উপন্যাস পর্ব এক মেয়েদের জীবনে বিয়ে একবার হয় আফছানা খানম অথৈ

0
  • উপন্যাস পর্ব “এক”
    মেয়েদের জীবনে বিয়ে একবার হয়
    আফছানা খানম অথৈ

    আসছে ১লা বৈশাখ শুভ নববর্ষ।চারদিকে নতুন বছরের আমেজ ফুটে উঠেছে।নতুন বছরকে কিভাবে বরণ করা হবে তার জন্য চারদিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয়েছে এক বিশাল মেলার যা মাস ব্যাপি চলবে।ফুলে ফুলে বিভিন্ন সাজে সাজানো হলো মেলার স্টল গুলো।১লা বৈশাখ থেকে শুরু হয়েছে বাঙ্গালির প্রিয় বৈশাখি মেলা।মেলার প্রথম সময়ে দর্শক সমাগম একটু কম থাকলেও পরবর্তীতে আস্তে আস্তে তা বাড়তে থাকে।জোয়ান বুড়ো সবাই মেলায় এসে আনন্দ উপভোগ করছে।নয়ন বি এ অনার্স’র ছাত্র।ছুটিতে বাড়িতে এসেছে।গ্রামের বন্ধুদের সাথে দেখা,তারপর মেলা দর্শন।
    নয়ন ঘুরে ঘুরে মেলার স্টল গুলো দেখছে ঠিক তখনি পিছন থেকে ডাক দিলো,
    নয়ন ভাই এদিকে এসো।
    নয়ন পিছন ফিরে তাকাতে দেখতে পেল তার ছোট বেলার বন্ধু মিলনকে। সে একটা স্টলে বসে চা নাস্তা বিভিন্ন রকম পিঠা পুলি বিক্রি করছে।মিলন বেশি দূর লেখা পড়া করতে পারেনি। মাত্র নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর তার বাবার অকাল মৃত্যুতে পড়া-লেখা বন্ধ করে সংসারে হাল ধরে।এরপর সময় বুঝে বিভিন্ন ছোট খাটো ব্যবসা করে।আজ মেলায় বসেছে তার মায়ের হাতে বানানো বিভিন্ন পিঠা নিয়ে।নয়ন এগিয়ে এসে বলে,
    মিলন ভাই তুমি, কেমন আছ?
    নয়ন ভাই ভালো আছি।আগে চা নাস্তা কর তারপর কথা।
    ওকে।
    বলতে না বলতে নয়ন কয়েক আইটেমের নাস্তা, শরবত,পিঠা দিয়ে টেবিল সাজিয়ে দিলো।
    এত্ত কিছু দেখে নয়ন বলল,
    ওয়াও এত সব কবে খাব?
    দোস্ত সমস্যা নেই আস্তে ধীরে খাও।
    খাওয়া শেষ বিলের কথা জিজ্ঞেস করতে মিলন বলল,
    বেশী না ভাই মাত্র নয়শত টাকা। এই নাও বিলের রসিদ।
    রসিদের দিকে তাকিয়ে নয়ন বলল,
    দোস্ত এ সামান্য চা নাস্তা শরবতে এত্ত টাকা?
    দোস্ত বেশী না মাত্রতো নয়শত টাকা।বিশ্বাস না হলে অন্য স্টল ঘুরে দেখ।
    দোস্ত এই জন্য বুঝি খুব খাতির করে খাওয়ালি?
    না ঠিক তাই না।তবে এটা আমাদের মেলার নিয়ম।
    সবাই এক সঙ্গে হেসে উঠল।তারপর মিলন বলল,
    দোস্ত কিছু মনে করিস না। এমন না হলে মেলার বেচাকেনা হয় না।
    নয়ন বিল দিয়ে এগিয়ে চলল। মেলার গেট প্রাঙ্গণে প্রচুর ভিড় ক্রেতা-বিক্রেতা হুমড়ি খেয়ে যাতায়াত করছে।নয়ন ঠেসাঠেসি করে বের হচ্ছে ঠিক তখনি তার সঙ্গে ধাক্কা খেল এক তরুণীর, তাল সামলাতে না পেরে দুজন পড়ে গেল।উপস্থিত দর্শকবৃন্দ হা হা হো হো করে হেসে উঠল।মেয়েটি খুব লজ্জিত হলো।নয়ন মেয়েটিকে সরি বলে পরিবেশ আপাতত শান্ত করলো।মেয়েটি দেখতে খুব কিউট, মায়াবী চেহারা,টানা টানা চোখ,কাজল কালো ভ্রু,আঁখি যুগল স্বচ্চ কাচের মতো।মনে হয় বেহেস্তী হুর,সৃষ্টিকর্তা নিজের হাতে তৈরী করেছেন এমনি মনে হলো তার।প্রথম দেখাতে ভালো লেগে গেল তাকে।যার রুপে মগ্ন হয়ে নয়ন হা করে তাকিয়ে রইল।তার পলক যেন পড়ছে না।এমন সময় তার বন্ধু শফন বলল,
