কোয়ান্টাম মেথড এবং মেকানিক্স

কোয়ান্টাম মেকানিক্স বা, কোয়ান্টাম বলবিদ্যা বলতে কি বুঝায়?

আণবিক এবং সাব-আণবিক কণার বলবিদ্যাকে এককথায় কোয়ান্টাম মেকানিক্স বলা হয়। বড় বস্তুর ক্ষেত্রে ঐ যে আগে বলেছিলাম, নিউটন সাহেবের বলবিদ্যার রাজত্ব চলছে। আর, ছোট বস্তুকণার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাবে কোয়ান্টাম বলবিদ্যা। এটি কাজ করে সম্ভাবনা নিয়ে।

ছোট বস্তুর বলবিদ্যা, কত ছোট?

১০-১০ মিটার হচ্ছে একটা অণুর ব্যাসার্ধ, এক মিটারের এক ট্রিলিয়ন ভাগের এক ভাগ। এক মিটারকে ১০০০০০০০০০০ ভাগে ভাগ করলে যা হয় তাই। সাব-এটমিক বলতে আরো ছোট বুঝাচ্ছি। অণুর ভেতরে থাকে নিউক্লিয়াস যার ব্যাসার্ধ  ১০১৫ মিটার, চিন্তা করেন কত ছোট।

psi বলতে কি বুঝায়?

𝚿 বলতে কোয়ান্টাম ফিজিক্সে একটি কোয়ান্টাম অবস্থাকে প্রকাশ করে। এবং এটি হচ্ছে মোমেন্টাম, সময়, অবস্থান এবং স্পিনের একটি ফাংশন। গ্রীক শব্দ সাই দিয়ে এই অবস্থাকে প্রকাশ করা হয়।  [ψ]2 বলতে বুঝায় সম্ভাবনার ঘনত্ব। মানে পরমাণুর একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টে ইলেক্ট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা।

কিছু তত্ত্ব এবং পরীক্ষা

এর চেয়ে বড় বস্তুর জন্য কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কোন সার্থকতা নাই একথা ভুল না, ঠিকও না, প্রয়োগ করাই যাবে না এটাও প্রমাণিত সত্য নয়। তবে, বড় বস্তুর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয় না, তবে করা যায়, সেটা খুব কঠিন ব্যাপার। এবারে এর কিছু মজার বিষয় নিয়ে বলি-

১. কোয়ান্টাম এনটেঙ্গেলমেন্টঃ অদ্ভুত একটা ব্যপার, দুটি সাব-এটমিক কণাকে পৃথিবীর দুই প্রান্তে নিলেও তারা এমন আচরণ করে যেন তারা চন্ডিদাস আর রজকিনী। একজনের স্পিন যদি হয় +১/২, আরেকজনের হয় -১/২, বা, একটা আরেকটার সম্পূরক। ওদের দুজনেরই +১/২ হতে পারত, আমরা দৈবচয়নে নিয়েছি। তা না , ওরা এমন বৈশিষ্ট্য দেখায় যেন, তাদের জনম জনমের প্রেম। এটাকে বলা হয় কোয়ান্টাম এনটেঙ্গেলমেন্ট।

২. ডাবল স্লিট পরীক্ষাঃ এটি হচ্ছে থমাস ইয়াং সাহেবের পরীক্ষা। এই দ্বি চিড় পরীক্ষায় তিনি দেখিয়ে দেন আলো তরঙ্গধর্ম দেখাচ্ছে। আলো কখনো তরঙ্গের মতো আচরণ করে, আবার কখনো কণার মতো- সেটা অবশ্য ভিন্ন আলোচনা। দুটি চিড় ওয়ালা একটি বাধা অতিক্রম করার পরে ব্যাতিচার প্যাটার্ণ তৈরি করে।  অনেকগুলো আলোকিত এবং অন্ধকার ব্যান্ড দেখায়। আলো তরঙ্গ না হলে এরকম কিছু হওয়ার কথা ছিলো না।

. স্ট্রিং থিওরিঃ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণাগুলো তারের মতো আচরণ করে, ধারণাটা এরকম। এগুলোই কম্পিত হয়, যুক্ত হয়ে আরেকটু বড় কণা তৈরি করে, ধীরে ধীরে বস্তু, পৃথিবী আরো বড় কিছু। একমাত্রিক থেকে বহুমাত্রিকতার ধারণা পাওয়ার চেষ্টা ইত্যাদি। এটাও প্রমাণিত সত্য নয়, আকর্ষণীয় এবং এটা নিয়ে গবেষণা চলছে। মৌলিক কণাগুলোকে বিল্ডিং ব্লক মনে করে সব কিছুকে ব্যাখ্যার চেষ্টা চলছে, চলছে থিওরি অফ সবকিছু আবিষ্কারের চেষ্টা(থিওরি অফ এভরিথিং)।

 

স্রোডিঞ্জারের তরঙ্গ সমীকরণ

দুইটা সমীকরণ আছে, একটি সময়ের উপর নির্ভরশীল-

এবং আরেকটি সময়ের উপর নির্ভরশীল নয়-

{\displaystyle \operatorname {\hat {H}} |\Psi \rangle =E|\Psi \rangle }

এই দুইটা সমীকরণ দেখেই অনেকের মাথায় চক্কর দেয়া শুরু হয়ে গেছে(বিশ্বাস করেন, আমারও)। এই সমীকরণ কোন নিশ্চয়তার নির্দেশক নয়, বরং সম্ভাবনার। এই সম্ভাবনা কোন বড় বস্তুর ক্ষেত্রে নয়, ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এরকম আরো জটিল সমীকরণ এবং তার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আরো একটি সম্ভাবনাময় বক্তব্য দেয়া যেতে পারে।

প্লেটো বলেছেন,

“I am the wisest man alive, for I know one thing, and that is that I know nothing.”

 

আরো পড়ুন-