কোয়ান্টাম কম্পিউটার ও কম্পিউটেশন

কোয়ান্টাম কম্পিউটেশন সম্পর্কিত কিছু কথা

0

কোয়ান্টাম কম্পিউটেশন এখন বেশ আলোচিত এবং আকর্ষণীয় একটি বিষয়। এটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি না, তবে প্রাথমিক কিছু ধারণা দিতে চলেছি যেটি সবার কাছেই বোধগম্য হবে বলে আশা করছি।

এই কম্পিউটেশন এর পেছনে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ধারণা কাজ করে। আগে ছিল বিট এর হিসাব আর কোয়ান্টাম কম্পিউটারে চলে আসে কিউবিট এর হিসাব

বিট এবং বাইট

আমরা সবাই জানি – কম্পিউটার হিসাব করে ০ আর ১ দিয়ে। অনেকেই লজিক গেট নিয়ে পড়াশোনা করেছেন- AND Gate, OR gate, Not gate- এগুলোতে ইনপুট হিসেবে ০ এবং ১ ব্যবহার করা হয় এবং ফলাফল হিসেবে বিভিন্ন আউটপুট পাওয়া যায়। আমরা যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করি সেগুলোতে বিট ব্যবহার করা হয়। ৮ বিটে ১ বাইট, ১০২৪ বাইটে ১ কিলোবাইট, ১০২৪ কিলোবাইটে ১ মেগাবাইট। এইসব হিসাব মোটেও আমাদের অজানা নয়।

কোয়ান্টাম কম্পিউটেশন এর ক্ষেত্রে কিভাবে হিসাবটা হয়?

এটাই আমাদের মূল প্রশ্ন। এক্ষেত্রে বিট দিয়ে হিসাব করা হয় না, এর বদলে হিসাবটা করা হয় কিউবিট(qbit) দিয়ে। কিউবিটের ক্ষেত্রে কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যার দুটি ধারণা সুপারপজিশন এবং এন্টেঙ্গেলমেন্ট কে বিবেচনা করা হয়।

০ এবং ১ এর বদলে ০ কিংবা ১ থাকার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করা হয়। ব্যাপারটা হয়ত এখন আগের চেয়ে জটিল মনে হচ্ছে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার মূলত তৈরি হয় কোয়ান্টাম মেকানিক্সের উপর ভিত্তি করে। সুপারপজিশন এবং এন্টেঙ্গেলমেন্ট সম্পর্কে ধারণা দেই-

সুপারপজিশনঃ একই সাথে একটি কণা বিভিন্ন অবস্থায় থাকতে পারে। যেমনঃ ইলেকট্রনের স্পিন, এঙ্গুলার মোমেন্টাম ইত্যাদি। স্পিনের ক্ষেত্রে স্পিন আপ এবং ডাউন এই দুটি স্পিন থাকে। দুইটারই সম্ভাবনা আছে, আমরা জানি না কোনটা হবে।

এন্টেঙ্গেলমেন্টঃ এই ব্যাপারটা ভৌতিক, অস্বাভাবিক এবং অবাক হওয়ার মতো। Entangled কণাগুলো একটি অপরটির সাথে জড়িত। দুটি কণাকে যদি পৃথিবীর দুই প্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে আলাদাভাবে প্রত্যেকটির স্পিন আপ এবং ডাউন যেকোনটি হতে পারে। কিন্তু একটির স্পিন যা হবে সেটির উপর অপরটির স্পিন নির্ভর কর, যেন তারা কোনভাবে কানেক্টেড। কেন এই ঘটনা ঘটে কেউ জানে না, কিন্তু ঘটে এটা সত্যি।

কোয়ান্টাম কম্পিউটার এই বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করে কাজ করে। এখনকার কম্পিউটারগুলোতে যে Encryption পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, সেগুলো হ্যাক করা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের জন্য ডালভাত। আর, Quantum Encryption পদ্ধতিতে তথ্য এখনকার চেয়ে অনেক বেশী নিরাপদ থাকবে।

 

আইনস্টাইন কিন্তু কোয়ান্টাম ফিজিক্স সহজে মানতে পারতেন না, অস্বীকার করার মত ভালো যুক্তিও তার কাছে ছিলো না। Daniel M.Greenberger বলেছেন,

“আইনস্টাইন বলতেন, যদি কোয়ান্টাম মেকানিক্স সত্যি হয়ে যেত, তাহলে পুরো পৃথিবী পাগল হয়ে যেত । আইনস্টাইনই ঠিক, পৃথিবী পাগল হয়ে গেছে”

আগ্রহ থাকলে পড়তে পারেন-

 

তথ্যসূত্রঃ

  1. https://en.wikipedia.org/wiki/Quantum_computing
  2. https://en.wikipedia.org/wiki/Quantum_entanglement
  3. https://jqi.umd.edu/glossary/quantum-superposition

 


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

প্রবন্ধ লেখক

Author: প্রবন্ধ লেখক

বিভিন্ন বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার চেষ্টা করছি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

প্রোটিনের কাজ ও উপকারিতা

খাদ্যের মধ্যে যেগুলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পাদন করে শরীরকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখে তাদের পুষ্টি উপাদান বা
ইলেকট্রিক ওভেন ব্যবহারের নিয়ম- লেখক ডট মি

ইলেকট্রিক ওভেন ব্যবহারের ১০ টি নিয়ম

ইলেকট্রিক ওভেন কি? ইলেকট্রনিক ওভেন হল একটি বৈদ্যুতিক উপকরণ যা খাবার তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এই ওভেনে খাবারগুলি কমপক্ষে
DALL·E 2023 01 24 01.26.37 Human Life Cycle Stages photo

মানব জীবন চক্র পর্যায়

মানুষের জীবনচক্র হল পর্যায়গুলির একটি সিরিজ যা একজন মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যায়। এই পর্যায়ের মধ্যে রয়েছে প্রসবপূর্ব বিকাশ,
DALL·E 2023 01 24 01.34.15 Painting on statistics subject

সিদ্ধান্ত গ্রহণে পরিসংখ্যান

পরিসংখ্যান হল গণিতের একটি শাখা যা তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা, উপস্থাপনা এবং সংগঠন নিয়ে কাজ করে। এটি বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা

One Reply to “কোয়ান্টাম কম্পিউটেশন সম্পর্কিত কিছু কথা”

Leave a Reply