অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার (Operation System Software) কী? অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের কাজ লিখ:
উত্তর: সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software) হলো কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারকে কার্যকর করার জন্য ব্যবহৃত সাহায্য কারী সফটওয়্যারকে অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার বলে। এই সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software) এর সাহায্যে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, পরিচালনা, তত্ত্বাবধান,নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software) ব্যবহারকারী ও কম্পিউটারের মধ্যে সম্পর্ক রক্ষা করে। সিস্টেম সফটওয়্যারকে আবার কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন –
ক) অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার (Operation System Software)
খ) ইউটিলিটি সফটওয়্যার Utility Software
গ) অনুবাদক বা ট্রান্সলেটর সফটওয়্যার (Translator Software)
ঘ) গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস সফটওয়্যার (Graphical User Interface Software)
সফটওয়্যার গুলির বিস্তারিত বিবরণ: অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার (Operation System Software)
ক) অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার (System Software):
ইংরেজি শব্দ Operate অর্থ হলো পরিচালনা করা। System অর্থ হলো পদ্ধতি। কাজেই কম্পিউটারের ক্ষেত্রে অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার মানে হলো কম্পিউটারের পরিচালনার পদ্ধতি। কম্পিউটার পরিচালনার জন্য যে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয় তাকে অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার বলে।
উল্লেখ্য যে, একটি কম্পিউটারে সবগুলি ডিভাইসের সাথে সংযোগ সফটওয়্যারের সাথে। অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার শুধুমাত্র একটি কম্পিউটারকে কাজের উপযোগী করে না। কম্পিউটার ও কম্পিউটারের ব্যবহারকারী মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। কম্পিউটার পরিচালনা করার জন্য তৈরি হয়েছে বিভিন্ন প্রকারের অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার। যেমন –
- Windows 97
- Windows 98
- Windows XP
- Windows XP Service Pack 2
- Windows XP Service Pack 3
- Windows Vista
- Windows 7
- Windows 8
- Windows 8.1
- Windows 10
- Windows 11
- PC DOS
- MS DOS
- Xenix
- Unix
- Linux
খ) ইউটিলিটি সফটওয়্যার (Utility Software) :
কম্পিউটারের কাজকে সহজ, গতিময় এবং কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারকে (Computer Hardware Software) মেরামত করার জন যে সকল সফটওয়্যার (Software) ব্যবহার করা হয় তাকে ইউটিলিটি সফটওয়্যার (Utility Software) বলে। যথা: Norton Utility, PC Tool, PC Cilin, Toolkit, McAfcee ইত্যাদি।
মাইক্রো বা ছোট কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য ইউটিলিটি সফটওয়্যারের নাম হলো এডিটর, মনিটর বা ফার্মওয়্যার (Monitor/Firmware)
- এডিটর (Editor): Computer এ কোন কিছু লেখা বা সংশোধন করার জন্য এডিটর (Editor) ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি কম্পিউটারের মেমরিতে জমা থাকে।
- লোডার (Loader): কম্পিউটারের কোন প্রোগ্রামকে চালু করতে হলে সেই প্রোগ্রামকে প্রধান মেমরি বা (Main Memory) তে আনতে হয়। আধুনিক কম্পিউটার সমূহে লোডার (Loader) প্রোগ্রাম (Program) স্থায়ী ভাবে জমা থাকে। এই লোডার মুলত বিশেষ এক ধরণের প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস (Input Device) থেকে প্রোগ্রাম পড়তে পারে ও তা প্রধান মেমরি (Main memory) বা মেইন মেমরিতে লোড করতে পারে।
- মনিটর বা ফার্মওয়্যার (Monitor or Firmware): এই মনিটর বা ফার্মওয়্যার (Monitor or Firmware) হলো একটি প্রোগ্রাম যাকে কম্পিউটার তৈরির সময় কম্পিউটারের মেমরিতে তথা ROM এর স্থায়ীভাবে ধারণ করে দেওয়া হয়ে থাকে। এই ধরণের প্রোগ্রাম সাধারণ কম্পিউটারের মনিটরে দেখা যায়। কোন কম্পিউটার ব্যবহারকারী সেটাকে কোন ভাবে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংযোগ করতে পারে না। কম্পিউটার চালু করার পর আমরা যে বিভিন্ন লেখা গুলি দেখতে পাই সেই গুলিই হলো ফার্মওয়্যার বা মনিটর গ্রোগ্রাম।
গ) ট্রান্সলেটর বা অনুবাদক গ্রোগ্রাম (Translator Program):
কম্পিউটারে গ্রোগ্রাম লেখার জন্য যেমন অনেক ভাষার উৎপত্তি হয়েছে, তেমনিভাবে উৎপত্তি হয়েছে অনুবাদক গ্রোগ্রাম (Translator Program). কম্পিউটার সাধারণত হাইলেভেন, লো লেভেল বা মিড লেভেলের কোন ভাষাই বোঝে না। কম্পিউটারের ভাষা হলো যান্ত্রিক ভাষা। এই যান্তিক ভাষা হলো 0 এবং 1 এই দুইটি ডিজিট। তাহলে বলা যায়, কম্পিউটারের প্রোগ্রামের ভাষাকে মেশিন তথা যান্ত্রিক ভাষায় অনুবাদের জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রাম হলো অনুবাদক প্রোগ্রাম বা Translator Program.
