হযরত উসমান (রা.) এর জীবনী   

2

 

হযরত উসমান (রা.) হলেন মুসলিম জাহানের তৃতীয় খলিফা। যার জীবনী কখনো লিখে শেষ করা যাবে না। তাঁর জীবনের বিভিন্ন বাঁক নিয়ে বলতে গেলেও কলমের কালি শুকিয়ে যাবে। আজ আমরা তাঁর জীবনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।  

হযরত উসমান (রা.) জন্ম 

হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা.), মক্কার ঐতিহ্যবাহী কুরাইশ বংশের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে আনুমানিক ৫৭৯ খ্রিঃ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ইসলামি শাসনামলের তৃতীয় খলিফা। তাঁর খিলাফতের মেয়াদ ছিলো ৬৪৪ খ্রিঃ থেকে ৬৫৬ খ্রিঃ পর্যন্ত। তিনি চারজন খোলাফায়ে রাশেদিনের একজন। একইসাথে তিনি আশারায়ে মুবাশশারারও একজন। শুধু তাই নয় তিনি সেই ছয় সাহাবীদের অন্তর্ভূক্ত যাদের উপর মুহাম্মদ (সা.) সন্তুষ্ট ছিলেন। তাঁর পিতা ছিলেন আফফান ইবনে আবি আল-আস এবং মাতা হচ্ছেন আরওয়া বিনতু কুরাইজ। তিনি ৮২ বছর বয়সে ইসলামের মুনাফিক বিদ্রোহীদের হাতে ১৭ জুন ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু বরণ করেন। 

হযরত উসমান (রা.) এর স্ত্রী

উসমান (রা.) ছিলেন প্রথম ইসলাম গ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন খুবই লাজুক প্রকৃতির এবং তাঁর ব্যবহার ছিলো অমায়িক। হযরত উসমান (রা.) এর স্ত্রী সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কারো মতে ছয়টি আবার কারো মতে আটটি। তাঁর স্ত্রীদের নাম হলো,

  • রুকাইয়া বিনতে মুহাম্মদ। তার গর্ভে আব্দুল্লাহ (রা.) নামে একজন পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করেন।
  • উম্মে কুলসুম বিনতে মুহাম্মদ।  রুকাইয়া (রা.) এর মৃত্যুর পরে উসমান (রা.) তাকে বিয়ে করেন।
  • ফাখতা বিনতে গাজওয়ান (রা.)। তিনি ছিলেন আমির উতবা ইবনে গাজওয়ানের বোন। তার সন্তান হচ্ছেন আব্দুল্লাহ আল আসগার (রহ.)। 
  • উম্মে আমর বিনতে জুনদুব আল আজদিয়া (রা.)। তার সন্তান হচ্ছে আমর, খালিদ, আবান, উমর ও মারইয়াম (রহ.)। 
  • ফাতিমা বিনতে ওয়ালিদ ইবনে আবদুস শামস। তার সন্তান হচ্ছেন ওয়ালিদ, সায়িদ, উম্মু সাআদ (রহ.). জন্মগ্রহণ করেন।
  • উম্মুল বানিন বিনতে উয়াইনা (রহ.)। তার গর্ভে আব্দুল মালিক (রহ.) জন্মগ্রহণ করেন। 
  • রামলা বিনতে শায়বা (রহ.)। তার সন্তান হচ্ছে আয়েশা, উম্মে আবান, উম্মে আমর (রহ.)। 
  • নায়লা বিনতে ফুরাফিসা। তিনি বিয়ের সময় খৃষ্টান ছিলেন। কিন্তু পরে মুসলমান হয়ে বাকী জীবন অতিবাহিত করেন।

হযরত উসমান (রা.) এর মোট সন্তান ছিলেন ১৬ জন। তাদের মধ্যে ৯ জন ছেলে এবং ৭ জন মেয়ে। (সূত্রঃ উসমান ইবনু আফফান (রা.)। পৃষ্ঠা ৩৩-৩৬)

হযরত উসমানের শাসন পদ্ধতি

প্রথম দুই খলিফার চাইতে হযরত উসমান বেশী বৃদ্ধ বয়সে খিলাফতের আসনে বসেন। যে কারণে পূর্বের দুই খলিফার শাসন পদ্ধতির সাথে উসমান (রা.) এর শাসন পদ্ধতির অনেক দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। বিশেষকরে খলিফা উসমান (রা.) ছিলেন আত্মীয়স্বজনদের প্রতি অসম্ভব বেশী দুর্বল। 

