গীবতের পরিচয় এবং গীবতকারীর পরিণতি (১ম পর্ব)

0

প্রত্যেক মুসলমানের উপর ওয়াজিব যে সে তার জিহ্বাকে ঐ সমস্ত বিষয় থেকে সংযত রাখবে, যা থেকে শরী’আত তাকে নিষেধ করেছে। আর সে সমস্ত নিষেধকৃত কাজসমূহ থেকে প্রধানতম হচ্ছে গীবত তথা পরনিন্দা বা পর-দোষচর্চা। আর মানুষ কথার মাধ্যমে যে সমস্ত পাপ করে তার মধ্যে এই পাপটি হচ্ছে সবচেয়ে ব্যাপক এবং ভয়াবহ।

ব্যাপকতা এবং ভয়াবহতার ব্যাখ্যায় আমরা পরে আসছি; আগে আমরা গীবতের সংজ্ঞা ও পরিচয় জেনে নিই।

গীবত কী? বা গীবত কাকে বলে?

গীবত শব্দের আভিধানিক অর্থ:— গীবত শব্দটি এসেছে ‘গায়বাত’ শব্দ থেকে। সে হিসেবে এর আদি অর্থ হচ্ছে অবর্তমানে, অলক্ষ্যে, পিঠপিছে, অনুপস্থিতে ইত্যাদি। আর গীবতের প্রচলিত অর্থ হচ্ছে- পরনিন্দা, পরচর্চা, দোষচর্চা, সমালোচনা ইত্যাদি।

ইসলামী পরিভাষায় গীবত বলা হয়, কোনো মুসলমানের পিঠপিছে তার দোষচর্চা করা বা সমালোচনা করা কিংবা নিন্দা করা অথবা তার কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করা। এক কথায়- কারো পিঠপিছে এমন কিছু বলা যা সে পরে শুনলে মনে কষ্ট পাবে।

 

গীবত সম্পর্কে মহানবী সা. এর ইরশাদ

أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ ‏”‏ ‏.‏ قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ قَالَ ‏”‏ إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ

অনুবাদ: আবু হুরায়রাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা কি জানো গীবত কী জিনিস? তারা বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেন, গীবত হলো তোমার ভাইয়ের (অবর্তমানে তার) সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হলো, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাই এর মধ্যে বাস্তবিকই থেকে থাকে তবে আপনি কী বলেন? তিনি বললেন, তুমি তার সম্পর্কে যা বলছ তা যদি তার মধ্যে প্রকৃতই থেকে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তাহলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। [বুখারী: ৬৩৫৭]

 

গীবত ও বুহতান এর মধ্যে পার্থক্য

যদি বাস্তবে কারো মধ্যে চর্চিত দোষটা থাকে তবে তাকে গীবত বলে আর যদি না থাকে তাহলে ‘বুহতান’ (অপবাদ) বলে। এটি গীবতের চেয়ে মারাত্মক।

গীবত ও চোগলখোরির মধ্যে পার্থক্য

গীবত বলা হয় কারো অনুপস্থিতে তার বদনাম করা আর চোগলখোরি হচ্ছে একের কথাকে অন্যকে গিয়ে বলা। অর্থাৎ প্রত্যেক চোগলখোরির মধ্যে গীবত রয়েছে কিন্তু প্রত্যেক গীবতের মধ্যে চোগলখোরি নেই।

 

গীবত হচ্ছে সমাজের সবচেয়ে ব্যাপক এবং ভয়াবহ পাপ

ব্যাপক বলছি এ কারণে যে, এমন কোনো বৈঠক নেই যে বৈঠকে মানুষ গীবতে লিপ্ত হয় না। এমন কোনো আলাপ নেই যে আলাপে কেউ না কেউ কারো না কারো গীবত করছে না। বর্তমানে গীবতকে ইসলামী সমাজে ঘী-ভাতও বলা হয়‌। কারণ, ঘী-ভাত যেমন খেতে মজাদার, আজকাল গীবতও মানুষের কাছে ততটাই মজাদার।

 

গীবতের ভয়াবহতা

গীবত সবচেয়ে জঘন্য ও ভয়াবহ এ কারণে যে, গীবতের গুনাহ আল্লাহ তা’আলা কখনোই মাফ করেন না যতক্ষণ না যার গীবত করা হয়েছে সে মাফ করে। কারণ, এটা বান্দার হক। কেউ যদি আল্লাহর হক নষ্ট করে আল্লাহ চাইলে তাকে ক্ষমা করে দেন কিংবা পাকড়াও করেন। সেটা আল্লাহর মর্জি। কিন্তু গীবত করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না যতক্ষণ না যার গীবত করা হয়েছে সে তাকে ক্ষমা করে। আল্লাহ বান্দার প্রতি সর্বদা সুবিচার করেন।

বিভিন্ন হাদীস দ্বারা বোঝা যায়, গীবত হলো- মদপান-ধুমপান, জুয়া, সুদ-ঘুষ, চুরি-ডাকাতি, যেনা-ব্যভিচার ইত্যাদি থেকেও মারাত্মক ও নিকৃষ্ট পাপ ও কবিরা গুনাহ। কারণ, অন্যান্য পাপসমূহ আল্লাহর দরবারে খাঁটি মনে তওবা করলে মাফ হয়ে যায়; কিন্তু গিবতকারীর পাপ শুধু তওবা করার দ্বারা মাফ হয় না- যতক্ষণ না যার গীবত করা হয়েছে সে মাফ না করে।

 

গীবত করার কুফল

কিয়ামতের ময়দানে মানুষ পাহাড় পরিমান নেকী নিয়ে উঠবে কিন্তু গীবতের জরিমানা দিতে দিতে তার সমস্ত নেকী ধ্বংস হয়ে যাবে। কারণ, কেয়ামতের ময়দানের মুদ্রা হচ্ছে নেকী; সেখানে কোনো টাকা পয়সা চলবে না। কাজেই পৃথিবীতে বান্দার হক নষ্ট করার বিনিময় নেকী দিয়েই করতে হবে। এদিকে যার গীবত করা হয়েছে তার আমলনামায় অল্প নেকী থাকা সত্ত্বেও সে গীবতকারীদের নেকী পেয়ে পেয়ে পাহাড় পরিমান নেকীর মালিক হয়ে যাবে।

গীবতের প্রকারভেদ

গীবত দুই প্রকার: ১. প্রত্যক্ষ গীবত। ২. পরোক্ষ গীবত।

প্রত্যক্ষ গীবত হচ্ছে, কারো নিজের ভেতরের কোনো বিষয়ে দোষচর্চা করা। যেমন অমুক এমন-তেমন ইত্যাদি।

আর পরোক্ষ গীবত হচ্ছে তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দোষ চর্চা করা। যেমন, অমুকের বাচ্চাটি নাকবোঁচা, দাঁতাল বা দাঁত এলোমেলো, কালো ইত্যাদি। বা তার ঘরটি কবুতরের খুপড়ির মতো, তার জুতাজোড়া অল্প দামের, তার জামাটি সস্তা দোকান থেকে কেনা ইত্যাদি ইত্যাদি।

গীবত করার তিনটি কারণ

মানুষ গীবত করে তিন কারণে। ১. নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য। ২. অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ও তার মান-ইজ্জত নষ্ট করার জন্য। ৩. যার গীবত করা হয়েছে তার সংশোধনের জন্য।

 

কোন গীবত জায়েয আর কোন গীবত নাজায়েয

প্রথম দুই প্রকারের গীবত নাজায়েয। কারণ এতে কোন কল্যাণ নেই। এবং যার গীবত করা হয়েছে তার মনে কষ্টের কারণ। আর ইসলামী শরীয়তে কাউকে অহেতুক এবং অন্যায়ভাবে কষ্ট দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম।

তৃতীয় প্রকারের গীবত জায়েয; তবে এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ও খালেসভাবে সংশোধনের নিয়ত থাকতে হবে। মুখে বললাম সংশোধনের জন্য, কিন্তু অন্তরে অন্য কিছু; তাহলে এই গীবতও নাজায়েয। দ্বিতীয়ত: সংশোধনের জন্য এমন ব্যক্তির কাছে কারো দোষ চর্চা করা যাবে যার কাছে বলার দ্বারা তার সংশোধন হওয়া সম্ভব। যেমন তার বাবা-মা কিংবা তার ওস্তাদ বা পীর। অথবা স্থানীয় বিচারক বা আদালত।

 

গীবত হারাম ও কবিরা গুনাহ হওয়ার দলীল

কুরআন থেকে দলীল

পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তা’আলা বলেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۚ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ

অনুবাদ: হে মুমিনগণ, তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয় কতক ধারণা গোনাহ। এবং গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি তারা মৃত ভ্রাতার মাংস ভক্ষণ করা পছন্দ করবে? বস্তুতঃ তোমরা তো একে ঘৃণাই করো। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু। (সূরাঃ আল হুজরাত, আয়াতঃ ১২)

হাদীস থেকে দলীল: গীবত করা কবিরা গুনাহ

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ أَكْبَرِ الْكَبَائِرِ، اسْتِطَالَةَ الْمَرْءِ فِي عِرْضِ رَجُلٍ مُسْلِمٍ بِغَيْرِ حَقٍّ، وَمِنَ الكَبَائِرِ السَّبَّتَانِ بِالسَّبَّةِ

অনুবাদ: আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অন্যায়ভাবে কোনো মুসলিমের মান-সম্মানে আঘাত হানা কবীরাহ গুনাহের অন্তর্ভুক্ত (যদিও তা গীবতের মাধ্যমে হয়) এবং একবার গালি দেয়ার পরিবর্তে দু’ বার গালি দেয়াও কাবীরাহ গুনাহর অন্তর্ভুক্ত। [সুনানে আবী দাঊদ: ৪৮৭৭]

গীবত করা হারাম

 أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ مَالُهُ، وَعِرْضُهُ، وَدَمُهُ حَسْبُ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ

অনুবাদ: আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের সম্পদ, সম্মান ও জীবনে হস্তক্ষেপ করা হারাম (গীবতের মাধ্যমে কিংবা অন্য কোনোভাবে)। কোনো ব্যক্তির নিকৃষ্ট প্রমাণিত হওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ মনে করে। [সুনানে আবী দাঊদ: ৪৮৮২]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

المسلم من سلم المسلمون من لسانه ويده

অনুবাদ: খাঁটি মুসলমান তো সে, যার হাত ও মুখ থেকে অপর মুসলমান নিরাপদ থাকে। [বুখারী: ১০]

অন্য হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الإِسْلاَمِ أَفْضَلُ قَالَ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ

অনুবাদ: আবূ মূসা রা. হতে বর্ণিত- তিনি বলেন, তারা (সহাবাগণ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলামে কে উত্তম? তিনি বললেন- যার জিহ্বা ও হাত দ্বারা অপর মুসলমান কষ্ট পায় না। [বুখারী: ১১, মুসলিম: ৪২]

 

গীবত সম্পর্কে রাসূল সা. এর হুঁশিয়ারি বার্তা

مرَّ النبيُّ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ بقبرينِ فقال إنهما يُعذَّبانِ وما يعذبانِ في كبيرٍ وبكى وفيه وما يعذبانِ إلا في الغيبةِ والبولِ

অনুবাদ: একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে অতিক্রম হলেন। তখন তিনি বললেন- এই দুই কবরে আযাব হচ্ছে। আর তাদেরকে বড় ধরনের কোনো গুনাহের জন্য আযাব দেওয়া হচ্ছে না; বরং তাদেরকে কেবলই গীবত এবং প্রস্রাবের ছিটেফোঁটা থেকে বেঁচে না থাকার কারণে আযাব দেওয়া হচ্ছে। [উমদাতুল ক্বারী: ১/২০০]

[এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা ২য় পর্বে আসবে]

উসূল/ইসলামী মূলনীতি: কাউকে অন্যায়ভাবে কষ্ট দেওয়া হারাম। যেহেতু গীবতের কারণে একজন ব্যক্তি কষ্ট পায় সেহেতু গীবত করা হারাম।

 

একটি সংশয়ের নিরসন

গীবত চলাকালে কেউ যদি গীবতকারীকে বাঁধা দেয়, তখন অধিকাংশ গীবতকারী বুক ফুলিয়ে বলে, আমি এটা তার সামনেও বলতে পারবো। তারা মনে করে সামনে বলতে পারলে আর তা গীবত হয় না। অথচ এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং সামনে বলতে পারলেও তা গীবতের অন্তর্ভুক্ত।

 

গীবত থেকে বেঁচে থাকার উপায়

সবসময় নিজের অগণিত দোষের দিকে তাকানো। নিজেকে অন্যের থেকে বড় না মনে করা। এবং গীবত সংক্রান্ত আয়াত ও হাদীসগুলো সর্বদা স্মরণে রাখা। বিশেষ করে এই হাদীসটি-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالآخِرَةِ

অনুবাদ: আবূ হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। [মুসলিম: ২৬৯৯। তিরমিযী: ১৪২৫, ১৯৩০, ২৯৪৫। আবূ দাউদ: ৪৯৪৬। আহমাদ ৭৩৭৩, ৭৩৭৯, ৭৬৪৪, ৭৮৮২, ২৭৪৮৪, ৮৯৯৫, ১০১১৮, ১০২৯৮, ১০৩৮২। ইবনে মাজাহ: ২৫৪৪]

 

ইবনে আব্বাস রা. এর বর্ণনায় আরেকটু বিস্তারিত এসেছে

عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ سَتَرَ عَوْرَةَ أَخِيهِ الْمُسْلِمِ سَتَرَ اللَّهُ عَوْرَتَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَمَنْ كَشَفَ عَوْرَةَ أَخِيهِ الْمُسْلِمِ كَشَفَ اللَّهُ عَوْرَتَهُ حَتَّى يَفْضَحَهُ بِهَا فِي بَيْتِهِ

অনুবাদ: ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার গুপ্ত (অপরাধের) বিষয় গোপন রাখবেন। আর যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের গোপন বিষয় ফাঁস করে দিবে, আল্লাহ তার গোপন বিষয় ফাঁস করে দিবেন, এমনকি এই কারণে তাকে তার ঘরে পর্যন্ত অপদস্থ করবেন। [আত-তালীকুর রাগীব: ৩/১৭৬। ইবনে মাজাহ: ২৫৪৬]

গীবত সম্পর্কে মনীষীদের উক্তি

সুপ্রসিদ্ধ সাহাবী ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন,

قال ابن عبَّاس رضي الله عنهما: اذكر أخاك إذا غاب عنك بما تحب أن يذكرك به، ودَع منه ما تُحِبُّ أن يَدَع منك

 

অনুবাদ: তুমি তোমার ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার আলোচনা এমনভাবে করো যেমনটা তুমি তোমার অনুপস্থিতিতে তোমার আলোচনা করা পছন্দ করো। আর তার অনুপস্থিতিতে তার সে সমস্ত বিষয় আলোচনা করা থেকে বিরত থাকো যেমনটা তুমি তোমার অনুপস্থিতিতে পছন্দ করো।

বিখ্যাত ইমাম ও বুযুর্গ হাসান বসরী রহিমাহুল্লাহ বলেন-

وقال الحسن: لا غِيبة لثلاثة: فاسق مجاهر بالفسق، وذي بدعة، وإمام جائر

অনুবাদ: তিন ব্যক্তির গীবত করা গীবত নয়। (অর্থাৎ তিন ব্যক্তির গীবত করা জায়েয।) এক. পাপী যে নিজের পাপ প্রকাশ করে বেড়ায়। দুই. বিদ’আতি। তিন. অন্যায়কারী ইমাম।

 

গীবত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজ

 

আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে গীবতের ভয়াবহতা থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন।

 

লিখনে: লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

ছাত্র: আল-ইফতা ওয়াল হাদীস


Screenshot 3
বিজ্ঞাপনঃ বই কিনুন, বই পড়ুন

0

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

Author: লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান

লুবাব হাসান সাফ‌ওয়ান। ঠিকানা: নোয়াখালী। কর্ম: ছাত্র। পড়াশোনা: আল-ইফতা ওয়াল হাদীস [চলমান] প্রতিষ্ঠান: মাদরাসাতু ফায়দ্বিল 'উলূম নোয়াখালী।

নিচের লেখাগুলো আপনার পছন্দ হতে পারে

কবিতা আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ

আল কোরআনের প্রতীক আফছানা খানম অথৈ মা আমেনার গর্ভেতে জন্ম নিলো এক মহামানবের, নাম হলো তার মুহাম্মদ রাসুল আসলো ভবের

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ

ফোরাত নদীতে স্বর্নের পাহাড় আফছানা খানম অথৈ ইমাম মাহাদী (আ:) আগমনের পূর্বে ফোরাত নদীর তীরে স্বর্নের পাহাড় ভেসে উঠা কেয়ামতের

কবিতা দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ

দাজ্জাল আফছানা খানম অথৈ কেয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল আসবে নিজেকে খোদা বলে দাবি করবে, কাফের মুনাফিক যাবে তার দলে ঈমানদার মুমিন

গল্প হযরত মুহাম্মদ (সা:) জীবনের গল্প আফছানা খানম অথৈ

জন্ম:হযরত মুহাম্মদ (সা:) বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রে বনি হাশিম বংশে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতার

Leave a Reply