    দোস্ত এভাবে তাকিয়ে না থেকে চল পিচু পিচু।
    নয়নের ধ্যান এখনো ভাঙ্গেনি।শফন বুঝতে পেরে তার শরীরটাকে জোরে-সোরে ঝাকুনি দিয়ে বলল,
    নয়ন এখনো দাঁড়িয়ে আছিস যে?চল তাড়াতাড়ি।
    এতক্ষণ পরে নয়নের ধ্যান ভাঙ্গল।সে চমকে উঠে বলল,
    দোস্ত কোথায়?
    কোথায় আবার সুন্দরীদের পিচু পিচু।
    পিচু পিচু গিয়ে কি করব?
    কানের কাছে ফিস ফিস করে শফন বলল,
    নয়ন তুই কিরে,বোকা কোথাকার,শুন ওদেরকে নিয়ে…।
    প্রথম দেখাতে মেয়েটিকে নয়ন ভালোবেসে ফেলেছে।আর সেই ভালোবাসাকে নিয়ে শফন নোংরা চিন্তা করছে।একজনের ভালোবাসা অন্য জনের লালসার স্বীকার বিষয়টা কেমন গোল পাকানো হয়ে গেল না।অনেক ভেবে চিন্তে নয়ন বলল,
    দোস্ত তোমার নোংরা চিন্তা বাদ দাও।
    কেন কেন?
    কারণ আল্লাহর হাবীব বলেছেন,মেয়েদের সাথে নোংরামি করাতো দূরের কথা,নোংরা কথা মুখে উচ্চারণ করাটাও কঠিন পাপ ।এছাড়া এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।শুধু তাই নয় এটা ইভটিজিং’র আওতায় পড়ে।
    এবার শফন বলল,
    বাদদেতো এসব আইন-কানুন। এ বয়সে একটু আনন্দ ফুর্তি না করলে কেমন লাগে।তাছাড়া নারীদের আবার কিসের অধিকার ?
    দোস্ত শুন একটা প্রবাদ আছে,
    নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার দিলে
    দেশ ও দশের সুফল মিলে।
    এছাড়াও কবি নজরুল বলেছেন,পৃথিবীতে যা কিছু চির সুন্দর কল্যাণকর,
    তার অর্ধেক করিয়াছে নারী,
    অর্ধেক নর।
    আর পবিত্র কোরানে আল্লাহপাক বহুস্থানে নারীর আত্নমর্যাদা ও সম্নানের কথা উল্লেখ করেছেন।কিন্তু আমাদের এ সমাজ তার যথাযথ সম্মান ও মুল্যায়ন দিচ্ছে না বিধায় নারী সমাজ প্রতি পদে পদে লাঞ্চিত ও অপমানিত।এটা সম্পূর্ণ পাপ ও অন্যায়।আজ থেকে নোংরা চিন্তা বাদ দিয়ে নারীদেরকে সম্মান করতে শেখ।তানা হলে ইহকাল ও পরকালে শাস্তি ভোগ করতে হবে।কি এরপরও কি নোংরা চিন্তা করবে?
    না দোস্ত তোর এক লেকচারে সব নোংরামি বন্ধ।আজ থেকে নিজেকে ভালো পথে পরিচালিত করবো,”ইনশাআল্লাহ”
    থ্যাংকস দোস্ত শোকরিয়া। চলো ফেরা যাক।
    তিন বন্ধু ষ্টেশনে গিয়ে দাঁড়ালো।গাড়ি একটাও নেই।লাইন লিডার এগিয়ে এসে বলল,
    ভাইজান আপনারা কই যাইবেন?
    নয়ন বলল,
    কদমতলী।
    ভাইজান বহেন,কদম তলীর গাড়ি এক্ষণি আইয়্যা পড়বো।
    তারা ষ্টেশনের পাশে একটা দোকানে বসে পড়লো।কিছুক্ষণ পরে গাড়ি আসল।তারা গাড়িতে উঠে বসল।গাড়ি স্টার্ট দিতে তা এগিয়ে চলল।কিছুদূর যাবার পর গাড়ি থেমে গেল।যাত্রীরা হৈ হুল্লুড় শুরু করে দিলো।ড্রাইভার বলল,
