বাবা বললেন, তৃতীয় শ্রেণিতে ১-৩ এর ভেতর রোল আনতে পারলে সাইকেল কিনে দেবে। প্রথম স্বপ্ন দেখানো হলো। আমি স্বপ্ন দেখতাম, সাইকেল চালিয়ে এপাড়া ওপাড়া ঘুরে বেড়াবো। তৃতীয় শ্রেণিতে রোল হলো দুই(০২)। আমার ছেলেমানুষি পাগলামোর কূলকিনারা নেই। রাতে কাছে ডেকে পাশে বসিয়ে কপালে চুমু এঁকে দিয়ে বাবা বললেন, চতুর্থ শ্রেণিতে রোল এক(০১) করতে পারলেই সাইকেল কিনে দেবে। প্রথম স্বপ্ন ভাঙা শুরু এখান থেকেই। বাঁধ ভাঙা নদীর পানি যেমন কোনো কিছু দিয়ে আটকানো যায়না,সেদিন আমার চোখের পানি কেউ আটকাতে পারেনি।কোনো সান্ত্বনাই কাজে আসেনি।
একটার পর একটা স্বপ্ন ভেঙেছে আমার কাঁচের চুড়ি ভাঙার মতো। ভাঙা গড়ার খেলায় একদিন বুঝতে শিখে গেলাম,বাবার সামর্থ্য নেই। বাবা’রা কখনোই না উচ্চারণ করে না। বাবা না উচ্চারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলে।
কেনো ইদে নতুন জামা-কাপড় কিনে দিবে না? বাবাকে প্রশ্ন করা বোকামি। বাবার সামর্থ্য থাকলে পৃথিবীর সবচেয়ে দামী জামাটা আপনাকে কিনে দিত। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করে যদি শখ-আহ্লাদ মাটি চাপা দিতে না পারো,তাহলে দুঃখ বাড়বে।
মা সন্তানকে গর্ভে ধারণ করে,আর বাবা সন্তানকে মাথায় ধারণ করে! মায়ের পেটে আপনি একটু একটু করে বড় হন,পৃথিবীর আলো দেখার জন্য।
আর বাবার মাথায় বড় হন, সমাজে কিভাবে আপনাকে তুলে ধরবে,আপনাকে কাপড় দিতে হবে,ভালো স্কুলে পড়াতে হবে।
ইদে যদি বাবা নতুন জামা-কাপড় কিনে না দেয়,জোর করবেন না, আপনি নতুন জামা না পেয়ে যতটা না কষ্ট পান,তার থেকে বেশি কষ্ট পায় বাবা’রা।
একটা কথা মস্তিষ্কের মধ্যে সেট করে রাখবেন, “সামর্থ্য থাকলে বাবা কখনোই না শব্দ উচ্চারণ করেন না”।
বাবাকে বন্ধু ভাবতে শিখো।
আরো পড়ুন-