শয়তান এক অভিশপ্ত নাম যে ছিল ইবলীশ। এই ইবলীশ আল্লাহর আদেশ অমান্য করে ইবলীশ থেকে শয়তানে পরিনত হয়েছিল। আর যখনই শয়তান আল্লাহর লানত প্রাপ্ত হয় তখনই সে শপথ করে, যে মানুষের কারণে সে আজ অভিশপ্ত, সেই মানুষকে সে ছেড়ে দিবে না।
আর তাই আদম সন্তানের জন্মের সাথে সাথেই সে তার সাথে শয়তানীতে লিপ্ত হয়ে তাকে শয়তানে পরিনত করতে চায়। ঠিক শয়তানের মতোই আমাদের উপমহাদেশে কিছু মানুষ আছে। যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে শয়তানের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব শয়তান কে? এবং উপমহাদেশে শয়তানের অনুসারী কারা।
শয়তান কে?
শয়তান হচ্ছে একজন জ্বীন। যে তার ইবাদতের দ্বারা মালাইকা পদমর্যাদায় অধিষ্ঠিত হয়। এবং পরবর্তীতে আল্লাহর হুকুম অমান্য করার কারণে তিরস্কৃত এবং কাফিরে পরিনত হয়। আল্লাহ বলেন,
শয়তানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
যখনই ইবলীস শয়তানে পরিনত হয় তখন সে আল্লাহর কাছে ওয়াদা করে,
সুতরাং শয়তানের কাজ হলো ছলেবলে কৌশলে মানুষকে পাপী বানিয়ে তার দল ভারী করা। যাতে সে যেমন আল্লাহর আদেশ অমান্য করার কারণে শয়তানে পরিনত হয়ে পাপিষ্ঠ ও নিকৃষ্ট হয়েছে। ঠিক তেমনি আল্লাহর সৃষ্টি সেরা মানুষকেও যেন সে পাপিষ্ঠ করে আল্লাহর কাছে নিকৃষ্ট করতে পারে, সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে সে পৃথিবীতে বিচরণ করে। যাতে অধিকাংশ মানুষ আল্লাহর অকৃতজ্ঞ হয়।
সুফি সুন্নিরা যেভাবে শয়তানের অনুসারী
পবিত্র কুরআন হাদিসের আলোকে আমরা শয়তানের অসংখ্য কাজ সম্পর্কে অবগত হই। যেসব কাজ করার অর্থ হচ্ছে আল্লাহর অবাধ্য হওয়া। আর এইসব আল্লাহর অবাধ্য কাজ গুলো করাই হচ্ছে শয়তানী কাজ। যে কাজ গুলো সে মানুষের দ্বারা করিয়ে তাকে আল্লাহর সামনে অপমানিত, লজ্জ্বিত এবং অপরাধী হিসাবে উপস্থাপিত করে।
ঠিক একইভাবে আমাদের উপমহাদেশে ইসলামের নামে সুফিবাদের মতাদর্শী সুফি সুন্নিরা এমন একটি মতাদর্শ যার মূল উদ্দেশ্য শয়তানের কর্মকান্ডের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। আজ আমরা কুরআন হাদিসের আলোকে দেখার চেষ্টা করবো কীভাবে সুফি সুন্নিরা শয়তানের অলিতে পরিনত হয়েছে।
শিরক
তাওহিদ হচ্ছে আল্লাহর একত্ববাদ। অন্যদিকে শিরক হচ্ছে আল্লাহর একত্ববাদে অন্যকে অংশীদার করা। শিরক এমন একটি জঘন্য অপরাধ যার কোনো ক্ষমা আখিরাতে হবে না। সুতরাং আল্লাহ থেকে মানুষকে দূরে রাখার একমাত্র পথ হলো শিরক করিয়ে মুশরিক বানানো। যা শয়তানের মূল উদ্দেশ্য।