    যাত্রী ভাইও বোনেরা অপেক্ষা করুন।কিছুক্ষণের মধ্যে গাড়ি সার্ভিস হবে।
    ড্রাইভার গাড়ির কাজে লেগে গেল।প্রায় যাত্রী নেমে পড়লো।নয়ন ধ্যান মগ্ন হয়ে বসে রইল।সামনের বেঞ্চে শান্তাও তার সই রুমা।রুমা নয়নকে দেখে বলে,
    শান্তা দেখ দেখ ঐ ছেলেটি।
    কোন ছেলেটি?
    সে কী!এরই মাঝে সব ভুলে গেলি।তোর গায়ের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে গেল যে,।
    উফ! মনে পড়েছে।তাহলে সেও এ গাড়িতে আছে দেখছি।
    তো আর বলছি কী।
    বলতে না বলতে তার খিল খিল করে হেসে উঠল।তাদের হাসিতে নয়নের ধ্যান ভাঙ্গল।সামনে তাকাতে দেখতে পেল এতক্ষণ সে যাকে নিয়ে ভেবেছিল,সে তার সামনের বেঞ্চে বসে আছে।সে আবেগের চোখ মেলে দেখতে শুরু করলো।কিছু বলতে ভাব করলো,তখনি গাড়ি হর্ন বাজিয়ে স্টার্ট দিলো।মনের কথা আর বলা হলো না।গাড়ি থামতে শান্তা নেমে পড়লো।পিচু পিচু নয়ন ও নামল।কিন্তু চোখের পলকে শান্তা কোথায় যেন হারিয়ে গেল।নয়ন তাকে আর দেখতে পেল না।তার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।সে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলো না,বাড়ি ফিরে গেল।তাকে বিলম্বে ফিরতে দেখে মা বলল,
    নয়ন অনেক রাত হলো যে,এতক্ষণ কোথায় ছিলে?
    কি যে বল না মা,এত রাত কই দেখলে। সবেতো রাত দশটা।মা ক্ষুধা পেয়েছে খেতে দাও।
    খানা খেয়ে নয়ন শুয়ে পড়লো।শুতে না শুতে শান্তার রুপছবি তার সামনে ভেসে উঠল।তার ভিতরে তোলপাড় শুরু…।সুপ্ত হৃদয়টা জেগে উঠল।আপন মনে বলে, কেই এই তরুনী যাকে এক পলক দেখে ভালোবেসে ফেললাম।অথচ আমার এক সহকর্মী বান্ধবী নিজ থেকে আমাকে প্রেমের নিমন্ত্রণ পত্র দিলো।আমি জবাব দেয়াতো দূরের কথা,তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলাম।তাকে কেন, কোন নারীকে আমি এখনো মনের চোখ দিয়ে দেখেনি।কিন্তু এখন আমার একি হলো তাকে আমি কিছুতে ভুলতে পারছি না কেন?বারবার তার কথা মনে পড়ছে।কিছুতে তাকে ভুলতে পারছি না।শুধু ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে।ভাবনার কোন এক ফাঁকে তার চোখে ঘুম এসে গেল।ভোর হলে মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ফজরের আযান ধ্বনি বেজে উঠল।নয়নের মাতা বিলকিছ বেগম অযু করে নামাজ পড়লেন।তারপর ছেলেকে জাগিয়ে দিয়ে গেলেন।নয়ন মায়ের ডাকে সাড়া না দিয়ে পারলো না।জামাতে নামাজ পড়তে গেল।জামাত শেষ করে মায়ের পাশে এসে বসলো।মা বলল,
    নয়ন টেবিলে নাস্তা দিয়েছি খেয়েনে।
    নয়নের বয়স যখন দশ বছর তখন তার বাবা মারা যান।তারপর থেকে মা তার সবকিছু।ছেলে বড় হয়েছে এবার মা চান সংসারের দায়িত্ব ছেলেকে বুঝিয়ে দিতে।তাই বললেন,
    নয়ন আমি আর তোর সংসার দেখাভাল করতে পারবো না।তাছাড়া আমি আর বাঁচব কদিন।সময় থাকতে তোর সংসার তুই বুঝেনে।
