AddText 05 31 02.49.35

পথভ্রষ্ট কারা? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 

0

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। আর যারা গোমরাহী তারা জাহান্নামের অধিবাসী।  দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা কারা আজ পথভ্রষ্টতায় পতিত। 

সূচিপত্র

পথভ্রষ্ট মনে কী

আমরা সকলেই জানি পথ মানে রাস্তা। আর রাস্তা মানেই হলো কোনো লক্ষ্যের দিকে যাওয়ার উপায়। এই পৃথিবীতে আল্লাহ মানুষকে শুধুমাত্র এক‌টি কারণ ও একটি উদ্দেশ্য নিয়েই সৃষ্টি করেছেন এবং প্রেরণ করেছেন। 

আর তা হলো, মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইবাদত করবে এবং তাঁর সন্তুষ্টি নিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এই লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য পূরণের জন্য প্রতিটি মানুষকে একটি সঠিক রাস্তা কিংবা পথে চলতে হবে। আর এই পথ কিংবা রাস্তা হলো ইসলাম।

যে পথে তথা ইসলামের সঠিক রাস্তায় চললে একজন মানুষ তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে সার্থক এবং সাফল্য লাভ করবে। আর তাই এই পথের খবর দিতে এবং এই পথের সাথে সকলের পরিচয় করিয়ে দিতে আল্লাহ প্রতিটি যুগে অসংখ্য নবী রাসূল পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন।

এইসব নবী রাসূলগণ তাদের সময়কার মানুষদের আল্লাহ এবং ইসলাম সম্পর্কে যাবতীয় ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করেছিল তারা ঈমান এনে আল্লাহর রাস্তায় নিজেদের নিয়োজিত রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায় করেছে। আর যারা নবী রাসুলদের দেখানো আল্লাহর পথে না চলে নিজেদের ইচ্ছামতো নানান মতে চলে দুনিয়াদারি পার করেছিল। তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি। আর তাদের পথগুলোই হচ্ছে পথভ্রষ্ট পথ।

অর্থাৎ যারা নবী রাসূলগণের দেখানো   আল্লাহর পথে না চলে নিজের মনগড়া পথে চলে দুনিয়াদারি করে, তাদেরকে বলা হয় পথভ্রষ্ট। যারা পথভ্রষ্ট তারা কখনোই আল্লাহর সন্তুষ্টি পায় না। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি না পাওয়ার অর্থ হলো তাঁর শাস্তির মুখোমুখি হওয়া। আর আল্লাহর শাস্তি দুনিয়া এবং আখিরাত উভয় জায়গার জন্যই প্রযোজ্য।

সুতরাং পথভ্রষ্ট হলো তারা যারা আল্লাহর উপর ঈমান না আনার কারণে কিংবা আল্লাহর উপর ঈমান আনার পরও আল্লাহর নির্ধারিত পথে চলে না। এবং তারা রাসূলদের দেখানো পথে না চলে তাদের নিজস্ব ধ্যানধারণা অনুযায়ী চলে। যারাই পৃথিবীতে এইরূপ  জীবনযাপন করে করবে তাদেরকে বলা হয় পথভ্রষ্ট। 

পথভ্রষ্ট কারা

আমরা এতক্ষণ জানলাম পথভ্রষ্ট মানে কী। এখন আমরা জানব পথভ্রষ্ট কারা। ইসলামের দৃষ্টিতে যারা ঈমান আনে না এবং যারা ঈমান আনার পরও  আল্লাহর হিদায়েতের রাস্তায় না চলে গোমরাহী পথে চলে, তাদেরকে পথভ্রষ্ট বলা। যারা অমুসলিম তাদের বিষয়ে কারো কিছু বলার নেই। তবে যারা নিজেদের মুসলিম দাবি করার পরও ইসলামের বাইরে চলে তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে জানার চেষ্টা করব কী কী কারণে কারা কারা কুরআন হাদিসের আলোকে পথভ্রষ্ট হয়ে গেছে।

অমুসলিমরা পথভ্রষ্ট 

আল্লাহর দুনিয়ায় যারা ঈমান আনে না তারা  সুস্পষ্টভাবে পথভ্রষ্ট। কেননা ঈমানই হচ্ছে একজন মানুষের উপর আল্লাহর সন্তুষ্টি। সুতরাং যাদের ঈমান আনা নসিবে নেই তারা অবশ্যই পথভ্রষ্ট।  আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা

 

এই আয়াত থেকে বুঝা যাচ্ছে যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে না, তারা পথভ্রষ্ট। একইসাথে যারা মুখে আল্লাহকে স্বীকার করে ঈমান আনে। কিন্তু কাজে কর্মে আমলে তার প্রতিফলন নেই, তারাও পথভ্রষ্ট। আমাদের সমাজে অসংখ্য মুসলমান আছে। যারা মুখে ঈমানের দাবি করলেও আমলে ঈমান প্রতিফলিত হয় না। অতএব তারা পথভ্রষ্ট।

মুনাফিকেরা পথভ্রষ্ট

আল্লাহর আইনে যারা ঈমান আনার পর সত্যিকার ও পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করতে পারে না বা পরিপূর্ণ ইসলাম যারা মানে না। তারা হচ্ছে মুনাফিক শ্রেণীভুক্ত। মুনাফিক কারা ও তাদের পরিচয় কী, এই বিষয়ে আমাদের বিস্তারিত জানার দরকার আছে। আর তাদের সম্পর্কে কুরআন সুন্নাহর সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হলো তারা পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা

এখানে একপ্রকার ঈমানদারদের কথা বলা হচ্ছে, যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনার পর ইসলামের সুস্পষ্ট বিধি বিধান না মেনে নিজস্ব মতামতের ভিত্তিতে শয়তানের আরাধনা করার কারণে তারা মুনাফিক এবং  পথভ্রষ্ট। 

এইসব নামধারী মুসলমানরা মুখে নিজেদের মুমিন দাবি করে এবং সমাজে সেইমতো নিজেদের উপস্থাপনও করে। কিন্তু আমল দ্বারা  আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের প্রতি বিশ্বাস এবং ভালোবাসা প্রকাশিত হয় না। তারা মূলত প্রবৃত্তির এবং তাগুতের অনুসারী হয়। এদের কাছে আল্লাহর আইন কানুন পছন্দনীয় নয়। বরং তার পরিবর্তে মানবসৃষ্ট আইনের প্রতিই তাদের শ্রদ্ধাবোধ এবং বিশ্বাস।  

এরা নিজেদের যেকোনো বিচার ফয়সালার জন্য   ইসলামী আইনের রায় মেনে নিতে চায় না। বরং ইসলাম বিদ্বেসীদের রায়ের দিকে ফিরে যায়। যেমন আজকাল অধিকাংশ মানুষই গনতন্ত্রের পূজা করে  ইসলামী আইন অচল করে দিয়েছে। 