তবুও দায়িত্ব পাওয়ার সাথেই হযরত উসমান (রা.) ঘোষণা দেন কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা হবে। একইসাথে তার পূর্ববর্তী দুই খলিফার নিয়মানুযায়ী সব চলবে। তিনি সবসময়ই দায়িত্বপ্রাপ্তদের বলতেন,

“আল্লাহকে ভয় করুন, অন্যায় থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখুন, দুর্বলের প্রতি অত্যাচার করবেন না।” (তারিখ আর তাবারি,৪/৪১৪)

একইসাথে নিম্মলিখিত নীতির ভিত্তিতে তিনি রাজ্য পরিচালনা করার চেষ্টা করেছিলেন, 

  • রাজস্ব আদায় ও জনগণের সুযোগ সুবিধা সমন্বয় করা। 
  • বাইতুল মাল থেকে জনগণের ন্যায্য   প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়া। 
  • অনৈতিক আর্থিক লেনদেন প্রতিহত করা।

বিচার ব্যবস্থার প্রতি তিনি ব্যবপক নজর দিয়েছিলেন। ইবনে উমর অব্যাহতি চাইলে তাকে তিনি অব্যাহতি দিয়েছেন। আদালতকে দিয়েছেন একটি প্রাতিষ্ঠানিক রুপ। সেখানে প্রসিদ্ধদের বিচারকদেরই তিনি  নিয়োগ দিতেন। সেই সময়ে কয়েকজন চোরের মৃত্যুদন্ডও হয়েছিল। অর্থের লোভে একজন ব্যবসায়ী হত্যা হলে তাকেও হত্যার আদেশ দেয়া হয়। ডাকিনিবিদ্যার জন্য ব্যাপক শাস্তি নির্ধারণ হয়েছিল। মুরতাদকে তওবা করার সুযোগ দিতেন। একবার  এক ছেলে চুরি করলে তিনি বললেন,

‘তার গোপনাঙ্গ পরীক্ষা করে দেখো।’ লোকেরা যখন দেখলো সে বালেগ হয়নি তখন উসমান (রা.) তার হাত কাটেননি। (সহীহ আল তাওসিক, পৃ ৭৭)

মোটকথা হযরত উসমান (রা.) প্রথম দিকে প্রশাসনিক ক্ষমতার সুষ্ঠ ব্যবহার করতে পারলেও, পরবর্তীতে বৃদ্ধ হওয়ার কারণে এবং আত্মীয়স্বজনের প্রতি তাঁর দুর্বলতা প্রকাশের ফলে ধীরে ধীরে তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যেতে থাকে। ফলে তিনি তাঁর কয়েকজন প্রসিদ্ধ আত্মীয়স্বজনের হাতের পুতুলে পরিনত হন। আর একারণেই তাঁর শাসন পদ্ধতিতে নানান দুর্বলতা প্রকাশ পেতে থাকে। যা তাঁকে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর মুখোমুখিতে দাঁড় করিয়ে দেয়।

হযরত উসমান (রা.) এর শাসনকাল

হযরত উসমান (রা.) খুব সহজেই যে খিলাফতের আসনে আসীন হয়েছেন, এমনটা কখনোই নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের পর থেকেই হযরত আলী (রা.) কে মসনদে বসানোর জন্য ব্যাপক তোড়জোড় হয়। যে বিষয়ে ইসলামি খিলাফতের শুরু থেকেই একদল বিদ্রোহ করে বসে।

যেকারণে হযরত উসমান (রা.) খলিফা হওয়ার সাথে সাথেই বড় ধরনের এক সমস্যার সম্মুখীন হন। ‘উবায়দুল্লাহ ইবনে উমার’ হযরত ফারুকে আজমের হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে কয়েকজন নাসারা ও মুনাফিক প্রকৃতির মুসলমানকে হত্যা করেন। যে বিষয়টি নতুন খলিফাকে খুবই বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিলো। যদিও কৌশলী খলিফা এই ঘটনাটিকে বেশীদূর আগাতে দেননি।

হযরত উসমান (রা.) খলিফা হওয়ার আগে থেকেই আরবে বনি হাশিম ও বনি উমাইয়ার বিরোধ চরম তুঙ্গে ছিলো। একইসাথে  কুরাইশ-অকুরাইশ দ্বন্দ্বও ছিলো চোখে পড়ার মতো। সেখানে আরও বড় সমস্যা সৃষ্টি করে মুহাজির-আনসার সম্প্রীতির ভাটা। গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো ছিলো ইবনে সাবার অপপ্রচার। এইসবের সাথে  অমুসলিমদের বিদ্বেষও তৎকালীন ইসলামি শাসনে বেশ সমস্যা সৃষ্টি করছিল।