    ছেলে এক কথায় জবাব দিলো,
    মা তুমি বেঁচে থাকতে আমি এসব পারবো না।
    আমি যদি হঠাৎ করে মরে যায় তখন কী করবি?
    মা তা তখন দেখা যাবে।আগে বাগে মরার কথা বলো নাতো?
    নয়ন।
    জ্বী মা বল।
    তোর ফয়েজ চাচার বাড়িতে যা।
    কেন মা?
    চাষাদের সাথে পরিচিত হতে হবে না,তাছাড়া জমিতে ফলন কেমন হয়েছে তা দেখতে হবে না।সারা জীবন কি পরের উপর ভরসা করা যায়?
    জ্বী আচ্ছা মা যাচ্ছি।
    নয়ন ছুটে গেল চাচার কাছে।তাকে দেখামাত্রই সালাম দিলো,তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন,
    নয়ন, কখন এলে?
    এইতো সবেমাত্র।
    তো কি মনে করে?
    মা পাঠিয়েছেন আপনার কাছে দক্ষিন পাড়ার জমিগুলো দেখতে।
    ঠিক আছে চলো।
    চাচা ভাতিজা দুজন এগিয়ে চলল।তাদের সাথে প্রথমে দেখা হলো বর্গাচাষী আজগর আলীর সঙ্গে।তিনি ক্ষেতের আগাছা পরিষ্কার করছেন।মুনিবকে দেখে নম্র স্বরে সালাম দিয়ে বললেন,
    চাচাজান কই যাইতাছেন,আপনার লগে উনি কে?
    ওহ্ হচ্ছে নয়ন রহমান।আমার মরহুম বড় ভাইয়ের একমাত্র ছেলে।তুমি যে জমি চাষ করছ তার মালীক এই নয়ন।দাঁড়িয়ে আছ কেন চলো তার বাকী জমি দেখিয়েদি।
    জ্বী চলেন।
    নয়নকে একে একে সকল চাষার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো।ফেরার পথে আজগর আলী বলল,
    নয়ন ভাই আমি গরীবের বাড়িতে এক কাপ চা খাইয়া যান।
    নয়ন না করলো না।আজগর আলীর বাড়িতে অবস্থান করলো।আজগর আলী চা নাস্তার জন্য বউকে জরুরী সংকেত দিলো।এদিকে নয়ন তার ফল ফলাদি ভরা বাগান দেখে মুগ্ধ হয়ে ডাকে,
    আজগর ভাই এদিকে এসো?
    নয়ন ভাই আমারে ডাকছেন?
    জ্বী হ্যাঁ ভাই।এই বাগানটা কে লাগিয়েছে?
    ক্যান ভুল অইছে?আমি লাগিয়েছি।
    আজগর ভাই ভুল হবে কেন,বরং খুব ভালো হয়েছে।আমাদের প্রত্যেকের উচিত আপনার মতো বিভিন্ন ফল ফলাদি ও বনজ বৃক্ক লাগিয়ে বাড়ির সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলা।এই ফলফলাদি ও বনজ বৃক্ক একদিকে পূরণ করবে ভিটামিন জনিত খাদ্য ঘাটতি,অন্যদিকে অক্সিজেনের অভাব।আর এ দুটো উপদান জীবন ধারনের জন্য খুবই উপকারী।আপনি খুব ভালো কাজ করেছেন।
    সত্য কইতাছেন নয়ন ভাই?
    আজগর ভাই সত্যি বলছি।আমি চা নাস্তা খাব না।পারলে আমাকে ডাবের পানি আর কিছু তাজা ফল খাওয়ান।কারণ এতে আছে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন।
    তিনি আর দেরী করলেন না।ছুটে গেলেন বাগানে। তারপর ডাবের পানি,পাকা পেয়ারা,পাকা কলা,পাকা পেপে প্লেট ভর্তি করে তার সামনে এনে দিলেন।নয়ন ভালো মতো খেয়ে বিদায় হলো।
