শিন্টো ধর্ম বহুঈশ্বরবাদী একটি ধর্ম। শিন্টো(বা, শিন্তৌ) শব্দের অর্থ দেবতার পথ। এই ধর্মে সৃষ্টিকর্তাকে বলা হয় কামি। অসংখ্য স্রষ্টার অস্তিত্ব আছে বলে এই ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস। যিশু খ্রিস্টের জন্মের ৬৬০ বছর আগেও এই মতবাদের অস্তিত্ব ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। জাপানিরা প্রধানত আচারসর্বস্ব এই মতবাদই অনুসরণ করে।
এই লেখাটিতে আমি জাপানের শিন্তৌ ধর্ম এর পাশাপাশি জর্জিয়ার মানুষের আচরিত ধর্ম সম্পর্কেও একটি প্যারাগ্রাফ লিখবো। কারণ, আমাদের পাঠকদের ঐ ব্যাপারেও আগ্রহ আছে। জাপানের সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটে তাদের ধর্মের মধ্যে।
জাপানের ধর্ম- শিন্টো ধর্ম
ধর্মতাত্বিকেরা একে দূর প্রাচ্যের ধর্ম বলে অভিহীত করেন। ৮১০০০ ধর্মীয় স্থাপনা এবং ৮৫০০০ অনুসারী জাপানে আছে বলে মনে করা হয়। জাপানই জাতির প্রতিষ্ঠাতা আমাতারেসু ওমিকামি এই ধর্মের প্রবর্তক বলে পরিচিত। বৌদ্ধ দর্শনও জাপানিদের কাছে জনপ্রিয়, সেই অর্থে বৌদ্ধ ধর্ম অনুসরণ করে এমন মানুষদেরও এই দেশে খুঁজে পাবেন।
এটিকে ধর্ম না বলে জীবনাচরণের পদ্ধতি বলে অনেকে মনে করেন। ‘কোজিকি’ নামে এদের একটি ধর্মগ্রন্থ আছে। এরা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে না তবে, পূর্বপুরুষের আত্মায় বিশ্বাস করে। এই ধর্মের ধর্মযাজকদের বলা হয় কানুশি। একজন ব্রিটিশ কূটনীতিবিদ ডব্লিউ জি এস্টন যিনি কোরিয়া-জাপানের ইতিহাস এবং ভাষার বিশেষজ্ঞ ছিলেন তিনি বলেছেন,
“Shinto is essentially a religion of gratitude and love”
জেনে নিন- বৌদ্ধ ধর্ম ও জৈন ধর্মের পার্থক্য
জাপানে ইসলাম ধর্ম
ধারণা করা হয় প্রায় ১ লাখ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষ জাপানে বাস করে। জাপানের একজন গবেষক হিরোশি কোজিমার মতে জাপানে মুসলিমদের সংখ্যা ৭০০০০, এর মাঝে শতকরা নব্বইভাগ বিদেশ থেকে আসা, আর ১০ ভাগ স্থানীয়। পিউ রিসার্চের মতে এই সংখ্যাটা আসলে ১ লাখ ৮৫ হাজার(২০১০ সালে)।
হিরোশি কোজিমার মত প্রকাশের সময়টা আমাদের অজানা, তাই তার কথাও পিউ রিসার্সের কথার মতো সত্যি হতে পারে। জাপানফোকাস নামের একটি ওয়েবসাইটের মতে সেখানে ৩০/৪০ টা মসজিদ আছে।
উইকিপিডিয়াতে কিছু বিখ্যাত মুসলিমের নামের তালিকা পাওয়া যাচ্ছে। আপনাদের সাথে নামগুলো শেয়ার করছি-
- আন্তনিও ইনোকি
- রিওউছি মিতা
- আব্দুল হাকিম সানি ব্রাউন
- কোহান কাওয়াওছি
- দেউই সুকার্নো
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জাপানিদের সাথে মুসলিমদের যোগাযোগ ঘটে, তখন কিছু ধর্মান্তর ঘটে থাকতে পারে।
আরো পড়ুন-
জর্জিয়ার ধর্ম
এই দেশের ৮৩.৪% লোক অর্থোডক্স খ্রিস্টান। অনেকে ভেবে থাকেন যে জর্জিয়ানরা প্রধানত মুসলিম, তাদের ধারণা ঠিক নয়। তবে, ক্যাথলিক, প্রটেস্ট্যান্টদের তুলনায় সম্ভবত অর্থোডক্সদের সাথে মুসলিমদের মিলটা বেশী। জর্জিয়ানরা কেউ কেউ রাশিয়ান বা, আর্মেনিয়ান চার্চেরও অনুসারি।
জর্জিয়াতে মুসলিমদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ১০% এর মতো হবে। তারা নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে বাস করে। ক্যাথলিকদের সংখ্যা ১% এর চেয়েও কম। অল্প সংখ্যায় ইহুদিও আছে এই দেশে। ২০০০ বছর ধরে এখানে ইহুদিদের বসবাস, বাহাইরাও আছে। সংবিধান মতে ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে এখানে।
এখানে যে দুটি দেশের কথা বলেছি, তারা দুটি আলাদা মহাদেশে অবস্থিত। জাপান পূর্ব এশিয়ার শক্তিশালী অর্থনীতির একটি দেশ, আর জর্জিয়া ইউরোপের সুন্দর একটি দেশ যা আগে সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিলো।
আরো পড়ুন-
তথ্যসূত্রঃ

নতুন তথ্য জানতে পারলাম, ধন্যবাদ
অনেক কিছু জানলাম