আসুন, আমরা পরোপকারী হই

2

পরোপকার একটি মহৎ গুণ। এটি প্রিয় নবী (সা.) এর সুমহান আদর্শ, খাঁটি মোমিন-মুসলমানের পরিচয়। মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, ‘আমার ইবাদতের জন্যই আমি মানুষ ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা জারিয়াত : ৫৬)। ইবাদত শুধু নামাজ, রোজা, হজ, জাকাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা মোমিন বান্দার সব কাজই ইবাদত। পরোপকারও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। হজরত হাসান (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘আমার উম্মতে বহু লোক নামাজ ও রোজার আধিক্যের কারণে জান্নাতে যাবে না। বরং আল্লাহ তায়ালা তাদের অন্তরের পরিশুদ্ধতা, আন্তরিকতা ও দানশীলতা ও সব মুসলমানের প্রতি দয়ার্দ্র হওয়ার কারণে তাদের প্রতি করুণা করবেন। ফলে তারা জান্নাতে যাবে।‘ (তাম্বীহুল গাফেলীন)। পরোপকার হচ্ছে অন্যের উপকার করা। এর মধ্যে ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী সবাই অন্তর্ভুক্ত।

বিপদে-আপদে, বালা-মুসিবতে একে অন্যের উপকার করবে, সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবেÑ এটা ঈমানের অপরিহার্য দাবি। এরশাদ হচ্ছে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা ন্যায়পরায়ণাতা, সদাচরণ এবং আত্মীয়স্বজনকে দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, অসংগত কাজ ও অবাধ্যতা করতে নিষেধ করেন।’ (সূরা আন নাহল : ৯০)। মুসলিম শরিফের হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের সঙ্গে সদয় ব্যবহার ও দয়া করে না, আল্লাহ তায়ালাও তার সঙ্গে সদয় ব্যবহার ও দয়া দেখাবেন না।’ আমাদের প্রিয় নবী (সা.) পরের উপকার করতে পারলে খুব আনন্দিত হতেন। অপরের দুঃখে তিনি দুঃখিত হতেন। কারও চোখে পানি দেখলে তিনি কেঁদে দিতেন।
মিরাজ রজনীতে প্রিয় নবী (সা.) মহান আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে দিদার করে যখন পবিত্র মক্কা শরিফে গমন করেন, তখন ছিল গভীর রাত। হঠাৎ দূর থেকে কারও কাঁদার শব্দ শুনে ব্যথিত মনে এগিয়ে গেলেন মহানবী (সা.)। তিনি কাছে গিয়ে দেখেন জীর্ণশীর্ণ এক মহিলা একটি বোঝা নিয়ে রাস্তার পাশে বসে কাঁদছে। কাঁদার কারণ জেনে প্রিয় নবী (সা.) নিজেই মহিলার বোঝাটি মাথায় তুলে নিয়ে ইহুদি মনিবের বাড়িতে পৌঁছে দিলেন। প্রিয় নবী (সা.) এর মহানুভবতা, পরোপকার দেখে ইহুদি নেতাসহ গোত্রের সবাই কলেমা পড়ে মুসলমান হয়ে গেল।
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মজলুমকে সাহায্য করবে, আল্লাহ তায়ালা তার জন্য ৭৩টি মাগফিরাত লিপিবদ্ধ করবেন। সেসবের মধ্যে একটি মাগফিরাত হলো তর সব কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন; আর ৭২টি মাগফিরাত হলো কেয়ামতের দিন তার মর্যাদা বৃদ্ধির উপকরণ।’ ( বায়হাকি ও মিশকাত)।
পরোপকারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন। পরোপকারের মাধ্যমে মানবজীবনে পূর্ণতা আসে। আজকের এ অশান্ত পৃথিবীতে যদি শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাই, তাহলে আমাদের উচিত ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এ মহৎ ও উত্তম গুণটি বাস্তবায়ন করা।

 


আরো পড়ুন-


 


56
বিজ্ঞাপনঃ মিসির আলি সমগ্র ১: ১০০০ টাকা(১৪% ছাড়ে ৮৬০)

2

আবু জাফর মহিউদ্দীন

Author: আবু জাফর মহিউদ্দীন

কবিতা লিখি, কবিতা ভালোবাসি

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

হযরত আলী (রা:) এর জীবনী

হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (রাঃ) ছিলেন ইসলামের ইতিহাসে এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, যিনি সাহস, জ্ঞান, ন্যায়বিচার এবং তাকওয়ার জন্য সুপরিচিত।

খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজের নসিহত : একটি চিরন্তন আদর্শ ও বর্তমান উম্মাহর বাস্তবতা

ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে খলিফা ওমর বিন আবদুল আজিজ একটি যুদ্ধের প্রাক্কালে তার সেনাপতি মানসুর বিন গালিবের উদ্দেশ্যে একটি উপদেশপূর্ণ

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

Leave a Reply