সেই শিরকের উপর ভর করেই সুফিবাদ প্রতিষ্ঠিত। সুফিবাদের মূল আকিদা হলো আল্লাহ যা পারেন তা তাদের পীর অলি আউলিয়ারাও পারেন। আল্লাহ সরাসরি তাঁর বান্দাদের কিছু প্রদান করেন না। তিনি যা-ই দেন না কেন, তা পীর অলি আউলিয়াদের মাধ্যম দিয়েই দিয়ে থাকেন। যা একটি সরাসরি শিরকি আকিদা।
মোটকথা আল্লাহর নিজস্ব গুণাবলী (সন্তান দান, বিপদে উদ্ধার, ধন দৌলত প্রদান, হিদায়াত প্রদান, গুনাহ ক্ষমা করা ইত্যাদিকে) পীর আউলিয়াদের মাঝে ভাগ করে দেওয়ার কারণে সুস্পষ্ট শিরক করছে সুফি সুন্নিরা। সেইসাথে মাজারে বা কবরবাসীর সন্তুষ্টির জন্য মানত করার কারণে যে দান সদকা করা হয় তাও শিরক। আল্লাহ বলেন,
আল্লাহ থেকে মানুষকে দূরে সরানোর প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে পীর মুরিদী গ্রহণ করা। পীর ধরার সাথে সাথে ঐ ব্যক্তির সাথে আল্লাহর সম্পর্ক ছিন্ন হয়। কেননা তখন ঐ ব্যক্তিকে আল্লাহর বিধান নয় বরং পীর যা বলে তা-ই পালন করতে হয়। এভাবেই পীর ধরার সাথে সাথে মানুষ আল্লাহ বিমুখ হয়। যা শয়তানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
পথভ্রষ্ট করা
শয়তানের অন্যতম কাজ হলো মানুষকে মিথ্যা আশ্বাস ও প্রবঞ্চনা দিয়ে পথভ্রষ্ট করা এবং আল্লাহর অবাধ্যতায় লিপ্ত করা।
শয়তান যেমন মানুষকে পথভ্রষ্ট করে ঠিক তেমনি সুফি সুন্নিরাও তাদের ভক্ত মুরিদদের জান্নাতের মিথ্যা আশ্বাস ও দুনিয়াবী সুবিধার লোভ দেখায়। আল্লাহ ইসলামের শরিয়তকে রাসূল সা. এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করে দিয়েছেন। যেখানে নতুন কোনো কিছুর সংযোজন বিয়োজন নেই। সেখানে সুফি সুন্নিরা নিজেদের পীর অলি আউলিয়াদের আদেশ নিষেধ ইত্যাদিকে শরিয়তের উপর স্থান দেয়।
যেমন: ইসলামে সালাত হচ্ছে ফরজ। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অংশ। অথচ সুফিবাদে সালাত আদায়ে রয়েছে শিথিলতা। এমনকি তাদের ভক্ত মুরিদরাও সালাত আদায়কারী নয়। একইসাথে ছেঁড়া ময়লাযুক্ত অপরিষ্কার পোশাকে অথবা পোশাক বিহীন শরীয়ত বিরোধী মানুষও তাদের জন্য আল্লাহর অলি।
শয়তানের কাজ যেমন কুরআন বিরোধী, তেমনি সুফিদের কাজও কুরআন বিরোধী। যেমন: কুরআনে আল্লাহ বলেন, তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত। আর সুফি সুন্নিরা বলে আল্লাহ আছেন মুমিনের ক্বলবে। আল্লাহ বলেন তাঁর আকার আছে তথা হাত পা চক্ষু ইত্যাদি।
