গুনিয়া গুনিয়া গুনিয়া
গুনিয়াতুত তালেবীন কিতাবে আব্দুল কাদের জিলানী হানাফীদেরকে এই বলেছে সেই বলেছে— ইমাম আবু হানীফাকে মুরজিয়া বলেছে— হানাফীদেরকে জাহান্নামী ফেরকার লোক বলেছে! আগডুম বাগডুম আরো কত কী!
কিন্তু তাহকীক করে দেখা গেলো কিছুই বলেননি!
স্যরি বলেছেন, তিনি গুনিয়াতুত তালেবীনে ইমাম আবু হানীফাকে নিয়ে কী বলেছেন দেখুন।
১
তিনি বলেছেন, ইমাম আবু হানীফা রাহ. ইমাম আ’যম— অর্থাৎ সবচেয়ে বড় ইমাম।
গুনিয়াতুত তালেবীনে আব্দুল কাদের জিলানী রাহ. বলেন—
كان عبد الله بن مسعود -رضي الله عنه -يكبر من صلاة الغداة يوم عرفة إلى صلاة العصر من يوم النحر، وهو مذهب الإمام الأعظم أبى حنيفة النعمان -رحمه الله تعالى
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু তা‘আলা আনহু ইয়াওমুল আরাফাহর ফজর থেকে ইয়ামুন নাহরের আসর নামাজ পর্যন্ত তাকবীর দিতেন। আর এটাই হচ্ছে ইমাম আযম আবু হানীফা আন নু‘মান রাহিমাহুল্লাহু তা‘আলা এর মাযহাব।[¹]
২
তিনি অন্য জায়গায় লিখেন—
وقال الإمام أبو حنيفة -رحمه الله -: ليس في الفطر تكبير مسنون.
ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহু বলেন— ঈদুল ফিতরের মাসনূন তাকবীর নেই।[²]
৩
অন্যত্র সালাত তরককারীর ব্যাপারে লিখেন—
وقال الإمام أبو حنيفة رحمه الله: لا يقتل ولكن يحبس حتى يصلي فيتوب أو يموت في الحبس.
ইমাম আবু হানীফা রাহিমাহুল্লাহ বলেন— (সালাত তরককারীকে) হত্যা করা হবে না কিন্তু বন্দী করা হবে; যতক্ষণ পর্যন্ত না সে সালাত আদায় করে এবং তওবা করে অথবা বন্দী থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।[³]
৪
তিনি অন্যত্র আরো লিখেন—
قال الإمام أبو حنيفة من أن الإسفار بها أفضل
ইমাম আবু হানিফা (রাহ.) বলেন— ফজর সালাত ইসফার করে পড়া উত্তম।[⁴]
এখন কথা হচ্ছে, যিনি নিজের কিতাবে আবু হানীফা রাহ.কে ইমাম আ’যম তথা সর্বোচ্চ বড় ইমাম বলে সম্বোধন করেছেন!
নিজে হাম্বলী হওয়া সত্ত্বেও যাঁর মাযহাব নিজের কিতাবে সম্মানের সাথে উল্লেখ করেছেন! যাঁর নামের সাথে দুআ-সূচক বাক্য ‘রাহিমাহুল্লাহ’ ব্যবহার করেছেন।
তিনি একই কিতাবে কীভাবে তাঁকে (পথভ্রষ্ট) মুরজিয়া বলে আখ্যায়িত করতে পারেন?
এসব কিছু থেকে বোঝা যায়, আব্দুল কাদের জিলানীর নামে আবু হানীফা রাহ. ও হানাফীদের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ করা হয়েছে- সব জাল, বানোয়াট, মিথ্যা অপবাদ, এবং ভিত্তিহীন।
[¹] গুনিয়াতুত তালেবীন: ২/৮৫ —মাকতাবাতুশ শামেলা [²] গুনিয়াতুত তালেবীন: ২/৮৬ —মাকতাবাতুশ শামেলা [³] গুনিয়াতুত তালেবীন: ২/১৮৮ —মাকতাবাতুশ শামেলা [⁴] গুনিয়াতুত তালেবীন: ২/১৭০ —মাকতাবাতুশ শামেলা
লুবাব হাসান সাফওয়ান
