ব্লগারেরা সাধারণত নতুন আর্টিকেল লেখার ক্ষেত্রে এস ই ও এর ব্যাপারটা মাথায় রাখেন এবং পরে আর সেই আর্টিকেল নিয়ে ব্যাকলিংক বিল্ডিং ছাড়া আর কিছু করেন না।
র্যাংকিং এ সেই আর্টিকেল যখন পেছনে চলে যায় তখন চুপচাপ হতাশ হয়ে বসে থাকেন। এর কারণ, আপনারা জানেন না গুগল আপনাদের কাছে আসলে কি চায়। এই আর্টিকেলে সেটি বলার চেষ্টা করবো।
শুরু করার আগেঃ কনটেন্ট রাইটিং টিপস
আর্টিকেল বা, যেকোন ধরণের ওয়েব কনটেন্ট হোক না কেন সেটিকে আপডেট করা প্রয়োজন। কিছু টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করছি যা প্রয়োগ করতে হবে পুরাতন আর্টিকেলের র্যাংকিং খারাপ হলে-
- প্রথম পেজে যে লেখাগুলো আছে, সেগুলোতে নতুন কি আছে যা ভালো সেটি দেখতে হবে। এরপর আপনার ব্লগের ঐ পোস্টকে তার চেয়ে ভালো করার চেষ্টা করতে হবে(বাউন্স রেট, ভিউ ডিউরেশন দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন)
- অনেক সময় ওয়েবসাইটের লেখা আপডেট করলে এমনিতেই গুগলে র্যাংকিং বুস্ট আপ হয়। এর কারণ, গুগল আপডেটেড লেখা প্রথমে দেখাতে চায়
- ইন্টারনাল লিংকিং র্যাংকিং কে এফেক্ট করে। তাই, অন্য রিলেটেড আর্টিকেল থেকে ঐ আর্টিকেলে লিংক দিয়ে দিন।
- আর্টিকেলের লেন্থ বড় হলেই ভালো ফল পাওয়া যায় না, বাউন্স রেট কমানোর জন্য লেখাকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে যা করা লাগে করুন।
আর্টিকেল রাইটিং এর ক্ষেত্রে আশা করা যায় এই টিপসগুলো কাজে লাগবে।
লিংক বিল্ডিং এর গুরুত্ব
মনে রাখবেন, শুধু লিংক বিল্ডিং এর জন্য আপনার কোন ব্লগ পোস্ট র্যাংক করবে না। ডু ফলো লিংকগুলোই গুগোল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন বিবেচনায় নেয়। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার এরকম সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের লিংকগুলো হয় নো ফলো। নো ফলো লিংক সার্চ ইঞ্জিন র্যাংকিং এ সরাসরি প্রভাব ফেলে না।
স্প্যামি লিংকগুলো পজিটিভলি র্যাংকিং এ ইফেক্ট তো ফেলেই না, বরং নেগেটিভলি ইফেক্ট করে। তাই, আজেবাজে লিংক দিয়ে গুগলের পেনাল্টি খাওয়ার কোন মানে হয় না। অফ পেজ এস ই ও সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিলে ভালো করবেন। লিংক বিল্ডিং এর পাশাপাশি ব্রান্ড মেনশনেরও আলাদা গুরত্ব আছে। সবকিছু হওয়া উচিত অর্গানিক।
সেরা ব্যাকলিংক হচ্ছে অন্য কোন সাইটে মাণসম্মত আর্টিকেল লিখে সেখান থেকে লিংক নেয়া। সেক্ষেত্রে আর্টিকেল লিখবেন পূর্ণ মনঃযোগ দিয়ে এবং এস ই ও অপটিমাইজেশনের কথা মাথায় রেখে। ঐ আর্টিকেল ভালো র্যাংকিং পেলেই আপনার ব্যাকলিংক করা পেজ ভালো র্যাংকিং পাবে। অথবা, অর্গানিক লিংক পাওয়া।
ব্যাকলিংক ছাড়া র্যাংকিং
ব্যাকলিংক ছাড়াও ব্লগের আর্টিকেল গুগল সার্চে ভালো র্যাংকিং পেতে পারে যদি লেখার মাণ ভালো হয়। প্রথম পেজের আর্টিকেলগুলোর দুটি বৈশিষ্ট্য থাকলে সেটি সম্ভব-
১. আগে সেই বিষয়ের কোন আর্টিকেল নেই বা, থাকলেও মাণ ভালো না
২. আর্টিকেল মোটামুটি মাণের থাকলেও সাইটের অথরিটি ভালো না
আপনার লেখা হাই কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ডের কোন আর্টিকেল থাকলে সেটিকে একটু পরিবর্তন করে লো কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ডের জন্য অপটিমাইজ করুন। প্রয়োজনে টাইটেল বদলে দিন, মেটা বদলে দিন, লেখা বদলে দিন, পোস্টের লিংক একই থাকুক।
অন পেজ এস ই ও সম্পর্কে আরো কিছু বিষয় জেনে নিতে পারেন। মনে রাখবেন- কোন বিষয়ের বিস্তারিত লেখা যা পাঠককে আকৃষ্ট করে তাই সার্চ ইঞ্জিনের সার্চ রেজাল্টে প্রথম পেজে আসে। তাই নিশ্চিত করুন, আপডেটেড লেখাটি যেন আগের চেয়ে ভালো হয়।
বাউন্স রেট কমানোর পদ্ধতি