আর সুফি সুন্নিরা বলে আল্লাহর কোনো আকার নেই তিনি নিরাকার। আল্লাহ বলেন তাঁর জ্ঞান ও দর্শন সমগ্র সৃষ্টিজগত জুড়ে। আর সুফিরা দাবি করে আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমান। আল্লাহ বলেন তাঁর সাদৃশ্য কেউ নেই। আর সুফিরা বলে সমগ্র সৃষ্টির ভিতরই আল্লাহ রয়েছে। তথা গরু ছাগল হাস মুরগী ইত্যাদি সকলের ভিতরই আল্লাহ রয়েছেন।
এভাবেই অসংখ্য বিষয় রয়েছে যা সরাসরি কুরআন হাদিসের বিরোধী। যে শয়তান শপথ করেছিল, মানুষকে আল্লাহ থেকে দূরে সরিয়ে দিবে এবং আল্লাহর কাছে লাঞ্চিত করবে। সেই শয়তানের শপথ পূরণ করছে সুফিদের পীর আউলিয়ারা। সুতরাং শয়তানের যে কাজ মানুষকে পথভ্রষ্ট করা, সেই কাজই সুফি পীর আউলিয়ারা করে যাচ্ছে নির্দ্বিধায়।
ধোঁকা দেওয়া
শয়তানের আরেকটি কাজ হলো মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। যেমন: শয়তান আদম ও হাওয়া (আ)-কে ধোঁকা দিয়ে বলল,
অর্থাৎ অন্ততকাল বেঁচে থাকার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে শয়তান আদম আ: কে ধোঁকা দিয়েছিল। সেই একই কাজই পীর আউলিয়ারাও করে যাচ্ছে। তারা দুনিয়ার সুখশান্তি ও আখিরাতে পার হওয়ার লোভ দেখায়। তারা দাবি করে যারা পীরের মুরিদ তারা যতই পাপ করুক না কেন তাদেরকে তাদের পীরেরা সুপারিশের মাধ্যমে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এককথায় পীর আউলিয়ারা হচ্ছে জান্নাতের ঠিকাদার।
অথচ আল্লাহ বলেন তিনিই একমাত্র সুপারিশকারী। তিনি যাদেরকে যারক জন্য অনুমতি দিবেন কেবলমাত্র তারাই তাঁর সামনে সুপারিশ করতে পারবে (সূরা বাকারা: ২৫৫)। অথচ সুফিরা নিজেরাই গায়েবিভাবে অগ্রিম দাবি করে তারা সুপারিশকারী। যার কোনো ভিত্তি নেই। এটা একটা সুস্পষ্ট ধোঁকা যা শয়তানের কাজ ছাড়া কিছুই নয়।
মন্দ ও অশ্লীল কাজের নির্দেশ
শয়তানের কাজই হচ্ছে মানুষকে অশ্লীল ও খারাপ কাজের দিকে ধাবিত করা। আল্লাহ বলেন,
ঠিক এইভাবেই শয়তানের মতো সুফিরাও মন্দ ও অশ্লীল কাজে মানুষকে নির্দেশ দেয়। যেমন: প্রতিটি পীর আউলিয়ার দরবার মাজারে নাচ গানের ভরপুর উৎসব হয়। যেখানে নারী পুরুষ অবাধে নাচ গান করে আল্লাহর আরাধনা করে! যেসব আসরের প্রধান আকর্ষণ থাকে নারী গায়িকা। এইসব গায়িকার অশ্লীলতাই হয় অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ!
