বাংলা সাহিত্যের ৭টি উপন্যাস

2

বাংলা সাহিত্যের ৭টি উপন্যাস:

বাঙালি মাত্রই বই প্রিয়। বই পড়তে কার না ভালো লাগে। আমাদের হয়তো একাডেমিক বই পড়তে ভালো লাগে না, তবে যদি বইটি হয় উপন্যাস- সাহিত্য-কিংবা গল্পের বই তবে বাঙালি এগিয়ে থাকবে সবার আগে। বাঙালিরা উপন্যাস পড়তে ভালোবাসে, উপন্যাস রচনা করতে ভালোবাসে। যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয় বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে সেরা উপন্যাস কোনটি? তবে এর উত্তর হয়তো দেওয়া সহজ হবে না। কারণ, বাংলা সাহিত্যের উপন্যাস গুলো একটি থেকে একটি সেরা। তবে আমি আজ পাঁচটি উপন্যাসের কথা বলতে চাই; যে উপন্যাসগুলো আমি পড়েছি।

১.অসমাপ্ত আত্মজীবনী:(লেখক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান)

বিপদের মাঝে কঠিন মনোবল, দুঃখের মাঝে হাসি, অসম্ভব ধৈর্য, ব্যক্তিগত জীবন ও পরিবারকে বেশি প্রাধান্য না দিয়ে দেশের ও দশের জন্য আত্মত্যাগ, শোষকদের কাছে মাথা না নোয়ানোর মানসিকতা আমি তার উপন্যাস হতে পেয়েছি। তিনি মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

২.মৃত্যুক্ষুধা:(কাজী নজরুল ইসলাম)

লেখক এতে তুলে ধরেছেন, তৎকালীন দারিদ্র্য, ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপট।নারী জীবনের দুবির্ষহ অন্ধকার এবং সমাজের বাস্তবচিত্র এই উপন্যাসে তুলে ধরা হয়।

৩. লালসালু (সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ):

ধর্মভীরু গ্রামীণ মুসলিম সমাজে এক কল্পিত মাজারকে পুঁজি করে এক চতুর ধর্মব্যবসায়ী কীভাবে প্রতিষ্ঠা পায়, স্বার্থহাসিলের তাগিদে গড়ে তোলে পাপের সাম্রাজ্য তারই আলেখ্য চিত্রিত হয়েছে এ উপন্যাসে।

৪. নৌকাডুবি: (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)

গল্পের নায়ক যখন বিয়ে করে বাড়ি ফিরছিলেন নৌকায় করে সেইদিন আরও কয়েকটি বিয়ের নৌকা নদীতে আসছিল, কিন্তু, হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগে নৌকা ডুবে যায়। যখন নায়ক জ্ঞান ফিরে পায় তখন অনতিদূরে একজন পত্নীকে দেখতে পান, কিন্তু তখনকার দিনে আগে থেকে পত্নীকে দেখার নিয়ম ছিল না, তাই ওই পত্নী কি তার বিয়ে করা পত্নী নাকি এই পত্নী অন্য কোনো নৌকার যাত্রী ছিল?? এটা বুঝতে পুরো উপন্যাস পড়তে হবে। ভাষা শৈলী , রোমান্টিকতা, এবং কিছুটা মনস্তাত্বিক ধরনের লেখা আপনি এক নিশ্বাসে শেষ করতে চাইবেন।

৫.মধ্যাহ্ন:(হুমায়ুন আহমেদ)

বাস্তবতার সঙ্গে অসম্ভবের সন্ধি হুমায়ূন আহমদের প্রিয় কৌশল যা মধ্যাহ্ন উপন্যাসেও লেখক দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করেছেন। নানা অলৌকিক ও আধিভৌতিক কাহিনীকণাকে বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রশ্রয় দিয়ে লেখক প্রমাণ করেছেন তিনি জাদু বাস্তবতার দক্ষ কারিগর। অন্যান্য অনেক রচনার মতো এ উপন্যাসেও অসম্ভবের বহুবর্ণ উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। নিঃসন্দেহে ‘মধ্যাহ্ন’ লেখকের সেরা উপন্যাস এর মধ্যে অন্যতম প্রধান উপন্যাস এটি।