    মধ্যহ্ন প্রহর এগিয়ে চলেছে।সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছুটি।রাস্তার পাশ বেয়ে হেটে চলল তরুণ-তরুণীর দল।মুহূর্তে মনে পড়ে গেল নয়নের শান্তার কথা।তার দৃষ্টি রেখা প্রখর হয়ে উঠল।সৃষ্টির কি লীলা খেলা সামনে চোখ পড়তেই চোখে পড়লো সেই অপরুপ রুপবতী মেয়েটিকে। নয়ন তাদের পিচু পিচু হাটতে শুরু করলো।সই রুমা বিদায় নিলো।এবার শান্তা একা,নয়ন এগিয়ে এসে বলল,
    “এক্সিউজ মি” একটু দাঁড়াবেন?
    শান্তা আর এগুতে পারলো না,দাঁড়িয়ে গেল।নয়ন কাছে এসে বলল,
    আপনার পাঁচ মিনিট সময় হবে?
    কেন বলুনতো?
    আপনার সাথে আমার জরুরী কথা ছিল।
    অপরিচিত লোকের সাথে জরুরী কথা বলা ঠিক হবে না।তাই শান্তা বলল,
    আজ থাক, অন্য দিন বলব।
    এবার নয়ন বলল,
    প্লিজ না করবেন না।কথাটা না বলে যে পারছি না।চলুন আমরা হাটতে হাটতে বলি।
    দুজন হেটে চলেছে।এমন সময় শান্তা বলল,
    হ্যালো যা বলার তাড়াতাড়ি বলুন?
    ঠিক আছে বলছি,আমি নয়ন রহমান।বি এ অনার্স।আপনি?
    আমি শান্তা আহমেদ, আই.এ ফাইনাল ইয়ার।
    থ্যাংকস।
    থ্যাংকস কেন?
    না মানে এমনি। আমি আপনার সাথে বন্ধুত্ব করতে চাই।আমার বন্ধু হবেন?
    না বুঝে না শুনে হ্যাঁ বলাটা কি ঠিক হবে।তাই শান্তা বলল,
    ঠিক আছে ভেবে দেখি।
    প্লিজ শান্তা না করো না।যা বলার এখন বলো?
    আচ্ছা আপনি কি ধরনের বন্ধুত্ব করতে চান?
    শান্তা বন্ধুত্বের মাঝে আপনি বলা চলে না।আমাকে তুমি বলো।আমি তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড হতে চাই।
    শান্তা মনে মনে বলে,মি: নয়ন তুমি ভেবেছ আমি কিছু বুঝি না।প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর প্রেমের প্রস্তাব এইতো।আমি বাপু এসবের মধ্যে নেই।শান্তাকে চুপচাপ ভাবতে দেখে নয়ন বলল,
    শান্তা চুপ করে আছ কেন,কিছু একটা বলো।কি আমি বন্ধু হিসেবে ভালো না?
    না ইয়ে মানে…।
    ইয়ে মানে তুমি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না এইতো।
    না ঠিক তাই না।
    শান্তা তুমি ভাবছ আমি বখাটে,গায়ে পড়ে তোমার সর্বনাশ করবো।কিন্তু না আমি ভালো মানুষ এবং তোমার একজন ভালো বন্ধু।বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করে দেখ।
    দেখুন এত অল্প সময়ের মধ্যে ভালো মন্দ বুঝা যায় না।আর ও কিছু দিন যাক, তারপর…।
    তারপর বন্ধুত্ব করবে,এইতো
    হ্যালো শুন?
    জ্বী বলুন?
    আমি আগামীকাল কদম তলীর পর্যটন কেন্দ্র দেখতে যাব।তোমার নিমন্ত্রণ রইল।তুমি আসবেতো?
    অল্পতে মেয়ে মানুষের মন নরম হওয়াটা স্বাভাবিক।আর পুরুষ মানুষকে অতি সহজে বিশ্বাস করাটা তাদের বৈশিষ্ট্য।তাই শান্তা না করতে পারলো না।জানতে চাইল,
    কখন যাবেন?
    আগামী কাল কলেজ ছুটির পর।তুমি অপেক্ষা করবে।আমি সময় মতো তোমাকে নিয়ে আসব।
    ইটস ওকে।
    তাহলে এ কথায় রইল।আমি এখন চলি।বাই বাই বাই।
    দুজন স্ব স্ব বাড়িতে অবস্থান করলো।এভাবে শান্তা ও নয়নের প্রথম কথোপকথন হলো।