নিজেদের দলভুক্ত করার প্রচেষ্টা
শয়তানের আপ্রাণ চেষ্টা হচ্ছে তার দল ভারী করা। আল্লাহ বলেন,
শয়তানের মতো সুফি সুন্নিরাও চায় তাদের দল ভারী করতে। তাই তারা বিভিন্ন উপায়ে তাদের ভক্ত মুরিদ বাড়ানোর চেষ্টা করে। বিশেষকরে কুরআন হাদিসের ভুুল ও অপব্যাখ্যা দিয়ে পূর্বপুরুষদের অনুসরণ এবং অধিকাংশের অনুসরণকে সঠিক বলে প্রমাণিত করে। একইসাথে ঈমান আমলের শিথিলতার লোভেও তাদের অনুসারীরা না বুঝেই ঈমানহারা হয়।
সরল পথ থেকে বিচ্যুত করা
শয়তানের চ্যালেঞ্জই ছিলো সে আল্লাহর সরল পথে বসে মানুষকে সেই সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করে আল্লাহ বিমুখী করবে। শয়তানের উক্তি ছিলো,
অর্থাৎ শয়তানের আকাঙ্ক্ষার মতো সুফিরাও সাধারণ মুসলমানদের আল্লাহর সরল সোজা পথ থেকে সরিয়ে তাদের পীর আউলিয়া মুখী করে দিয়েছে। এখন সুফি সুন্নির অনুসারীরা আর আল্লাহকে ডাকে না। যেকোনো বিপদে আপদে প্রয়োজন পূরণে তাদের জীবিত মৃত পীর আউলিয়াদেরই সাহায্য কামনা করে।
যেখানে কুরআন আল্লাহর সুস্পষ্ট সরল পথের ঘোষণা দিয়ে বলে, বান্দাদের যেকোনো প্রয়োজনে সাহায্য চাইবে একমাত্র আল্লাহর কাছে। সেখানে শয়তানের দোসর সুফিরা শিক্ষা দেয়, যেকোনো প্রয়োজনে চাইবে তাদের জীবিত মৃত পীর আউলিয়াদের কাছে। এভাবেই আল্লাহকে না ডাকার শয়তানের যে মিশন, সেই মিশনই সম্পূর্ণ করছে সুফি সুন্নিরা।
শয়তান যেমন ঘোষণা দিয়েছিল আল্লাহর সরল পথে বসে মানুষদের বিভ্রান্ত এবং পথভ্রষ্ট করবে। এখন পথে ঘাটে চৌরাস্তার মোড়ে বিভিন্ন বুজুর্গের কবরকে মাজারে রূপান্তর করে ঠিক একই কাজই করে যাচ্ছে সুফি সুন্নিরা। তাই এখন সাধারণ মানুষ বিপদে পড়লে আর আল্লাহকে স্বরণ করে না। পথে ঘাটে মাজারে মানত করে কবরবাসী থেকে সাহায্য কামনা করে। আর এভাবেই শয়তান সার্থক হয়।
পাপকে সুশোভিত করা
মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে শয়তানের অন্যতম কৌশল হলো, পাপকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করা। আল্লাহ বলেন,
যেকোনো ঈমানদার সর্বদা চেষ্টা করে ভালো কাজ করার। আর শয়তানের কাজ হলো পাপ কাজকে ভালো সাজিয়ে সেই পাপকে মানুষের সামনে এমনভাবে উপস্থাপন করা, যাতে সে এটাকে পাপ বলে মনে না করে বরং ভালো মনে করে।
ঠিক একই কাজই করে সুফি সুন্নিরা। তারা তাদের অনুসারীদের আল্লাহ বিমুখ করে তাদের পীর আউলিয়া মুখী করে। তারা বলে, যারা আল্লাহর অলি তারা আল্লাহর খাস বান্দা। আর আমরা আল্লাহর গুনাহগার বান্দা। আমরা যেহেতু গুনাহগার তাই আল্লাহ আমাদের কথা শুনবেন না।
সুতরাং আমাদের কিছু চাইতে হলে ঐ আল্লাহর অলিকে বলতে হবে বা চাইতে হবে। তিনিই আল্লাহর কাছে আমাদের ফরিয়াদ পৌঁছে দিবেন। আর আল্লাহ এভাবেই তাঁর বান্দাদের সাহায্য করেন!
