দীর্ঘমেয়াদে দলগুলোর পারফরম্যান্স বিবেচনা করে তৈরি করা হয়।

এখন ওয়ানডেতে সেরা দল নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম, টি টুয়েন্টিতে সেরা দল ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ আছে ৯ নম্বরে। আর, টেস্ট ক্রিকেটের সেরা দল ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ আছে ৯ নম্বরে। পরবর্তীতে এই র‍্যাংকিং পরিবর্তন হতে পারে, তাই আইসিসিএস কাছ থেকে জেনে নেয়া ভালো-

আইসিসি ওডিয়াই র‍্যাংকিং

আইসিসি টি টুয়েন্টি র‍্যাংকিং

আইসিসি টেস্ট র‍্যাংকিং

খেলোয়াড়দের অর্থাৎ, বোলার, ব্যাটসম্যান, অল রাউন্টার সব র‍্যাংকিং পাবেন এখানে। আপনার মনে হতে পারে এই র‍্যাংকিং ভুল। সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে জানতে হবে এটি কিভাবে করে করা হয়। এরপর সেটি পছন্দ না হলে বলতে পারেন এখানে এই সমস্যা আছে। সেটা আগে জানুন

আশা করছি আইসিসির র‍্যাংকিং নিয়ে অনাস্থা থাকবে না। বাংলাদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে সাকিব আল হাসান আছেন ওয়ানডে অল রাউন্ডার হিসেবে আছেন ১ নম্বরে। তাঁর পয়েন্ট ৪০৮, অন্যদিকে ২ ও ৩ এ থাকা বেন স্টোকস এবং মোহাম্মদ নবীর পয়েন্ট যথাক্রমে ২৯৫ ও ২৯৪।

তবে, টেস্টে জেসন হোল্ডার এবং টি টুয়েন্টিতে মোহাম্মদ নবী ১ এ আছেন, সাকিব আছেন যথাক্রমে ৫ এবং ২ এ। পয়েন্টের ব্যবধানে আকাশ- পাতাল পার্থক্য নেই, তাই টেস্ট- টি টুয়েন্টিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

ক্রিকেট কুইজ এর উত্তর

আমি চেষ্টা করছি আপনাদের কিছু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য। এগুলো প্রায়শই দর্শকেরা খোজার চেষ্টা করেন। অনেকেই জানতে চান এই প্রশ্নগুলোর উত্তর। ভবিষ্যতে আরো অনেক উত্তর এখানে যোগ করা হবে। চলুন দেখে নেই ৭ টি প্রশ্নের উত্তর-

১. তিন ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে ১০ ০০০ রান সংগ্রহকারী প্রথম বাংলাদেশি কে?

তামিম ইকবাল খান প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে প্রথম ১০০০০ রানের মাইলফলক অতিক্রম করেন। এজন্য তাকে খেলতে হয়েছে ২৮৭ টি ম্যাচ। বিশ্বসেরা অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসানও পেরিয়েছেন তিন ফরম্যাটে ১০০০০ রানের মাইলফলক। তবে, তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে করেছেন।

২. বাংলাদেশের কোন খেলোয়াড়ের টেস্টে রানের গড় বর্তমানে সবচাইতে বেশি?

এখন পর্যন্ত টেস্টে সবচেয়ে বেশী এভারেজ মুমিনুল হক এর। এরপরে আছেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, নাসির হোসেন এরা। এক সময় মুমিনুলের গড় ছিলো আকাশ ছোয়া, সেই গড় ধরে রাখতে না পারলেও টেস্ট অধিনায়ক এভারেজের হিসেবে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবেই এখনো আছেন।

৩. একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ছয় উইকেট কে নিয়েছেন?

বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ২৬ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন। এরপরে সম্ভবত মুস্তাফিজ ছাড়া আর কেউ ৬ উইকেট এক ম্যাচে নেয় নি। মুস্তাফিজ নিয়েছিলে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে।

৪. টি ২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের একমাত্র শতরানকারী ক্রিকেটার কে?