যদিও খলিফা উসমান তাঁর শাসনকালের প্রথম ছয় সাত বছরের কার্যক্রমে তাঁর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। শুরুরদিকে খলিফা উসমান (রা.) রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, সামরিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে সাফল্য অর্জন করেন। তাঁর জনহিতকর কার্যক্রম সমাজের আদল পরিবর্তন করে দিয়েছিল। তিনি মদিনা শহর রক্ষাবাঁধ ‘মাহরু’ নির্মাণ করেন। খাল খনন করে কৃষিতে ব্যাপক উন্নতি সাধন করেন। পয়ঃপ্রণালী ও রাস্তাঘাট নির্মাণ করে জনগণের অত্যন্ত প্রিয় খলিফায় পরিণত হন। মসজিদে নববির আধুনিকায়ন করেন তিনি। তাঁর শাসনামলেই অর্থনৈতিক সচ্ছলতার কারণে মদিনার ঘরে ঘরে সুখ স্বাচ্ছন্দ্য ভরে গিয়েছিল।

কিন্তু খিলাফতের অষ্টম বছর থেকে হযরত উসমান (রা.) এর বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, কোরআন দগ্ধীকরণ, চারণভূমির রক্ষণাবেক্ষণ, আবুজর গিফারির নির্বাসন, বাইতুল মালের অর্থ অপচয় ইত্যাদি অভিযোগসহ নানান অভিযোগ আসতে শুরু করে। যা বৃদ্ধ উসমান (রা.) দমন করতে পারছিলেন না। তাঁর দুর্বলতার সুযোগ তাঁর আত্মীয়রাসহ বিদ্রোহীরাও নিয়েছিল। ফলে খিলাফতের শেষ কয়েকবছর তিনি একপ্রকার ক্ষমতাহীন হয়ে পড়েন।

এমন কিছু ঘটনা ইতিহাসবিদরা তুলে এনেছেন যা সত্যিই উসমান (রা.) সাথে কল্পনা করা যায় না। তাঁর জামাতা হারেস ইবনে হাকামকে তিনি তার বিয়ের দিন বাইতুল মাল থেকে দু’লাখ দিরহাম দিয়েছিলেন। যা তৎকালীন বাইতুল মালের কোষাধ্যক্ষ জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) মেনে নিতে পারেনি।

একবার তিনি জুবায়েরকে ছয় লাখ, তালহাকে দুই লাখ এবং মারওয়ান ইবনে হাকামকে আফ্রিকার এক পঞ্চমাংশ দিয়ে দেন। যা তৎকালীন সাহাবারা পছন্দ করেননি। এভাবেই তিনি তাঁর সমস্ত আত্মীয়স্বজনের বিভিন্নভাবে সুযোগ সুবিধা দিয়েছিলেন। যা তাঁর বিরুদ্ধে অসন্তোষের কারণ হিসাবে দেখা দেয়। 

তাঁর সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মধ্যে অন্যতম ব্যক্তি ছিলেন হযরত মুয়াবিয়া। যিনি তার শক্তি সমর্থ দিয়ে তার রাজ্যের সীমা বাড়িয়ে ফিলিস্তিন ও হেমসকেও তার অন্তর্ভুক্ত করে নেন। একইসাথে তিনি খলিফাকে ডিঙ্গিয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতেন যা অন্যান্য সাহাবীরা কখনোই পছন্দ করতেন না। শুধু তাই নয় বিভিন্ন সুবিধা লাভকারী এই সব আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে অন্যতম ছিলো হাকাম ইবনে আস, যাকে রাসুলুল্লাহ  (সা.) প্রত্যাখ্যাত করেছিলেন। একইসাথে তার পুত্র মারওয়ান ইবনুল হাকাম ও তার দুধভাই আবদুল্লাহ ইবনে সাদ ইবনে আবিচ্ছারাহ  ছিলেন উল্লেখযোগ্য। 

মারওয়ানকে তিনি নিজের প্রধান উজীরের পদে অধিষ্ঠিত করেন। আর এই মারওয়ান খলিফার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত ছিলো। বয়সের কারণে তিনি মারওয়ানের বিরুদ্ধে যেতে পারেননি এবং মারওয়ানও সেই সুযোগের পূর্ণ ব্যবহার করেছেন। 

