গল্প
নষ্ট স্বামী
আফছানা খানম অথৈ
মিনহজ একটু লোভী স্বভাবের পুরুষ।টাকা পয়সা বাড়িগাড়ি এসবের প্রতি লোভ বেশি।তাই বিয়ে করা বউকে পরামর্শ দেয় তার অফিসের বসের সঙ্গে প্রেম করারা জন্য।এতে করে বস তাকে প্রমোশন দিবে।অনেক টাকার মালীক হবে,বাড়িগাড়ি করতে পারবে।কিন্তু বউ মানলে তো?
সে কিছুতেই রাজী হচ্ছে না তার প্রস্তাবে।তার এককথা,
আমি কিছুতেই তোমার বসের সাথে প্রেম করতে পারব না।
কেনো পারবে না?আমি তো অনুমতি দিয়েছি, সমস্যা কোথায়?
সমস্যা অনেক জাগায় আছে।তাছাড়া স্বামী ছাড়া অন্য কারো সাথে মেলামেশা করা হারাম।আমি এসব হারাম কাজ করতে পারব না।
পারতে তোমাকে হবেই।
না আমি পারব না।
এমনিভাবে তারা আর ও কিছু সময় তর্কবিতর্ক করে।কিন্তু কিছুতেই লিজা বসের সাথে প্রেম করতে রাজী হয় না।মিনহজের রাগ চরমে উঠে যায়।সে এক পর্যায়ে বউকে খুব মারধর করে।অবশেষে লিজা বাধ্য হয়ে বসের সাথে প্রেম করতে রাজী হয়।
মিনহজ বসকে বাসায় দাওয়াত করে। তার বউ খুব খাতির করে খাওয়ায়।সেই সাথে কিছু নেশা জাতীয় পানি পান করে।মাতাল অবস্থায় বস তার বউয়ের সাথে রাত কাটায়।এভাবে শুরু হয় তার বউয়ের সাথে বসের প্রেমের রিলেশন।
আর এই সুযোগে মিনহাজ হাতিয়ে নেয় বসের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা।তরতর করে হয়ে যায় তার প্রমোশন।
হয়ে যায় তার ফ্ল্যাট বাড়িগাড়ি।
কিন্তু সমস্যা একটা শুরু হয়ে গেছে।লিজা বসের সাথে মিথ্যে প্রেমের নাটক করতে গিয়ে বসকে সত্যি সত্যি ভালোবেসে ফেলেছে।একথাটা মিনহাজ জানতে পেরে লিজাকে শাসাই।এবং তার কাছে ফিরে আসতে বলে।কিন্তু লিজা মানলেতো সে মনের সুখে বসের সাথে প্রেম করছে।যখন সেখানে খুশি সেখানে যাচ্ছে।ঘুরছে ফিরছে, নামিদামি রেস্টুরেন্টে ডিনার করছে,পছন্দমতো কেনাকাটা করছে।আর এসব সহ্য করতে পারছে না তার স্বামী মিনহজ।তার এককথা
সরি লিজা আমার ভুল হয়ে গেছে।তুমি আমার কাছে ফিরে এসো।
না আমি কখনো তোমার কাছে ফিরে যাব না।আমি বাবু চৌধুরীকে ভালোবেসে ফেলেছি।আমি তাকে বিয়ে করব।
সত্যিই বলছ?
হুম সত্যিই।
আমিও দেখব, তুমি কিভাবে বাবু চৌধুরীকে বিয়ে কর।
দুজন দুজনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়।
মিনহাজ অপ্রিয় সত্য অনুষ্ঠানে এসে নীরা আপার কাছে সব সত্য প্রকাশ করে।শুধু তাই নয় লিজাকে ফিরে পাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে।
নীরা আপা লিজা, বাবু চৌধুরী, মিনাহজ তিনজনকে একসঙ্গে ডাকেন।তিনজন উপস্থিত হয়।
নীরা আপার অনুরোধে প্রথমে মিনহজ তার বক্তব্য পেশ করে,
বাবু সাহেব আমি ভুল করেছি,লোভ করেছি।টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে গিয়েছি।তাই আমার বউকে মিথ্যে প্রেমের নাটক করতে বলেছি।কিন্তু আমার বউ যে মিথ্যে প্রেমকে সত্যে পরিণত করবে ভাবিনি।বাবু সাহেব আমাকে ক্ষমা করুন।আমার বউকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন।আপনি তার জীবন থেকে সরে যান।আপনি চলে গেলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
মিনহাজ সাহেব আমি মিথ্যে নয়, সত্যিই তাকে ভালোবেসে ফেলেছি।আমি তাকে ছাড়া থাকতে পারব না।আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি।শিগরই আমরা বিয়ে করব।তাছাড়া আপনার টাকা দরকার।আপনি টাকা পেয়েছেন।লিজাকে দিয়ে কি করবেন?
যে স্বামী তার স্ত্রীকে টাকার জন্য অন্যের পেছনে লেলিয়ে দেয়।সে স্বামী না,স্বামী নামের কলঙ্ক।তাছাড়া লিজা আপনাকে চাই না।
লিজা সরি আমার ভুল হয়ে গেছে।আমাকে ক্ষমা কর।আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি।
তোর এই মিথ্যে নাটক আর আমি বিশ্বাস করি না।তুই স্বামী না,স্বামী নামের কলঙ্ক।যে টাকার জন্য নিজের স্ত্রীকে বসের সঙ্গে প্রেম করতে বলে,সে আর যাই হোক ভালো স্বামী হতে পারে না।সে হলো “নষ্ট স্বামী”।তোর মতো নষ্ট স্বামীর সংসার করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।কারণ তুই আবার আমাকে টাকার জন্য বসের সঙ্গে প্রেম করতে বলবি।আমি তোকে বিশ্বাস করিনা।আমি তোকে ডিভোর্স দেব।বাবু চৌধুরীকে বিয়ে করব।কারণ তাকে আমি ভালোবাসি।
মিনহাজ কিন্তু হারবার পাত্র নয়।লিজা ও বাবু চৌধুরীকে মেরে ফেলার অনেক হামকি ধুমকি দিলো।কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না।লিজা সত্যিই মিনহাজকে ডিভোর্স দিয়ে বাবু চৌধুরীকে বিয়ে করলো।
ঃ সমাপ্তঃ
বি: দ্র: গল্পটা সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা।
