শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি

play icon Listen to this article
0

মানুষের ব্যক্তিত্বের, নেতৃত্বের এবং নাগরিককে আকৃষ্ট করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার বিশুদ্ধ ভাষা ও সুপষ্ট উচ্চারণ।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের (১৯৭১) সালের ভাষণ তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এছাড়া জাতিসংঘের মতো বিশ্ব দরবারে প্রথম বাংলা ভাষায় বক্তৃতা ও দিয়েছিলেন বাংলা দেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর এভাবেই বাঙ্গালী বিভিন্ন ভাবে নিজেদের অস্তিত্ব ঘোষণা করেছে বিশ্ব দরবারে বাংলা কে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ রাষ্ঠ্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি।

আন্তর্জাতিক এই স্বীকৃতি আদায়ের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার-এ বসবাসরত Mother language Lover of the world নামের একটি বহু ভাষী ও বহু জাতিক ভাষাপ্রেমী গ্রুপ১৯৯৮সালের২৮মার্চ জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান-এর কাছে একটি আবেদন পত্র পেশ করেন।

যার নেতৃত্বে ছিলেন প্রবাসী বাঙালি রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগী আব্দুস সালাম। জাতিসংঘের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক চুক্তির ২৭ ধারার উপর ভিত্তি করে তারা আবেদন পত্রে উল্লেখ করেন যে,দক্ষিণ আমেরিকা,এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশের অসংখ্য জাতিগোষ্ঠীকে মাতৃভাষা ব্যবহার না করার জন্য, মাতৃভাষা ভুলে যাওয়ার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে ;বল প্রায়োগ করা হচ্ছে।যা ‘সামাজিক ও সংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ’-এর সরাসরি লঙ্ঘন।

পত্রে তারা প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষা সংরক্ষণের গুরুত্ব অনুধাবনের জন্য বাঙালির ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারীর রক্তাক্ত পটভূমি তুলে ধরেন। যা সারা পৃথিবী জুড়ে অনন্য।

তারা ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন জানান। যাতে প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীকে তাদের মাতৃভাষাকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য একটি বিশেষ দিবস হিসেবে পাবে।

এ আবেদনে বিভিন্ন ভাষাভাষী ১০জন সাক্ষর করেন।এ আবেদনের বিষয়টি বাংলা দেশের ততকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবগত হলে এ ব্যাপারে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা সচিবকে প্রায়োজনীয় নির্দেশনা দেন।ফলে অতি দ্রুততার সঙ্গে বাংলা দেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনক্রমে প্রস্তাবটি যথাসময়ে পেশ করেন। ইউনেস্কো তথা জাতিসংঘ বাংলা দেশের প্রস্তাবটি মেনে নেয়।

২৮টি রাষ্ঠ্র বাংলা দেশের প্রস্তাবে লিখিতভাবে সমর্থন জানান এবং Draft Relation-35 হিসেবে চিহ্নিত করে এক্সিকিউটিভ বোর্ডে প্রেরণ করে।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে সদস্য রাষ্ট্র সমূহের সর্বসম্মতিক্রমে ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং সকল সদস্য রাষ্ট্রকে দিবসটি উদযাপনের জন্য প্রস্তাব গৃহীত হয়।ফলে ১৯৫২ সাল থেকে যে ২১ শুধু আমদের ছিল, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের অহংকার বাঙালির ভাষা বিশ্ব সভায় আসন করে নেয়।বাংলা দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউট ‘।

২০১০ সাল থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারী সারাবিশ্বে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” হিসেবে পালিত হচ্ছে।

এখন ২১শে ফেব্রুয়ারী বা বাংলা ভাষা শুধু বাংলা দেশের  মানুষের কথা বলে না,কোনো একটি জাতি -গোষ্ঠীর মাতৃভাষার কথা বলে না। সকল দেশ,সকল জাতির মাতৃভাষারও প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলা ভাষা।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন বাংলা দেশের ইতিহাসে এক অনন্য সাধারণ ঘটনা।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পারের বছর থেকেই প্রতি বছর ফেব্রুয়ারীর একুশে দিনটি বাঙালির শহিদ দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

আর এ দিনটি আমাদের জন্য একটি স্মরণীয় দিন।

যাদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এ ফেব্রুয়ারী পেয়েছি তাদের কে স্যালুট জানানোর প্রয়োজন আমাদের এবং শ্রদ্ধা জানানো উচিত।


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কনফেডারেশনঃ বিভক্ত মার্কিনীরা

কনফেডারেশন শব্দটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারও কাছে স্বর্গের মত আবার কারও কাছে নরকের চেয়েও খারাপ। এখন কথা হচ্ছে, কেন আমি কনফেডারেশন

জাতীয় চার নেতা

সৈয়দ  নজরুল ইসলাম জাতীয় চার নেতার মধ্যে সর্বপ্রথম রয়েছে সৈয়দ  নজরুল ইসলাম  ছিলেন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা
FB IMG 1676566560513

আডলফ হিটলারের জীবনী- ধর্মীয় বিশ্বাস, মৃত্যু

আডলফ হিটলার: এডলফ হিটলার। বিশ্বজুড়ে একইসাথে আলোচিত-সমালোচিত ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ঘৃণিত ব্যক্তি। এখনো ইতিহাস কুখ্যাত এ ব্যক্তিকে নিয়ে গবেষকদের গবেষণার

মর্যাদাপূর্ণ সিলেট ১ নির্বাচনী আসন

সিলেট নগরীর সুরমা নদীর উত্তর তীর থেকে গোটা নগরী এবং নগরীর বাইরে উত্তর দিক- ওসমানী বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকা নিয়ে

Leave a Reply