গল্প সানাম আফছানা খানম অথৈ

0

গল্প
সানাম
আফছানা খানম অথৈ

ইরাকের বাগদাদ শহরে এক যুবতি মেয়ে ছিল।নাম তার সানাম।সানাম ছোটবেলা থেকে খুব ভালো ছিলো।নামাজি, পর্দানশীন, পরহেজগার, পরোপকারী লেখাপড়ায় ও ছিলো খুব ভালো।খুব ভালোভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন।একদিন স্কুল ফেরার পথে দেখতে পান এক ভিক্ষুক রাস্তার ধারে বসে বসে সবার কাছ থেকে ভিক্ষা চাচ্ছে।কেউ তার দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।সানামের খুব দয়া হলো।সে তার কাছে গেল।তারপর কিছু টাকা সঙ্গে থাকা টিফিন বক্সের খাবার তাকে দিয়ে দিলো।ভিক্ষুকটি প্রাণভরে তার জন্য দোয়া করে,
“দোয়া করি আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক”।

সানামের আচার আচরণ ছিলো খুব ভালো।সে সবার সাথে সুন্দর আচরণ করতো এবং মিষ্টি ভাষায় কথা বলতো।তাই অল্প সময়ের মধ্যে সবার সাথে তার বন্ধুত্ব ঘটে উঠত।পাড়ার সবার সাথে তার ভালো সখ্যতা ছিলো।পাড়ার কারো বিপদ আপদ হলে সে তাদের কাছে ছুটে যেত এবং সাহায্য করতো। সে ছিলো খুব উপকারী।মানুষের উপকার করতে পারলে নিজেকে ধন্য মনে করতো।
একদিন বাসে যাতায়াতের সময় দেখতে পেল একবৃদ্ধ লোকের সাথে ভাড়ার জন্য হেল্পার ধমক দিচ্ছে।লোকটি করুণ স্বরে বলছে,
“আমার মানিব্যাগ ছিনতাই হয়ে গেছে,আমি ভাড়া দিতে পারবো না। আমাকে ক্ষমা কর”।

হেল্পার শুনছে না।সে তাকে ধমক দিয়ে চলেছে,এবং নেমে যেতে বলছে।
সানাম দৃশ্যটি দেখতে পেলো এবং বলল,
উনাকে নামাবে না।উনার ভাড়া আমি দিচ্ছি।
হেল্পার শান্ত হলো। সানাম ভাড়া দিয়ে লোকটিকে সাহায্য করলো।
এমনিভাবে সে মানুষের উপকার করতো।সানামের উপকারে মা-বাবা ও খুশি হতেন।সানাম কিশোর থেকে যৌবনে পা দিলো।এবার তাকে বিয়ে দেয়া আবশ্যক।সানামের মতামত জানতে চাইলে সে মুচকি হেসে জবাব দিলো,
তোমরা যা ভালো মনে কর তাতে আমি রাজী। এতে আমার কোন আপত্তি নেই।
বাবা – মা খুশি হলেন।দেখেশুনে তার মতো ভালো পরহেজগার একজন ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক করেন।বিয়ের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হলো।সানামকে সেজেগুজে রেডি করা হলো।বর আসার সময় হলো।ততক্ষণে মসজিদে মাগরিবের আজানধ্বনি বেজে উঠল।সানাম কখনো নামাজ কাজা করেনি।আজ কেনো করবে?
সে নামাজ পড়ার জন্য প্রস্তুত হতে চাইল।মা বলল,
মা মনি এখন নামাজ পড়ার দরকার নেই।
কেনো মা?

অজু করলে ম্যাকাপ, সাজ নষ্ট হবে।তাছাড়া কিছুক্ষণ পর বর আসবে।এই মুহুর্তে নামাজ পড়া তোমার উচিত হবে না।
সরি মা আমি মানতে পারলাম না।আমি আমার রবকে ভালোবাসি।রবের দেয়া ফরজ নামাজ সামান্য ম্যাকাপ নষ্ট হওয়ার জন্য কাজা করতে পারবো না।আমি গেলাম নামাজ পড়তে।
সানাম অজু করে পবিত্র হয়ে নামাজ পড়তে গেল।এদিকে সময়মতো বর এসে গেল।বিয়ে পড়ানোর প্রস্তুতি চলছে।সানামের মতামত নেয়ার জন্য মা তার ঘরে গেল।দেখে সানাম সেজদারত।মা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন।দেখলেন মেয়ে উঠছে না।মায়ের সন্দেহ হলো।তিনি সানাম সানাম বলে ডাকতে লাগলেন।কোন সাড়াশব্দ নেই।মা বুঝতে পারলেন মেয়ে আর নেই মারা গেছে।তিনি ডুকরিয়ে কেঁদে উঠলেন।মহান রবের ডাকে চলে গেল “সানাম”।

ঃসমাপ্তঃ


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

Chess:The board set up

Characters name: অনন্য (age 16) চঞ্চল (অনন্য র চাচা & মোসারফ র ভাই) মোসারফ করিম(অনন্য's father) রোহান(age 18) Story: কাহিনি

মৃত্যুঞ্জয়ী

কবির কাব্য সোচ্চার ছিল পেতে স্বাধীন ভাষা, মায়ের ভাষা সম্মান দিবে প্রাণে ছিলো আশা। একুশের ওই ভাষার জন্যে কলম উঠে

তরুণ যুবার দল

শহর গাঁয়ে জনের মুখে জয়ধ্বনি যে আজ, দেশের ভারটা তরুণ নিবে পরবে মাথায় তাজ। সুস্থ সুন্দর দেশটা পেতে তোমরা সবে

রোজা জান্নাত সন্ধি

রোজার মাসে মুমিনগণে রাখে তিরিশ রোজা, ঈমান আমল মজবুত করে হবে সরল সোজা। রোজার সাথে ক্ষুধার মন্দা আন্দাজ যেন করে,

Leave a Reply