সুতরাং যারা ইসলামের পরিবর্তে গনতন্ত্রকে পছন্দের জায়গায় স্থান দেয় তারা মুনাফিক। আর যারা মুনাফিক তারা আল্লাহর বিধানে পথভ্রষ্ট। 

মুনাফিকদের সহায়তাকারী পথভ্রষ্ট

আমরা জানি যারা মুনাফিক তারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তিতে আছে। এরা না মুসলিম না অমুসলিম। আর তাই তাদের ব্যাপারে কখনোই দোদুল্যমনা মানসিকতা কিংবা নমনীয়তা দেখানো যাবে না। কেননা আল্লাহ নিজেই তাদের পথভ্রষ্ট আখ্যা দিয়েছেন। সুতরাং তাদের ব্যাপরে কখনোই সন্দিহান হওয়ার অবকাশ নেই। 

কেননা আমরা যদি মুনাফিকদের ব্যাপারে নমনীয় হই তাহলে তারা আমাদেরও তাদের  পথভ্রষ্টতার দিকে টেনে নিয়ে যাবে।  আল্লাহ বলেন, পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা

মুশরিকরা পথভ্রষ্ট

যারা আল্লাহর সাথে শিরক করে তারা হচ্ছে মুশরিক। আর এই শিরক  একটি জঘন্য এবং ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। আল্লাহ দুনিয়ায় তওবা করা ছাড়া আখিরাতে শিরকের পাপ কখনোই ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা

অতএব যারা কোনো কারণে শিরকে জড়িয়ে পড়বে তারা কখনোই ক্ষমা পাবে না। তাই মুশরিকরা চরম পথভ্রষ্ট। আমাদের উপমহাদেশের সুফিবাদী আকিদাও একটি চরম শিরকি মুরশরিকি আকিদা। যেখানে প্রতিটি কাজে কর্মে ঈমান আমলে আল্লাহর সাথে শিরক করা হয়। অতএব তারাও পথভ্রষ্টতার অন্তর্ভূক্ত।

আল্লাহ থেকে নিরাশকারীরা পথভ্রষ্ট

ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে জীবনের যেকোনো বিপদে আপদে সর্বদা ভরসার মালিক হচ্ছেন আল্লাহ। আমাদের সকলকে তার উপরই ভরসা রাখতে হবে এবং কখনোই নিরাশ হওয়া যাবে না। অথচ ঈমান আনার পরও অনেক মানুষ পরিপূর্ণ ঈমানদার না হওয়ার কারণে বিপদে আপদে দুঃখ দূর্দশায় আল্লাহ থেকে নিরাশ হয়ে পড়ে। অথচ আল্লাহ থেকে নিরাশ হওয়া মানেই সঠিক পথ না পাওয়া এবং  পথভ্রষ্ট হওয়া।  আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা

অর্থাৎ আল্লাহ থেকে নিরাশ হওয়া মানেই পথহারা হওয়া।  কেননা কাফিররাই আল্লাহ থেকে নিরাশ হয়। আর  আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার পরও অধিকাংশ মুসলমান পথভ্রষ্ট। তাই আমাদের জানা উচিত পথভ্রষ্টতা মানে কী? কারা পথভ্রষ্ট ও তাদের পরিনতি কী? একইসাথে আমাদের সমাজে কারা

সুতরাং কখনোই আল্লাহ থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না এবং নিরাশ হওয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। অথচ আমাদের উপমহাদেশের সুফিবাদী সুন্নিদের আকিদা হচ্ছে, কোনো মানুষ যখন পাপ করতে করতে পাপী হয়ে যায়। তখন আল্লাহ আর তাকে ক্ষমা করেন না। (নাঊজুবিল্লাহ) আর তাই ঐ পাপী বান্দাকে পীরের কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে। আর পীর আল্লাহর কাছ থেকে তাকে ক্ষমা করিয়ে নিবেন।  কিন্তু আল্লাহর শিক্ষা হচ্ছে কেউ যদি পাপ করে, সে যেন আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হয়। তাই আল্লাহ বলেন,

অতএব এই আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে সুফি সুন্নিরা তাদের মুরিদদের পাপের ক্ষমা চাওয়ার জন্য পীরের কাছে যাওয়ার যে ত্বরিকা আবিষ্কার করেছে, তা সম্পূর্ণ আল্লাহ বিরোধী আকিদা। আর এই কারণেই সুফি সুন্নিরা পথভ্রষ্ট। 

 

প্রবৃত্তির অনুসারীরা পথভ্রষ্ট

আমাদের সমাজে একটি শ্রেণী রয়েছে যারা ইসলামকে বাদ দিয়ে নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণে দ্বীন দুনিয়া ইত্যাদি পালন করে। অর্থাৎ তারা ইসলামে কী আছে কী নেই তার ধার ধারে না। তারা তাদের মতো করেই দুনিয়া এবং আখিরাতের জন্য আমল করে। কিন্তু যারা কুরআন সুন্নাহর বাইরে গিয়ে নিজেদের মতো দ্বীন পালন করে, তারা পথভ্রষ্টতায় পর্যবসিত।

এর কারণ যারা আল্লাহ এবং রাসুলের দেখানো পথ ছাড়া নিজেদের কিংবা অন্যের দেখানো পথে প্রবৃত্তির অনুসরণে জীবনযাপন করে। তাদেরকে আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর এঁটে দেন। এরফলে তারা চোখে দেখেও দেখে না কানে শুনেও শোনে না। আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারা? পথভ্রষ্টদের পরিনতি কী? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 

আমাদের সমাজে এমন মানুষ হচ্ছে তারা, যারা কুরআন হাদিসের সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও নিজেদের মনমতো পূর্বপুরুষদের অনুসরণ কিংবা বাপ দাদার অনুসরণে সুফিবাদী আকিদা পালন করে। এরাও একপ্রকার প্রবৃত্তি অনুসরণ করে। তাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারা? পথভ্রষ্টদের পরিনতি কী? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 

সুতরাং সুফি সুন্নিদের আকিদা হচ্ছে একটি পথভ্রষ্ট আকিদা। 

 

শয়তানের অনুসারীরা পথভ্রষ্ট

শয়তান মানুষের আজীবনের শত্রু। যেকারণে যারাই শয়তানকে প্রশ্রয় তাদেরকে সে তার অনুসারী ও বন্ধুতে পরিনত হবে। অথচ আল্লাহ শয়তান এবং তার অনুসারীদের জন্য জাহান্নাম প্রস্তুত রেখেছেন। কেননা আল্লাহর দৃষ্টিতে তারা হচ্ছে পথভ্রষ্ট বিপদগামী। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারা? পথভ্রষ্টদের পরিনতি কী? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 

 

