গল্প আমি তোমার মা আফছানা খানম অথৈ

play icon Listen to this article
0

আমি তোমার মা

আফছানা খানম অথৈ

প্রিয়া আর সবুজ’র পাঁচ বছরের রিলেশন।রাত জেগে ফোনালাপ চ্যাটিং।দুজনের মাঝে গভীর ভালোবাসা।একে অপরকে এক পলক না দেখে থাকতে পারে না।কোন কারণে একদিন দেখা না হলে অবিভাককের চোখে ধুলো দিয়ে দুজন গোপন অভিসারে মিলিত হয়।একে অপরের মাঝে ভালোবাসা যেন উপছে পড়ছে।ঠিক সেই মূহূর্তে টের পেয়ে গেল প্রিয়ার মা।তাই প্রিয়াকে না জানিয়ে এক বড়লোক দ্বোজ-বর এর সঙ্গে বিয়ে ঠিক করলো।প্রিয়া যাকে ভালোবাসে সে তেমন বড় লোক না।এখনো বেকার টিউশনি করে কোন রকমে চলছে।প্রিয়ার মায়ের ধারণা এমন একটা হাভাতে ঘরের ছেলে মেয়েকে কখনো সুখে রাখতে পারবে না।তাই বড় ঘরে মেয়ের বিয়ে ঠিক করলেন।কিন্তু প্রিয়া এই বিয়েতে কিছুতেই রাজী না।কারণ সে সবুজকে ভালোবাসে।বিয়ে যদি করতে হয় সবুজকে করবে।আর কাউকে না।এমন কড়া কথা বলে দিলো মায়ের মুখের উপর ।কিন্তু মা মানলে তো?
মাও মেয়ের মুখের উপর বলে দিলেন,
প্রিয়ার বিয়ে সবুজের সঙ্গে হবে।আর কারো সাথে না।
মা-মেয়ের চ্যালেঞ্জ এক পর্যায়ে ব্রেক করলো।মা তার জেদ বজায় রাখলেন।মেয়েকে বিয়ে দিলেন দ্বোজ-বর রাফসান এর সঙ্গে।বাসর ঘরে বউ সেজে বসে আছে প্রিয়া এমন সময় একটা সাত আট বছরের বাচ্চা মেয়ে ছুটে এসে বলল,
নতুন মা তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।
কে তোমার মা?
কেনো তুমি।
আমি মানে?
বোকা বুঝে না।আমার বাবা তোমাকে বিয়ে করেছে।তাহলে তুমি আমার মা না?
আচ্ছা তোমার কটা মা?
দুটো মা।আমার মা মারা যাবার পর,বাবাকে বলেছিলাম একটা মা আনতে।তাই বাবা তোমাকে বিয়ে করেছে।এখন তুমি আমার মা।
কথাগুলো শুনা মাত্রই প্রিয়ার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।কারণ সে এসবের কিছুই জানে না।মা সবকিছু তার কাছে গোপন করেছে।শেষে কি না একজন দ্বোজ-বর এর সঙ্গে তাকে বিয়ে দিলো,যার কি না একটা মেয়ে ও আছে।এসব সে মানতে পারলো না।বিষ খেয়ে নিজেকে শেষ করে দিতে চাইল।রাফসান এসে দেখে প্রিয়া বিছানায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।পাশে একটা বিষের বোতল।সে দ্রুত গতিতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেল।ইমারজেন্সি চিকিৎসা শুরু…।
আল্লাহর রহমতে সে মোটামুটিভাবে সুস্থ হয়ে উঠল।রাফসান তার যথেষ্ট রকম সেবাযত্ন করলো।প্রিয়া আপন মনে বলে,
সত্যি রাফসান অনেক ভালো।এমন মানুষ হাজারেও একটা হয় না।তাকে কষ্ট দেয়া আর ঠিক হবে না।
রাফসানের অসম্ভব রকম ভালোবাসার কাছে হেরে গেল প্রিয়া।নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নিলো।রাফসান হাসিমুখে সবকিছু মেনে নিলো।দুজনের মাঝে ভালোবাসা ফুটে উঠল।
কিছুদিন পর তার বয়ফ্রেন্ড চুপিচুপি তার সাথে দেখা করতে আসল।এবং প্রিয়াকে নিয়ে যেতে চাইল।প্রিয়া বলল,
দ্যাখো আমরা একে অপরকে ভালোবাসি সেটা ঠিক আছে।তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।তাই সুইসাইডের পথ বেঁচে নিলাম।রাফসানের অসম্ভব রকম ভালোবাসা আর সেবাযত্নে আল্লাহপাক আমাকে সুস্থ করে তুলেছেন।আমি তার ভালোবাসার কাছে হেরে গেলাম।আমি তাকে ঠকাতে পারবো না।আমি মৃত্যু পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকতে চায়।আমাদের জীবনে যা ঘটেছে তা ভুলে যাও।তাছাড়া এটা বয়সের মোহ,আমরা চাইলে সবকিছু মেনে নিতে পারি।সরি আমাকে ক্ষমা কর।
প্রিয়া তুমি সুখে থাক এই কামনা করি।ভালো থেকো।
আঁড়ালে দাঁড়িয়ে রাফসান সবই শুনলো।তারপর প্রিয়াকে জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার ভুবনে হারিয়ে গেল।রাফসানের মেয়ে বলল,
নতুন মা তুমি খুব ভালো।
মা কখনো নতুন হয় না।মাকে মা বলতে হয়।আজ থেকে আমি তোমার মা।
মেয়েটি খুশি হয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলো।মা ও তাকে খুব আদর করলো।মিতু ফিরে পেলো তার হারিয়ে যাওয়া মাকে।

ঃসমাপ্তঃ


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

Afsana Khanam

Author: Afsana Khanam

লেখক

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

গল্প বিয়ের ফাঁদ আফছানা খানম অথৈ

বিয়ের ফাঁদ আফছানা খানম অথৈ আফজাল শিকদার একজন বড় ব্যবসায়ী। দেশে বিদেশে তার অনেক নাম ডাক।তিনি সমাজে ভালো মানুষ হিসেবে

“রূপকথার গল্পে আমি”-১৪

(১৪) এখন বসন্ত কাল। ফাল্গুন ও চৈত্র এ দু'মাস বসন্ত কাল। বসন্ত কালকে ঋতুরাজ বলা হয়। এ সময় চারদিকে ফুটে

“রূপকথার গল্পে আমি”-১৪

(১৪) এখন বসন্ত কাল। ফাল্গুন ও চৈত্র এ দু'মাস বসন্ত কাল। বসন্ত কালকে ঋতুরাজ বলা হয়। এ সময় চারদিকে ফুটে

গল্প পুতুলের বিয়ে আফছানা খানম অথৈ

পুতুলের বিয়ে আফছানা খানম অথৈ পুতুলের বয়স সবেমাত্র বারোতে পড়েছে।এতটুকুন মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে।পুতুলের মা-বাবার আর তর

Leave a Reply