অথচ তা কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কথা। কিন্তু মানুষ কুরআন না জানার কারণে এবং আল্লাহ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে সুফিদের এইসব মিষ্টি কথায় গলে যায় এবং ঈমানহারা হয়। শুধু তাইনয় সুফিরা ইসলামের নামে এমন এমন ইবাদত চালু করেছে যা সুস্পষ্ট বিদআত। এইসব ইবাদত দেখতে শুনতে খুবই চমৎকার। অথচ এইসব ইবাদত হযরত মুহাম্মদ (সা.) কখনোই করেননি শিক্ষাও দেননি।
যেমন: কবরে সিজদা, সামা সঙ্গীত, চারদিনা, চল্লিশা, কুলখানি, কবরবাসীর কাছে মানত, করবকে মাজারে রূপান্তর, রাসুলকে সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন সালাত কিয়াম, মিলাদুন্নবী, সওয়াবের উদ্দেশ্যে কবর যিয়ারত ইত্যাদিসহ আরও অসংখ্য আচার অনুষ্ঠান যা দেখতে এবং পালন করতে খুবই চমৎকার। কিন্তু তা কুরআন সুন্নাহ দ্বারা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সুতরাং শয়তানের দায়িত্ব যে কাজ করার, সেই কাজই এখন করে যাচ্ছে সুফি সুন্নিরা।
ইবাদতে বাঁধা সৃষ্টি করা
শয়তানের প্রধান কাজ হলো মানুষকে আল্লাহর ইবাদতে বাঁধা সৃষ্টি করে তাকে আল্লাহর সামনে অপমানিত করা এবং পূণ্য থেকে বঞ্চিত করা। যা অসংখ্য সহিহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ঠিক একইভাবে সুফি সুন্নিরাও আল্লাহর সঠিক ইবাদত থেকে সাধারণ মানুষকে ফিরিয়ে তাদের দিকে আকৃষ্ট করে।
যেমন: সিজদা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য। সেই সিজদা তারা আল্লাহকে না করে পীর আউলিয়াদের করতে বাধ্য করছে। পশু কুরবানী শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। সেই পশু কুরবানী এখন মানতের নামে পীর আউলিয়াদের সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে। পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করা ইবাদত। সেই কাবাকে তাওয়াফ না করে পীর আউলিয়াদের কবর খানকাকে তাওয়াফ করার শিক্ষা দিচ্ছে সুফিরা।
প্রতিদিন সালাত আদায় করা ফরজ। সেই সালাত আদায় না করার জন্য তারা বলে ইয়াকীন এসে গেলে কোনো ইবাদত নেই। শুধু তাইনয়, তারা প্রচার করে, “লেংটা বাবার মুরিদ হলে নামাজ রোজা লাগে না” এভাবেই সুফিরা ইসলামের অসংখ্য ইবাদতকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে তাদের মতো করে বিভিন্ন ইবাদত করে। যা শয়তানেরই একটি মিশন।
মন্দ ও অশ্লীল কাজের নির্দেশ
শয়তান মানুষের সামনে অশ্লীল ও খারাপ জিনিসকে আকর্ষণীয় ও উত্তম হিসেবে পেশ করে। আল্লাহ বলেন,
ঠিক একইভাবে সুফি সুন্নিরাও তাদের অনুসারীদের মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়। যা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী। তারা বিভিন্ন মাজারে দরবারে নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে নাচ গানের আয়োজন করে।
বিভিন্ন বিদআতী জিকির আজকারের নামে মদ গাঁজা ইত্যাদি সেবনের আসর বসায়। তাদের অসংখ্য সম্প্রদায় রয়েছে, যেখানে তারা নারী পুরুষদের একত্রে অবাধে আল্লাহর আরাধনায় লিপ্ত হয়। যা সম্পূর্ণ হারাম। এভাবেই সুফিরা শয়তানের সহযোগী হয়ে শয়তানের অলি বা বন্ধুতে রূপান্তরিত হয়ে শয়তানের কর্মকান্ডকেই ব্যাপকভাবে বিস্তার করছে।
অপচয়কারী
আল্লাহ অপচয় করা পছন্দ করেন না। আল্লাহ বলেন,
শয়তানের মতো সুফিরাও হচ্ছে শয়তানের সহযোগী। তারা তাদের অনুসারীদের বিপদে, প্রয়োজনে কবরবাসীর নামে টাকাপয়সা পশু ইত্যাদি দ্বারা মানত করতে উৎসাহিত করে। অথচ মানত করতে রাসুলুল্লাহ সরাসরি নিষেধ করেছেন।
কেননা দোয়া এবং সৎকর্ম ছাড়া কোনো কিছুই তাকদীর পরিবর্তন করতে পারে না। এইসব মানতের টাকা পয়সা কখনোই কারো উপকারে আসে না শুধুমাত্র কবরবাসীর ওয়ারিশদের ভরণপোষন ছাড়া। সুতরাং এইসব মানত একদিকে যেমন শিরক বিদআত। অন্যদিকে হচ্ছে অপচয়।
তাবিজ দ্বারা কুফুরি
কুফুরি করা হচ্ছে শয়তানের কাজ যা তাবিজ কবজ দ্বারা সুফিরা করে যাচ্ছে আল্লাহ বলেন,
এই তাবিজ কবজই সুফিদের আলেম ওলামা পীর মাশায়েকদের প্রধান আয়ের উৎস। তারা তাবিজকে জায়েজ করে সুফি সুন্নি সমাজে এর ব্যাপক প্রচলন করছে। যে কাজ সুস্পষ্ট হারাম সেই কাজকে সুফি সুন্নিরা করে যাচ্ছে অবলীলায় শয়তানের বন্ধু হয়ে।
আল্লাহ বিমুখে শয়তান নিয়োগ
আল্লাহর যেসব বান্দা তাঁর স্বরণ করে না, আল্লাহ নিজেই তার জন্য একজন শয়তান নিয়োগ করে দেন। আল্লাহ বলেন,
ঠিক একইভাবে, সুফি সুন্নিদের কাজ হচ্ছে তাদের অনুসারীদের যাবতীয় আল্লাহর স্বরণ থেকে দূরে রাখা। সেইসাথে মুরিদদের দৃষ্টি পীর আউলিয়ামুখী করে শয়তানী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত করা।
সৎপথে বাঁধা প্রদান
শয়তানের প্রধান কাজই হচ্ছে আল্লাহর সৎপথে মানুষকে বাঁধা দেওয়া। যাতে সে সৎকর্ম করতে না পারে। আল্লাহ বলেন,
শয়তানের মতো সুফি সুন্নিরাও মানুষকে আল্লাহর পথে এমনভাবে বাঁধা দেয়, যেন তারা যা (কুরআন হাদিসের আলোকে) করছে তা ভুল। আর তাদের কথিত পীর আউলিয়ারা যা করেছে করতে বলেছে তা-ই সঠিক।
এভাবেই সুফিরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের পীর আউলিয়াদের জন্য সিজদা, সালাত, তাওয়াফ, কুরবানী, মানত, দান সদকা ইত্যাদি করে শয়তানের অলিতে পরিনত হয়েছে।
ঈমানহারা করা
একজন মানুষের প্রধান কাজই হলো আল্লাহর উপর ঈমান আনা। আর শয়তানের প্রধান কাজ হলো মানুষকে ঈমানহারা করা। আল্লাহ বলেন,
সুতরাং যারা শয়তানের সাথী হয় তারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে না। ঠিক একইভাবে সুফিরা আল্লাহ সম্পর্কে এমন সব আকিদা পোষণ করে যা তাদের ঈমানহারা করে সরাসরি ইসলাম থেকে বের করে দেয়।
আল্লাহ যেখানে কুরআনে বলেন, ঐদিন কেউ কারো কাজে আসবে না, কোন ভাইবোন আত্মীয়স্বজন কেউ কারো উপকার করতে পারবে না। কোনো কিছুর দামে কোনো কিছুই বেচাকেনা হবেনা ইত্যাদি। সেখানে শুধুমাত্র পীর অলি আউলিয়াদের মুরিদ হলেই কোনো আমল ছাড়াই সেই অলি আউলিয়ারা সুপারিশের মাধ্যমে তাদের জান্নাতে নিয়ে যাবেন। অথচ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কারো জন্য কেউ সুপারিশও করতে পারবে না।
সুতরাং যারা প্রকৃত ঈমানদার না হয়ে সুপারিশের বিশ্বাসে সুফিদের অনুসারী হয়। তারা মূলত আল্লাহ এবং আখিরাতে অবিশ্বাসী। এভাবেই সুফিরা শয়তানের বন্ধু হয়ে শয়তানের যাবতীয় কাজের আনজাম দিয়ে যাচ্ছে।
শেষ কথা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, শয়তান যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে আল্লাহর সাথে চ্যালেঞ্জ করেছিল। সেই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ করতে সাহায্য সহযোগিতা করছে সুফি সুন্নিদের সুফিবাদ।
মোটকথা শয়তানের যাবতীয় কুকর্ম গুলো গুরুত্ব সহকারে পালন করছে সুফি সুন্নির পীর আউলিয়ারা। আর এভাবেই সুফি সুন্নিদের অনুসারীরা পীর অলি আউলিয়াদের অন্ধ অনুসরণের মাধ্যমে শয়তানের অনুসারীতে পরিনত হয়েছে
আপনি আরো যা পড়তে পারেন
- প্রবৃত্তির অনুসরণ কী? প্রবৃত্তির অনুসারীদের পরিনতি
- যা ইসলামী শরিয়তের উৎস নয় নয়
- শরিয়ত কাকে বলে? শরিয়তের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, উৎস ও গুরুত্ব কী?
- সুফি সুন্নি কারা? সুফিবাদী সুন্নিদের আকিদা সমূহ কী কী?
- পথভ্রষ্ট কারা? পথভ্রষ্টদের পরিনতি কী? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয়
- বিদআত কী? বিদআতের ভয়াবহতা ও পরিনাম
- মুশরিক কে? মুশরিকের বৈশিষ্ট তাদের পরিনতি কী?
- নিফাক কী? মুনাফিকের পরিচয় ও পরিনতি
- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ-এর ব্যাখ্যা (পর্ব-১)
- ঈমান কী? এবং ঈমান ভঙ্গের কারণ সমূহ কী কী?
- ইসলাম কাকে বলে? ইসলামের পরিচয়, ইসলাম শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
- জন্মদিনের শুভেচ্ছা ও জন্মদিন পালন করা কি জায়েজ?
- ১০০+ মোটিভেশনাল উক্তি, এসএমএস, স্ট্যাটাস ও ছবি ডাউনলোড
- সহি শুদ্ধ সকল নামাজের নিয়মাবলী
- জুমা মোবারক, জুমার দিনের আমল, ফজিলত, করণীয় ও বর্জনীয়
- ইসলামিক ফেসবুক পোস্ট- বাংলা স্ট্যাটাস ডাউনলোড
- হযরত মুহাম্মদ সা. এর সংক্ষিপ্ত জীবনী
- ইমাম বুখারি (রহ.) এর জীবনী
- হযরত উসমান (রা.) এর জীবনী
- হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর জীবনী
- হযরত আদম (আ.) এর জীবনী
- হযরত আলী (রা.) এর জীবনী
- হযরত ওমর (রা.) এর জীবনী
- ইমাম আবু হানিফা (রহ.)
- ১০ টি সেরা ইসলামিক বই–যা অবশ্যই পড়া উচিত
- ইসলামিক ফেসবুক পোস্ট- বাংলা স্ট্যাটাস ডাউনলোড
- হযরত আবু বকর (রা.) এর জীবনী
- যে আমলে নেকী বৃদ্ধি হয়