অর্থাৎ শয়তান নানানভাবে  বিভিন্ন রূপে মানুষের কাছে এসে তাকে বিভ্রান্ত করে। এই বিভ্রান্তিতে পা দিয়ে মানুষ বিভিন্ন আল্লাহ বিরোধী অপকর্ম করতে থাকে। যা তার জন্য শোভনীয় নয়। সুতরাং শয়তান যাদের বন্ধু হবে কিংবা শয়তানকে যারা বন্ধু বানাবে তাদের উভয়ই পথভ্রষ্ট এবং উভয়েরই শাস্তি প্রযোজ্য।  আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 5

 

 

একইভাবে শয়তানের সাথে যাদেরই সম্পর্ক থাকবে তারাই প্রকাশ্যে ক্ষতিতে নিমজ্জিত হয়ে পথভ্রষ্ট হবে। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 6

 

 

নিজের অনিষ্টকারীরা পথভ্রষ্ট

এই পৃথিবীতে যারা ঈমান আনে তারা নিজেদের মঙ্গলের জন্যই ঈমান আনে। অর্থাৎ তাদের এই ঈমান আনা এবং আমল করা তাদের অভীষ্ট লক্ষ্যে তথা আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রাপ্তিতে পৌঁছে দিবে। কিন্তু যারা ঈমান না এনে কিংবা ঈমান আনার পর মুনাফিকিতে লিপ্ত থাকে। এবং অন্যকেও পাপে উৎসাহিত করে তাদেরকে পেতে হবে সীমাহীন আযাব। আল্লাহ বলেন, 

 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 12

 

সুতরাং যে নিজের ভালো না বুঝে পাপে নিমজ্জিত হয়ে নিজের অমঙ্গল চাইবে, সে নিজ থেকেই পাপের পথে পরিচালিত হয়ে পথভ্রষ্ট হবে। আল্লাহ বলেন,

 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 13

 

সুতরাং যারা নিজেদের কল্যাণ কামনা করে তারা আল্লাহ ও রাসুলের রাস্তায় নিজেদের পরিচালিত করে। কিন্তু যারা নিজেদের মঙ্গল কামনা করে না, তারা আল্লাহ এবং রাসুলের নির্দেশিত পথ থেকে সরে গিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ে। আর পথভ্রষ্ট হওয়া মানেই হচ্ছে দুনিয়া এবং আখিরাত ধ্বংস হওয়া।  

সালাত বিনষ্টকারী ও কুপ্রবৃত্তিকারীরা পথভ্রষ্ট

আমাদের সমাজে যারা সুফি সুন্নি আকিদার অনুসারী, তাদের অধিকাংশ পীর অলি আউলিয়ার দরবারে নামাজ কালামের ঠিক ঠিকানা নেই। অধিকাংশ মুসলমানই আজ তাদের খপ্পরে পড়ে নামাজ কালাম ছেড়ে ভিন্ন পথের অনুসারী। অথচ সালাত আদায় করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ এবং তা ব্যাধ্যতামূলক।

এই কারণে যারা অনাদায়কারী, কিংবা সালাতে অলসতাকারী তারা সুস্পষ্ট ভাবে মুনাফিক। এরা সরাসরি পথভ্রষ্ট দলের অন্তর্ভূক্ত। শুধু তাইনয় একইসাথে যারা কুপ্রবৃত্তির বা ইসলামকে বাদ দিয়ে নিজেদের  প্রবৃত্তিকে প্রাধান্য দিয়ে জীবনযাপন করে তারাও পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 14

 

আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন, 

 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 15

 

সুতরাং যারা নামাজ আদায় না করে অস্বীকার করেছে কিংবা গাফিলতি করেছে, তারা সকলেই পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিতভাবে। এই কারণে আমাদের উপমহাদেশের সুফিবাদী সুন্নি হচ্ছে একটি পথভ্রষ্ট আকিদা।  তারা সরাসরি নামাজকে অস্বীকার। তাদের আকিদা হলো, যার ইয়াকীন এসে যায় তার সালাত নামাজ কালাম নেই। 

শুধু তাইনয় সালাত মানেই সিজদা। এই কারণে তারা তাদের পীরকে সিজদা করে সালাত আদায় করে। সুতরাং সুফিদের এমন আকিদা সুস্পষ্ট গোমরাহী ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা এইসব কুফুরি আকিদা পোষণ করার পরও নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দেয় এবং দাবি করে। 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 48 1
সুফি সুন্নিরা পীরকে সিজদা করার মাধ্যমে সালাত পরিপূর্ণ করে

 

অন্ধ অনুসরণকারীরা পথভ্রষ্ট

ইসলামে কুরআন এবং হাদিসের বাইরে কখনোই কাউকে অন্ধ অনুসরণ করা যাবে না। যদি কেউ আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল ব্যতীত অন্যদের অন্ধ অনুসরণ করে তাহলে  তারা নিশ্চিতভাবেই পথভ্রষ্ট হবে। আল্লাহ বলেন, 

AddText 06 01 02.49.39

 

সুতরাং যারা অন্যের অন্ধ অনুসরণে তথা  নেতা, পীর, অলি আউলিয়া ইত্যাদির কথাতে ইসলাম পালন করে। কিংবা ইসলামের আদেশ নিষেধকে তোয়াক্কা না করে এদের কথাকেই গুরুত্ব দেয়। তারা আল্লাহর চোখে পথভ্রষ্ট। 

আমাদের উপমহাদেশে অধিকাংশেরও বেশী লোক আজ অন্ধ অনুসরণে ধর্মকর্ম পালন করে। এইসব সুফি সুন্নিদের যতই সঠিক ইসলামের কথা বলা হোক না কেন, তারা কখনোই তাদের বড় নেতা বা বুজুর্গের দেখানো পথ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই মানতে চায় না। এরাই সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। 

 

পাপে উচ্ছ্বসিতরা পথভ্রষ্ট

আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা দ্বীন ধর্মের পরোয়া করে না। হতে পারে তারা কাফির, মুরতাদ, নাস্তিক কিংবা ঈমানের দাবিদার। এই জাতীয় শ্রেণীটি তাদের দুনিয়াবী কাজকর্ম ভোগ বিলাস ইত্যাদি নিয়েই ব্যস্ত থাকে। আর তারা এইসব করেই আনন্দ পায়। এবং মনে করে তারা ত ভালোই আছে। এই ভালো থাকার কারণে তারা তাদের নিজেদের কুকর্মে উৎফুল্ল উচ্ছ্বসিত। অথচ তারা বুঝতে পারে না,  আল্লাহ তাদের আরো কুকর্ম করার সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে দিচ্ছেন। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারা? পথভ্রষ্টদের পরিনতি কী? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 

 

