রূপকথার গল্পে আমি
(৩)
আমি ভর্তি হয়ে গেলাম একটা প্রাইভেট ইনস্টিটিউটে কম্পিউটার প্রোগ্রাম শিখার জন্য। রিক্সায় করে বাসা থেকে ইনস্টিটিউটে যেতে দশ পনের মিনিট সময় লাগে। গেট থেকে বের হয়ে ডানে ঘুরে সুজা গলির মুখে গিয়ে বাম দিকে মোড় নিতে হয়। এরপর দু’একটা ছোট বড় মার্কেট, দুটি গার্লস স্কুল, দুটি বয়েজ এন্ড গাল্স স্কুল এবং দু তিনটা প্রাইমারি স্কুল, কে. জি স্কুল আর ছোট- ছোট দোকান-পাট পিছন ফেলে ইনস্টিটিউটে যেতে হয়। যাচ্ছি প্রায় এক মাসের মত হয়ে গেছে। হঠাৎ একদিন দেখি একটা লোক গলির মোড়ে দাড়িয়ে, এরপর থেকে প্রায়ই বাম দিকে মোড় নেয়ার আগে অপজিটে দাড়ানো লোকটাকে দেখি। একদিন দুদিন করে অনেক দিন গেল লোকটাকে ফলো করতাম। দু একদিন ছাড়া সবদিন ই তাকে পেতাম। কে ওই লোকটা, কেনোই বা সে এখানে দাঁড়িয়ে থাকে এসব জানতে আগ্রহ বেড়ে গেল, কিন্তু কোন ভাবেই জানতে পারছি না, ইচ্ছে হচ্ছে তাকে জিজ্ঞেস করতে সাহসেও কুলায় না। রাস্তায় অসহায়ের মত দাড়িয়ে থাকে, দেখে বড় মায়া হয়।যেদিন ইনস্টিটিউটে যেতে রাস্তায় ওকে দাঁড়িয়ে থাকতে না দেখি সেদিন মন খারাপ হয়ে যায়। বাসায় এসে সারা বিকেল ধরে জানালার পাশে আনমনে খুলা আকাশের দিকে চেয়ে বসে থাকি আর ভাবতে থাকি “লোকটার জন্য খারাপ লাগে কেন”? অবশেষে যখন একঝাক পাখি কিচিরমিচির ডেকে পশ্চিমাকাশের দিকে উড়ে যায় তাদের গন্তব্যে তখন স্বম্বিৎ ফিরে আসে। একদিন দুদিন করে প্রায় এক মাস কেটে গেল, লোকটার দেখা নেই। গলির মোড়ে এলেই মনে পড়ে ওর কথা কিন্তু তার দেখা পাবো আশা ছেড়ে দিয়েছি অনেক কষ্টে। মনে মনে ভেবে নিয়েছি হয়তো বেড়াতে এসেছিল ধারে কাছে কারো বাসায় এখন চলে গেছে। অনেক সময় হিজিবিজি কথা বলে মানুষকে ফাঁকি দেয়া যায় কিন্তু নিজের মনের সাথে নিজে আবছায়ার মতো থাকা যায় না, তাই পজিটিভ চিন্তা করে মনকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করা হয়।

ভালো লিখেছেন কবি