ঘ) গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (Graphical User Interface) :
চিত্র ভিত্তিক অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার সমূহকে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস (Graphical User Interface) বলে।যথা Windows কে একটি গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস সফটওয়্যার বলে।
এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার (Application Software):
যে ধরণের সফটওয়্যার ব্যবহার করে মানুষ দৈনন্দিন কাজ করতে পারে তাকে এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার (Application Software বলে। কোন নির্দিষ্ট কাজের জন্য নির্দিষ্ট সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ব্যবহারের জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার (Programming Language) উদ্ভব হয়েছে।
এসকল প্রোগ্রামিং ভাষার (Programming Language) মাধ্যমে ব্যবহারকারীগণ ও সফটওয়্যার নির্মাতাগণ প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার তৈরি করে নিতে পারে। সুতরাং এসব এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারকে (Application Software) আবার ব্যবহারিক সফটওয়্যারও বলা হয়ে থাকে।
এ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারকে (Application Software) আবার 3 ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন:-
- প্যাকেজ সফটওয়্যার (Package Software)
- কাস্টমাইজ সফটওয়্যার (Customized Software)
- কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ (Computer Language)
- i) প্যাকেজ সফটওয়্যার (Package Software): নির্দিষ্ট কোন কাজের জন্য ও ব্যবহার করার জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রামকে প্যাকেজ প্রোগ্রাম বলে। যেমন Microsoft Word (মাইক্রোসফট ওয়ার্ড) এর সাহায্যে ওয়ার্ড প্রসেসিং এর কাজ করা যায়। আবার Microsoft Excel (মাইক্রো সফট এক্সেল) প্যাকেজ প্রোগ্রাম দিয়ে স্প্রেডশীটের কাজ করা যায়। এসব কাজ গুলি সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন অপশন (Option) থাকে। উক্ত অপশন গুলির মাধ্যমেই বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা হয়ে থাকে।
- ii) কাস্টমাইজ সফটওয়্যার (Customized Software): শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীর প্রয়োজনীয়তার অনুযায়ী তৈরি সফটওয়্যারই হলো কাস্টমাইজ সফটওয়্যার (Customized Software)। ব্যাংক, হাসপাতাল, বীমা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা এই ধরণের কাস্টমাইজ সফটওয়্যার (Customized Software) ব্যবহার করে থাকে। সাধারণ এই সফটওয়্যার নিচেদের কাজের সিস্টেম অনুযায়ী অর্ডার দিয়ে তৈরি করে থাকে।
iii) কম্পিউটার ল্যাঙ্গুয়েজ (Computer Language): কম্পিউটারের প্যাকেজ প্রোগ্রাম তৈরির জন্য যেসকল ল্যাংগুয়েজ ব্যবহার করা হয় সেগুলিকে কম্পিউটার ল্যাংগুয়েজ বলে। এই ল্যাঙ্গুয়েজ শুধুমাত্র কম্পিউটার-ই বুঝতে পারে। যেমন –
- Low Level Language
- Pascal
- Fortran
- Machine Language
- Cobol
- Basic ইত্যাদি।
আরো জানুন যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে