(১৫)
এক সপ্তাহ পর। কলেজ থেকে আসার পথে এক বান্ধবীর বাড়িতে যাই। সে আজ কলেজে আসেনি তাই ভাবলাম দেখে যাই। তবে এর ও পেছনে একটা উদ্দেশ্য আছে। সেটা হল ওদের বাড়িতে চন্দ্রমল্লীকা ফুলের গাছ আছে। এখন প্রয়োজন এই ফুলের। তাদের বাড়িতে গিয়ে সোজা রিয়ার রুমে যাই, দেখি রিয়া পত্রিকা হাতে নিয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। আমাকে দেখে রিয়া উঠে বসে বলে-আরে অধরা তুই? আয় বস?
হ্যাঁ আমি, আজ তুই কলেজে যাসনি কেন?
শরীর খারাপ লাগছিল তাই যাইনি।
কেন? কি হয়েছে তর?
তেমন কিছু হয় নি। এমনি। তারপর তর খবর কি বল?
আমার কিছু চন্দ্রমল্লীকা ফুল দরকার দেবে?
বেশ তো যাবার সময় যত ইচ্ছে নিয়ে যাস। তবে আজ আমাদের বাসায় লাঞ্চ (Lunch) করে যাবে।
রিয়ার মাও খুব করে ধরলেন শেষমেষ তাদের বাসায় খেয়ে আসতে হল। আসার সময় দুজনে মিলে এক ঝুড়ি ফুল তুলে বাসায় নিয়ে আসে।
এইদিন বিকেলে রাহিকে দিয়ে এই ফুল গুলো আর একটা কাগজ শরণের টেবিলের উপর রাখাই। এর পরদিন থেকে প্রায় প্রতিদিন বিকেলে কিছু সময় পুকুর ঘাটে বসি যদি শরণ খুঁজে আমায় এই ভেবে।
মাঝে এক শুক্রবার যায় এর পরের শুক্রবার শরণের সাথে দেখা হয় পুকুর ঘাটে।
অসম্ভব কোন কিছু সম্ভব হলে বা অসম্ভব কোন বস্তু পেলে মানুষ যে রকম অনুভব করে টিক সেই রকম ভাবে শরণ আমাকে পেয়ে বলছে-আমি আপনাকে খুঁজছিলাম?
অবাক হওয়ার মত করে বলি- আমাকে? কেন?
আপনার সাথে অনেক কথা আছে।
কি কথা বলেন?
সেদিনের মত আরেকটা ঘটনা ঘটেছে।
কি ঘটনা?
এক ঝুড়ি চন্দ্রমল্লীকা ফুল আর একটা কাগজে লিখা- “অপ্রকাশ এবং নিঃসঙ্গতার প্রতীক হচ্ছে চন্দ্রমল্লীকা”। ভীষণ সুন্দর কথা বলেছে তো!
অহ্ সেটাতো বুঝলাম, কিন্তু কে করছে এসব।
কে করছে এসব, তা দিয়ে কি হবে? সে যা বলছে
তা এক্সেপ্ট করেন?
আমার আম্মা বা অন্য কারো হাতে পড়লে তারা কি
মনে করবে ভেবে দেখেছেন?
কি আর মনে করবে ভাববে তুমি প্রেমে পড়েছ! ওহ্ সরি, আমি আপনাকে তুমি বলে ফেলেছি?
না না ঠিক আছে তুমি বল অসুবিধা নেই আর আমিও তুমাকে নাম ধরেই ডাকবো?
তাই ডেকো, খারাপ লাগে না!
প্রথম দিন তেমন ভাবিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এভাবে যদি চলতে থাকে, কি হবে?
খুব ধীর শান্ত ভাবে একটু ঠুটের কোণে হাসি এনে বললাম কি আর হবে যা হবার তা হবে। কোথায়, কাকে কি বলে এসেছেন এখন সে পিছু নিয়েছে!
শরণ একটু হেসে বলছে- অধরা ভালো হবে না বলছি, আমি সেরকম কিছুই করিনি।
কিছু করেন নি তো কে দিল এসব? কই আমাকে তো এরকম কেউ দেয় না।
কেউ দেয় না তুমাকে, ঠিক আছে আজ থেকে আমি দেব তুমাকে!
নরমাল হয়ে বললাম- কি দেবে আমায়? শরণ কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। তখনই পুকুর ঘাটের উপর থেকে রাহি ডাকে আমাকে।
বলে- আম্মু তুমাকে ডাকছেন।
রাহি শরণকে দেখে ওর কাছে যায় এরপর তাদের দুজনে মিলে অনেকক্ষণ গল্প হয়।
ভালো লিখেছেন কবি