হযরত উসমান (রা.) এর দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে যারা দেশ ও ইসলামের ক্ষতি করছিলো, তাদের বিরুদ্ধে বিশিষ্ট্য সাহাবারা সবসময়ই তাঁকে বুঝানোর চেষ্টা করতেন। কিন্তু বয়সের ভারে খলিফা দুর্বল হয়ে পড়ায় তিনি কারো বিরুদ্ধে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেননি। (তাবারী) 

এইসব কারণে হযরত উসমান পরবর্তীতে গণআন্দোলনের মুখে পড়েন। মোটকথা তাঁর শাসনামলে তিনি আত্মীয়স্বজদের সাথে সম্প্রতি রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। যার সুযোগ সেইসব আত্মীয়স্বজনরা নিয়েছেন। এবং তাদের কারণেই হযরত উসমান (রা.) এর বিরুদ্ধে অন্যান্যরা আন্দোলন করতে সুযোগ পায়। 

হযরত উসমান (রা.) এর দান

হযরত উসমান (রা.) এর দানের কথা ইসলামের ইতিহাসে সর্বজনবিদিত। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী। তাই তিনি যেকোনো প্রয়োজনে যেকোনো অবস্থায় দান করতে এক বিন্দুও চিন্তা করতেন না। একারণে তাঁর উপাধি হচ্ছে “আল গণি”, অর্থাৎ ধনী। তাঁর দানের বিভিন্ন ঘটনা আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পারি। 

‘মসজিদ-ই-নববীর’ জন্য জমি ক্রয়

হিজরতের পর রাসুল (সা.) সালাত আদায়ের জন্য যে মসজিদ সর্বপ্রথম নির্মাণ করেন তার নাম মসজিদে-নববী। যা আয়তনে ছোট ছিল। পরবর্তীতে মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে মসজিদে জায়গার সংকুলান হচ্ছিল না। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) ধনী সাহাবীদের আহবান জানালেন, যেন তারা মসজিদের জন্য তার আশেপাশের জায়গায় ক্রয় করে মসজিদকে দান করেন। 

এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে একদিন রাসুলুল্লাহ (সা.) সবাইকে উৎসাহ দিয়ে বললেন,

“কে আছে যে নিজ উপার্জিত সম্পদ দিয়ে এই জায়গাটা ক্রয় করবে? সে দুনিয়াতে তো অন্যান্য মুসলিমের মতোই থাকবে, তবে জান্নাতে তার জন্য উত্তম কিছুর ব্যবস্থা থাকবে।”

এটা শোনার পর হযরত উসমান (রা.) নিজ উপার্জিত অর্থ দিয়ে জায়গাটি ক্রয় করে মসজিদে-নববী বর্ধিত করার জন্য দান করেন। (মুসনাদে আহমদ ৫৫৫)

তাবুক যুদ্ধে সর্বাধিক খরচ  

হযরত উসমান (রা.) যেকোনো যুদ্ধে ও জিহাদে দানের ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে থাকতেন। বিশেষ করে তাবুক যুদ্ধে তাঁর দান ইতিহাসে আজও অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। হযরত উসমান রাঃ যাবতীয় খরচসহ পরপর পাঁচবারে হাওদাসহ ৯০০ উট, গদি ও পালান সম্বলিত ১০০ ঘোড়া, প্রায় সাড়ে ৫ কেজি ওজনের সমমান ১০০০ স্বর্ণমুদ্রা, প্রায় ২৯ কেজি ওজনের মতো ২০০ উক্বিয়া রূপার মুদ্রা দান করেন। একইসাথে যুদ্ধের ত্রিশ হাজার সৈন্যের এক তৃতীয়াংশ তথা দশ হাজার সৈন্যের ব্যয়ভার তিনি একাই গ্রহণ করেন ।(ফাজায়েলে সাহাবা, হাদিস : ৭৩৬)

পানিসংকটে কূপ ক্রয়

চরম দুর্দিনে মক্কার মুসলমানরা যখন মদিনায় হিজরত করে। তখন সেখানে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির তীব্র সংকট পড়ে যায়। সে সময় ‘বিরেরুমা’ বা রুমা কূপ নামে মদিনায় এক ইহুদির একটি বড় কূপ ছিল। সে চড়া দামে মুসলমানদের কাছে পানি বিক্রি করতে থাকে। যা মুসলমানদের জন্য খুবই কষ্টকর। 

বিষয়টি জানার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) ঘোষণা দিলেন,

“তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে, যে এই কূপ ক্রয় করে মুসলিমদের জন্য ওয়াকফ করে দেবে? আর এটা যে করবে আল্লাহ, তাকে জান্নাতে একটি ঝরনা দান করবেন।”

