১৯৯১ সালে নির্মাণ করা সত্যজিৎ রায়ের সর্বশেষ সিনেমা এটি। আগন্তুক সিনেমাটি তাঁর নিজের লেখা ছোটগল্প ‘অতিথি’ অবলম্বনে নির্মিত। এই গল্পের মাঝে সত্যজিৎ রায়ের আবেগ, অনুভূতি, দর্শনের ছাপ পাওয়া যায় বলেই আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়।
গল্পটি কলকাতায় বসবাসরত একটি উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবারকে কেন্দ্র করে আরম্ভ হয়। সেই পরিবারের একজন আত্মীয় যিনি অনেকদিন হল বাড়ি ছেড়েছেন, তিনি একসময় অতিথি হয়ে আসতে চান বলে চিঠি লিখে জানান। পরিবারের কর্তা সুধীন্দ্র বোসের স্ত্রী অনীলার মামা পরিচয়ে আগন্তুকের আগমন। কিন্তু, জানার উপায় নেই তিনি আসল নাকি নকল।
আগন্তুক শব্দের অর্থ কি?
আগন্তুক [সং. আ + √ গম্ + তু + ক (স্বার্থে)] শব্দের অর্থ নবাগত ব্যক্তি, অতিথি, অভ্যাগত, গৃহাগত, হঠাৎ উপস্থিত হওয়া ব্যক্তি ইত্যাদি।
গল্পের কাহিনী কোন দিকে মোড় নেয়?
আগন্তুকের আগমনে সুধীন্দ্র বোসের সন্দেহের সীমা নেই, এদিকে ছোট ছেলেটি অতিথির উপস্থিতিতে একপ্রকার আনন্দ উপভোগ করতে থাকে। অনীলা বুঝতে পারেন না তাঁর মামা কি না, মনের সন্দেহ দুদিকেই ঘুরপাক খেতে থাকে। মনোমোহন নামের সেই উটকো ঝামেলা এই পরিবারটির কাছে আশির্বাদ নাকি অভিশাপ হয়ে আসে সেটি বোঝা দুরুহ ব্যাপার।
এখানে একটা গান শোনানো যেতে পারে(মূল সিনেমার ভিডিও কোয়ালিটি এই গানের চেয়ে ভালো)- বাজিল কাহার বীণা মধুর স্বরে
উপরের লিংক থেকে ইউটিউবে সিনেমার পুরোটাই দেখে নিতে পারবেন। আশা করছি আমার দেয়া বিরক্তিকর বর্ণনা আপনাদের নতুন মুভি দেখার আনন্দকে মাটি করে দেবে না।
চরিত্র রুপায়নে-
মনোমোহন- উৎপল দত্ত
সুধীন্দ্র বোস- দীপঙ্কর দে
অনীলা- মমতাশঙ্কর
আমার কাছে পুরোটা সময় খুব উপভোগ্য লেগেছিল, কয়েকবার এই চলচ্চিত্রটি আমি দেখেছি। এই চলচ্চিত্রটি উল্লেখ করার মত পাঁচটি পুরষ্কার জিতেছিল। তিনটি জাতীয় পুরষ্কার এবং ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভাল এওয়ার্ড জেতা এই সিনেমা না দেখলে ভুল করবেন।
সত্যজিতের ‘আগন্তুক’-এর পরে
বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এটা নিয়ে লেখালেখি দেখতে পাবেন। ইদানিং পুরনো গল্পকে নতুন মোড়কে উপস্থাপনের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পরিচালক অর্ক সিনহা এমন একটি উদ্যোগ আগন্তুককে নিয়েও নিতে চলেছেন। তাতে নতুন মোড়কে আগন্তুককে দেখা যাবে। শোনা যাচ্ছে, আগের কলাকুশলীদের কেউ কেউ নতুন সিনেমাটিতে অভিনয়ও করবেন। আপনাদের মতো আমিও অপেক্ষায় আছি এই সিনেমাটি দেখার জন্য।
আরো পড়ুন-