বাউন্স রেট বলতে বুঝায়, কোন ওয়েব পেজ ভিজিট করার পরে একজন ভিজিটর কোন একশানে যায় কি না সেটা। প্রতি ১০০ ভিজিটরে কতজন একটি পেজ ভিজিটের পরে অন্য কোন লিংক বা, যেকোন কিছুতে ক্লিক করলে ধরে নেয়া হয় ভিজিটর এই বিষয়ে আগ্রহী।
আর যদি, ভিজিটরেরা ভিজিটের পরে কিছুই না করে চলে যায় তাহলে বাউন্স রেট বাড়ে। যত কম বাউন্স রেট হবে ততোই ভালো। যখন আপনার ব্লগের কোন কিওয়ার্ড র্যাংক করবে তখন(আরো কিছু বিষয়ের সাথে) বাউন্স রেটের উপর নির্ভর করে এর অবস্থান পরিবর্তিত হবে। কমানোর পদ্ধতি-
- ইন্টারনাল লিংকিং বাড়ান, এবং খেয়াল রাখুন সেগুলো যেন প্রাসঙ্গিক হয়
- ব্লগ পোস্টে সব কিছু না লিখতে পারলেও প্রয়োজনীয় রিসোর্স এবং ডাউনলোড লিংক ব্যবহার করুন
- কল টু একশান বাটন ব্যবহার করুন
- এমন কিছু লিখুন যাতে পাঠকেরা আরো আগ্রহী হয়। অপ্রাসঙ্গিক কিছু রাখবেন না
- ওয়েবসাইট খুব ধীরে লোড না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন
সব কথার শেষ কথা হচ্ছে, পাঠক ধরে রাখতে হবে। যদি বাউন্স রেট ৪০% এর নিচে থাকে তাহলে ধরে নিবেন সব কিছু ঠিকঠাক আছে। আর, বেড়ে গেলে কনটেন্ট আরো ভালো করতে হবে।
ভিউ ডিউরেশন বাড়ানোর উপায়
যখন আপনার সাইটে ভিজিটর আসছে তখন চেষ্টা করতে হবে ভিউ ডিউরেশন বাড়ানোর। এটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি র্যাংকিং ফ্যাক্টর।
ভিজিটর একশানে গেলে বাউন্স রেট কমবে, তবে কম সময় ধরে একটি আর্টিকেল পড়ার অর্থ ঐ আর্টিকেল তাকে আগ্রহী করছে না। তাই ভিউ ডিউরেশন বাড়াতে হবে। পদ্ধতিগুলো জেনে নিন-
- লেখাকে আকর্ষণীয় এবং প্রাসঙ্গিক করতে সার্চের প্রথম লেখাগুলো পড়ুন
- লেখার মাঝে বুলেট পয়েন্ট, ছবি, ভিডিও, ইনফোগ্রাফিক ইত্যাদি ব্যবহার করুন
- জোর করে ছবি বা, ভিডিও যোগ করবেন না। উপস্থাপনের প্রয়োজনে ব্যবহার করবেন
- বাক্যের গঠনে পরিবর্তন আনুন, যাতে করে সেটি আরো আকর্ষণীয় হয়
আপনার ব্লগের কনটেন্টের এভারেজ ভিউ ডিউরেশন যদি বাড়ে এবং বাউন্স রেট যদি কমে তাহলে সার্চ ইঞ্জিনের সার্চে প্রথম রেজাল্টটি আপনার সাইটের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে।
কম্পিটিটরকে পরাজিত করুন
গুগল চায় আপনি সবার চেয়ে সেরা আর্টিকেলটি লিখুন। যদি দেখেন যে আপনার কম্পিটিটরদের চেয়ে আপনার লেখার মাণ খারাপ, তাহলে এডিট করুন। যদি র্যাংকিং খারাপ হয়ে যায়, এর অর্থ অন্য কেউ বেটার কনটেন দিচ্ছে। তাই, আপনাকেও লেখা এডিট করে আরো ভালো কিছু লিখতে হবে। তাহলেই ভালো ফল পাবেন।
আপনাদের প্রশ্ন ও উত্তরঃ
লোকাল এস ই ও কি?
লোকাল এস ই ও হচ্ছে, লোকাল বিজনেস সাইটের জন্য যে এস ই ও করা হয় সেটা। সাধারন টেকনিক্যাল এস ই ও এর চেয়ে লোকাল এস ই ও কিছুটা আলাদা। এক্ষেত্রে আপনাকে লোকাল সার্চ ভলিউম এবং লোকাল বিজনেস পটেনশিয়াল সম্পর্কে জানতে হবে। আর আর্টিকেলে লোকাল কিওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। যেমনঃ best cineplex near Dhaka, best hotel near Chittagong এরকম। তাহলে আপনি আপনার বিজনেসকে সার্চ ইঞ্জিনের র্যাংকিং এ আনতে পারবেন।
বড় আর্টিকেল কি সবসময় ভালো র্যাংকিং পায়?
না, পায় না। বড় আর্টিকেল হলেই ভালো র্যাংকিং পাবে এমন কোন কথা নেই। কোন ওয়েব পেজের যদি বাউন্স রেট কম হয় আর, ভিউ ডিউরেশন বেশী হয় তাহলে সেটি র্যাংকে উপরের দিকে থাকে। সাধারণত ভালো মাণের আর্টিকেলগুলো এমনিতেই লং ফর্ম হয়, কারণ তাতে অনেক তথ্য থাকে। এজন্য আপনি ২০০০, ৩০০০ বা, তার চেয়ে বেশী শব্দের আর্টিকেল দেখতে পান। ভিজিটরদের জন্য উপকারি হলে ছোট আর্টিকেলও সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করে।
আরো পড়ুন-
খুবই প্রয়োজনীয়। উপকৃত হলাম। জাযাকাল্লাহ খাইরান।