এই খবর শোনার পর হযরত উসমান (রা.) ৩৫ হাজার দিরহামের বিনিময়ে কূপটি ক্রয় করে রাসূলকে (সা.) বলেন, আমি কূপটি কিনে নিয়েছি এবং আজ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত এই কূপের পানি সমস্ত মুসলমানের জন্য উন্মুক্ত করে দিলাম। হযরত উসমানের কথাই আল্লাহ সত্য করে দিলেন। এখনও সেই কূপের পানি চলমান। (সিয়ারু আলামিন-নুবালা :২/৪৫২)

আলী (রা.) দুঃখের দিনের সাথী

যখন হযরত আলী বিবাহের সময় অর্থের অভাবে ছিলেন, তখন তিনি তাঁর বর্মটি বিক্রি করতে চাইলে হযরত উসমান সেই বর্মটি চারশত ষাট দেরহামে ক্রয় করেন। শুধু তাইনয়, বর্মটি উসমান (রা.) ক্রয় করলেও সেটি তিনি পুনরায় আলী (রা.) কে ফিরিয়ে দিয়ে মহত্ত্বের পরিচয় দেন। এমন হাজারো দানের উদাহরণ রয়েছে হযরত উসমান (রা.) জীবনে। 

চরম দুর্ভিক্ষে খাদ্য সহায়তা

প্রথম খলিফা আবু বকর (রা.)-এর সময়ে মদিনায় চরম অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। এতে  ফসল উৎপাদন না হওয়ার কারণে চরম খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এরইমধ্যে উসমান (রা.) এর সিরিয়ায় নিয়োজিত ব্যবসায়ীরা খাদ্যশস্য বোঝাই ১০০ উট নিয়ে মদিনায় হাজির হলেন। চরম দুর্ভিক্ষে এতো খাদ্যশস্য দেখে মদিনার ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবসার আশায় উসমান (রা.) এর কাছে বিভিন্ন লাভের অফার দিতে লাগলেন। কিন্তু তিনি কারো কথায় সাড়া না দিয়ে সরাসরি তার সকল খাদ্যশস্য মদিনাবাসীর জন্য সাদকা করে দিলেন। (উসমান বিন আফফান জিন্নুরাইন, মোহাম্মদ রেজা, পৃষ্ঠা ৩৬)

এক ফকিরের ভুল অনুধাবন 

এক নিঃস্ব গরিব লোক রাসুলের কাছে কিছু সাহায্য চাইল। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) নিকট কিছুই ছিল না। তিনি লোকটাকে হযরত উসমানের কাছে যেতে বললেন। কিন্তু লোকটি উসমান (রা.) এর কাছে গেলে, তিনি উসমান (রা.) এমন কিছু কর্মকান্ড দেখতে পেলেন, যাতে যেকেউ তাকে কৃপণ ছাড়া কিছুই ভাববে না। ফলে তিনি রাসুলের (সা.) দরবারে ফিরে গেলেন এবং বললেন হযরত উসমান কৃপণ প্রকৃতির লোক (নাউজুবিল্লাহ)। 

তারপরও রাসুল তাকে আবার তার কাছে যেতে বললেন। এভাবে নিঃস্ব লোকটি উসমান (রা.) গিয়ে বার বার বিভিন্ন কিছু দেখে ফিরে গেলেন। তিনবারের সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কথা স্বরণ করে লোকটি উসমান (রা.) এর কাছে গিয়ে কিছু সাহায্য চাইলেন এবং তার বেশ কয়েকবার আসা যাওয়ার কথাও বললেন।

এই কথা শুনে উসমান (রা.) তাকে কিছু দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তখনই সিরিয়া থেকে তার উট বোঝাই খাদ্যশস্যের কাফেলা হাজির হলো। তখন তিনি তাকে সেখান থেকে ভালো একটি উট বোঝাই খাদ্যশস্য নিতে বললেন।

লোকটির জন্য যে উট বাছাই করা হলো, সেটি খুবই তাজা, শক্তিশালী এবং কাফেলার প্রথমে থাকার কারণে কাফেলার বাকি উট গুলো সেই উটকে অনুসরণ করতে লাগলো। ফলে সেই উট কে কাফেলা থেকে আলাদা করা গেলো না। পরবর্তীতে এই খবর উসমান (রা.) জানতে পারলে, তিনি পুরো কাফেলা খাদ্যশস্য সেই লোকটিকে দিয়ে দিতে বললেন!