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

অযত্ন ও অবহেলায় এবং জনচক্ষুর আড়ালে থেকে যাওয়া ঢাকার কিংবদন্তি নবাব স্যার খাজা স‌লিমুল্লাহ বাহাদুর এর অবদান ও ইতিহাস

অযত্ন ও অবহেলায় এবং জনচক্ষুর আড়ালে থেকে যাওয়া ঢাকার কিংবদন্তি নবাব স্যার খাজা স‌লিমুল্লাহ বাহাদুর এর অবদান ও ইতিহাস ----------------------------------------------------

ইসলামিক বা মুসলিম দেশে যত সব ভাস্কর্য / মুর্তি 

ইসলাম‌িক  বা মুসলিম দেশে যত সব ভাস্কর্য / মুর্তি --------------------------------------------------------------- পা‌কিস্তান , সৌ‌দি আর‌ব ও ইন্দো‌নে‌শিয়ার মত মুস‌লিম সংখ্যাগ‌রিষ্ঠ দে‌শে

কায়িক শ্রমিক

কায়িক শ্রমে শ্রম বিকিয়ে ভাতের গন্ধ পাই, দুমুঠো ভাত জোগাড় করতে কত হিমশিম খাই। পেটের দায়ে --ঘাম ঝরিয়ে টাকা কামাই

প্রবাসীরা সোনার ছেলে

প্রবাসীরা সোনার ছেলে মোঃ রুহুল আমিন সোনার ছেলে আপন ছেড়ে প্রবাসে দেয় পাড়ি, জীবন মরণ লড়াই করে টাকা পাঠায় বাড়ি।

Leave a Reply