ওমানের বিপক্ষে টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপে তামিম ইকবাল সেঞ্চুরি করেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত ঐ ম্যাচে তামিম ১০৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তিনি প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে এই কৃতিত্ব দেখান। তাঁর আগে কেউ সেঞ্চুরি করেনি।

৫. ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি রান কোন দেশের?

ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশী রান করেছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের দলীয় সর্বোচ্চ ৪৮১/৬ এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৪৪/৩। এছাড়া শ্রীলংকা নেদারল্যান্ডসের সাথে করেছিল ৪৪৩/৯। নটিংহ্যামের ঐ ম্যাচে এলেক্স হেলস ১৪৭ রান করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়। অস্ট্রেলিয়া গুড়িয়ে যায় ২৩৯ রানে।

৬. বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন কোন ব্যাটসম্যান?

২০১৯ বিশ্বকাপে সবচেয় বেশী ছয় মেরেছেন ইয়ন মরগান, তাঁর ছক্কার সংখ্যা ২২ টি। সব বিশ্বকাপ মিলিয়ে বেশী ছয় মেরেছেন ক্রিস গেইল। তিনি মোট ৪৯ টি ছয় মেরেছেন ২০০৩ সাল থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত। ২ এ আছেন এবি ডিভিলিয়ার্স, তাঁর ছয় ৩৭ টি।

৭. কোন খেলোয়ার টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করেছেন?

এযাবতকালে সবচেয়ে বেশী সেঞ্চুরি করেছেন শচীন তেন্ডুলকার। সব ফরম্যাট মিলিয়ে তাঁর সেঞ্চুরির সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটেও তাঁর সেঞ্চুরি সবচেয়ে বেশী। শচীন টেস্টে করেছেন ৫১ টি সেঞ্চুরি। কাছাকাছি আছেন জ্যাক ক্যালিস- ৪৫ টি এবং রিকি পন্টিং- ৪১।

২০১২ সালে শচীন তেন্ডুলকারের ১০০ তম সেঞ্চুরির ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিং নৈপূণ্য এবং অধিনায়কত্বে ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছিল। আমরা ভারতীয় লিজেন্ড এবং বাংলাদেশ অধিনায়ককে সম্মান জানাই

 

তথ্যসূত্রঃ


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

প্রবন্ধ লেখক

Author: প্রবন্ধ লেখক

বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার চেষ্টা করছি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

“একটি ফেঁটে যাওয়া ক্রিকেট বল” ~ হামীম আল ফুয়াদ ফাহিম

আমি তখন ক্লাস ২ তে পড়ি। সদ্য শৈশবের দুরন্তপনা ছুঁয়েছে। ফুটবল বিশ্বকাপে সেবার স্পেইন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে জানি তবুও আশরাফুল/সাকিবের টানে
icc t20 world cup 2022 warm up matches

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান ক্রিকেট পরিসংখ্যান

বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান পরিসংখ্যান দেখে জেতার আশা করাটা বোকামি, তবে টি২০ ক্রিকেটে যেকোন দলের সুযোগ আছে জেতার। আর, বাংলাদেশের সাথে
icc t20 world cup 2022 warm up matches

বাংলাদেশ বনাম ভারত ক্রিকেট পরিসংখ্যান

বাংলাদেশ ২০০৪ সালে যে ম্যাচটি  ভারতের সাথে প্রথম জিতেছিল সেটির হাইলাইটস বাংলাদেশ বনাম ভারত পরিসংখ্যান দেখে জেতার আশা করাটা বোকামি,
পঞ্চপান্ডব

বাংলাদেশ ক্রিকেটের পঞ্চপান্ডব

espncricinfo তে এই পাঁচ জনকে নিয়ে একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছিলো, সেখানে এদের বলা হয়েছিল Fav Five. বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় প্রায়শই

Leave a Reply