এই কথা শুনে ফকির লোকটি আশ্চর্য হয়ে গেলেন! কেননা যে ব্যক্তি সামান্য পয়সা বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন রকম কৃপণতা অবলম্বন করে। সেই ব্যক্তি কীভাবে এতো গুলো খাদ্যশস্য দান করতে পারেন! এরপর লোকটি উসমান (রা.) এর কৃপণতার কারণ গুলো জানতে চাইলেন যেগুলো তিনি বেশ কয়েকবার তাঁর বাড়িতে এসে তিনি দেখেছেন। 

হযরত উসমান (রা.) তাকে জানালেন,  আল্লাহ বিশ্বের সমস্ত সম্পদের মালিক, মানুষ হলো শুধুমাত্র পাহারাদার। সে শুধু আল্লাহর ইচ্ছানুসারে সম্পদ নিজের জন্য এবং সমাজের অন্যান্য ব্যক্তির উপকারের জন্য ব্যয় করতে পারবে। এটাই হলো হযরত উসমান (রা.) দানের ব্যপ্তি। (হাদীসের কিসসা-৪৫)

হযরত উসমান (রা.) এর শাহাদাত

ইসলামের ইতিহাসে হযরত উসমান (রা.) মৃত্যু খুবই হৃদয়বিদারক। তাঁর এমন মৃত্যু কেউ কখনো আশা করেনি। কিন্তু এমনটাই হবে সেটা অনেকেই আঁচ করেছিল। আমরা আগেই উল্লেখ করেছি, আরবরা ইসলামের আগে থেকেই ছিলো সংঘাত প্রিয়। যেকারণে ইসলাম আসার পরও বনি হাশিম ও বনি উমাইয়ার বিরোধ লেগেই ছিলো। একইসাথে  কুরাইশ-অকুরাইশ দ্বন্দ্ব, মুহাজির-আনসার সম্প্রীতি দোটানায় ধীরে ধীরে ইসলামি খিলাফতের আসন নিয়ে ব্যাপক ষড়যন্ত্র শুরু হয়।

সেই ষড়যন্ত্রের আগুনে ঘি ঢেলেছিল ইহুদী থেকে মুনাফিক মুসলিম হওয়া ইবনে সাবা। এ কথা সত্য যে, বৃদ্ধ বয়সে হযরত উসমান (রা.) খলিফা হওয়ার কারণে, অনেক বিষয়ে তাঁর একক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তদুপরি খুব দ্রুত ইসলামি সাম্রাজ্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সবখানে খলিফা তাঁর ক্ষমতার প্রয়োগ করতে পারেননি।

বিশেষ করে প্রতিটি জায়গায় অধিষ্ঠিত শাসনকর্তারা তাঁর আত্মীয় হওয়ার কারণে, অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলেও তাঁর স্বভাবসিদ্ধ কোমলতার কারণে তিনি তা কঠোর হস্তে দমন করতে পারেননি। একইসাথে অনেকেই মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাঁকে বিভ্রান্ত করারও চেষ্টা করেছেন। ফলে তিনি সর্বাবস্থায় নমনীয় ভাব বজায় রেখে যাবতীয় ঝুটঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে চেয়েছেন।

এরই সুযোগ নিয়ে উমাইয়া চক্রটি প্রভাব-প্রতিপত্তি ও শক্তি দিয়ে অত্যন্ত প্রবল ও মজবুত হয়ে উঠে। তারা সিরিয়াসহ অন্যান্য সকল রাজ্যে ক্ষমতা সু-সংহত করার সুযোগ লাভ করে। এছাড়া হযরত উসমানের অনুসৃত নীতির ফলে সম্পদের কেন্দ্রায়ন অতিমাত্রায় বেড়ে যায়। ফলে তার বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান করতে তাঁর বিরুদ্ধবাদীরা বেশ সুযোগ পেয়ে যায়।

উসমান (রা.) এর বিরোধীরা ছিলো মূলত আলী (রা.) সমর্থক। যারা ইসলামি খিলাফতের শুরু থেকেই আলী (রা.) কে খলিফা হিসাবে দেখতে চেয়েছিল। এই সমর্থকরাই হচ্ছে বর্তমান শিয়া সুফী সম্প্রদায়। যারা রাসুলুল্লাহ (সা.) এর পরে আলী (রা.) কে তাদের ধর্মীয় নেতা মনে করে।