অর্থাৎ আল্লাহ এইসব পথভ্রষ্ট লোকদের তাদের মতোই চলতে সাহায্য করেন। যারা আল্লাহকে মানে না কিংবা যারা আল্লাহ এবং তাঁর বিধান নিয়ে চিন্তা চেতনা করে না।  তাদের জন্য আল্লাহ নিজেই একটি শয়তান নিয়োগ করে দেন। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 11

সুতরাং যারা আল্লাহ বিমুখ অর্থাৎ দ্বীন ইসলামের বিধি বিধান ঈমান আমল পরিপূর্ণ ভাবে মানে না। ইসলামের বাইরে গিয়ে যারা নিজেদের ইচ্ছামত দ্বীন পালন করে। তাদের পিছনে আল্লাহ নিজেই একটি শয়তান নিয়োজিত করে। যে শয়তান তার সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়। এবং সে তাকে আর ভালো হওয়ার সুযোগ দেয়না যতক্ষণ না আল্লাহ চান। 

এই শয়তানই সুফি সুন্নিদের কাঁধে ভর করেছে। তারা তাদের ভক্ত মুরিদদের আল্লাহ ও রাসুল নির্দেশিত ঈমান আমল না করে, তাদের কথিত পীর অলি আউলিয়াদের পূজা করতে বাধ্য করছে। তাই তারা আল্লাহর কথা না শুনে পীর অলি আউলিয়াদের কথামত ইসলাম পালন করে। আর এইসব করার কারণেই তারা আজ পথভ্রষ্ট এবং বিভ্রান্ত। 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 49
সুফিবাদী সুন্নিরা পীরকে অন্ধ অনুসরণ করে

কুরআন অস্বীকারকারীরা পথভ্রষ্ট

এই পৃথিবীতে একমাত্র সত্য মিথ্যা নির্ণয়কারী কিতাব হচ্ছে পবিত্র আল কুরআন। যে মুমিন সে কুরআন স্বীকার করে আর যে কুরআন স্বীকার করে না সে নামে মুসলিম হলেও বেঈমান। আর এই কারণে যারা কুরআনকে অস্বীকার করে তারা পথভ্রষ্ট।  একইসাথে ঈমান আনার পর যারা  গোমরাহী, অজ্ঞাতা ও মুনাফিকিতে লিপ্ত হয়ে  কুরআনকে অস্বীকার করে তারাও পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 16

অর্থাৎ যারা জেনে বুঝে কিংবা অজ্ঞাতা বা অন্ধবিশ্বাসের কারণে কুরআনকে অস্বীকার করে তারা হচ্ছে প্রকৃত অন্ধ। আমাদের সমাজে সুফি সুন্নিরা কখনোই প্রকৃতপক্ষে  কুরআন স্বীকার করে না। তারা তাদের পীর অলি আউলিয়া বুজুর্গদের কথার বাইরে কোনো কিছুই মানতে চায় না।  তাদেরকে কুরআন হাদিস থেকে হাজারো দলিল নিদর্শন দিলেও তারা কখনোই তা মানে না। সুফিদের আকিদা সমূহ সরাসরি ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক। সুতরাং তারাও পথভ্রষ্টতায় পর্যবসিত।

দ্বীনের জ্ঞানহীনরা পথভ্রষ্ট

যারা দ্বীনের ক্ষেত্রে নিজেদের জ্ঞানকে কাজে লাগায় না তারা তাদের অজ্ঞতার কারণে পথভ্রষ্ট। দ্বীনের ব্যাপারে এই অজ্ঞতা ও পথভ্রষ্টতার কারণে তারা নিজেদের বিবেক বুদ্ধিকে কাজে লাগাতে সক্ষম হয় না। ফলে তারা নিজেদের প্রবৃত্তি ও বাতিল মতের অনুসারী হয়ে থাকে। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 19

সুতরাং যারা খেয়াল খুশির অনুসরণ করে তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। আর এই পথভ্রষ্টতার কারণে তারা কুরআন হাদিসের কথা শুনতে চায় না। যেমন আমাদের উপমহাদেশে সুফি সুন্নিরা। তারা তাদের পীর আউলিয়াদের কথা ছাড়া আর কারো কথাই শুনতে চায় না। তারা নিজেরাও নিজেদের নূন্যতম জ্ঞান বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে জানার চেষ্টা করে না যে, কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল। এদেরকে হাজারো কুরআন হাদিসের দলিল দেওয়া হলেও তারা তা মানতে চায় না। এরাই সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত।  আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 20

 

 

সুতরাং এইসব সুফি সুন্নিরা কখনোই কুরআন হাদিসের কথা শোনে না। আর তাই এরা নামে ঈমানদার হলেও মূলত এরা পথভ্রষ্ট।

সুন্নাহ বিরোধীরা পথভ্রষ্ট

রাসূল সাঃ এর আদর্শ এবং অনুসরণই হচ্ছে প্রকৃত ইসলাম। যারা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের সুন্নাহ এবং আদর্শ বিরোধী তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। সুতরাং যারা আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলের আদেশ নিষেধ নির্দেশের বিরুদ্ধে যায় তারা পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 21

এই আয়াত থাকে বুঝা যায়, যারা রাসূলের নির্দেশ তথা হাদিস ও সুন্নাহর বাইরে যাবে তারা পথভ্রষ্ট হবে। আর আমাদের উপমহাদেশে সুফি সুন্নিরা হচ্ছে সুস্পষ্ট হাদিস ও সুন্নাহ বিরোধী একটি আকিদা। কেননা এরা রাসূলের দেখানো পথে না চলে নিজের পীর অলি আউলিয়াদের দেখানো পথে চলে। তাই এরা পথভ্রষ্ট। 

সত্যার দিকে সাড়া না দেওয়া

যারা সত্যকে মানে না এবং সত্যের দিকে অগ্রসর হয় না কিংবা সত্যের আহবানে সাড়া দেয় না তারা কখনোই সুপথ প্রাপ্ত হয় না। অথচ আল্লাহ এই পৃথিবীতে যুগে যুগে অসংখ্য নবী রাসুল পাঠিয়েছেন। তারা আল্লাহর বান্দাদের সঠিক পথে চলার জন্য নানান দিকনির্দেশনাসহ সত্যের দিকে তথা আল্লাহর দিকে আহবান করতেন।

কিন্তু এইসব জাতি গোষ্ঠীর কিছু অংশ ছাড়া অধিকাংশরাই কখ‌নো নবী রাসুলদের আহবানে সাড়া দেয়নি। আর তাই যারাই আল্লাহর আহবানে সাড়া দেয়নি তারাই পথভ্রষ্ট হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।

একইভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  পরবর্তী তাঁর উম্মতদের মধ্যে এমন কিছু দ্বীনের দ্বাঈ আছেন এবং থাকবেন যারা মানুষকে সত্যের দিকে তথা কুরআন ও সুন্নাহর দিকে আহবান করবে। তারপরও অধিকাংশ মানুষ ঈমান আনলেও সঠিকভাবে ঈমান আনে না এবং  আনবে না। আর তাই যারাই সত্যের পথে তথা আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর কথায় সাড়া দিবে না, তারাই হবে পথভ্রষ্ট।  আল্লাহ বলেন, 

