যে রহস্যময় জলাশয়ে নামলেই যে কোনো প্রাণী পাথর হয়ে যায়।

0

পৃথিবীতে এমন একটি রহস্যময় জলাশয় রয়েছে যেখানে নামলেই যে কোনো প্রাণী পাথর হয়ে যায়। এটি কোন সাইন্স ফিকশন মুভির গল্প নয়। বাস্তবে রয়েছে এমন একটি হ্রদ। দূর থেকে দেখে মনে হবে অসংখ্য পাথরের তৈরি মূর্তি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কেন মৃত্যু হয় এসব পশুপাখির? কেনই বা পাথরে পরিণত হয় তারা? এই অদ্ভুত ও রহস্যময় হ্রদের বিস্তারিত থাকছে আটিকেলে।

 

আমাদের এই পৃথিবীতে রয়েছে অনেক রহস্যময় সৃষ্টি। এমনই আশ্চর্য জনকএক হ্রদ রয়েছে যেখানে নামলেই যে কোন পশুপাখি মারা যায়। শুধু তাই নয় মারা যাওয়া পশুপাখি যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই পাথর হয়ে যায়।

 

ভয়ঙ্কর এই হ্রদটির নাম নেট্রন ।আফ্রিকার দেশ তাঞ্জানিয়ার উত্তর প্রান্তে এই হ্রদের অবস্থান।এটি একটি লবনাক্ত হ্রদ। এই হ্রদের আশপাশে কোনো জনবসতি নেই হ্রদটির দৈর্ঘ্য ৫৭ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২২ কিলোমিটার।

 

আশপাশের বেশ কয়েকটি নদী ও ঝর্ণার পানি এই হ্রদে এসে পড়ে। ফলে বিভিন্ন খনিজে ভরপুর এই হ্রদের পানি ।২০১১ সালে নিক ব্রাউন্ড নামে এক ফটোগ্রাফার নেট্রন হ্রদ দেখে চমকে গিয়েছিলেন। তিনি দেখতে পান হ্রদের পাড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে অসংখ্য পশুপাখির দেহ।

ব্রান্ডোর্ট জানান সেগুলো দেখে মনে হচ্ছিল যেন কোন পাথরের মূর্তি সাজিয়ে রাখা ।

 

কেন মৃত্যু হয় এসব পশুপাখির কেনই বা পাথরে পরিণত হয় তারা?

এর রহস্য জানতে শুরু হয় গবেষণা।

 

গবেষণায় জানা যায় এই হ্রদের পানিতে সোডিয়াম কার্বোনেট এবং সোডার পরিমাণ অত্যাধিক বেশি। প্রচুর সোডিয়াম ও কার্বোনের যুক্ত ট্রাকাইড লাভা দিয়ে প্রায় ২৬০০০০০ বছর আগে প্লাইস্টোসিন  যুগে তৈরি হয়েছে নেট্রন হ্রদের তলদেশ ।  তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিক ক্ষারধর্মী। এই পরিমাণ ক্ষার ত্বককে পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। যা পশুপাখির পক্ষে অসহায়নীয়।

 

বছরের বেশিরভাগ সময়ই হ্রদের পানির তাপমাত্রা থাকে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি।

ফলে পানির দ্রুত বাষ্পীভূত হয়ে যায়। আর তলোদেশে পড়ে থাকে পানির মত তরল লাভা। শুধু তাই নয় সোডিয়াম ও কার্বোনেটের জন্য হ্রদে জন্ম নেয় সায়ানো ব্যাটটোরিয়া নামে অনুজীব।এই অনুজীবের শরীরে লাল রঙ যোগ থাকে ফলে হ্রদের পানি লাল রঙের হয় ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন এই লাল রঙে আকৃষ্ট হয়ে পশুপাখি হ্রদে নামে কিন্তু পানির অতিরিক্ত ক্ষারধর্মীতার জন্য সেগুলোর মৃত্যু হয়। নেট্রনের পানি ক্ষারধর্মী হলেও এই হ্রদ পূর্ব আফ্রিকার লেসার ফ্লেমিংগোদের সবচেয়ে বড় প্রজনন ক্ষেত্রে।কারণ এই হ্রদের অগভীর পানিতে পাওয়া যায় প্রচুর নীলাভসবুজ শৈবাল ।এই শৈবাল খেয়ে তারা বেঁচে থাকে এবং বংশবিস্তার করে।

বিজ্ঞানীদের ধারণা হ্রদের এই ক্ষারধর্মীর সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছে এই ফ্লেমিং গোরা। ফলে নেট্রন হ্রদের পানিতে ফ্লেমিংগোদের জমানো দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

 


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

Mst. Nurjahan

Author: Mst. Nurjahan

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা

২০২৩ সালের ঘূর্ণিঝড়ের নামের তালিকা

আমরা আইলা, নার্গিস, রোয়ানু ইত্যাদি ঝড়ের নামের সাথে পরিচিত। নতুন আরেকটি ঘূর্ণিঝড় এসেছিল যার নাম ফণি- এটির নামকরণ বাংলাদেশের করা।

বই বিপণন ব্যবস্থা বিষয়ক ভাবনা

একটি সুস্থ,সুন্দর জাতি গঠনের জন্য পড়া আবশ্যক।বর্তমানে পাঠক বইয়ের প্রতি ঝুঁকছে।ফলে বইয়ের ব্যবসাও জনপ্রিয় হয়ে এসেছে।কয়েক বছর আগেও বই প্রকাশনাকে

প্রবন্ধ লেখার ১০ টি অপরিহার্য নিয়ম

কোনো একটি বিশেষ ভাব বা তত্ত্বকে ভাষার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলাই হচ্ছে প্রবন্ধ। প্রবন্ধের মাধ্যমে কোনো বিষয়ের উপর বুদ্ধিভিত্তিক আলোচনা করা

শব্দ ও তাদের পরিচিতি

অনেক সময় দেখা যায়,একই শব্দকে অন্য একটি শব্দ বা বাক্য দ্বারা ব্যাখা করা হয়।আবার, অনেক শব্দের বা যেকোনো কিছুরই অপর

Leave a Reply