সয়া সস অনেক খাবারেই ব্যবহার করা হয়। এর কিছু উপকারিতা এবং কিছু অপকারিতা রয়েছে। মাংস মেরিনেট করার জন্য, রান্না করার জন্য, সালাদে, স্যুপে ইত্যাদিতে বিভিন্নভাবে আমরা সয়া সস খাই। সিঙ্গাড়া বা, স্যান্ডউইচ সস ছাড়া চিন্তাও করতে পারি না।
এই লেখাটিতে উপকারিতা এবং অপকারিতার পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলো যেমনঃ সয়া সসের কাজ কি, দাম কত, উপকরণ, সয়া সস দিয়ে রান্নার রেসিপি এগুলো সবকিছু তুলে ধরার চেষ্টা করবো। গুগলে সার্চ করলে অন্য যেসব রেজাল্ট পাওয়া যায় সেগুলো বেশীরভাগই Translator এর বাজে অনুবাদ, আশা করা যায় এই লেখাটি আপনার খারাপ লাগবে না।
সয়া সসের কাজ কি?
এর প্রধান কাজ হচ্ছে খাবারকে আরো সুস্বাদু করে তোলা, হজমে সাহায্য করা। এমনকি কাচা লবণ ব্যবহার না করে শুধু সয়া সস দিয়ে রান্না করলেও খাবার সুস্বাদু হয়, কারণ এতে লবণও থাকে। সয়াবিন, ভাজা শস্য এবং আরো কিছু উপাদান মিশিয়ে এই সুস্বাদু সস তৈরি করা হয়।
বর্তমানে চীন এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় এই সস খুব জনপ্রিয়। ধারণা করা হয় চীনে এটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। যখন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা মাংস ত্যাগ করে তখন সয়া সস হয়ে ওঠে তাদের রান্নার অন্যতম একটি উপাদান। এটি যেমন খেতে সুস্বাদু, তেমন পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ।
সয়া সসের উপকারিতা
এতে আছে নানারকম খনিজ উপাদান, ভিটামিন বি, সেলেনিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। খাবারের স্বাদকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয় সেটি আমাদের সবার জানা। চলুন উপকারিতাগুলো দেখে নেই-
১. বিভিন্ন রকম সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এতে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে
২. কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেমের দক্ষতা বাড়িয়ে তোলে
৩. এতে থাকা প্রটিন শরীরের পেশী গঠনে সহায়তা করে
৪. প্রোটিং সমৃদ্ধ খাবার খেলে সাধারণত ক্ষুধা কম অনুভূত হয়, এটিতেও একই ঘটনা ঘটে। ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে
৫. একটি গবেষণায় দেখা গেছে এটি মস্তিস্কের ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়
৬. দুর্বল হাড়কে আরো শক্তিশালী করে তুলতে সয়া সসের বিকল্প নেই
৭. স্তন ক্যান্সার এবং প্রস্টেট ক্যান্সারের ঝুকি কমায় সয়া সস
খাবারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে এন্টি অক্সিডেন্ট, কারণ এই উপাদানটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই কারণে যেসব খাবারে এন্টি অক্সিডেন্ট আছে, সেইসব খাবার আমাদের উচিত বেশী করে গ্রহণ করা। তাই, সুস্বাদু সয়া সস আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় স্থান পেতেই পারে।
সয়া সসের অপকারিতা
অনেক সময় এই ধরণের সস তৈরি করা হয় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে, তাই দেখেশুনে এবং বুঝে কেনা উচিত। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ব্যাপারটা বাদ দিলেও এর কিছু অপকারিতা বা, ক্ষতিকর দিক আছে-
- এটি অন্ত্রের রোগের কারণ হতে পারে। এতে থাকা লবণ অন্ত্রের প্রাচীরের ক্ষতি করে
- কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জির সমস্যা হতে পারে
- অকাল গর্ভপাতের সমস্যা হতে পারে
- কিছু গবেষণায় মাইগ্রেনের সমস্যার সাথে এর যোগসূত্র পাওয়া গেছে
যাইহোক, এটির যেমন অনেক উপকারিতা আছে তেমন কিছু অপকারিতাও আছে। আপনার যদি কোন ধরণের শারিরিক সমস্যা না থাকে, আর পরিমিত পরিমাণে সয়া সস খান, তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই। আর, যদি শারিরিক সমস্যা থাকে, তাহলে আপনার উচিত হবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া।
সয়া সস দিয়ে রান্নার রেসিপি
সয়া সস দিয়ে নুডুলস খেতে কিন্তু বেশ ভালো লাগে। বাজারে যেসব সস কিনতে পাওয়া যায়, সেগুলোর মাণ নিয়ে যদি আপনার সন্দেহ থাকে বা, এমনিতেই বাসায় সস তৈরি করতে চান, তাহলে রেসিপি দেখে তৈরি করে ফেলতে পারেন।
ইউটিউবে সার্চ দিলেই অনেক ধরণের রেসিপি পাওয়া যায়। আপনাদের জন্য এখন Sadia r Golpo নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলের রেসিপি শেয়ার করছি, এটি দেখেও বাসায় তৈরি করে নিতে পারেন সুস্বাদু সয়া সস-
বানানোর ঝামেলায় না যেতে চাইলে- দারাজ থেকে কিনেও নিতে পারেন– ২৫০ মিলি পাওয়া যাচ্ছে ৬৮ টাকায়
সংরক্ষণঃ
একটি শীতল এবং অন্ধকার জায়গায় রেখে সস সংরক্ষণ করতে পারেন। বোতলের মুখ খোলার পরে ফ্রিজে রাখা যেতে পারে। এমনিতে সয়া সস অনেক দিন ভালো থাকে। অনেকে বলেন মুখ খোলার পরেও তিন বছর ভালো থাকে। আপনারা এর সত্যতা যাচাই করে কমেন্ট বক্সে জানান, তাহলে অন্যদের উপকার হবে।
আরো পড়ুন-
- ওয়েস্টার সস এর ব্যবহার
- বিভিন্ন খাবারের উপকারিতা
- মধুর উপকারিতা ও অপকারিতা
- আদার উপকারিতা ও অপকারিতা
- ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা
- রসুনের উপকারিতা ও অপকারিতা
তথ্যবহুল লেখনী