 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 24

 

এই আয়াতে ভিত্তিতে বর্তমান সুফি সুন্নিরা পথভ্রষ্ট একটি দল। কেননা এদেরকে যতই কুরআন হাদিসের আলোকে ঈমান আমল করতে বলা হোক না কেন তারা কখনোই এই আহবানে সাড়া দেয় না এবং যাচাইও করে না। এই কারণে তারা পথভ্রষ্ট। 

নাফরমানরা পথভ্রষ্ট

আল্লাহ এই দুনিয়ায় মানুষকে পাঠিয়েছেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য। আর যখনই কোনো বান্দা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে তখন আল্লাহ খুশি এবং তার উপর সন্তুষ্ট হয়। আবার যখন বান্দারা তাঁর নাফরমানি করে তখন তিনি অসন্তুষ্ট হন। আর যারা আল্লাহর নাফরমানি করে তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। কেননা তাদেরকে আল্লাহ কখনোই সঠিক পথ দেখান না। 

আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 30

 

উপরোক্ত আয়াত দ্বারা এটা সুস্পষ্ট যে আমরা বিপদে আপদে আল্লাহকে ডাকলেও বিপদ থেকে উদ্ধার হয়ে গেলেও আল্লাহকে ভুলে যায় এবং তাঁর নাফরমানি করি। অনুরূপভাবে আমাদের দেশে যারা সুফিবাদী সুন্নি রয়েছে, তারাও সরাসরি আল্লাহর নাফরমানি করে।

তাদের যেকোনো বিপদে আপদে তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাঁর বান্দা কথিত পীর অলি আউলিয়াদের ডাকে। অথচ তাদের কিছুই করা ক্ষমতা নেই। বরং আল্লাহই তাদের সকল আশা ভরসা পূরণ করে। কিন্তু তারা মনে করে তাদের পীর আউলিয়ারাই তাদের উপকার করেছে।

ফলে তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে আল্লাহর নাফরমানি করে এবং কথিত পীর আউলিয়াদের পূজা করে। আর এভাবেই তারা পথভ্রষ্ট হয়ে জাহান্নামের উপযোগী হয়ে যায়।

 

উপদেশ না শোনে পথভ্রষ্টতা

কুরআন হাদিসের উপদেশ শোনা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। কিন্তু যারা কুরআন হাদিসের উপদেশ শুনে মানার চেষ্টা করে না তারাই পথভ্রষ্ট। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 25

 

অর্থাৎ যখন তাদের কাছে কুরআন হাদিসের কোনো নির্দেশ আদেশ উপদেশ আসত তখন তারা এইসব উপদেশ মানত না। এই উপদেশ না মানার কারণে তারা পথভ্রষ্ট। কেননা  তারা আল্লাহর কোনো উপদেশই শুনে না এবং তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অথবা তারা তা এমনভাবে শোনে যেন শোনা আর না শোনা একই। তাদের এই বিষয়ে আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 26

 

এই আয়াতটি বর্তমান সুফি সুন্নিদের জন্য প্রযোজ্য। কেননা তারা কখনোই কুরআন হাদিসের আদেশ উপদেশ মানে না। এই আদেশ উপদেশ না মানার কারণে তারা  শয়তানের প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে শয়তানের অনুসারী হয়ে যায়। তাই আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 27

 

এটা সুস্পষ্ট যে শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। শয়তান মানুষকে কুরআন হাদিসের  উপদেশ গ্রহণে নিরুৎসাহিত করে, বাঁধা দেয় এবং বিভিন্ন প্রলোভন দেখায়। আর এই উপদেশ না করার কারণে অধিকাংশ জাতিই ধ্বংস হয়ে গেছে। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 28

 

মিথ্যাবাদীরা পথভ্রষ্ট

মিথ্যা দিয়ে কখনোই সত্যকে বিনষ্ট করা যায় না। আর এই কারণে যারা মিথ্যাবাদী তারা কখনোই সুপথ প্রাপ্ত হয় না। বিশেষকরে যারা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে কিংবা মিথ্যা ধারণা করে তারা সুনিশ্চিতভাবে পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 22

এই আয়াত থেকে আমাদের উপমহাদেশের সুফি সুন্নিদের একটা শিক্ষা নেওয়া উচিত। তারা রাসূলের আনীত ইসলামের বাইরে নিজস্ব ঈমান আকিদায় আল্লাহ সম্পর্কিত  বিভিন্ন ঈমান আকিদা পোষণ করে যেমন  ফানাফিল্লাহ, বাকিবিল্লাহ, ওয়াহদাতুল ওজুদ, আল্লাহ নিরাকার, মুমিনের কলবে আল্লাহর আরশ ইত্যাদি। 

এইসব মিথ্যা আকিদা কুরআন সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। আর এই কারণে তারা  মিথ্যাবাদী। আর যেহেতু আল্লাহ সম্পর্কেই তারা মিথ্যা রচনা করেছে। সেহেতু তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। এই পথভ্রষ্টতা তাদের জাহান্নামের আগুনের দিকে ধাবিত করে।

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 51
সুফিদের ভ্রান্ত আকিদা হলো দুনিয়াবী যেকোনো কিছু পাওয়ার জন্য মাজারে মানত করা

মন্দকে মন্দ না বলাও পথভ্রষ্টতা

এই পৃথিবীতে ভালো মন্দ কখনোই সমান হতে পারে না। একইভাবে যারা মন্দকে মন্দ মনে করে তারা,  যারা মন্দকে মন্দ মনে করে না তাদের সমান নয়। এইজন্য যারা কুরআন হাদিসের স্পষ্ট প্রমাণাদি থাকার পরও খারাপকে খারাপ বলে না। 

কিংবা যে ঈমান আমল ও ইবাদত বিদআত শিরক জানার পরও সেটা আসলেই বিদআত শিরক কিনা তা জানার চেষ্টা করে না তারা কখনোই সুপথ পায় না। সুতরাং  তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 23

 

এই আয়াতের ভিত্তিতে বর্তমান সুফি সুন্নিরা পথভ্রষ্ট। কেননা তাদের শিরকি কুফরি আকিদা সম্পর্কে হাজার দলিল দেওয়ার পরও তারা তাদের ঐসব অশ্লীলতাকে (নারী পুরুষদের অবাধ মেলামেশায়  নাচ গান, মহিলাদের মাজার জিয়ারত, ওরসের নামে বেহেল্লাপনা, করব সিজদা ইত্যাদিকে)  মেনে নেয়। তারা ভালো করেই জানে যে এইসব ইসলামী সংস্কৃতি নয় এবং এইসব ইসলামে জায়েজও নয়। তবুও তারা তাদের অনুসারীদের এইসব বিষয়ে ছাড় দেয় এবং উৎসাহ দেয়। এইসব কারণে সুন্নিরা পথভ্রষ্ট।

