যেখানে বিনিয়োগে লোকসান নেই

play icon Listen to this article
0
সুন্দর এই পৃথিবী রঙ্গিন ও চাকচিক্যময়। রঙিন পৃথিবীর চাকচিক্যের মায়ায় আমরা ছুটছি মাতাল হয়ে। আমরা একথা ভাবার সময় পাই না যে এই জীবনের পরে আমাদের নতুন আরেক জীবন আছে। আমাদের জীবন ও মৃত্যুর উদ্দেশ্য, এই জীবনে কি করছি তার পরীক্ষা করা। পরবর্তী জীবনে এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন,

 

اِ۟لَّذِیْ خَلَقَ الْمَوْتَ وَ الْحَیٰوةَ لِیَبْلُوَكُمْ اَیُّكُمْ اَحْسَنُ عَمَلًا وَ هُوَ الْعَزِیْزُ الْغَفُوْرُ

 

কাজের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কে উত্তম তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য তিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন। আর তিনি পরাক্রমশালী ও ক্ষমাশীলও। [১]

 

আমাদের সৃষ্টি করলেন আমাদের মালিক পরীক্ষা করার জন্য অথচ মত্তহস্তীর ন্যায় নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই নষ্ট করছি কিন্তু তা অনুধাবন করতে পারছি না।

দুনিয়াতে আমাদের প্রেরণ করা হয়েছে আখেরাতে যেন সুন্দর ভাবে বসবাস করতে পারি সেই রসদ প্রস্তুত করার জন্য। আল কোরআন ও আল হাদিসের একাধিক বক্তব্যের আলোকে এ কথা প্রমাণিত যে এই ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় আমরা যা কিছু করব চিরস্থায়ী আখেরাতে সেটি রসদ হিসেবে কাজে আসবে। হাদিসের মধ্যে পাওয়া যায় ,

الدنيا مزرعه الاخره

“দুনিয়া আখেরাতের শস্যক্ষেত্র। ” [২] শস্যক্ষেত্রে যেমন ফসল ফলাবো পরবর্তীতে সে ফসল-ই পাওয়া যাবে।

 

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানব গোষ্ঠীকে সৃষ্টির ব্যাপারে সূরা যারিয়াত এর মধ্যে বলেছেন মানব এবং জিন জাতিকে শুধুমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দাসত্বের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। [৩] অন্য কোন কিছুর জন্য আমাদেরকে সৃষ্টি করা হয় নাই। অর্থাৎ আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজে থাকবে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দাসত্ব।

 

কোরআন ও হাদিসের প্রতিটি কাজ বাস্তবায়নের নিয়তে অনুধাবন করতে হবে। পদ্ধতি জানতে হবে সেই সমস্ত কাজের এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আনুগত্য ও দাসত্ব হবে একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের। সকল ক্ষেত্রে যদি আমরা আল্লাহর দাসত্ব করতে পারি তবে কেয়ামতের রসদ আমরা প্রস্তুত করতে পারছি। কেয়ামতের কঠিন ময়দানে নাজাত পেতে হলে দুনিয়াতে তার প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

এজন্য আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে,

১. সকল ক্ষেত্রেই আল্লাহর দাসত্ব করা।

২. আল্লাহ ব্যতীত অপর কাউকে ভয় না করে আল্লাহর ভয় নিয়ে সার্বক্ষণিক পথ চলা।

৩. যে কোন বিষয়ের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আল্লাহর আনুগত্য পোষণ করা।

৪. আল্লাহর দেওয়া প্রতিটি বিধান নিজের জীবনের প্রয়োজনীয় কাজ হিসেবে মেনে নিয়ে তা পালন করা।

 

এ কাজগুলো করার মাধ্যমে আমরা যদি নেক আমল বিনিয়োগ করতে পারি কেয়ামতের ময়দানে সেটাই আমাদের মুক্তির অবলম্বন হবে।আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সেই তৌফিক দান করুন। আমিন।

 

তথ্যসূত্র,

১। সূরা আল মূলক, আয়াতঃ ২।

২। আল হাদিস।

৩। সূরা যারিয়াত, আয়াতঃ ৫৬।

 

 লেখক ফারুক আব্দুল্লাহ

Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

ফারুক আব্দুল্লাহ

Author: ফারুক আব্দুল্লাহ

শৈশব গ্রামে কাটলেও কৈশোরকাল থেকেই শহুরে জীবনে অভ্যস্ত। গাঁয়ের মক্তবেই মূলত পড়ালেখার হাতেখড়ি। দেশসেরা মাদরাসায় পড়ার সৌভাগ্যও হয়েছে। ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত একজন তরুণ। ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক কয়েকটি সংস্থায় কাজ করার পাশাপাশি লেখালেখিতে মনোযোগ দিয়েছি। আরব পূর্বযুগ থেকেই সাহিত্যে চির উন্নত। দেশে ইসলামী সাহিত্যের অবহেলিত করুণ অবস্থা দেখে বুক কষ্ট হয়। দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে লিখছি ইসলামী আদর্শ পৌছেঁ দিবো প্রতিটি সেক্টরে। আমাদের সকল আয়োজন যেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হয়। আমিন।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

সীরাত গ্রন্থ পরিচিতি

  সীরাত পাঠের প্রয়োজনীয়তা কোনো কিছুর পরিচয় না জানলে তার যথাযথ মূল্যায়ন করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে কোনো মানুষকে
AddText 05 31 02.49.35

পথভ্রষ্ট কারা? আমাদের সমাজের পথভ্রষ্টদের পরিচয় 

পথভ্রষ্ট মানেই গোমরাহী। আর যারা গোমরাহী তারা জাহান্নামের অধিবাসী।  দুনিয়াতে অধিকাংশ মানুষই ঈমান না আনার কারণে পথভ্রষ্ট। অন্যদিকে ঈমান আনার

তাকদীর এবং এর স্বরূপ

  তাকদীর অর্থ কী তাকদীর শব্দটি আরবী। এর শাব্দিক অর্থ হলো, নিয়তি, কপাল, নির্ধারিত ভাগ্য। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে যত কিছু ঘটেছে
কী বিদআতের ভয়াবহতা ও পরিনাম

বিদআত কী? বিদআতের ভয়াবহতা ও পরিনাম 

"বিদআত" আমাদের সমাজে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ। বিদআত কী? বিদআত কাকে বলে? এবং বিদআতের পরিনাম কী? এই নিয়ে রয়েছে আমাদের

Leave a Reply