হেনরি লুই ডিরোজিও- লেখক ডট মি

হেনরি লুই ডিরোজিওর জীবনী

0

হেনরি লুই ডিরোজিও ১৮০৯ সালের ১৮ই এপ্রিল কোলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার ছিলেন পর্তুগিজ এবং মা ছিলেন বাঙালি।

ডিরোজিওর স্কুলের প্রধান শিক্ষকের নাম ড্রামন্ড ছিলেন প্রগতিবাদী,সংস্কারমুক্ত অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমৃদ্ধ মানবতাবাদী অত্যন্ত নিষ্ঠাবান শিক্ষক। এই শিক্ষকের আদর্শ ডিরোজিওকে তার শিশুকাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রভাবিত করে রেখেছিল।

যে কারণে পরবর্তী কালে তিনি হতে পেরেছিলেন ♔ রাজা রামমোহন রায়ের যোগ্য উত্তর সূরি।

তিনি ছিলেন “রেনেসাঁ” যুগে বাঙালি যুব সমাজের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘ইয়াং বেঙ্গল ‘আন্দোলনের প্রবক্তা।

বয়সে তরুণ হলেও তিনি ইতিহাস, ইংরেজি, সাহিত্য, দর্শন শাস্ত্রে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।তার দূরদৃষ্টি,বাগ্নিতা ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা তরুণ সমাজকে ব্যাপক প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছিল।

উনিশ শতকের প্রথমার্ধ জুড়ে ছিল রাজা রামমোহন রায়ের আন্দোলনের ধারা। দৃঢ়ভাবে সে ধারাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল হিন্দু ধর্ম কলেজের প্রতিভাবান ছাত্র বৃন্দ,ইয়ং বেঙ্গল আন্দোলনের মাধ্যমে।

যার নেতৃত্বে ছিলেন হিন্দু ধর্ম কলেজের তরুণ অধ্যাপক হেনরি লুইস ডিরোজিও। তিনি তার ছাত্র – অনুসারীদের স্বাধীন মতামত ব্যক্ত করার শিক্ষা দেন।

হেনরি লুই ডিরোজিও ছিল ইয়াং বেঙ্গল মুভমেন্টের একজন। তিনি ইয়াং বেঙ্গল আন্দোলনের সদস্যরা এ দেশবাসীকে বারবার এ কথাই বোঝাতে চেয়েছে যে,তারা ব্রিটিশ কর্তৃক শাসিত ও শোষিত হচ্ছে।

এই কারনে এ-ই তরুণরা ভারত বাসীর স্বার্থ বিরোধী সব কাজের ঘোর বিরোধিতা করেছে।

উদাহরণ সরুপভাবে যেমন – প্রেস আইন, মরিশাসের ভারতীয় শ্রমিক রপ্তানি, ভারত বাসীর স্বার্থের প্রতি উদাসীন ১৮৩৩ সালের চার্টার আইন এদের দ্বারা তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে।

তরুণ সমাজের পুরোনো ধ্যান ধারণা পাল্টে দিতে ডিরোজিও কর্তৃক ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠিত একাডেমি অ্যাসোসিয়েশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

একাডেমিতে তরুণদের এই শিক্ষা দেওয়া হয়েছে যে,যুক্তিহীন বিশ্বাস হলো মৃত্যুর সমান। নতুন চিন্তা ধারায় প্রভাবিত তরুণরা সনাতন পন্থী হিন্দু এবং গোঁড়া পন্থী খ্রিস্টান দের ধর্ম বিশ্বাসেও আঘাত হানে।

যার ফলে এরা ডিরোজিও এবং তার একাডেমির সদস্যদের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়।

১৮৩০ সালে ডিরোজিওর অনুপ্রেরণায় হিন্দু ধর্ম কলেজের ছাত্ররা “পার্থেনন” নামে একটি ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করে।

এতে সমাজ, ধর্ম, বিভিন্ন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিন্দাসূচক সমালোচনা প্রকাশিত হতে থাকলে কলেজ কর্তৃপক্ষ এটি বন্ধ করে দেয়।

তিনি ১৮৩১ সালে “হিসপাবাস” নামক একটি প্রত্রিকা সম্পাদনা এবং “ইস্ট ইন্ডিয়া ” নামের একটি দৈনিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।

ঐ বছরই ডিসেম্বরে মাত্র তেইশ বছর বয়সে হেনরি লুই ডিরোজিও  ইন্তেকাল করেন।

ইন্তেকালের পরে ও তার প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে চলতে থাকে তার হাতে গড়া অনুসারীরা। ডিরোজিওর মৃত্যুর পর তার অনুসারী ছাত্ররা বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখতে থাকে।

তাদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছিলেন রামতনু লাহিড়ী, রাধানাথ সিকদার, কৃষ্ণমোহন ব্যানার্জি প্রমুখ।

মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর ছাত্র না হলে ও তার আদর্শ দ্ধারা গভীর ভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন।

ডিরোজিওর অনুসারীদের আন্দোলন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে ও প্রভাবিত করেছিলেন।

 

আরো পড়ুন-

 


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর প্রকৃত নাম ঈশ্বরচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়। তবে, তিনি স্বাক্ষর করতেন ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা নামে। বিদ্যাসাগর উপাধিটি সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে
হযরত আবু বকর রা. এর জীবনী

হযরত আবু বকর (রা.) এর জীবনী

হযরত আবু বকর (রা.) সিদ্দিক, যার সম্পর্কে বলা হয়, "বাদল আম্বিয়া, আশরাফুল নাস"- অর্থাৎ নবি-রাসুলের পরে, মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হচ্ছেন
ইমাম আবু হানিফা (রহ.) এর জীবনী- লেখক ডট মি

ইমাম আবু হানিফা (রহ.) জীবনী

  ইসলাম হচ্ছে একমাত্র মহা সত্য ধর্ম। যেখানে প্রতিটি মুসলমানকে ইসলামের নানান নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়। রাসুলুল্লাহ সা. পরবর্তীতে যে

লেখক যোগীন্দ্রনাথ সরকারের জীবনি

(more…)

Leave a Reply