 

বিভ্রান্তকারীরা পথভ্রষ্ট

এই পৃথিবীকে আল্লাহ শয়তানের নানান মোহ দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। যাতে মানুষ দুনিয়াবী মোহে শয়তানের প্ররোচনায় অলীক আশার পেছনে ছুটে চলে। আর যারা সত্য মিথ্যা যাচাই না করে অলীক আশার পেছনে ছুটে তারা কখনোই সুপথ প্রাপ্ত হয় না এবং তারা পথভ্রষ্ট। 

 

আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 31

“তারা মুমিনদেরকে ডেকে বলবেঃ আমরা কি তোমাদের সাথে ছিলাম না? তারা বলবেঃ হ্যাঁ  কিন্তু তোমরা নিজেরাই নিজেদেরকে বিপদগ্রস্ত করেছ। প্রতীক্ষা করেছ, সন্দেহ পোষণ করেছ এবং অলীক আশার পেছনে বিভ্রান্ত হয়েছ, অবশেষে আল্লাহর আদেশ পৌঁছেছে। এই সবই তোমাদেরকে আল্লাহ সম্পর্কে প্রতারিত করেছে।” (সূরাঃ আল হাদীদ, আয়াতঃ ১৪)

 

এই আয়াতে আল্লাহ তাদেরকে ইংগিত করেছেন যারা ঈমান এনে মুনাফিকিতে লিপ্ত। এখানে কিয়ামতের পর জাহান্নামীদের অবস্থা কথা বর্ণনা করা হয়েছে। যারা আল্লাহর প্রতি সত্যিকারের ঈমান আনতে না পেরে দুনিয়াবী দুঃখ দূর্দশায় আল্লাহর কাছে না চেয়ে পীর অলি আউলিয়াদের দরবারে গিয়ে মানত করে শিরক করেছে। 

তারা ধারণা করেছিল আল্লাহ নিজে কোনো  কিছুই দিতে পারেন না। তাই তারা অলি আউলিয়াদের কাছে গিয়ে নানান সাহায্য কামনা করে। আর এভাবেই তারা নানান আশায় আল্লাহর কাছে না চেয়ে পীর আউলিয়াদের কথায় জীবনযাপন করে। অবশেষে যখন কিয়ামতে তাদের সামনে সকল সত্য উপস্থাপিত হয় তখন তারা সত্যিকারের মুমিনদের বলবে আমরাও তো আল্লাহর উপর ঈমান এনেছিলাম।

তারাও ঈমান এনেছিল এটা ঠিকই সত্য। কিন্তু তাদের ঈমান ছিলো পীর আউলিয়াদের উপর বিশ্বাসী শিরকি ঈমান। যে ঈমানের কথা আল্লাহ অন্য আয়াতে বলছেন এভাবে,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 32

 

সুতরাং যারা পীর অলি আউলিয়াদের কাছে চায় তারা শিরক করার কারণে পথভ্রষ্ট।

 

কবিদের অনুসারীরা পথভ্রষ্ট

আল্লাহ বিভিন্ন মানুষকে নানান প্রতিভা দিয়ে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। এইসব প্রতিভাবান মানুষদের মধ্যে এমন এমন কবি আছেন যাদের কথার মাধুর্য্যে সুরের মূর্ছনায় তারা সত্যকে মিথ্যা এবং মিথ্যাকে সত্যে প্রমাণিত করে। আর তাই এইজাতীয় কবির অনুসারীদের আল্লাহ পথভ্রষ্ট বলে আখ্যায়িত করেছেন। এর কারণ এইসব কবির অনুসারীরা কখনোই সত্য মিথ্যা যাচাই না করেই তাদের কথার উপর বিশ্বাস রাখে। তাই আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 29

 

সুতরাং কুরআন হাদিসের বিপরীতে কখনোই কবিদের কথাকে দ্বীন মনে করা যাবে না। আমাদের উপমহাদেশে সুফি সুন্নিরা তাদের পীর অলি আউলিয়াদের মাজারের ওরসে কিংবা ইসলামিক নামে গানের আসর বা জলসায় বিভিন্ন সুফি কবি বা বাউলদের আমন্ত্রণ জানায়।  এইসব অনৈইসলামিক গানের আসরে নারী পুরুষ একত্রিত হয়ে নাচগান করে।

এইসব শিল্পীরা এক একজন কবি বা বাউল। এইসব কবি ও বাউলরা ইসলামের নামে নানান কীর্তি কাহিনী মানুষকে শোনায়। যার কোনো কুরআন হাদিসের দলিল নেই। এছাড়াও বিভিন্ন ইসলামিক ঐতিহাসিক সত্য ঘটনাকে রং মিশিয়ে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে। এরফলে সাধারণ মুসলমানগণ তাদের কাহিনীকেই সত্য মনে করে তাকে ইসলাম মনে করে।

বিশেষ করে আমাদের উপমহাদেশে কারবালার কাহিনী নিয়ে “বিষাদ সিন্ধু” নামে একটি শিয়াদের রচিত বই ব্যাপকভাবে প্রচার প্রসার লাভ করে। যার কোনো কাহিনীই সত্য নয়। বরং তা একটি সাহিত্য। অথচ এই সাহিত্যকেই আজ মানুষ কুরআন হাদিসের মতো সম্মান করে। কেননা লেখক এতো সুন্দর করে রংচটা দিয়ে বইটি লিখেছে। 

যেকেউ পড়া কিংবা শোনার সাথে সাথে তা বিশ্বাস করে নিয়েছে। এইরকম আমাদের দেশে অসংখ্য বাউল রয়েছে যারা পালাগান করে ইসলামের নানান বিষয় নিয়ে একে অপরের সাথে তর্কযুদ্ধে লিপ্ত হয়। মানুষ হা করে বসে নারী পুরুষদের এইসব গানবাজনা দেখে ও শোনে। একইসাথে তা বিশ্বাসও করে।

যেখানে বড় বড় আলেম ওলামারা কুরআন হাদিসের দলিল দিয়ে মানুষকে ইসলামে আনতে পারে না। সেখানে এইসব আউল বাউলরা নিজেদের মনগড়া কাহিনী দিয়ে মানুষকে মুহিত করে এবং এইসব বিশ্বাস করে তারা দ্বীন ইসলাম পালন করে।

এই কারণে আল্লাহ বলেছেন যারা কবিদের অনুসরণ করে তারা বিভ্রান্ত। আর যারা বিভ্রান্ত তারা কখনোই আল্লাহর সঠিক পথ পাবে না। তাই বিভ্রান্ত লোক মানেই পথভ্রষ্ট।