৬.চাঁদের পাহাড় :(বিভূতিভূষণ বন্দ্যাপাধ্যায়)

দুঃসাহাসিক, রোমাঞ্চকর, অভিযাত্রিক কাহিনী যারা পড়তে ভালবাসেন বা আগে পরেননি “চাঁদের পাহাড়” তাদের জন্য অত্যন্ত রোমাঞ্চর একটি সেরা উপন্যাস। উপন্যাসটি পড়ার সময় প্রতিটি লাইনে প্রতিটি মুহুর্তে এই উপন্যাসের নায়ক শঙ্করের সহযোদ্ধা মনে হবে। এই উপন্যাসের মাধ্যমে স্বপ্নের সত্যতা অনুসন্ধান, ভাগ্যের বিপর্যয়, প্রকৃতির প্রতিকূলতার সাথে প্রতিনিয়ত মানুষের যে লড়াই, যে সাহস, ধৈর্য্য, আত্মপ্রত্যয় ও বীরত্বের নিকট পরাজিত হতে পারে সকল প্রতিকুলতা। উপন্যাসটি পড়ে আফ্রিকার অনেক জানা- অজানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জন্তু-জানোয়ার, পাহাড়-পর্বত, মরুভূমি ইত্যাদি সম্পর্কে এমন জানা যাবে যেন পাঠক এক রুদ্ধঃশাস অভিযান করে আসছে। অসাধারণ এই উপন্যাসটি না পড়ে না থাকলে অবশ্যই পড়া উচিত।

৭.পদ্মানদীর মাঝি : (মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়)

এই উপন্যাসটি নিম্নবিত্ত জেলেদের জীবনোপাখ্যান। উচ্চ মাধ্যমিকে পাঠ্য ছিলো। কুবের মাঝি, তার স্ত্রী মালা, শ্যালিকা কপিলা, রহস্যময় চরিত্র হোসেন মিয়া প্রভৃতি চরিত্র সব সময় বাস্তব মনে হয়, সাহিত্য ভালোবাসেন কিন্তু পদ্মানদীর মাঝি পড়েননি,এমন একজনও বাঙালি বোধ হয় খুজে পাওয়া যাবেনা । এটি একটি সেরা উপন্যাস।

এই উপন্যাস গুলো অত্যন্ত সাবলীল ও সুন্দর ভাষায় লেখা হয়েছে। ছোট বড় যে কারো এই উপন্যাস গুলো করতে ভালো লাগবে। স্বাধীনতা-সংগ্রাম, ভালোলাগা, ভালোবাসা- রোমান্টিকতা,আবেগ-মানবিকতা, সাহসিকতা, দেশপ্রেম, কুসংস্কার,গ্রামীণ জীবনের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এই উপন্যাস গুলোতে। উপন্যাস গুলো পড়ে আমরা অনেক কিছু জানতে পারবো। তাই আমি মনে করি, প্রত্যেকটি মানুষের একবার হলেও উপন্যাস গুলো পড়া উচিত।

 


আরো পড়ুন-


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

2

Afroza

Author: Afroza

Assalamualaikum

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

ইসলামী জীবন

ইসলামী জীবন মোঃ রুহুল আমিন ইসলামের মূল স্তম্ভ গুলো মেনে জীবন গড়ি, ঈমান মজবুত করে মুসলিম সঠিক পথটা ধরি। ঈমান

কবিতা দুফোটা মায়া অশ্রু আফছানা খানম অথৈ

কবিতা দুফোঁটা মায়া অশ্রু আফছানা খানম অথৈ স্বামী চলে গেলে বহু দূরে বিদায়কালে রেখে গেলে দুফোঁটা মায়া অশ্রু। আঁচলে বেঁধে

কবিতা দান আফছানা খানম অথৈ

  কবিতা দান আফছানা খানম অথৈ রোজা এলে দানের দুয়ার খুলে হাজার গুন, কিছু একটু দিলে পরে সেলফি তোলেন খুব।

ঈদ আনন্দ

ঈদ আনন্দ মোঃ রুহুল আমিন ঈদ এসেছে রোজার শেষে খুশি সবার মাঝে, সবাই রইবে নতুন জামায় পরে খুশির সাজে। ঈদের

3 Replies to “বাংলা সাহিত্যের ৭টি উপন্যাস”

Leave a Reply