গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ভাবতে পারার সাহস সবার থাকে না, সবাই পারেনা উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে। উদ্যোক্তা হওয়া যেমন ঝুঁকিপূর্ণ ঠিক তেমনি উদ্দীপনা জাগানিয়া বিষয়। নারীরাও পুরুষের সাথে সমান তালে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলছে। এমনই এক নারীর গল্প আজকে উত্থাপন করতে চলেছি।
ইন্টারমিডিয়েট পড়া একজন তরুণী মাত্র পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে কয়েকটি সালোয়ার-কামিজ বানালেন, তার চোখ ভরা স্বপ্ন ছিল উদ্যোক্তা হওয়ার। তিনি আমাদের নাজমা মাসুদ, যিনি এখন একজন সফল নারী উদ্যোক্তা এবং তিনি ৫০ জন কর্মীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত করেছেন। তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের এলাকায় অনেকেই হয়েছেন উদ্যোক্তা। একজন উদ্যোক্তা সংগঠক হয়ে তিনি আজ ৫০ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
হাতের কাজ শিখেছিলেন সেই ছোটবেলা থেকে এবং উচ্চমাধ্যমিক পরা অবস্থায়ই ব্যবসা করার স্বপ্ন দেখতেন। পড়াশোনা শেষ করে আর্মিতে চাকরিরত অবস্থায় তার বাসায় একটি বুটিক শপ দিলেন এবং “নন্দিনী ফ্যাশন” নামের শোরুম খুললেন, পাশেই খুললেন “মুন বিউটি পার্লার”। ভীষণভাবে জনপ্রিয়তা পেলেন এবং পেলেন তার স্বামীর সহযোগিতা।
স্বামীর উৎসাহে বিদেশী কাপড় রপ্তানী করা শুরু করলেন। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, লন্ডন, নিউজিল্যান্ড, হংকং প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন মেলায় এবং প্রবাসী বাঙালীদের কাছে তার রপ্তানিকৃত পোশাকের চাহিদা ব্যাপক। তিনি ঈদ ফ্যাশন প্রতিযোগিতায় প্রবাসী বাঙালি পরিবারের কাছ থেকে “বেস্ট ঈদ ফ্যাশন আওয়ার্ড” পেয়েছেন পরপর কয়েকবার।
প্রথমদিকে তিনি যখন তার স্বামী থেকে ধার করা পুঁজি নিয়ে পোশাক রপ্তানির ব্যবসা শুরু করেন তখন তেমন একটা লাভবান হতে পারেননি। পরবর্তীতে তার স্বামী তাকে উৎসাহ দিলে তিনি পুনরায় ব্যবসা শুরু করেন এবং লাভবান হন। তার ২৪ বছরের সংসার সামলে নিয়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠেছেন এবং অন্যদেরকেও আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলছেন।
“ওয়ালপেপার অ্যান্ড প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড” গড়ে তোলেন ২০১৬ সালে। যেখানে এখন ৫০ জন কর্মী সন্তুষ্টি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে কেননা তিনি তার কর্মীদের এবং পণ্যের গুণগতমানের যথাযথ তদারকি করেন।এছাড়াও তিনি ৫০ জন নারী উদ্যোক্তাকে নিয়ে গড়ে তোলেন “উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট অরগানাইজেশন” এবং উদ্যোক্তাদের নিয়ে মেলার আয়োজনও করেছেন।
তিনি বলেন ছোটবেলায় তার বাবা মাকে হারানোর পর তার স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু করবেন এবং স্বাবলম্বী হবেন। তিনি স্বপ্ন দেখেন নারী উদ্যোক্তারা অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে। তিনি স্বপ্ন দেখেন এবং স্বপ্ন দেখান, হাল না ছেড়ে এগিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন। তার মত পরিশ্রমী এবং দৃঢ়চেতা নারী উদ্যোক্তারা পারে সমাজকে বদলে দিতে। তার জন্য অন্তরের অন্তস্থল থেকে শুভকামনা রইল, তার এগিয়ে চলাকে এগ্রিন পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই সাধুবাদ।
আরো পড়ুন-
ভালো লিখেছেন কবি