মিথ্যারোপকারীরা পথভ্রষ্ট

আল্লাহ মিথ্যাবাদীকে পছন্দ করেন না। একইভাবে যারা জেনে শুনে সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করে মানবে না অথবা, তাদের সামনে সত্য উপস্থাপিত করা হলেও তারা সেই সত্যকে মিথ্যা দাবি করে এড়িয়ে যায় তারা কখনোই সুপথ পায় না এবং তারা হচ্ছে পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 33

 

অর্থাৎ এই জাতীয় মানুষ গুলো কিয়ামতের মাঠে আফসোস করতে থাকবে। তারা বলতে বাধ্য হবে যে, আমাদের কাছে অনেকেই এসেছিল সত্য নিয়ে। কিন্তু আমরা তাদেরকে বিশ্বাস করিনি বরং তাদেরকে মিথ্যাবাদী ও তাদের উপর মিথ্যারোপ করেছিলাম। শুধু তাইনয় আমরা কুরআনের আয়াতকেও মিথ্যা মনে করেছিলাম।

এরা হচ্ছে সুফি সুন্নিরা। তাদেরকে যতই কুরআন হাদিসের দলিল দেখানো হোক না কেন, তারা কখনোই তা গ্রহণ করে না। বরং তারা দাবি করে যে কুরআনের আয়াত গুলো সত্য নয়। এটা হাদাল কুরআন। আর তাদের কাছে আছে জালিকাল কুরআন। কুরআন ত্রিশ পারা নয়। বরং নব্বই পারা। যা তাদের পীর অলি আউলিয়াদের অন্তরে আছে ইত্যাদি।

শুধু তাইনয় তারা তাদের আকিদা দিয়েই সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে। এইসব কারণে তারা যে মহা বিভ্রান্তিতে আছে তা তারা কিয়ামতের মাঠে জানতে পারবে।

দুনিয়ামুখীরা পথভ্রষ্ট

পৃথিবীতে মানুষের একমাত্র কাজই হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত করা। কিন্তু যারা আল্লাহর ইবাদতকে গুরুত্ব না দিয়ে ইসলামকে গুরুত্ব না দিয়ে, দুনিয়ামুখী জীবনযাপন করে তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্টতায় পর্যবসিত। আল্লাহ বলেন,

AddText 06 01 03.01.34

 

 

এই আয়াতে এটা স্পষ্ট যে, কেউ আল্লাহর পথে চলতে চাইলে তাদেরকে যারা বাঁধা দেয় কিংবা সত্য গোপন করে অন্যদের আল্লাহর দিকে ধাবিত হতে বাঁধার সৃষ্টি করে। অথবা  আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের দেখানো পথে নানান দোষত্রুটি অনুসন্ধান করে। একইসাথে নানান বাহানা দিয়ে অন্যদের আল্লাহর সঠিক  পথে চলতে অসহযোগিতা করে কিংবা নিরুৎসাহিত করে, তারা হচ্ছে পথভ্রষ্ট। 

আর আমাদের উপমহাদেশে সুফি সুন্নিরা হচ্ছে এই কাজের অনুসারী। তারা কোনো কিছুই কুরআন হাদিসের অনুসরণে পালন করে না। বরং তাদের পীর আউলিয়াদের কাছ থেকে যে জ্ঞান লাভ করে, সেই জ্ঞানের ভিত্তিতেই ইসলাম পালন করে। অথচ সঠিক ইসলাম কেউ তাদের জানাতে চাইলেও তারা গ্রহণ না করে সেখানে নানান যুক্তি তর্ক উপস্থাপন করে। আর এভাবেই তারা পথভ্রষ্টতায় পরিনত।

পথভ্রষ্টতার পরিনতি

যারা কুরআন হাদিসের আলোকে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে তাদের পরিনতি হবে খুবই ভায়াবহ। নিম্নে তাদের বিস্তারিত দেওয়া হলো। 

পথভ্রষ্টকারীদের অবকাশ দেওয়া হয়

আমাদের উপমহাদেশের মুসলমানরা এমন এমন সব ঈমান আকিদা পোষণ করে যা সঠিক ইসলামের বিপরীত। তারপরও তারা এইসব করেই যাচ্ছে। এর কারণ তারা দুনিয়াবী কোনো বাঁধার সম্মুখীন নয়। যদি তাদের ঈমান আকিদা খারাপ হতো, তাহলে তাদের দুনিয়ায় শাস্তি দিতেন।

কিন্তু তারা কোনো সমস্যার মুখোমুখি না হওয়ার কারণে তারা নিজেদের সঠিক বলেই ধরে নিচ্ছে। অথচ আল্লাহ তাদেরকে যথেষ্ট অবকাশ তথা ছাড় দিবেন। এই কারণে তাদের হাজারো অপরাধে আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়াবী  শাস্তি প্রদান করেন না। যাতে করে তারা তাদের এইসব ভুলের মধ্যে হাবুডুবু খেতে পারে। এই ভুল তাদের শেষ পর্যন্ত জাহান্নামের আগুন পর্যন্ত নিয়ে যাবে। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 36

 

সুতরাং সুফিবাদী সুন্নিরাও পথভ্রষ্ট হওয়ার পরও তারা বুঝতে পারে না তারা ভুল পথে আছে। কেননা আল্লাহ তাদেরকে যথেষ্ট ছাড় দিয়ে রেখেছেন। এই কারণে তারা মনে করছে, তারা যা আমল করছে তা অবশ্যই আল্লাহর কাছে ভালো। যদি ভালো না হত আল্লাহ অবশ্যই তাদের ধ্বংস করতেন বা এর ফল খারাপ দিতেন । কিন্তু না, তারা তাদের জ্ঞান দিয়ে বুঝতে পারেনা যে, এটা আল্লাহর সন্তুষ্টি নয় বরং একপ্রকার আযাব। আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 37

সুতরাং সুফি সুন্নিরা যা আমল করছে তা শয়তান তাদেরকে শোভনীয় করে দেখাচ্ছে। ফলে তারা মনে করছে তারা যাই করছে অবশ্যই ভালো কাজই করছে। কিন্তু আল্লাহ তাদের পাকড়াও করছে না। তাই আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 38

 

অর্থাৎ আল্লাহ তাদেরকে শেষ দিন পর্যন্ত অবকাশ দিয়ে রাখছেন। 

 

পথভ্রষ্টদের পথপ্রদর্শক নেই

প্রতিটি মানুষের হিদায়েতের মালিক একমাত্র  আল্লাহ। একইসাথে  যেকোনো কাউকে  পথভ্রষ্টতার মালিকও আল্লাহ। তবে এইজন্য কখনোই কেউ আল্লাহকে দোষারোপ করতে পারবে না। কেননা প্রতিটি মানুষই তার নিজের জ্ঞানের কারণেই পথভ্রষ্ট হয়। আর তাই যদি কেউ জেনেবুঝে পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত হয় তার পথপ্রদর্শক কেউ নেই।  তাই আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 43