আমাদের উপমহাদেশে যারা সুফি সুন্নি রয়েছে, তারা মূলত এই আকিদায় বিশ্বাসী। তাদের দাবি নবুওয়তের পর বেলায়েত শুরু হয়েছে আলী (রা.) থেকে। তাই তারা ইসলামের প্রথম তিন খলিফার প্রতি বিরাগভাজন। শুধু তাইনয়, তাদের দাবি রাসুলুল্লাহ (সা.) নাকি গাদিরে খুম নামক স্থানে আলী (রা.) কে পরবর্তী নেতাও ঘোষণা করে গেছেন।

এই হাদিসের আলোকে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের পর থেকেই আলী (রা.) এর এইসব সমর্থকরা প্রথম তিন খলিফাকে মেনে নিতে পারেনি। যদিও আলী (রা.) এইসব শিয়া সুফিদের কখনোই প্রকাশ্যে সমর্থন করেননি। তবুও এইসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা সর্বদা সুযোগ খুঁজেছে কীভাবে আলী (রা.) কে খলিফা করা যায়। 

যখন হযরত উসমান (রা.) বয়সের ভারে বৃদ্ধ এবং তাঁর আত্মীয়স্বজন দ্বারা মুষ্ঠিগত। তখনই এইসব বিদ্রোহীরা ইহুদীদের ষড়যন্ত্রে উসমান (রা.) কে হত্যা করতে উঠেপড়ে। শেষ পর্যন্ত মিসর, বসরা ও কুফার বিদ্রোহী গোষ্ঠী একত্রিত হয়ে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে মদিনায় ঐক্যবদ্ধ  হতে থাকে। হজ্ব উপলক্ষে অধিকাংশ মদিনাবাসী মক্কা চলে যাওয়ায় তারা এ সময়কেই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে।

তারা সরাসরি খলিফা উসমানকে পদত্যাগ করতে বলে। খলিফা পদত্যাগ অস্বীকার করলে তারা তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। একইসাথে তাঁর উপর চাপ প্রয়োগ করতে বিদ্রোহীরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে। হযরত উসমান (রা.) রক্তপাতের সম্পূর্ণ বিরোধী ছিলেন। বিশাল মুসলিম জাহানের খলিফা হিসেবে গুটিকয়েক বিদ্রোহীর কঠোর শাস্তিদানের পরিবর্তে তিনি তাদের দ্বারা অবরুদ্ধ থাকাটাই বাঞ্চনীয় মনে করলেন।  

হযরত আলী, তালহা ও জুবাইরের (রা.) ছেলেরা খলিফাকে নিরাপত্তা দিতে এগিয়ে আসে। তাদের দ্বারা গঠিত ১৮ নিরাপত্তারক্ষী বিপথগামী বিদ্রোহীদের ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। খলীফা উসমান (রা.) চাইলে  বিদ্রোহীদের দ্বারা ঘেরাও করে তাদের নির্মূল  করতে পারতেন। অন্যান্য শীর্ষস্থানীয়  সাহাবীরা এই বিষয়ে প্রস্তুতও ছিলেন। কিন্তু হযরত উসমান নিজের জন্য কোন মুসলমানের রক্ত ঝরাতে চাননি।

শেষপর্যন্ত নিরাপত্তা প্রহরীরা বিদ্রোহীদের  মোকাবিলায় ব্যর্থ হন। অবশেষে বিদ্রোহীরা  ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জুন হিজরি ৩৫ সনের ১৮ জিলহজ্জ শুক্রবার আসরের সালাতের পর ৮২ বছর বয়স্ক বৃদ্ধ খলিফাকে উসমান (রা.) কে অত্যন্ত বর্বরভাবে হত্যা করে। তিনি ১২ দিন কম ১২ বছর খিলাফতের দায়িত্বে অধিষ্ঠিত ছিলেন। জুুবাইর ইবনে মুতইম (রা.) তাঁর জানাজায় ইমামতি করেন। জান্নাতুল বাকিতে তাঁকে সমাহিত করা হয়। 

প্রশ্নোত্তর

জামিউল কুরআন কাকে এবং কেন বলা হয়?

ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান (রা.) কে জামিউল কুরআন বলা হয়। এই উপাধির অর্থ হলো কুরআন সংকলনকারী। পবিত্র কুরআন সংকলন খলিফা উসমান (রা) এর একটি অমর কীর্তি। উসমান (রা.) এর শাসনামলে ইসলাম দ্রুতই বিস্তার লাভ করে। যে কারণে বিভিন্ন ভাষাভাষীদের মাঝে ইসলাম প্রবেশ করছিল। এরফলে তার সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে কুরআন পাঠের বিভিন্ন উচ্চারণভঙ্গি পরিলক্ষিত হয়। যা খলিফার নজরে এলে তিনি তা দ্রুত সমাধান করার জন্য ৬৫১ খ্রিষ্টাব্দে বিশেষ কমিটি গঠন করেন। যার প্রধান ছিলেন জায়েদ বিন সাবিত। তারা বিশেষ সতর্কতার সাথে কুরআন সংকলনের উদ্যোগ নেন।