 

 

আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 44

 

আর এই কারণেই যারা পথভ্রষ্টতায় পতিত আছে তাদের একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই যে, তাদের পথপ্রদর্শন করবে। অতএব যারা এখনো পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত আছে  তাদের কোনো পথপ্রদর্শক নেই।

 

পথভ্রষ্টদের স্থান জাহান্নামে

এটা সুনিশ্চিত যে যারা কুরআন সুন্নাহর বাইরে গিয়ে ঈমান, আমল করবে তারা সুস্পষ্ট পথভ্রষ্ট। সুতরাং তাদের স্থান হবে জাহান্নাম। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 45

 

অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 46

 

পথভ্রষ্ট ইমামরা দায়মুক্তি চাইবে

আমরা এই পৃথিবীতে অনেকেই না বুঝে বড় বড় নেতাদের, ইমামদের এবং বড় বড় বুজুগর্দের অন্ধ অনুসরণ করি। বিশেষ করে সুফি সুন্নিরা। কিন্তু কিয়ামতের ময়দানে এইসব নেতা, বড় বুজু্র্গ, পীর আউলিয়ানিজেরাই নিজেদের দায়মুক্তি নিয়ে নেবে। তারা সেখানে কারো কোনো দায় নিবে না। আল্লাহ বলেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 39

 

অর্থাৎ যারা কুরআনের  সুস্পষ্ট প্রমাণাদি পাওয়ার পরও নেতাদের ইমামদের অনুসরণ করে দুনিয়া পার করে দিবে, তাদের নেতারা সেইদিন আর তাদের অনুসারীদের দায়িত্ব নিবে না। বরং তারা নিজেরাই দায়মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করবে। সুতরাং যেসব মুসলমান কুরআন হাদিসের অনুসরণ না করে বড় পীর অলি আউলিয়াদের কথায় ইসালাম পালন করছে। তারা সেদিন কোথায় যাবে? 

নেতৃত্বদানকারীরা লাঞ্চিত হবে

আমরা আজকে এই দুনিয়ায় থাকা অবস্থায় যেসব নেতা নেত্রী পীর অলি আউলিয়াদের অনুসরণ করছি। যখন কিয়ামতের আমাদের ভুল ভাঙ্গবে তখন আমরা নিজেরাই তাদের খুঁজে খুঁজে লাঞ্চিত করব। 

সে দিনের কথা এভাবেই তুলে ধরেছেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 41

 

এই আয়াত দ্বারা যদিও কাফেরদের বুঝানো হয়েছে। কিন্তু যারা ঈমানদার তারাও যদি ঈমান আনার পরও এভাবেই কুরআন হাদিসের বাইরে গিয়ে কারো অন্ধ অনুসরণ করে। তাহলে তাদের কী হতে পারে? কেননা কুরআন হাদিসের বাইরে কখনোই আল্লাহ ঈমান আকিদা আমল গ্রহণ করবেন না।

 

নেতাদের আক্ষেপ

আজ আমরা দুনিয়াদারি করতে গিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের আদর্শ নিয়ে চলছি। একইসাথে রাজনৈতিক নেতাকেই অনুসরণ অনুকরণ করছি। আবার দ্বীন ইসলাম পালন করতে গিয়ে কুরআন সুন্নাহর বাইরে পীর অলি আউলিয়া ইত্যাদির অনুসরণ করছি। কিন্তু কিয়ামতে অবশ্যই সকল সত্য উম্মোচিত হবে। সেইদিন এইসব বিপথগামী নেতা, পীর অলি আউলিয়ারা নিজেদের ভুল বুঝতে পারবে। তখন তারা তাদের দোষ স্বীকার করতে বাধ্য হবে। তাদের কথা আল্লাহ এইভাবেই বলেছেন, 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 40

 

অতএব আমরা যারা নেতা নেত্রী পীর অলি আউলিয়াদের পিছনে ছুটছি, তাদের চিন্তা ভাবনা করে তবেই এদের অনুসরণ করা উচিত। কেননা কাউকে অন্ধ অনুসরণ করে ভুল পথে পরিচালিত হলে তার দায়িত্ব কেউ সেদিন নিবে না। 

 

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 50
আজকে দুনিয়ার মধ্যে সুন্নিরা তাদের পীরদের অনুসরণ করলেও, কিয়ামতের ময়দানে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না

অন্যের পাপভারও নিতে হবে

আল্লাহ এক জায়গায় বলেছেন, কিয়ামতে কেউ কারো ভার বহন করবে না। তবুও এমন কিছু পাপ রয়েছে, যা তাদেরকে অন্যের পাপসহ বহন করতে হবে। আর তা হল তারা, যারা কুরআন হাদিসের বাইরে গিয়ে অন্য কাউকে পথভ্রষ্ট করে। এইসব  পথভ্রষ্টকারীরা তাদের নিজেদের শাস্তি তো পাবেই, সেইসাথে যাদের তারা পথভ্রষ্ট করেছিল তাদের শান্তিও পেতে হবে। যদিও অনুসারীদের শান্তির কোনো কমতি হবেনা। আল্লাহ বলেন,

পথভ্রষ্ট কারাপথভ্রষ্টদের পরিনতি কী আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 42

শেষ কথা

আমরা উপরোক্ত আলোচনা থেকে কুরআন হাদিসের আলোকে জানতে পারলাম পথভ্রষ্টতা কী। পথভ্রষ্ট কারা এবং তাদের কী পরিনতি। একইসাথে এও জানতে পারলাম আমাদের সমাজে কাদের ঈমান আকিদা আমল আজ পথভ্রষ্টতায় পতিত। সুতরাং আমাদের উচিত হবে কুরআন সুন্নাহর অনুসরণে জীবনযাপন করা। যাতে আমরা কখনোই পথভ্রষ্টতায় নিপতিত হয়ে আল্লাহর রোষানলে না পড়ি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করুন আমিন। 

 

আপনি আরো যা পড়তে পারেন

 


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

Author: সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী

সাখাওয়াতুল আলম চৌধুরী জন্ম চট্টগ্রামে। জীবিকার প্রয়োজনে একসময় প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসের সেই কঠিন সময়ে লেখেলেখির হাতেখড়ি। গল্প, কবিতা, সাহিত্যের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলা পত্রিকায়ও নিয়মিত কলাম লিখেছেন। প্রবাসের সেই চাকচিক্যের মায়া ত্যাগ করে মানুষের ভালোবাসার টানে দেশে এখন স্থায়ী বসবাস। বর্তমানে বেসরকারি চাকুরিজীবী। তাঁর ভালোলাগে বই পড়তে এবং পরিবারকে সময় দিতে।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

Leave a Reply