এই কমিটি হযরত ওমরের (রা.) কন্যা হযর হাফসার (রা.) কাছে সংরক্ষিত কুরআনের মূল পাণ্ডুলিপি থেকে একটি বিশুদ্ধ কুরআন সংকলন করেন। যে পান্ডুলিপিটির উচ্চারণ ছিলো কুরাইশিয়। এখানে জ্ঞাতব্য বিষয় হলো, পবিত্র কুরআন আরবি ভাষার বিভিন্ন অঞ্চলের উচ্চারণ ভঙ্গির উপর আরবি কিছু উপভাষায় নাযিল হয়েছিল। তাই মুহাম্মদ (সা.) এর মাতৃভাষা কুরাইশি বাচনভঙ্গির উপর কুরআন সংকলন করা হয়। এবং এই সংকলিত মূল কপির সাতটি অনুলিপি তৈরি করা হয়। যা উসমান (রা.) তাঁর সাম্রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেন। একইসাথে কুরআনের অন্য উচ্চারণের অন্যান্য কপিগুলাে পুড়িয়ে ফেলেন। তার এই মহৎ কাজের জন্য ইসলাম বিরাট ক্ষতিতে থেকে রক্ষা পায়।

জুন্নুরাইন কে?

হযরত উসমান (রা.) হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর দুই মেয়ে, রুকাইয়া ও উম্মে কুলসুম (রা.) কে বিয়ে করেছিলেন। একারণে তাঁকে জুন্নুরাইন বলা হয়। জুন্নুরাইন শব্দের অর্থ দুই জ্যোতিষ্কের বা আলোর অধিকারী। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কন্যারা ছিলেন নূর বা আলো তথা জ্যোতি। হযরত উসমান (রা.) প্রথমে রাসুলের মেয়ে রুকাইয়া (রা.) কে বিবাহ করেন। পরবর্তীতে তাঁর মৃৃত্যুর পর রাসুলুল্লাহ (সা.) এর অন্য মেয়ে  উম্মে কুলসুম (রা.) কে বিবাহ করেন। একারণে তাঁকে দুই জ্যোতির অধিকারী বা জুন্নুরাইন বলা হয়।

খোলাফায়ে রাশেদিন বলতে কী বোঝায়?

খোলাফায়ে রাশেদিন এর শাব্দিক অর্থ হলো,  ন্যায়পরায়ণ, ন্যায়নিষ্ঠ, সঠিকভাবে পথনির্দেশপ্রাপ্ত খলিফা। হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ওফাত পরবর্তী বিশিষ্ট্য চারজন খলিফাকেই খোলাফায়ে রাশেদিন বলা হয়। তাঁরা হলেন, 

  • হযরত আবু বকর (রা.)  (৬৩২-৬৩৪ খ্রিষ্টাব্দ)
  • হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) (৬৩৪-৬৪৪ খ্রিষ্টাব্দ)
  • হযরত উসমান ইবনে আফফান (রা.)  (৬৪৪-৬৫৬ খ্রিষ্টাব্দ)
  • হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রা.) (৬৫৬-৬৬১ খ্রিষ্টাব্দ)

রাসুলুল্লাহ (সা.) এর ওফাতের পর এই চারজনই ইসলামি সাম্রাজ্য পরিচালনা করেন।

খোলাফায় রাশেদিন নামক এই ধারণাটির উৎপত্তি ঘটে আব্বাসীয় খিলাফতের সময়ে। মুহাম্মদ (সা.) এর একটি হাদিস থেকে শব্দটি নেওয়া হয়েছে। হাদিসটি নিম্নরূপ,

“তোমরা আমার ও আমার ন্যায়নিষ্ঠ খলিফাদের (খোলাফায়ে রাশেদিনদের) দৃষ্টান্ত শক্ত করে ধরো।” আবু দাউদ

 

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম। 

আপনি আরো যা পড়তে পারেন


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

2

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

Author: সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলাম লিখেছেন। প্রবাসের সেই চাকচিক্যের মায়া ত্যাগ করে মানুষের ভালোবাসার টানে দেশে এখন স্থায়ী বসবাস। বর্তমানে বেসরকারি চাকুরিজীবী। তাঁর ভালোলাগে বই পড়তে এবং পরিবারকে সময় দিতে।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

Leave a Reply